Breaking News

গল্পঃ অজানা স্পর্শ । পর্ব - ০৭


আমি কলেজ থেকে বের হয়ে এসে, ধরাম করে কার সাথে জানি ধাক্কা খেলাম। ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে পায়ে হাত দিয়ে বসে আছি, পায়ে লাগছে কিছুটা, আমি মাথা না তুলেই বলতে লাগলাম।

আমিঃ শালা, বাঁদর, হনুমান, কুমির, বিড়াল, গন্ডার, টিকটিকির ডিম, আমারে ধাক্কা মারিস কোন সাহসে, আমাকে বাচ্চা মেয়ে পেয়ে ধাক্কা মারিস তুই, ওমাগো আমার পা গেল গো। (মাথা নিচু করে বলে যাচ্ছি)
রিয়াঃ চুপ কর বুইন মাথা তুলে দেখ কে সামনে।
ফারহান ভাইয়াঃ (আমি ফারিহার মজার মজার গালি শুনতেছি পকেটে হাত ঢুকায় দিয়ে, দেখি আর কি কি বলতে পারে, নিজে এসে ধাক্কা মারে আবার নিজে এসব বলে আল্লাহ গো কি মেয়ে এইটা)
আমিঃ চুপ কর রিয়া কোন হালায় আমারে ধাক্কা মারছে, বউ পাবি না তোর বউ নেংরা হবে, তোর বাচ্চা তোর মুখে পট্টি করে দিবে, তোর বউ তোরে দিন রাত ঝাটা পিটা করবে, দেখেনিস.... (মাথা উঠায় দেখি ওমা এতো আমার যমরাজ ফারহান ভাইয়া) ভাইয়াা...তু..তুমি এখানে কি.. করতিছ(ভয়ে ভয়ে বললাম, ভালো ভাবে তাকাই দেখি ভাইয়া আর রিয়া হাসিতেছে)
.
রিয়াঃ হাহাহাহাহা কি বললি তুই বউ পাবে না কিন্তু বাচ্চা কাচ্চা পর্যন্ত চলে গেছিস তুই, আল্লাহ গো কি মেয়ে বউ ছাড়া বাচ্চা পাবে কই,(এই বলে আমি আর ফারহান ভাইয়া হাসতে লাগলাম)
আমিঃ (ভাইয়ার ভয়ে ভ্যাঁভ্যাঁ করে কেঁদে দিলাম না জানি এসব বলার জন্য আমাক কি বলে আমাক এবারের মতো বাঁচাই নিও মাবুদ)
ফারহান ভাইয়াঃ তুই এমন ব্যাবহার করিস মানুষ এর সাথে কি ভাষা গুলাই না বললি আমি না হয়ে যদি অন্য কেও হতো তাহলে কি হতো(গম্ভীর হয়ে বললাম)
আমিঃ আমি কিছু বলি নি সব দোষ রিয়ার।(অন্য কেও হলে আরো বলতাম, শয়তান তুই এর লাইগা তো ভয় পাচ্ছি)
রিয়াঃ আমি আবার কি করলাম আমার দোষ দেশ কেনো(রেগে)
ফারহান ভাইয়াঃ রিয়া আবার কি করলো আমি তো নিজে সব শুনলাম, কি কি বললি আমাক, রিয়া তো কিছু বলে নাই(বিরক্ত হয়ে)
আমিঃ রিয়া বলছে সাহসি হতে তাই আমি এমন করছি,
আমার কথা শুনে ফারহান ভাইয়া আর রিয়া আবার ফিক করে হেঁসে দিল, মনে হয় আমি কোনো জোক্স শুনালাম ওদের,
.
আমিঃ আমার পা.(একটা নাটক করি নয়তো কপাল এ দুঃখ আছে আমার)
হুট করে ফারহান ভাইয়া কোলে উঠায় নিল আমাক, আমি তো বোকা বুনে গেলাম, নিজের কাছে এখন নিজেকে বোকা মনে হচ্ছে কি দরকার ছিল নাটক করার, সবাই কেমন করে তাকাই আছে, আমি কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই ভাইয়া রাগি চোখে তাকাল,আমি আর সাহস করে কিছু বলতে পারলাম না,
ফারহান ভাইয়াঃ রিয়া গাড়িতে ওঠ, ওমহুম একটা কথা না আমি তোমাক তোমার বাসার সামনে নেমে দিয়ে যাব ওঠ গাড়িতে।
এরপর রিয়া আর কিছু বললো না চুপ চাপ লক্ষি মেয়ের মতো গাড়িতে উঠে পড়লো।
আমিঃ ভাইয়া এখন তো ছাড়।
ফারহান ভাইয়াঃ দেখি কই লাগছে, কোন যায়গায় লাগছে ঠিক মতো হাঁটতে পারিস না নাকি দেখে শুনে চলতে পারিস না তুই হুম, কানি হইছিস চশমা কিনে দেওয়া লাগবে নাকি তোক।
আমিঃ কি হয়ছে কি, নাকি আর ও কিছু বলবা,(ঠোঁট উলতে বললাম)
ফারহান ভাইয়াঃ না(বিরক্ত হয়ে)
এরপর বাসায় আসলাম, আম্মু-আব্বু বাসার সবার এক গাদা বকুনি শুনলাম, সামান্য পা কাটার জন্য, না জানি বড় কিছু হলে কি হতো।রাতে ডিনার করে রুমে আসলাম ভালো লাগতিছে না সে জন্য ছাঁদে চলে গেলাম, ভয় নাই আমার কাছে তো তাবিজ আছে এই আসা নিয়ে ছাদে এসে বসলাম দোলনাতে, পুরো ছাঁদ অন্ধকার করছি তবে কেও থাকলে বোঝা যাবে চিনা যাবে না।
.
আমিঃ (দোলনাতে বসে কালকের আর আজকের কথা গুলো ভাবতেছি, ভাবার মূল বিষয় হচ্ছে ভাইয়াকে নিয়ে, আজ কাল ফারহান ভাইয়া কেমন যেনো ব্যাবহার করতিছে কিছু বুঝতে পারতেছি না,কেয়ারিং তো আর বেশি, আগের থেকে রাগ ও বেশি দেখায়, কথায় কথায় আমার রুমে আসা, আগে তো আমাক কোথাও নিয়ে যেত না এখন আবার সাথে নিয়ে ফেন্ড এর বাসায় যাওয়া, না জানি আর ও কতো কি করবে কে জানে, আমার সাথে ১ মাস থেকে কি হচ্ছে এসব, কবে সমাধান হবে সব কিছুর )
এসব ভাবতে ভাবতেই একটা গান ধরলাম, এই সময় গানটা বড্ড মনে পড়তিছে, আমার প্রিয় একটি গান, তাই গুন গুন করে গান গাইতে শুরু করলাম।
হয়তো কোনোদিন
ভুলে যাবে তুমি...!
ভুলতে কি পারবো তোমায়...!
তাইতো এসেছি আজকে,
নিরবে জানাতে বিদায়...!
এমনি করে চলে জীবন
মরনে যাওয়া আসা...!
গান থামানোর পড় হুট করে কিছু একটা আচ করতে লাগলাম।
হঠাৎ আমার ঘারে কারো গরম নিষ্শাস পড়তিছে আমি ভয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নিলাম, আসতে আসতে আগন্তকটা আমার ঘাড় থেকে পড়ে থাকা চুল সরাই দিয়ে ঘারে নাক ঘষতে শুরু করলো, এরপর আসতে আসতে গেন্জির ভিতর দিয়ে পেটে হাত বুলাতে বুলাতে কমড়ে গিয়ে হাত থামলো আমি পিছনে কে সেটা দেখার জন্য ঘার ঘুড়াব এমন সময় হুট করে কমড়ে ব্যাথা অনুভব করলাম, ভয়ে একটা চিৎকার দিয়ে ওঠলাম।
.
আমার চিৎকার শুনে বাসার সবাই ছাঁদে দৌড়ে আসতে লাগলো, আমি ভয়ে কান্না করতে লাগলাম, আম্মুক দেখে জরায় ধরে হাও মাও করে কান্না শুরু করলাম। একটু পর ফারহান ভাইয়া আসলো এসেই বলতে লাগলো
ফারহান ভাইয়াঃ কিরে কি হয়ছে এভাবে চিল্লালি কেন আর এতো রাতে ছাদে কি, কি হয়ছে আর ছাঁদ অন্ধকার কেন আলো টা কেও দেও।
আম্মুঃ কি হয়ছে মা চিল্লালি কেন ভয় পাইছিস কি, বল আমাকে কি হয়ছে।
ভাইয়াঃ ফারিহা কি হয়ছে বলবি তো।
ভাবিঃ ঐ দেখ ছাঁদে এটা কি পড়ে আছে(হাতে নিয়ে দেখি তাবিজ)
ভাইয়াঃ ফারিহা এটা কিসের তাবিজ কই থেকে আসলো, আর তোর গেন্জিতে রক্ত কেনো।
আমিঃ ভাইয়া তোমাদের বলছিলাম ভূতের কথা কেও বিশ্বাস কর নাই তাই কবিরাজ এর কাছ থেকে তাবিজ আনছিলাম(বলে আবার কান্না করতে লাগলাম)
আব্বুঃ হয়ছে রুমে নিয়ে যাও ওরে আর কি হয়ছে দেখ।
এরপর রুমে আসলাম, রুমে আম্মু আর ভাবি আছে, ভাবি আমার গেঞ্জি উঠায় দেখে কমড়ে কেটে গেছে অনেকটা, হয়তো তাবিজ টান দেওয়ার ফলে।ভাবি ভালো করে ড্রেসিং করে দিল জায়গাটা।
.
আম্মুঃ এসব কি ভাবে হলো মা।
ছোট আম্মুঃ রাতে ছাঁদে কে যেতে বলছে তোক, বল তো আমাক, যা নয় তাই হচ্ছে তোর সাথে, ভয় ডয় বলতে কি কিছু নাই নাকি তোর(রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললাম)
আমিঃ আমি কি ভাবে বলবো ঘুম ধরতেছিল না তাই ছাঁদে গেছিলাম। আমি জানতাম নাকি যে এমন হবে।
আম্মুঃ আচ্ছা জানা লাগবে না সবাই রুমে যাও আমি আজকে ওর রুমে থাকতেছি।(এই মেয়েক নিয়ে আর পারি না কখন কি করে কে জানে, ভালো হুজুর এর কাছে নিয়ে যেতে হবে)
আম্মুর কথামতো ভাবি আর ছোট আম্মু রুমে গেল, আম্মু সেই বকাঝকা করে আমার পাশে শুয়ে পরলো।
অপরদিকেঃ--
ফারহান ভাইয়াঃ আকাশ উপায় বল কেমনে কি শুরু করা যায়।
আকাশঃ শালা* কুত্তা* এই জন্য তুই এতো রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করতেছিস।
ফারহান ভাইয়াঃ রাখ তোর ঘুম আমাক উপায় বল, আমার যে ঘুম হয়না সেটা তো দেখিস না। কি ভাবে ফারিহার কাছাকাছি থাকা যায় আর ওরে ভালোবাসার কথা বলা যায় সেটা বল, তারপর ঘুমা।
আকাশঃ আচ্ছা শোন এক কাজ কর ওর কলেজ এ টিচার হয়ে প্রবেশ কর, আর ওরে নজর এ নজর এ রাখ আর কাছাকাছি ও থাকা হবে কেমন হবে বল।
ফারহান ভাইয়াঃ সেই কিন্তু কলেজে আমাদের..
আকাশঃ আরে দূর আমার আব্বু প্রিন্সিপাল চিন্তা কি।
ফারহান ভাইয়াঃ তাহলে তুই ও আমার সাথে থাকবি, টিচার হয়ে বাই, কাল থেকে মিশন শুরু(বলে ফোন কাটলাম)
আকাশঃ হেলো হেলো... লে কল কাটছে কিছু বলতে ও দিল না ধুর ভালো লাগে না।
সকালেঃঃঃ-----

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com