Breaking News

রিকশাওয়ালার প্রেম । পর্ব - ০৭


জেরিন??? কি বলছো এসব পাগলের মতো??

>হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি শুধু তোমার জন্য। আমি সত্যি তোমাকে খুব ভালোবাসি জাইন
>কোথায় তুমি আর কোথায় আমি একবার ভেবে দেখেছো?? কিভাবে তুমি ভাবো এসব??
>তুমিও মানুষ আমিও মানুষ এতে সমস্যা টা কোথায় জাইন??
>এটা নিছক একটা ভালোলাগা এছাড়া কিছু না।
আর যদি ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা হয়েও থাকে
তবে কঠিন বাস্তবতার কাছে তার হাতকড়া পরিয়ে দিবে তোমারই পরিবার।
হ্যা এটা সত্যি আর সবসময় আমি তোমার
এবং তোমাদের পরিবারের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি তোমরা
যা করেছো আমার জন্য তার তুলনা হয়না।
আমার বোনটার ভবিষ্যতের জন্য তাকে ভরনপোষণের দায়িত্ব নিয়েছো
তাকে নোংরা বস্তি থেকে তুলে এনে।
আমার জন্য এর বেশি আর কিছু চাওয়ার নেই।
.
>সেদিন বলেছিলাম আমি যা করছি সেটা তোমার জন্য নয় বরং আমার জন্য আমাদের জন্য।
তোমার মাঝে একটা আগুন আছে আমি সেই আগুনকে তোমার
দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে জ্বালিয়ে তোমাকে তোমার গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই জাইন।
আমি জানি ভবিষ্যতে তুমি অনেক বড় হবে।
আর সেদিন আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না।
আমি সবার কাছে মাথা উচু করে গর্ব করে বলতে পারব আমার জাইন একজন প্রতিষ্ঠিত।
>জেরিন এত স্বপ্ন দেখার সাহস আমার নেই। অতি সাধারণ এর চেয়েও কম আমি।
তিনবেলা খেতে পারলেই রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারি আর তুমি আমাকে
এসব অবাস্তব ধারণা দিয়ে নিত্যকার অভ্যেস টাকে বদলিও না।
তবে এতটুকু বলতে পারি যদি কপালে থাকে তবে একদিন হবে। না হলে বাস্তবতাকে মেনে নিও।
জেরিন আমার কথায় গভীরতা বুঝতে পেরে চুপ করে মেনে নিলো।
আর কিছু বললো না। আমি খেয়ে আমার কুঁড়েঘরে ফিরে ভাবছি। আমি কে??
কি আছে আমার?? কিসের টানে রাজপ্রাসাদের রাজকন্যা একজন দিনমজুরের ঘরে আসতে চায়??
এটা কি কোন নাটকের সুচনা নাকি সত্যি ভালোবাসা??
জানিনা কেন আমার সাথে এসব হচ্ছে।
ভালোই তো ছিলাম এতদিন কোন পিছুটান ছিল না আজ কেন এতটা ভাবাচ্ছে এসব বিষয় আমাকে??
ভাবতে চাইনা আমি। আমার বোনটাকে মানুষের মত মানুষ করতে হবে।
আমার জীবনে ওই সব।
বেশকিছু দিন কেটে যায় এভাবে। বোন ফাতেমা এখন বেশ আনন্দ ও রাজকীয় ভাবে বড় হচ্ছে।
ওকে দেখলে এখন বুঝাই যায় না কোথা থেকে উঠে এসেছে সে।
একজন সন্তানের জন্য তার পরিবার কতটা গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে তা এখান থেকে বুঝা যায়।
আজ সে এত বড় পরিবারের একজন হয়ে বড় না হলেও একজন
মায়ের কাছে তার সন্তানের সবথেকে বড় পাওয়াটা থেকে যায়। আমি কি পেয়েছি না
পেয়েছি সেটা বড় নয় আমার বোনটা যেন সবকিছু পেয়ে বড় হয় এটাই আমার জন্য অনেক।
তাই ওই পরিবারের জন্য আমি আমার জীবন দিতেও প্রস্তুত।
.
এদিকে টিউশনি করিয়ে আমার দিব্যি কেটে যাচ্ছে। এখন রিকশা চালিয়ে পেট ভরতে হয়না।
তবে ইদানীং জেরিনের সাথে বেশি দেখা হচ্ছে অকল্পনীয় ভাবে।
যেখানে আমি সেখানেই জেরিন উপস্থিত হয়।
এতোটা ফলো করতে শুরু করেছে মনে হয় একজন গোয়েন্দা ও তার আসামি
দের এতটা নজরদারি করে না। যথেষ্ট কেয়ার করে। কিন্তু আমি সবসময়ই তার
পরিবারের কথা ভেবে দুরে থাকার চেষ্টা করি। কখনো আংকেল আন্টি জানতে
পারলে আমার ওপর থেকে তাদের বিশ্বাসটাই উঠে যাবে। সবকিছুর ভোগান্তি না আমার
বোনের ওপর পড়ে সেই ভয়টাই বেশি পাই আমি। তবে আংকেল আন্টি
জানে জেরিন আমার সঙ্গেই বেশি মিশে তবুও কেন জানি ওকে বকাঝকা করে না।
একদিন আমার জীবনে একটা আকস্মিক ঘটনা ঘটে গেলো যার জন্য না আমার কোন ইচ্ছে ছিল না
কখনো কল্পনা করেছি। বোনকে দেখতে গেলাম জেরিনের বাসায়।
আন্টি কিচেনে ছিল বলে আসেনি আমাকে বলেছিল জেরিনের ঘরে গিয়ে বসতে।
আসলে ফাতেমা জেরিনের সাথে ই থাকে। তাই ওই রুমে গিয়ে বসি।
কিন্তু ফাতেমা তখন ছাদে ছিল। এদিকে আমি রুমে আছি সেটা
ওয়াশরুমে থাকা জেরিন জানতো না আর আমিও তাকে না জানিয়েই আসি।
স্বভাবতই কোন মেয়ে একাকী থাকলে নিজের রুমে খুব একটা কাপড় ঠিক রেখে চলে না।
সেই স্বাভাবিকতার জের ধরে জেরিন তোয়ালে পেচিয়ে গোসল করে বের হলো।
ওর হালকা ভেজা ধবধবে ফর্সা শরীরের নীল সবুজ শিরাগুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম।
ওর ভেজা চুল থেকে তখনো জলকণা টপ টপ করে পড়ছিলো সেই জলকনাতেই
হয়তো আমার সর্বনাশ দেখতে পেয়েছিলাম।
.
ওর এমন আগমনের জন্য
কোনভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না। ভিতরের পশুটাও খুব জোরে চিতকার দিয়ে
বেরিয়ে আসতে চাইলো কিন্তু পারেনি। ওকে দেখে আমি নিজেকে সংযত করার
লক্ষে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম কিন্তু কাছে পাবার স্বপ্ন বুনে যে এতদিন আকুলতার
সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে সেই জেরিন কি আমাকে এত সহজে এত কাছে পেয়েও ছেড়ে দিবে???
সেটা হয়তো স্বপ্নে ও সম্ভব না। দরজা আটকে দিয়ে আমার সামনে এসে দাড়ালো জেরিন।
আজকের জেরিনকে যতটা সুন্দরী ও আকর্ষনীয় লাগছে তার থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখা দায়।
কিন্তু তারপর ওর হাতের ছোয়া তে ওর দিকে তাকাতে বাধ্য হলাম........
>সরি আমি ফাতেমাকে দেখতে এসেছিলাম তুমি ভিতরে এভাবে আসবে ভাবিনি।
আমি বাইরে যাচ্ছি তুমি বদলে তারপর এসো।
>যেতে দেবার জন্য কি দরজা লাগিয়ে এলাম??
>জেরিন প্লিজ এমন কিছু করোনা যার জন্য তোমার বাবা মা আমাকে খারাপ জানে
>কেউ যদি জানে তবে না তোমাকে খারাপ জানবে হাহাহা
জেরিন হাসতে হাসতে বললো
.
>আজ জাইন সাহেবকে এমন একটা সারপ্রাইজ দিব সেটা পেয়ে তার অবস্থা কি হয় আমি তা দেখতে চাই
>অনেক সারপ্রাইজ পেয়েছি আর কিছু চাইনা আমি চলে যাব জেরিন
>জেরিন আমার ঠোটে ওর আঙ্গুল রেখে চুপ করিয়ে দিল। তারপর আমার চোখে চোখ রেখে ওর শরীর থেকে তোয়ালে খুলে ফেললো।
.
>আমার এই শরীরটা শুধু তোমাকে চায় জাইন। এই শরীরে শুধু তোমার ছোয়ায় আগুন জ্বলবে।
জেরিনের নগ্ন শরীরের দিকে তাকিয়ে আমি যেন গভীর অগ্নিসমুদ্রে পড়ে তীর খোজার চেষ্টা করছি।
জীবনে এমন সিচুয়েশনে কখনো পড়িনি। পরক্ষণেই চোখ বন্ধ করে জেরিন কে বললাম
>জেরিন তোমার কাছে হাত জোড় করছি আমাকে আর কষ্ট দিও না
নিজেকে সামলাতে খুব কষ্ট হচ্ছে প্লিজ
>কষ্ট কমাতেই তো নিজেকে সপে দিলাম। সুখ খুজে নাও আমার শরীরে। জড়িয়ে ধরো আমাকে
>আমি পারব না জেরিন। এটা সম্ভব না
.
জেরিন আমার কথায় বুঝতে পারলো আমি কখনোই ওর শরীরের লোভে ওর সাথে মিশিনা।
তাই নিজে থেকেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।
ওর বুকের হৃদপিন্ডের ধুকপুকানির শব্দ স্পষ্ট বুঝতে পারছি।
জেরিন আমার হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা কান পেতে শুনছে আর বলছে...
>জাইন তুমি কি জানো তোমার হৃদয়টা কি চাচ্ছে
>জানি
>বলোতো কি
>এখান থেকে চলে যেতে চাচ্ছে
>ধুররর না। ও চাচ্ছে আমাতে মিশে যেতে আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
>জেরিন আমাকে ছেড়ে দাও প্লিজ
>একটা চুমু দাও আমার গোলাপি ঠোঁটে তাহলে ছাড়বো
>কখনোই পারব না আমি প্লিজ জোর করোনা
>উমমমম হবে না তাহলে
>প্লিজ জেরিন
.
জেরিন আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমার চোখবুঁজে থাকা চেহারাটা দেখছে তারপর
আমার কলার টেনে ধরে ওর পাপড়ির মত ঠোটগুলো আমার ঠোটে চেপে ধরলো।
ঠোটের স্বাদ পেতে সেখানে এক টর্নেডো চালাচ্ছে।
আমি নিজেকে সরিয়ে রাখার প্রানপন চেষ্টা করছি কিন্তু আমার ভেতরের পশুটাও ক্রমান্বয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।
অবশেষে বাধ ভাঙ্গলো আমার।
চোখ খুলে জেরিনের কামার্ত চোখে আটকে গেলাম।
ওর চুমুর পাল্টা জবাব দিতে লাগলাম। জেরিন আমার একটা হাত ধরে ওর কোমরে রাখলো।
তখন আমি আমার ভিতরে ছিলাম না। হয়তো হারিয়ে গেছি জেরিনের মাঝে।
ওর শরীরটাকে ছুয়ে অনুভব করার ব্যাকুলতায় নিজের হাতকে সামলাতে পারিনি।
জেরিনের ইচ্ছে মত ওর শরীরের প্রতিটা লোমকুপে ছুয়ে দিলাম।
কিছুটা সময় ওর সাথে মিশে গেলাম পাগলের মতো। এমন সময় দরজার বাইরে ফাতেমা এসে গেছে।
ওর দরজা নাড়িয়ে জেরিনকে ডাকলো তখনই শেষ হলো আমাদের মধুক্ষন।
জেরিন দ্রুত গতিতে তোয়ালে পেচিয়ে ওয়াশরুম গেলো জামা পরতে।
আমি স্বাভাবিক হয়ে দরজা খুলে দিলাম। ফাতেমা আমাকে দেখে সোজা কোলে উঠলো।
ওকে আদর করে কোলে তুলে নিলাম।
কিছু সময় পর জেরিন একটা জামা পরে বাইরে এলো।
আমি তখন ওর দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছি না। ভীষন লজ্জা আর ঘৃণা হচ্ছে নিজের ওপর।
কি করলাম আমি এসব ?? একটা মেয়ে কে একা পেয়ে ওর শরীরের সাথে মিশতে শুরু করেছিলাম??
ছি!!
কিন্তু আমি তো ইচ্ছে করে এমন করিনি?? আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।
কিন্তু আমি জেরিনের সামনে আর কি করে আসব??
ও যদি এখন আমাকে দোষারোপ করে??
নিজের ওপর থেকে কি তবে সংযতা চলে গেলো আমার??
.
দ্রুত বের হয়ে গেলাম বোনের আর আন্টির থেকে বিদায় নিয়ে।
তখনো ভেতরে আগুন জ্বলছে। রাত অবধি কথা হয়নি জেরিনের সাথে।
রাত জেগে থাকতে ইচ্ছে না করলেও সেদিন আমার ঘুম আসছিলো না।
চোখ বন্ধ করলেও না করলেও শুধু জেরিনের সাথে ঘটনার সব কিছু ভাসছে।
কিছুতেই ভুলতে পারছিনা। পাগলের মতো ছটফট করতেছে মনটা। কি করলাম.......
.
.
চলবে.......

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com