Breaking News

বিয়াইন সাব | পর্ব – ০২



আজ গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান।

মনে মনে ভাবছি বিয়াইনের সাথে আজ অনেক রোমাঞ্চ করবো।

মেয়ের বাড়ির অতিথিরা আমাদের গ্রহণ করার জন্য গেঁটে দাড়িয়ে আছে।



সেখানে দেখি আমার ক্লাসমেট রাইসা

হলুদের শাড়ি পরে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

কী রে রাইশা তুই এখানে?

ছেলে পক্ষের না মেয়ে পক্ষের?



আরে বলদ মেয়ে পক্ষের হলে এখানে খালি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতাম নাকি?



তার মানে ছেলে পক্ষের,আচ্ছা ছেলে তোর কী হয়?



রাইসা বললো আমার ভাইয়ের বন্ধু।

আর তোর কী হয়?



আমার চাচাতো ভাই।



রাইসা, তাহলে তো খুবই ভালো।

একা একা লাগছিলো।

সবাইকে অপরিচিত লাগছে।

তোকে পেয়ে খুবই ভালো হয়েছে।

তোর সাথে সময়টা ভালোই কাটবে।



কথা অনেক হয়েছে চল এবার ভিতরে যাই।



হ্যাঁ চল।



ওদিকে আমার বিয়াই-বিয়াইনরা

যাকে খুশি তাকে স্প্রে দিয়ে মাখিয়ে দিচ্ছে।

জানি আমাকেও দিবে।

.

তবে আমিও তাদের স্প্রে দিয়ে মাখিয়ে দিবো।

ব্যাগে করে আমি ২ টা স্প্রে নিয়ে এসেছি। সময়মতো ব্যবহার করবো।



গেটে প্রবেশ করতেই বিয়াই-বিয়াইনরা আমাদের স্প্রে দেওয়া শুরু করলো।

সাথে সাথে আমিও স্প্রে দেওয়া শুরু করলাম।



যাইহোক ভাবিদের বাসায় ঢুকলাম।

বিরানি খাওয়ার পর্ব শুরু হলো।



বিয়াইনকে ডাক দিলাম, আসুন বিয়াইন আমরা এক সাথে বসে খাই।

না বিয়াই সাব, আমি খেয়েছি।

আপনারাই ভালো মতো খান।



তবে লজ্জা পেয়ে বেশি খাবেন না কিন্তু। তাহলে খবর আছে।



কিসের খবর,কয়টার খবর,কোথাকার খবর?



সময় হলেই জানতে পারবেন।



যাই আপনারা খাওয়া শেষ করেন।



আমরা বান্ধুরা এক সাথেই বসেছি।

খাওয়া শেষ হলো।



এখন ভাবিকে হলুদ দেওয়ার পালা।ভাবিকে ষ্টেজে আনা হয়েছে।



ব্যানারে বড় করে লেখা আজ সুমনার হলুদ ছোঁয়া।



প্রথমেই ভাবির বাড়ির কয়েকজন হলুদ দিলো।

এরপর আমাদের ডাকলো হলুদ দিতে।



আগেই আমি আসলাম হলুদ দিতে।

ভাবির সাথে রয়েছে আমার বিয়াইন।

ভাবিকে কেক খাইয়ে দিতে কয়েক বার ধুকা দিলাম।

ভাবি তোমার ভাগ্যে এই কেক নেই।

কেকটা বিয়াইনের দিকে চেয়ে রয়েছে।

তাই নাকি?



জি, ভাবি।

.



খুব ভালো।তাহলে খাইয়ে দাও তোমার বিয়াইনকে।

বিয়াইনের দিকে কেক এগিয়ে দিলাম।

কিন্তু খাইয়ে দিচ্ছি না।ধুকা দিচ্ছি।

কয়েকবার ধুকা দিয়ে নিজেই খেয়ে নিলাম।



ভাবিকে হলুদ দিচ্ছি এই মুহূর্তে বিয়াইন আমাকে হলুদ দিয়ে মাখিয়ে দিলো।



ওহে বিয়াইন এটা করলেন কী?

সময় কিন্তু আমারও আসবে মনে রাইখেন।



দেখা যাবে নে।



দেইখেন।



আমার হলুদ দেওয়া শেষ হলো।

তারপর আরো অনেকেই ভাবিকে হলুদ দিলো।

ভাবিকে হলুদ দেওয়ার পর্ব শেষ হলো।



বাসায় চলে আসালাম।

মেয়ে বাড়ির হলুদের অতিথিদের

গ্রহণ করার জন্য গেটে দাঁড়িয়ে আছি।



একটু পর দেখি রাইসা

খালি হাতে দাঁড়িয়ে আছে।

কিরে রাইসা তুই খালি হাতে দাঁড়িয়ে থাকবি?

ওয়েট, তোর জন্য কিছুর ব্যবস্থা করি।

আচ্ছা তুই কি নিতে চাস?



ফুল।

.



ও বুঝতে পারছি তুমি ছেলেদের হাতে ফুল দিতে চাও,তাইনা?



রাইসা,হ্যাঁ দিতে চাই।



রজনীগন্ধা ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো আমার এক ভাবি।

ভাবিকে বললাম ভাবি এই হচ্ছে রাইসা,সুমন ভাইয়ের বন্ধুর বোন।

তোমরা দুজনে মিলে ফুল দিও।



কিছুক্ষণ পর

মেয়ে বাড়ীর হলুদে আসা অতিথিরা চলে আসলো।

আমি গেটের সামনে স্প্রে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।

ভাবছি আজ বিয়াইনকে স্প্রে দিয়ে গোসল করাবো।

একের পর একজন আসতেছে।



বন্ধু রউফ বললো ছেলেদের বেশি স্প্রে দিস না,দিবি ময়দা সুন্দরীদের।



তাতো অবশ্যই ।

তবে আমার বিয়াইনকে স্প্রে দিয়ে গোসল করাবো।



অনেকেই চলে আসছে।

.

আমি খুঁজতেছি আমার বিয়াইনকে।



কিছুক্ষণ পর বিয়াইন তার সঙ্গীদের নিয়ে চলে আসল।

বক্সে বিয়াইন সাব গানটা বাজতেছে।

বিয়াইনকে দেখে আমিও সুর মিলাচ্ছি।



এই যে বিয়াইন আপনাকে তো আজ পরীর মতো লাগছে।

তবে আটা,ময়দা,সুজি না মাখলেও পারতেন।

বিয়াইনতো রেগে আগুন।



যাইহোক, আপনার জন্য আজ অনেক সারপ্রাইজ বাকি আছে।



বিয়াইন, তাই নাকি?



এইতো এক্ষুণী একটা সারপ্রাইজ পাবেন।



স্প্রে দিচ্ছি বিয়াইনকে।



বিয়াইন আল্লাহ করেন কী?

থামেন এইবার।



বিয়াইন তার সঙ্গীদদের বললো, তোদের সামনে আমাকে এইভাবে স্প্রে দিচ্ছে কিছুই বলছ না তোরা?



আমরা কী বলবো?

তোমরা বিয়াই-বিয়াইন মজা করতেছো, করো। ভালোই তো লাগছিল।



বিয়াইন বললো এই যে বিয়াই আপনি আমাদের বাসায় যাবেন না,

তখন দেখবেন,আপনাকে কত ধরনের সারপ্রাইজ দেই।



ওকে দিয়েন।

.

আপনার সারপ্রাইজ এর অপেক্ষায় রইলাম।



বিয়াইন চলে যাচ্ছে।

ভাবলাম বিয়াইনকে শুধু স্প্রে দিলেই হবে না,আরে কিছু দিতে হবে।



রাইসার মাথায় দেখি গোলাপফুল গোজা।

রাইশা কে বললাম , তারাতারি গোলাপ ফুলটা দেতো।



কী করবি?



আরে দে না, দরকার আছে। ভাবিকে বললাম , ভাবি তুমি বিয়াইনকে রজনীগন্ধা ফুল দিও না,আমি গোলাপ ফুল দিচ্ছি।



বিয়াইন এই নেন আমার পক্ষ থেকে স্পেশাল উপহার।



না, আমি গোলাপ ফুল নিব না।

সবাই যেটা নিছে আমিও সেটাই নিবো।



বিয়াইন আপনি গোলাপ ফুল নিবেন না?



না।



আচ্ছা আপনাকে নিতে হবে না,আমিই দিচ্ছি।

বিয়াইনের মাথায় ফুলটি গুজে দিলাম।

বিয়াইন এইবারতো হয়েছে।

আপনি আমার কাছ থেকে গোলাপ ফুল নেন নি।



রিসিপশন পর্ব শেষ হলো।



এইবার খাওয়ার পর্ব শুরু হবে।

একটা বোলে পানি নিয়ে অতিথিদের হাত ধুয়াচ্ছি।

এইবার বিয়াইনের হাত ধুয়ার পালা।

এই বিয়াইন হাত ধুবেন না?



হ্যাঁ, অবশ্যই।

.

তবে আসুন আমরা দুজনে মিলে সবাইকে হাত ধুয়াই।



তাহলেতো খুবই ভালো হয়।

আপনি এই বোলটা ধরেন।

আমার কাছে জগটা থাক।



বিয়াই আপনি একটু নিচু হবেন, প্লিজ।



কেন?



দরকার আছে।



বিয়াইন আপনি বললে নিচু কেন, মাটিতেও শুয়ে যেতে পারি।



মাটিতে শুতে হবে না, একটু নিচু হলেই হবে।



নিচু হওয়ার সাথে সাথে বোলের হাত ধুয়ানো পানি আমার মাথায় ঢেলে দিলো।



বিয়াইন আপনি করলেন কি?



আমার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে এমনটা করতে পারলেন।

মনে মনে বলতেছি, আপনি ভাইয়াকে হলুদ দিতে আসেন,

তারপর দেখবেন আপনাকে আবারো কীভাবে সারপ্রাইজ দেই..

.

.চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com