জুনিয়র হাজবেন্ড । পর্ব - ০৪
কিন্তু কেয়া
ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে,,,,,, ওর রাগটা আবার বেড়ে গেছে,,, কারণ সামনে যে রাহাত দাঁড়িয়ে,,,,,,
আতিয়া রাহাত আর সৌরভ কে ওর বন্ধুবান্ধবের কাছে নিয়ে আসলো,,
আতিয়া: এতক্ষণ তোদের যার কথা বললাম,,,, এই হচ্ছে সৌরভ,,,, আমার বয়ফ্রেন্ড
কেয়া: হুম সেটা না হয় বুঝলাম,,,, কিন্তু পাশে যে দাড়িয়ে আছে,,,,ওটাও কি তোর বয়ফ্রেন্ড
আতিয়া: ওইটা বয়ফ্রেন্ড হতে যাবে কেন,,,,ও সৌরভের বন্ধু ,,, নাম রাহাত মল্লিক,,,,,, খুব ভালো ছেলে,,,,,
কেয়া: হো জানি,,,, কেমন ভালো ছেলে,,,, আস্ত একটা শয়তান,,,,(ধীরে ধীরে বলল কথাগুলো)
রাহাত: সরি কিছু বললেন,,,,,
কেয়া: না না ,,, কি বলবো,,,, আপনি তো অনেক ভালো,,,, সেটাই তো বলতেছে আতিয়া
রাহাত: হুম,,, তাই বলেন,,,, আমি তো অন্য কিছু ভাবছিলাম,,,,
কেয়া: অন্যকিছু মানে,,,, কি ভাবছিলেন হুম,,,,
রাহাত: সেটা আপনাকে বলব কেন,,,,
.
সৌরভ: রাহাদ বাদ দেতো,,,, এখানে এসে আবার শুরু করলি,,,,
তোদের দেখা হলে কি ঝগড়া লাগে নাকি,,,,,,
আতিয়া: এর আগে রাহাত আর কেয়ার কি দেখা হয়েছিল,,,,,
সৌরভ: হুম,,, তা আবার আজকে ই,,,,, দুইবার,,,,
আতিয়া: কি বলো,,, একদিনেই তিনবার দেখা,,,, এটাতো প্রেমের লক্ষণ,,,,,
কেয়া: কিসের প্রেমের লক্ষণ,,,, তোর মত আমি নাকি,,,,লুচু কোথাকার,,,,
রাহাদ ওখান থেকে চলে গেল,,,, কেয়ার কথায় আর কোন উত্তর দিলো না,,,,
আতিয়া: রাহাদের আবার কি হলো,,,,,, রাগ করলো, নাকি,,,
সৌরভ: আরে নাহ,,,, রাগ কেন করবে,,,, তোমরা থাকো আমি দেখতেছি,,,,,
আতিয়া: হুম,,,,,
.
রাহাত একটা টেবিলে বসলো,,,,,
আর বোতল থেকে পুরো গ্লাস পুরো করে মদ ঢেলে নিলো,,,,,
এটা ওর প্রতিদিনের অভ্যাস এখন,,,,
সৌরভ ও চেয়ারে গিয়ে বসলো,,,,
সৌরভ: কি হলো,,, ওখান থেকে চলে আসলি কেন,,,,
রাহাত: এমনি,,, ভালো লাগছিলো না,,,,
সৌরভ: হুম,,, আমি বুঝতে পারছি কেন চলে আসছিস,,,,,
আরে আতিয়া ওইটা এমনি বলছে,,,,,, অন্য মাইন্ডে নিস্ না,,,,
রাহাত: হুম,,, খাবি নাকি,,,,
সৌরভ: নারে,,, এখন খাওয়া যাবেনা,,, আতিয়া আছে,,,, দেখলে রেগে যাবে,,,,,
রাহাত: হুম,,, ভুলেই গেছিলাম,,,, তোর তো আবার গার্লফ্রেন্ড আছে,,,,,
আচ্ছা খাওয়া লাগবে না যা,,,, ইনজয় কর,,,
সৌরভ: তুই ও খাস না প্লিজ,,,,,,
আর কত এভাবে নিজেকে শেষ করবি,,,,
পুরনো জিনিস,,, মনে রেখে লাভ কি বল,,,, ফিরে তো আসবেনা কোনদিন,,,,,,
আর কত অপেক্ষা করবি,,, এখন তো একটু নিজের দিকে দেখ,,,,
রাহাত: আসবে আসবে,,,,,
.
লোকে বলে না,,, সত্যি কারের প্রেম নাকি ফিরে আসে,,, আমারও আসবে,,,,
সেই অপেক্ষাতেই তো আছি,,,,(কথাগুলো মাতলামো কন্ঠে বলে,,,
এতক্ষণে এক বোতল শেষ করে ফেলেছে,,,,)
সৌরভ: হুম,,,, সেই আশাতেই থাক,,,
আসার হলে এতদিন ফিরেই আসতো,,,, ভুলে যা না এসব ,,,,,
আঙ্কেল আন্টির কথা একটু ভাব ,,,,,,
রাহাত: হুম ভাব্বি তো,,,,,(মাতলামো কন্ঠে বলে,,,,)
সৌরভ আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে যায়,,,,
কারণ রাহাত আর নিজের আয়ত্তে নেই এখন,,,,
কিছুই বুঝবে না ,,,ও,,,,ওর সাথে কথা বলাই বৃথা,,,,,
সৌরভ আবার আতিয়াদের কাছে চলে যায়,,,,,
আতিয়া: কোথায় গেছিলা এতো তাড়াতাড়ি,,,,,,
সৌরভ: ওই সাইটে ছিলাম,,,,,
আতিয়া: ড্রিংক করলে মনে হয় তাই না,,,,,, আমার কাছ থেকে লুকিয়ে,,,,,
সৌরভ: আরে কি বলো সবার সামনে,,,, ড্রিঙ্ক কেন করতে যাব,,,,
এমনি রাহাদের সাথে বসে ছিলাম,,,,,
আতিয়া: তাই বলো,,, রাহাদ কোথায়,,,,,
.
সৌরভ: রাহাদ ওখানেই আছে,,,,
আতিয়া: ওকে ডাক দাও,,,, কেক কাটবো না,,,,
সৌরভ: ওকে লাগবেনা এমনি কাটো ,,,,, ও আসবে না এখন,,,,
আতিয়া: কেন,,,,কি হইছে ওর,,,,,
সৌরভ: আরে কিছু না,,,, চলো তো কেক কাটি,,,,,
আতিয়া: ওকে চলো,,,,(মন খারাপ করেই বললো)
কিছুক্ষণের মধ্যে কেক কাটা শেষ হয়ে গেল,,,,
সৌরভ আবার রাহাদের কাছে গেল,,,, এতক্ষণে ওর কি অবস্থা হয়েছে,,,, আল্লাহই ভাল জানে,,,,
সৌরভ দেখল,,,, রাহাত টেবিলের উপর শুয়ে আছে,,,,,
অনেক ডাকাডাকি করেও কোন কাজ হলো না,,,, নেশাটা মনে হয় একটু বেশি হয়ে গেছে,,,,,
একটু পর,,,, আতিয়া আর কেয়া রা আসলো,,,,,
কেয়া তো রাহাত কে দেখেই হাসতে লাগলো,,,,,
কেয়া:এই জন্যেই মনে হয় তোমার বন্ধুকে তখন নিয়ে গেলে না,,,তাই না,,,,
সবার সামনে ওর আসল রূপটা বের হয়ে যেত,,,,, সেই ভয়ে,,,,
কেয়ার কথায় সৌরভ চুপ করে আছে,,,, সত্যি তো,,,
এই ভয়েই রাহাদকে তখন ওখানে নিয়ে যায়নি,,,,
আতিয়া: রাহাদের এ অবস্থা হলো কিভাবে,,,,,,
সৌরভ: কিভাবে আবার,,,এসেই ড্রিঙ্ক করা শুরু করে দিয়েছে,,,,
কতোবার বারন করলাম শুনলোই না,,,,,
আতিয়া: ওহহহ,,,,, ওকি এভাবেই নিজেকে শেষ করে দিবে নাকি,,,,
একটু বুঝাতে পারোনা তুমি,,,,
সৌরভ: তোমার কি মনে হয়,,, আমি বুঝাই না,,,,
সারাদিন ওকে বোঝাই,,,,
.
আঙ্কেল আন্টি পর্যন্ত বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত,,,, কোন লাভই হয়নি তাতে,,,,,
আতিয়া: যে চলে গেছে সে তো গেছেই,,,
তার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করে লাভ আছে,,কি,,,,,
এত বড় বিজনেসম্যান হয়ে,,, একটা বেইমান মেয়ের জন্য পাগল,,,,
সৌরভ: হুম,,,বাদ দাও,, এসব,,, বসি চলো,,, ওইদিকে,,,,
আতিয়া: হুম,,,,চলো,,,,,
আতিয়া আর সৌরভ অন্যদিকে চলে গেল,,,আর সবাই নাচানাচি নিয়ে ব্যস্ত,,,
কিন্তু কেয়া সৌরভ আর আতিয়ার,,,, কথাগুলো ভাবতেছে,,,, কি হয়েছিলো রাহাদের সাথে,,,
এত বড় বিজনেসম্যান হয়েও নেশায় মগ্ন,,,,,
কেয়া রাহাদের কাছে যায়,,এখনো টেবিলের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে আছে ও,,,
কেয়া ওর পাশে গিয়ে চুপ করে বসে পড়ে,,,,,
কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে ওর মুখের দিকে,,,,
ডিম লাইটের রঙিন আলোয়,,, মুখটা কেমন যেন ফুটে উঠছিলো,,,,
.
কেয়া রাহাতের পিঠে হাত দিতে গিয়ে,,, আবার হাতটা তুলে নেয়,,,,,
কেমন যেন ভয়ও হচ্ছিল ওর,,, যদি রেগে গিয়ে কিছু বলে,,,
এমনিতে সকাল থেকে অনেকবার হয়রান হয়ে গেছে কেয়ার জন্য,,,,
দ্বিতীয়বার ইতস্তত না করে পিঠে হাত দেয়,,,,,,
আর ধীরে ধীরে ডাকতে থাকে,,, ভয়ার্তো কন্ঠে,,,,,
কিন্তু রাহাদের কোন সাড়া নেই,,,,, আরো কিছুক্ষণ ডাকার পর,,,,,
একটু হুঁশ ফেরে রাহাদের,,,
রাহাত: কে ক তুমি,, ডিস্টার্ব করছ কেন আমায়,,,,
(কথাগুলো বলতে গিয়ে আটকে গেছে অনেকবার)
কেয়া: আমি ,,,,,,
.
আর কিছু বলার আগেই,,, রাহাত বলে উঠলো,,,,,,
রাহাত: তুমি মিথিলা তাই না,,,,,ফিরে এসেছো আমার কাছে,,,,
এতদিন কোথায় ছিলে তুমি,,,,, কত খুঁজেছি তোমায়,,,,জানো,,,,
(কথা গুলো তোতলাতে তোতলাতে বললো)
কেয়া রাহাতের কথা শুনে অবাক হয়ে গেছে,,,,
কি বলছে এসব,,, কিছুতো বুঝতেছে না ও,,,
কেয়া: কি বলতেছেন এসব,,,, আমি কেয়া,,,,
সকালে যে আপনার অফিসে ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম,,,,, মনে আছে,,,,,
রাহাত: তুমি কেয়া না,,, তুমি আমার মিথিলা,,,,,তাই না,,,,,,
বলো না প্লিজ,,, তুমি আমার মিথিলা,,,,,,
কেয়া: আরে আজব তো,,, আমি মিথিলা হতে যাবো কেন ,,,,আমি কেয়া,,,,,,
রাহাত,,, কেয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে ফেলে,,,,
কেয়া ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে,,,,, কিন্তু পারেনা,,,
রাহাত শুধু বারবার,,, মিথিলা বলে কাছে আসতে চাচ্ছে,,,,
বিষয়টা ক্লাবের সবার ই নজরে পড়েছে,,, সবাই দেখে হাসতেছে,,,,
কেয়ার তো। অন্যরকম অবস্থা,,,ভয় পেয়ে গেছে ও,,,
ভয়ে কান্না করে ফেলছে,,,,,
.
চলবে…..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com