জুনিয়র হাজবেন্ড । পর্ব - ০৮
একটু পর নিঝুম এসে বসলো টেবিলে,,,,,,
নিঝুম কে দেখে তো সৌরভ আর কেয়ার অবস্থা দেখার মতো হয়েছে,,,,,আসলে নিঝুম কে দেখে না ওর পেছনে দাঁড়ানো দুইজন পুলিশ কে দেখে,,,,,,
রাহাত তো চুপ করে বসে আছে,,,,,আসলে ভয় তো ও পেয়েছে,,,,,ও এখনো বুজতেছে না নিঝুম পুলিশ কেন আনছে,,,,,
নিঝুম: হায় আমি নিঝুম,,,,যার জন্যে তোমরা এতক্ষণ অপেক্ষা করতেছিলে,,,,,(হাত টা সামনে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,,,)
নিঝুম হাত বাড়িয়েই আছে,,,,, কিন্তু এরা কেউ আর ভয়ে সামনে হাত আর বাড়াচ্ছে না ,,,,,,
রাহাত তো ভদ্র ছেলের মতো বসে আছে,,,,,মনে হচ্ছে কিছুই জানে না ও,,,,,
একটু পরে নিঝুম,,,, নিজেই হাতটা সরিয়ে নেয়,,,,,
নিঝুম: কি হলো,,,, এভাবে চেয়ে আছেন কেন,,,,,,
বলছেন আমার আমার কথা,,, এদের কে,,,(রাহাত কে বলে)
রাহাত: হুম,,,, আপনি একটু সাইডে আসেন,,,,
নিঝুম: কেন,,,, এখানেই বলেন যা বলবেন,,,,,
রাহাত: নাহ,,, চলেন না একটু,,,(পুলিশের দিকে তাকিয়ে বলে)
নিঝুম: বুঝতে পারছি,,,,, আঙ্কেল আপনারা একটু ওইদিকে জানতো,,,, সময় হলে ডেকে নেব,,,,
পুলিশ: ওকে ম্যাডাম,,,, কিছু হলে অবশ্যই ডাকবেন,,,,,,
নিঝুম: হুম অবশ্যই,,, যান আপনারা,,,,,
পুলিশ চলে গেল,,,,,,
নিঝুম: এখন বলেন কি বলবেন,,,,
.
রাহাত: এগুলো কি হচ্ছে,,,, আপনিতো বলেছেন শুধু একাই আসবেন,,,, তাহলে পুলিশ কেন,,,,,
নিঝুম: তাই কি হয়েছে,,,, এরা তো আমার সাথে সব সময় ই থাকে,,, ভয় পাবার কোন কারন নেই,,,,
রাহাত: আপনার সাথে সব সময় থাকে মানে,,, আপনার সিকিউরিটি নাকি এরা ,,,,,
নিঝুম: হুম,,,, আমার বাবা তো পুলিশ,,,, এখানকার ওসি,,,,, ওনার তো অনেক শত্রু,,,, যদি শত্রুরা আমাকে দিয়ে বাবা কে ঘায়েল করার চেষ্টা করে,,, তাই বাবা এত সিকিউরিটি দিছে,,,, জানেন না নাকি আপনে,,,,
রাহাত: নাতো,,,,, আপনার বাবা ওসি,,,,, আগে বলবেন না,,,,,
নিঝুম: আমিতো জানি আপনে জানেন,,,,, আচ্ছা এসব কথা বাদ দেই,,,, আপনার গার্লফ্রেন্ড কে,,এনি নাকি,,,,(কেয়ার দিকে তাকিয়ে বলল)
রাহাত: হুম কেয়া আমার গার্লফ্রেন্ড,,, দুই বছরের রিলেশন আমাদের,,, অনেক ভালোবাসি আমরা একে অপরকে,,,,, কেয়া তুমি কিছু বলো,,,,
নিঝুম: অত কিছু শুনতে চাইনি,,,, আপনারা এখন যান,,,,, আপনার গার্লফ্রেন্ড থাকবে শুধু এখানে,,,, ওর সাথে পার্সোনালি কথা বলব আমি ,,,,,
রাহাত: না না,,,, আমি কোথাও যেতে পারবো না,,,, ওকে ছাড়া তো আমি থাকতেই পারিনা,,,,
কিছু বলো কেয়া,,,,,,
.
নিঝুম: বুঝঝি এমনি যাবেন না,,,, তাহলে ডাকলাম আংকেলদের,,,,,
সৌরভ: না না ভাবি,,,, আপনি কথা বলুন,,,,, আমরা দূরে যাচ্ছি,,,,
নিঝুম: এইতো গুড বয়,,,, অল্পতে বুঝে যায়,,,, নাম কি আপনার,,,,
সৌরভ: জি ভাবী সৌরভ,,,,,,
নিঝুম: ভাবি বলোনা,,, লজ্জা লাগে
সৌরভ রাহাতের হাত ধরে টানতে টানতে দূরে নিয়ে যায়,,,,,,
রাহাত: ছাড় তো ভাই,,,,,,,,,(ছাড়িয়ে নিয়ে বলে)
সৌরভ: খুশি হয়েছিস তো এখন,,, বোঝ ঠেলা,,,,,,
রাহাত: আমি জানতাম নাতো ওসির মেয়ে নিঝুম,,,,, মা তো কিছুই বলেনি,,,,,, আমি সিওর,,,,কেয়া সত্যি কথা বলে দিবে,,,,
সৌরভ: আমিও সিওর,,, তোর বিয়েটা মনে হয় এবার সত্যি হয়ে যাবে,,,,,,
রাহাত: রাগাস না বাল,,,, কোন বুদ্ধি থাকলে দে,,,,,
সৌরভ: আমার কোনো বুদ্ধি নেই ভাই,,,,, আমি গেলাম,,,,
রাহাত: কই যাবি,,,,,
সৌরভ: আতিয়া ফোন দিচ্ছে,,,,,, না গেলে মন খারাপ করবে,,,,
রাহাত: যা সালা,,,, তোরা আসলে বন্ধুই নয়,,,, বিপদে পাশে থাকিস না,,,,,
সৌরভ: যতই পাম মারো বন্ধু,,,, আমি থাকবো না এখানে,,,, বাই কালকে দেখা হবে,,,,
সৌরভ চলে গেল,,,,, রাহাত একা একা বসে আছে,,,,, শুধু তাকিয়ে আছে কেয়া আর নিঝুমের দিকে,,,,,,
নিঝুম: আপনার নাম কি কেয়া,,,,,
কেয়া: হুম,,,(ভয় পেয়ে বলল)
নিঝুম: আচ্ছা একটা কথা বলেন তো,,,, আপনার কোন জিনিসটা দেখলে বেশি রাগ হয়,,,,
কেয়া: কেন হঠাৎ এই কথা বলতেছেন,,,, কেন,,,,
নিঝুম: বলেন আপনি,,,,
.
কেয়া: আমার জিনিস কেউ,,, না বলে নিলে,,,,,
নিঝুম: গুড,,,,, আমার কিসে রাগ হয় শুনবেন না,,,,
কেয়া: হুম বলেন,,,,, কি জন্য
নিঝুম: আমার সামনে কেউ মিথ্যা কথা বললে,,,, খুব রাগ হয় আমার, মাথা ঠিক থাকেনা,,, এর আগে তো একবার,,, একজনকে গুলি করে দিয়েছিলাম ,,,, ভাগ্যিস পায়ে লেগেছিল,,,, তাই বেঁচে গেছে,,,,,
কেয়া তো নিঝুমের কথা শুনে,,,, ঢোক গিলতেছে,,,,, গলার পানি মনে হচ্ছে শুকিয়ে যাচ্ছে ওর,,,
কেয়া: কি বলেন এত রাগ আপনার,,,,,
নিঝুম: হুম,,,, আচ্ছা এখন বলেন তো,,, আপনার আর,,,, রাহাতের সম্পর্ক কত দিনের,,,,,,,
কেয়া: জি দুই বছরের,,,(তোতলিয়ে বললো,)
নিঝুম: আঙ্কেল,,,,,,,,(পুলিশদের ডাক দেয়)
কেয়া: না না ডাকেন না প্লিজ,,,, বলতেছি আমি,,,,,
নিঝুম: হুম বলেন,,,,,
কেয়া সব কথা বলে দেয়,,,, কিছুক্ষণ আগে রাহাত যা যা শিখিয়ে দিয়েছে,,,,,
কেয়া: আমাকে মাফ করে দেন প্লিজ,,,,, আমার কোন দোষ নাই,,, আমি তো ওনার অফিসের একজন কর্মচারী,,,,,
নিঝুম: আপনি যান ,,,,,, আর শুনুন,,,, যাওয়ার সময়,,, রাহাত কে এখানে আসতে বলবেন,,,,,, এখানে আমরা কি কি বললাম,,, ও যেন ভুলেও জানতে না পারে,,,,,
কেয়া: ওকে,,, ঠিক আছে,,,,
কেয়া ওখান থেকে চলে যায়,,,,,,
.
যাওয়ার সময় রাহাত। কে নিঝুমের কাছে যেতে বলে,,,,,,
রাহাত ভয়ে ভয়ে নিঝুমের কাছে যায়,,,,
নিঝুম: বসুন,,,,,
রাহাত: হুম,,,,,,(চেয়ারে বসে)
নিঝুম: আপনি দেখছি অনেক সত্যবাদী,,,,, ঠিকই বলছেন,,,, বিয়েটা ভেঙ্গে দিলাম যান,,,,,
রাহাত: সত্যি বিয়েটা ভেঙে দেবেন,,,,
নিঝুম: হুম ,,,, আজকেই ডেট ফাইনাল,,,, সাত দিনের মধ্যে আপনাকে বিয়ে করবো,,,, মিথ্যা বাদি একটা,,,,, কি মনে করছেন,,,, আমি বুঝতে পারবো না,,,,,,
রাহাত: তার মানে,,, সব জেনে গেছেন,,,,
নিঝুম: কি মনে হয় আপনার,,,, আমার দুপুরে আপনাকে সন্দেহ হয়েছিল,,, তখনি মনে হয়েছিল মিথ্যা বলতেছেন,,,,,,,
রাহাত চুপ করে আছে,,,,,,,
নিঝুম: চলেন আমার সাথে,,,,
রাহাত: কোথায়,,,,,,
.
নিঝুম: বললাম না চলেন,,,,, বিয়ের কেনাকাটা করবো,,,,,,
রাহাত: কিইইইই,,,, মাথা ঠিক আছে,,, আপনার,,,, এখন তো রাত,,,,,
নিঝুম: তো কি হইছে,,,, রাতে কি মার্কেট করা যায় না,,,,, চলেন কোন কথা নেই,,,,আর,,,,
নিঝুম রাহাতের হাত ধরে গাড়িতে বসায়,,,,,,
রাহাদ মতই নিঝুমকে দেখতেছে,,,,, ততই অবাক হয়ে যাচ্ছে,,,,,, বারবার শুধু মিথিলার কথা মনে পড়তেছে,,,,,,, ঠিক এরকমই করতো,,,, মিথিলা ওর সাথে,,,,, সব জায়গাতেই জোর করে নিয়ে যেতো,,,,,
নিঝুম নিজে গাড়ি চালিয়ে,,,,, একটা জায়গা নিয়ে এসে গাড়ি থামায়,,,,,,,
নিঝুম: নামেন,,,,,,
রাহাত: কোথায় আনলেন,,,,,,,,
নিঝুম: আগে নামেন তো,,,,,, তাহলে দেখতে পাবেন,,,,,
রাহাত গাড়ি থেকে নেমে অবাক না হয়ে পারে না,,,,
কারণ এটা সেই জায়গা,,,, যেখানে প্রতিদিন মিথিলার জন্য অপেক্ষা করতে হতো রাহাতের,,,,,,
যত রাতই হোক থাকতে হবে,,,,,,
নিঝুম: চিনেন এই জায়গা আপনি ,,,,,, আমার এখানে আসতে অনেক ভালো লাগে,,,,,, প্রতিদিন এখানে আসতাম,,,,,,,
নিঝুমের কথা শুনে রাহাত,,,,
কিছুক্ষণ নিঝুমের দিকে তাকিয়ে থাকে,,,, নিঝুম ও ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,
রাহাত: সত্যি করে বলুন তো কে আপনি
(নিঝুমের হাত ধরে বলে)
.
চলবে
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com