বৌ এর ভালোবাসা । পর্ব -০৪
দেখি দিনা একটা ছেলের সাথে হাত ধরে
কফি শপে ঢুকল ।
ছেলেটাকে পরিচিত লাগছে ।
কে হতে পারে
ছেলে টা ।
অহ্ হে মনে পরেছে সেই দিনের ছেলে
টা দিনা বলছিল ওর কাজিন হয় ।
তখনি আমি দিনা কে কল দিলাম ,
দিনা কল ধরে বললো।
দিনা:- হ্যালো
Arean আমি বাসায় একটু বিজি, পরে কথা বলি।
——আমাকে কিছু বলতে না দিয়েই
কল কেটে দিল
ওদের হাবভাব ভালো না,
তাই ওদের একটু পর আমিও
কফি শপে ঢুকলাম।
গিয়ে দেখি ভিতরে খুব
রোমান্টিক সিন চলছে।
কি দেখলাম জানেন,
দেখি একি গ্লাসে জুস খাচ্ছে দুইজনে ।
আমার আর বুঝতে বাকি নেই
.
এটা দিনার কি হয়।
আমি শুধু ভাবছি দিনা আমার
সাথে এমন টা করতে পারলো ।
যার জন্য আমি মৌ কে স্ত্রীর
অধিকার দেই নি ,, আজ সেই
দিনা আমার সাথে প্রতারণা করলো ।
তখন দিনা আমাকে দেখে ফেলল ।
আর ভয় পেয়ে যায় । আমি দিনাকে
একটা মেসেজ দেই:: ভালো থেকো ।
আর ওখান থেকে চলে আসি ।
কিছুক্ষণ পর দিনার একটা লম্বা
মেসেজ আসে ।
মেসেজ টা এরকম ছিল ।
দিনা:- আমায় ক্ষমা করে দিয় Arean ।
আমি রুদ্রকে ভালোবাসি ।
তোমার সাথে relationa
যাবার 6 মাস পর রুদ্রর সাথে
পরিচয় হয় ।তখন থেকেই
বন্ধু আর তারপর দুজনেই দুজনকে
ভালোবেসে ফেলি ।তোমাকে
অনেক আগেই জানাতে চেয়ে ছিলাম
কিন্তু জানায়নি তুমি কষ্ট পাবে + নিজের ক্ষতি করো তাই ।
এখন বলছি কারণ এখন তুমি
বিবাহিত তোমার বৌ আছে ।
.
তোমার স্ত্রীকে নিয়ে সুখে থাকো ।
পারলে এই প্রতারককে মাপ করে দিয়ো।
ফোনটা ছুঁড়ে ফেলে হাঁটতে লাগলাম ।
আকাশ টা কালো মেঘে ছেয়ে গেছে ।
মানে হয় আকাশটারও আমার
মতো অনেক কষ্ট । মুহূর্তের মধ্যেই
মুষলধারা বৃষ্টি শুরু হয় ।
আমিও বৃষ্টিতে ভিজতে লাগলাম ।
যতক্ষণ বৃষ্টি হয় ততক্ষণ।
মানে হয় মধ্যে রাত হয়ে গেছে হঠাৎ
মনে পড়ে মৌ এর কথা ।চোখের সামনে।
ভেসে উঠে ওর মায়াবী মুখ খানা ।
মেয়ে টা বাসায় একাই ।
না জানি কেমন আছে মেয়ে টা ।
তাই ছুটলাম বাসার দিকে ।
——দরজায় টোকা দেয়র
সাথে সাথে মৌ দরজা খুলে দিল ।
আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ওঠে।
যা ভেবেছিলাম তাই মেয়েটা অনেক ভয় পেয়েছে।এদিকে আমিও আর থাকতে পারলাম না
অজ্ঞান হয়ে গেলাম ।(আগেই বলে রাখি বৃষ্টিতে আমার এলার্জি।
বেশি বৃষ্টিতে ভিজলে অনেক জ্বর হয় )।
তারপর আমার আর কিছু মনে নেই ।
.
যখন জ্ঞান ফিরে তখন নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করলাম ।
তাকিয়ে দেখি মৌ এর মুখে উজ্জ্বল হয়ে হাসি ।
মানে হয় কোন না পাওয়া জিনিস পেয়ে গেলো ।চার পাশে চোখ বুলিয়ে দেখি মা-বাবাও এখানে ।
আমি:- আরে মা-বাবা তোমার কখন এলে।
মা:- আজ তিনদিন ধরে তুমি অজ্ঞান ।
আমি:- তিন দিন (একটু অবাক হয়ে)
মা:- হে তিনদিনা ।
কেন ভিজতে গেয়েছিলি বৃষ্টিতে বল।
আমাদের কষ্ট দিতে তর খুব ভালো লাগে তাই না।
(কান্না বিচলিত কন্ঠে বললো মা )
আমি:- চুপ করে আছি ।
মা:- মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখ তো কি হাল হয়েছে মেয়েটার,
না খেয়ে, না ঘুমিয়ে এই তিনটি দিন তর পাশে পরে পরে কি হাল করেছে ।
——তাকিয়ে দেখি মৌ এর চেহারা মলিন হয়ে গেছে ।চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে ।
—আমার তাকিয়ে থাকা দেখে মা -বাবা চলে গেলো।
—-আমি মৌ কে বললাম
আমি:- কি হাল করেছো নিজের চেহারার।ঠিক মতো খাওনি কেন ।
মৌ:- এমনি (কান্না মাখা কন্ঠে)
আমি:- কি হয়েছে কান্না করছো কেন ।
মৌ:- এমনি, আপনি বুঝবেন না ।
আমি:- আচ্ছা আমার বুঝার প্রয়োজন নেই ।
এখন আমার জন্য একটু খাবার নিয়ে আসো তো প্রচুর খুদা লাগছে ।
মৌ:- আপনি শুয়ে থাকেন আমি এখুনি আসছি ।
তখন খুব কষ্ট হয় যখন গল্পটা পড়ে
কিছু না বলে চলে যান,
কষ্টের কোন মূল্য না দিয়েই ।
তারপর মৌ খাবারের জন্য চলে গেলো ।
আর আমি শুয়ে শুয়ে ভাবছি মৌ কে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিবো, আর অবহেলা করবো না ।
অনেক হয়েছে আর না,
দিনা যদি ওর ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সুখে থাকতে পারে
তাহলে আমি কেন মৌ কে নিয়ে সুখে থাকতে পারবো না
.
হে আমি পারবো, আমাকে পারতেই হবে ।
আমি শুয়ে ছিলাম তখন মৌ খাবার নিয়ে রুমে ঢুকল ।
মৌ:- নিন উঠে বসেন ।
আমি:- হুম (কিন্তু শরীর দুর্বলের জন্য উঠতে পারছি না )
মৌ:- দ্বারার আমি উঠিয়ে দিচ্ছি ।
অতঃপর মৌ আমাকে উঠিয়ে বসালো ।
মৌ:- নিন এখান খাবার টা খেয়ে নিন ।
আমি:- (চুপ করে আছি)
মৌ:- কি হলো খাচ্ছেন না কেন আপনার নি খুদা লাগছে ।
আমি:- তুমি খাওয়ায় দাও ।
মৌ:- অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ।
আমি:- কি হলো এভাবে তাকিয়ে থাকবে নাকি খাওয়াবে।
তারপর মৌ আর কিছু না বলে খাওয়াতে শুরু করে
আমি খাচ্ছি আর মৌ কে দেখছি ।
সত্যি কথা হচ্ছে আমার খুদা লাগে নি।
আমার উদ্দেশ্য মৌর হতে খাওয়া
আর মৌ কে খাওয়ানো ।
তারপর আমি ওর হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে ।
আমি:- নাও হা করো।
মৌ:- (অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম)
আমি:- কী হলো নাও ।
.
মৌ:- হুম
(চোখের কোণে পানি টলমল করছে )
আমি:- আরে চোখে পানি কেন ।
তারপর মৌ কান্নাই করে দিলো।
আমি:- আরে আরে পাগলী কান্না করছো কেন ।
মৌ:- কান্না করেই চলেছে ।
আমি:- মৌ কান্না করলে না তোমার নাক
লালা টমেটোর মতো দেখা যায় ।
মৌ:- আপনি না খুব পচা শান্তিতে একটু
কাঁদতেও দিবেন না ।(হাসি মাখা কন্ঠে বললো মৌ)
খাওয়া দাওয়া শেষ করতেই মা-বাবা আসলো ।
বাবা:- তোমাদের খাওয়া দাওয়া শেষ হয়েছে।
আমি:- হে বাবা শেষ ।
বাবা:- মৌ মা তুমি খেয়েছো।
মৌ:- জি বাবা আমিও খেয়েছি।
মা:- আচ্ছা মা তুমি সব কিছু গুছিয়ে নাও
আজকে আমারা বাসায় চলে যাবো ।
.
আমি:- না আমার কালকে অফিসে যেতে হবে ।
বাবা:- তো ওখান থেকেই যাবি।
আমি:- না বাবা ওখান থেকে দেরী হয়ে যাবে ।
মা:- এখন অফিসের চিন্তা বাদ দে, আগে
কয়েকটা দিন রেস্ট নিবে তারপর অফিসে ।
মৌ:- হে মা ঠিকি বলেছে প্রথমে পুরোপুরি
সুস্থ হন তারপর অফিসের যাবেন ।
আমি:- আরে মৌ বুঝার চেষ্টা করো,
আমার চাকর থাকবে না ।
বাবা:- না থাকলে নাই, তারপরও আগে সুস্থ তারপর জব।(ধমকের সুরে)
আমি:- হুম (একটু ভয়ে)
মা:- তাহলে এখন তদের বাসাতেই চল।
——-তারপর আমার সবাই মিলে ফ্ল্যাটে চলে আসি।
বিকেল ঘরে শুয়ে আছি তখন মা- বাবা আসলো ।
মা:-Arean বাবা আমারা চলে যাচ্ছি ।
আমি:- না না মা কটা দিন থাকবে তারপর যারে।
মা:- না বাবা চলে যেতে হবে ।তুই ঠিক মতো ঔষধ খাবি।কোন রকম অনিয়ম যেনো না হয় ।
আমি:- হুম
মা:- বৌ মা তুমিও ভালো থেকো, আর এই পাগল টাকে সামলে রেখ।বড় হলে কি হবে আচরণ এখনো অবুঝের মতো ।তুমি একটু ওর পাশে থেকো মা।
মৌ:- আপনি কোন চিন্তা করবেন না মা ,আমি সব সময় ওনার পাশে আছি ।
মা:- আচ্ছা মা।আর তুই বৌ মার খেয়াল রাখবি।সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরবি ওকে ।
.
আমি:- হুম ।
তারপর মৌ মা- বাবা কে সালাম করলো মা- বাবাও আমাদের বিদায় জানিয়ে চলে গেলো।
আমি শুয়ে শুয়ে ভাবছি মৌ কে কিভাবে ভালোবাসার কথা বলবো।মানে কি দিয়ে শুরু করবো ।
আইডিয়া, প্রোপজ করবো ।
হে বৌ কে প্রোপজ করবো,
বৌ এর ভালোবাসা পাওয়ার
জন্য প্রোপজ করবো ।
আগামী মাসে মানে,
জুনের 23 তারিখে মৌ র জন্ম দিন।
ঐ দিন আমি আমার বৌ কে প্রোপজ করবো ।
এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ি।
ঘুম থেকে উঠে যা দেখলাম তাতে আমি
অবাক হয়ে গেলাম ।আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল ।
আজকে গল্প লেখার কোনো ইচ্ছে ছিলো না ।
তাও অনেক কষ্ট করে লিখলাম মনে হয় ভালো হয় নি তাও কেমন হয়েছে জানাবেন ।
.
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com