বিয়াই-বিয়াইনের খুনসুটি। পর্ব -০১
আজ আমি আমার চাচাতো ভাইয়ের সাথে মেয়ে দেখতে যাব।
আমার ভাই বিয়ে করার জন্য প্রায় ৫০+ মেয়ে দেখছে।
কিন্ত কাউকে মনেরমতো পায় নি।
দেখি আজ তার কপালে কি আছে।
আমরা মেয়ে দেখতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আমি একটা নীল পাঞ্জাবি পরছি,ভালোই সাজুকাজু করছি।
আমাই দেখে এক ভাবি বললো,
কিরে ভাই তোমার জন্য তো মেয়ে দেখতে যাচ্ছে না,তবে তুমি এত স্মার্ট হয়ে যাচ্ছো কেন?
আরে ভাবি তুমি বুঝোনা?,
ভাই যাচ্ছে ভাবি দেখতে, আর আমি যাচ্ছি বিয়াইন দেখতে।
ওএমএ!
তাই নাকি?
জি, ভাবি।
তোমার তো ছোট কোন বোন নেই।
দেখি এই ভাবির কোন ছোট বোন আছে কিনা।
থাকলেতো আমার জন্য একটু উপকার হবে।
বিয়াইনের সাথে রোমাঞ্চ করতে পারবো।
ভাবি তুমি একটু দোয়া কইরো যাতে ভাবির নিজের অথবা চাচাতো, মামাতো, খালাতো, ফুপাতো,সর্বশেষ ভাবির বান্ধুবীর একটা বোন থাকে
আমার বয়সী।
ওরে কপাল!
তাও তোমার বিয়াইন লাগবেই?
জি, ভাবি অবশ্যই লাগবে।
তুমিতো আমাকে একটা বিশাল ঠক খাওয়াইছো।
কোনোভাবেই তোমার উছিলায় একটা বিয়াইন পাইনি।
যদি এই ভাবির থেকেও একটা বিয়াইন না পাই তাহলে জীবনটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
কষ্ট, কষ্ট, অনেক কষ্ট। দোয়া করি তুমি এই ভাবির থেকে কিউট একটা বিয়াইন পাও।
চিল্লাইয়া বলো আমিন।
.
আমিন আমিন।
তো ভই দোয়া করলাম মিষ্টি দাও।
হ্যাঁ,দেওয়া উচিৎ।
দেও তাহলে।
দোয়া কবুল হোক তারপর দিব।
মনে থাকবেতো তখন?
১০১ বার মনে থাকব।
দেখা যাবে নে।
দেইখো।
৫ কেজি মিষ্টি নিয়ে রওনা হলাম আমি, ভাইয়া আর ঘটক সাহেব।
মেয়ের বাড়ি পৌঁছেই
দেখি নীল শাড়ী পরা এক অপূর্ব সুন্দরী রূপসীকে।
ভাইকে বললাম, ভাই তোমারতো কপাল খুলে গেছে। ভাবিকে তো হেব্বী লাগছে।
আরে রাখ তোর ভাবি।
মেয়ে এটা না কোনটা তার খবর নাই উনি ভাবি ভাবি করছে।
যাইহোক ভাই, আসা করি আজকে তোমার মেয়ে পছন্দ হবে এবং মেয়েও তোমাকে পছন্দ করবে।
আরা একটা কথা হলো তোমাকে জামাই জামাই লাগছে।
থাক হয়েছে, তোমাকে আর পাম দিতে হবে না।
বেশি পাম দিতে গিয়ে নাকি তুমিই আকাশে উড়ে যাও।
অসম্ভব।
এমনটা কোনোভাবেই হবে না।
আমি খুব ভালো করে পাম দিতে পারি।
তোমার এ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
তুমি বিয়ে নিয়েই চিন্তা করতে থাক।
ও তার মানে তুই আমাকে সত্যি সত্যিই পাম দিচ্ছিলি?
আরে না।ঠিক সেরকম না।
তোমাকে হলুদ পাঞ্জাবীতে ভালোই মানিয়েছে।
অনেক হয়েছে এবার থামরে ভাই।
ওকে থামলাম।
আমাদের স্বাগত জানালো মেয়ের পরিবার।
কিছুক্ষণ কথা-বার্তার পর আমাদের খেতে দিলো।
ওয়াও!
.
কত আইটেম।
খাওয়ার পর্ব শেষে,মেয়ের দাদী মেয়ে নিয়ে আসলো।
মেয়ে দেখে আমিতো অবাক!
একি, এসে দেখলাম কাকে,আর এখানে কে?
ভাবছি এসে যাকে দেখলাম সে কি আমার বিয়াইন?
বিয়াইন হলেতো কোনো কথাই নাই।
এই বাড়িতেই সুমন ভাইকে বিয়ে করাতে হবে।
ভাবি যেমনই হোক।
যাইহোক, ভাবি দেখতেছি।
ভাইকে বললাম, ভাইয়া তোমার বউকে দেখো।
ভাবি বললো, ছেলের সাথে আমার পার্সোনাল কথা আছে।
ভাবির কথা শুনে আমিতো অবাক!
জানতাম যে,পাএ সাধারণতো পাএীকে এই কথা বলে।
ঘটক সাহেব বললো, সুমন +সুমনা তোমরা পাশের রুমে যেয়ে কথা বলে আসো।
ভাইকে কানেকানে বললাম, ভাইয়া দেখো মেয়েটির সাথে তোমার কী মিল,
তুমি হলুদ রাঙের পাঞ্জাবি পরছো,ভাবি ও হলুদ রঙের শাড়ি পরছে, তোমার নাম সুমন ভাবির নাম সুমনা।
বাহ্! কি মিল।
ঔ দিক থেকে বিয়াইনের সাথে আমার তো মিল রয়েছেই।
ভাইয়া ভাবিকে একা রুমে পেয়ে আবার...... করো না।
ভাই বললো শামীম তুই তো অনেক বড় হয়ে গেছোছ, আমি বিয়ে করেই তোকে বিয়ে দিবো,
ওকে ভাই তোমার শালিকেই আমি বিয়ে করতে চাই।
বাহ্ বাহ্!!.
.
কী সখ তোমার ?
ভাবির সাথে কথা বলতে ভাই পাশের রুমে চলে গেলো।
অনেকক্ষণ কথা বলার পর চলে আসলো।
ভাইকে বললাম, ভাবি পছন্দ হয়েছে?
হ্যাঁ, হবে না ক্যান।
ভাবির হাতে ৫০০০টাকা দাও।
হ্যাঁ তাতো দিবোই,আরো বেশি দেবো।
মনে মনে খুঁজতেছি সেই নীল শাড়ি পরা মেয়েটিকে, যাকে এই বাসাই এসে ১ম দেখেছি।
হঠাৎ দেখি জানালা দিয়ে সেই মেয়েটি উকি দিচ্ছে।
তাকিয়ে রয়েছি মেয়েটির দিকে।
আমায় দেখে মেয়েটি তার মিষ্টি মুখে একটা মুচকি হাসি দিল।
আমিতো ফিদা হয়ে গেলাম।
চোখ মারলাম তাকে।
বিয়াইন ও চোখ মারলো।
বুকের ভিতর ঝড় শুরু হয়ে গেল।
ভাই দেখে বললো কিরে ভাই সামথিং সামথিং মনে হচ্ছে।
যাইহোক, বাসায় চলে আসলাম।
উভয় পরিবার রাজি হওয়াতে এই মেয়ে সাথেই ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হলো।
আজ গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান।
মনে মনে ভাবছি বিয়াইনের সাথে আজ অনেক রোমাঞ্চ করবো।
মেয়ের বাড়ির অতিথিরা আমাদের গ্রহণ করার জন্য গেঁটে দাড়িয়ে আছে............
.
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com