Breaking News

অনেক কষ্টের একটা গল্প



সারা মাস কষ্ট করে টিউশনি করে আজ বাজার থেকে ভালো মন্দ কিছু কিনে এনে মেঝেতে
বসে খাচ্ছি?হঠাৎ পিছন থেকে কেউ সজোরে লাত্তি মারে।যার কারনে আমি খাবার গুলোর
উপরেই পরে যাই?মেঝে থেকে উঠে পিছনে ফিরতেই, ঠাশঠাশঠাশঠাশ করে আমার গালে থাপ্পর পরে,
ছোট লোক কুত্তার বাচ্চা,আমার বোন বিষ খেয়ে হাসপাতালে মরতে বসেছে,
আর তুই এখানে আরামে আরামে খাবার গিলছিস??
কথা বলার শক্তিই যেনো আমি আর খুঁজে পাচ্ছি না?
পিঠ আর গালে প্রচুর যন্ত্রনা হচ্ছে।
এই অবস্থায়ই সে আমাকে টেনেটুনে ম্যাস থেকে
বের করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
আমার সামনেই বেডে সুয়ে আছে আরিহা।
কি নির্মম অবস্থায় না করেছে নিজের।
মেয়েটা আমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসতো।
তা জেনে ও আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি।
কখনো ভাবিনি যে আরিহা এতোটা আঘাত
পাবে? যার কারনে এমন একটা যঘন্য কাজ

করে ফেলবে।কিন্তু আমি যে খুব গরিব ঘরের
সন্তান।যেখানে আরিহা কোটিপোটি ঘরের
মেয়ে।আমাকে দেখতে পেয়ে আরিহা করুন
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, হয়তো বলতে চাচ্ছে তোকে
খুব ভালোবাসিরে। আমি মাথা নিচু করে নিচের
দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছি।হঠাৎ আরিহার
ভাই আবার বলে উঠলো
আমার বোনের যদি কিছু হয়ে যেতো তাহলে তোকে আমি খুন করে ফেলতাম ছোট লোকের বাচ্চা।
কথাটা বলের সাথে সাথে হাতটা উপরে তুলে আমাকে মারার জন্য কিন্তু আরিহার
ইশারায় থেমে যায়।আরিহার ভাই আমাকে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বলল,
আমার বোন তোকে ডাকছে যা...
আমি আরিহার কাছে গেলেই সে আমার
হাতটা শক্ত করে ধরে তার পাশে বসিয়ে
আস্তে আস্তে বলল, আজ এখানে এই মুহুর্তে তোমার
আর আমার বিয়ে হবে???
আরিহার কথা শুনে আমার শরীরে যেনো
কারেন্ট প্রবাহিত হয়ে সক্ট লাগতে শুরু করলো।
আমি উঠে চলে যেতে যাবো কিন্তু পারছি না,
তার কারন আরিহা তার সমস্ত শক্তি দিয়ে আমার
হাতটা ধরে রেখেছে।কিছুক্ষন পর দেখলাম আরিহার
ভাইয়া কাজি নিয়ে আসলো।অবশেষে জোরজবর্দস্তি
ও ভয় দেখানোর ফলে বিয়েটা করতে বাধ্য হলাম।
তারপর আমাকে হাসপাতাল থেকে আরিহাদের
বাসায় নিয়ে এসে একটা রুমে বন্ধি করে রাখা
হলো যাতে কোথাও আমি পালিয়ে না যেতে পারি।
রুমের চারোদিকে দামি দামি আসবাবপত্র দিয়ে
ভরা,হঠাৎ আমার বাবার কথা মনে পড়ে গেলো,
আজকে একটি বারের জন্যেও বাবার সাথে কথা
হয়নি।বাবা ছাড়া এ ভুবনে আমার আর কেহ নেই,
মা সেই কবেই চিরোনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন।.

বাবার জন্য মনটা আমার ছটফট করছে,তাই
আর দেরি না করে পকেট থেকে একশত বিশ টাকা
দিয়ে কেনা মোবাইলটা বের করলাম।দামি ফোন
কিনার সামার্থ কি আর আমার আছে।
আস্চার্য বেপার বাবার ফোন বন্ধ কেনো সেটাই
মাথার ভিতরে ঠিক মতো ডুকছেনা।আবার
বাবার কিছু হয়ে গেলো না তো,নানান টেনশনে
মাথার সব ফাকা জায়গা ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
কিছুতেই টেনশন মুক্ত হতে পারছি না।

যতই টেনশন মুক্ত হতে চাচ্ছি ততোই দ্বিগুন
আকারে টেনশন আমাকে ঘিরে ধরেছে।
প্রায় রাত দশটার সময় কেউ এসে রুমের দড়জা
খুলে দেয়,দড়জা খোলার সাথে সাথে আমি দৌড়
লাগায়।যখন আমি বাসার বাহিরে চলে যেতে যাবো
সেই মুহূর্তে আমার চোখের দৃষ্টি চলে যায় সোফায়
বসে থাকা লোকটার উপর, সেই লোকটি আর কেউ
নয় আমার বাবাই।সোফায় বসে আরিহার ভাইয়ার
সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।কিন্তু বাবা এখানে কি
করছে।বাবা আমাকে দেখতে পেয়ে তার কাছে
ডাকলো,আমি বাবার কাছে যাওয়ার সাথে সাথে
বাবা বললেন, কিরে বাজান কই যাইতাছিলি।
বাবার কথার উত্তরে আমি বললাম, বাবা আগে
তুমি বলো তুমি এখানে কেনো?

হঠাৎ আরিহার ভাইয়া বললো,
তোমার বাবাকে আমি নিয়ে এসেছি??
তারপর আমার বাবা আবার বললেন
হরে বাজান এরাই মোরে গ্রাম তোনে নিয়া
আইন্না সব কিছু খুইলা কইছে।আসলেই বাজান
তোর মাইটারে কষ্ট দেয়া উচিত হয় নায় বাজান??
কিন্তু বাবা.........

আর কিন্তু কিন্তু করা লাগবো না? যা হওয়ার হয়ছে??
-আমি একেবারে চুপছে গেলাম।কি আর বলবো
,বলার মতো কিছুই খুজে পাচ্ছিনা? আর কিছু বলে
ও হয়তো কোনো লাভ হবেনা।
রাত ১১ টা আমি আরিহার রুমে বসে আছি?
বসে আছি মানে বিছানায় নয় ফ্লোরে তার কারন
এতো দামি বিছানায় বসার অভ্যাস যে আমার নেই।
কিছুক্ষণ পর আরিহা বউ সেজে রুমে প্রবেশ করে,
আমাকে ফ্লোরে বসে থাকতে দেখে রাগি
দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
এই তুমি ফ্লোরে বসে আছো কেনো???
না মানে এতো দামি বিছানায় বসার আভ্যাস যে আমার নেই??
---- চুপচাপ বিছানায় গিয়ে বস না হলে থাপ্পর
মেরে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলবো??
আরিহার ধমক শুনে আমি চুপচাপ বিছানার এক পাশে গিয়ে চুপটি করে বসে পড়লাম??
কারন এই মেয়েকে খুব ভালো করেই জানি রাগে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে?আরিহা আস্তে আস্তে
আমার দিকে এগোতে লাগলে আমি বললাম, প্লিজ আমার কাছে আসবেন না আমি এসবের
জন্য অপ্রস্তুত,আমাকে কিছুটা সময় দিন??
শুন আমার শরীর এমনিতেই খুব দুর্বল তাই আমি যা যা বলছি তাই তাই কর?
জী কি করতে হবে??
প্রথমে আমাকে জড়িয়ে ধর
না আমি এমনটা পারবোনা??
ঠাশঠাশ ঠাশঠাশ??
না বলতে দেরি হলেও আরিহার হাতের
থাপ্পর খেতে দেরি হয়নি?? তার শরীর বলে দুর্বল,
থাপ্পর খেয়ে আমার গালটা প্রায় যায় যায় অবস্থা।
এখনো কি জড়িয়ে ধরবি না???
এইতো ধরছি,তারপর বাধ্য হয়ে আরিহাকে
জড়িয়ে দরলাম??
সোনা বেশি ব্যাথা পেয়েছো??একটু আদর
করে দিবো।
নিজেই ব্যাথা দিয়ে এখন আবার ভালোবাসা
দেখাচ্ছে???(মনে মনে)
কিছু বলছোনা যে??
আচ্ছা আমাকে যে বিয়ে করলেন? আমি আপনাকে খাওয়াবো কি??
তোমার খাওয়াতে হবেনা বুঝেছো???
আর কালকের দিনটার পর থেকে তুমিই আমাদের
কম্পানির বসের চেয়ারে বসবে কেমন?? আর না
শব্দটা কিন্তু একদমি মুখ থেকে বের করনা??
তাহলে কিন্তু তোমার গাল লালে লাল হয়ে যাবে??
""""' আমি কিছুই বলছিনা চুপচাপ সুয়ে আছি??
পরের দিন বাবা সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে
গ্রামে চলে যায়?? আরিহার ভাইয়া বারবার
বাবাকে বলেছিলো এখানে থাকতে কিন্তু বাবার নাকি
গ্রামে থাকতেই ভালো লাগে।দুপুরে খাবার খাচ্ছি
তখন আরিহার ভাইয়া আমাকে বলল,,.

দেখো শাহরিয়ার, বাবা মা অনেক আগেই
মারা যায়,তারপর থেকে অনেক আদর যত্নে আমার ছোট বোনটাকে বড় করেছি??
তাই কখনো কোনো সময় কোনো রকম আরিহাকে কষ্ট দিয়ো না??
উত্তরে আমি কিছুই বললাম না, কারন
আরিহাকে নিয়ে আমার মনে কোনো রকম
ফিলিংস বা ভালোবাসা নেই???
রাতে জানালার গিরিল ধরে দাড়িয়ে আছি সেই
সময় পিছন থেকে আরিহা এসে জড়িয়ে ধরে
আমার গারে চুমু দেয়?যতোবার বলেছি আমি এসবের জন্য মোটেও প্রস্তুতনা ততোবারেই
আমাকে আরিহার হাতের থাপ্পর খেতে হয়েছে,
তাই কিছু বলতে চাইলেও বলতে পারি না??
পরের দিন সকালে আরিহার ভাইয়ার সাথে
তাদের অফিসে যাই,সত্যিই খুব বড় আরিহাদের
কম্পানিটা?? আজ আমার প্রথম দিন তো তাই
সবার সাথে পরিচয় ও অফিসটা ভালোভাবে ঘুরে
বাসায় চলে আাসার সময় আমার সবচেয়ে ভালো
বান্ধবী মেঘলার সাথে দেখা হয়??সে ও খুব
বড়লোক ঘরের মেয়ে, আমার সব বিপদে পাশে
থেকে আমাকে সাহায্য করতো,,
কিরে শাহরিয়ার, অনেকদিন পরে তোকে
দেখলাম,তোকে ফোনেও পাচ্ছিলামনা যে,তা কি
হয়েছে তোর?

.তারপর আমি মেঘাকে সব খুলে বললে সে
কাদতে লাগলো,বুঝলামনা সে কাদছে কেনো??
আমি হাল্কা ভাবে মেঘার হাত ধরে বললাম,
কিরে কাদছিস কেনো।কিন্তু মেঘা জাটকা মেরে
হাত ছাড়িয়ে নিয়ে কাদতে কাদতে চলে যায়।
আমি কিছুক্ষণ সেখানে দাড়িয়ে থেকে বাসায়
এসে দেখি আরিহার ভাইয়া দড়জার সামনে
দাঁড়িয়ে আছে,আমাকে দেখতে পেয়েই,আমার
গালে কোষে একের পর এক থাপ্পর বসিয়ে দেয়।

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com