ভালবাসার প্রথম ছোঁয়া । পর্ব -৩১
এবার এমন কিছু করবো ঐ মেয়ের যার পরে অভি কেনো ওর সারা খান্দান মিলে খুজলেও ওকে খুজে পাবে না। তুমি নেহাকে বলে দিও বউ সেজে রেডি থাকতে, আমি ওকে এই বাড়ির বউ বানিয়েই ছাড়বো।
— আপি তুমি যা করতে চাচ্ছো তা করতে পারবে তো,,
আমার মেয়েটা যখন থেকে এই বাড়ি থেকে গিয়েছে তখন থেকেই কারো সাথে ঠিক মতো কথা বলে না,
আমার এসব দেখে খুব কষ্ট লাগে আপি।
— সামিয়া বোন আমার তুই নেহাকে নিয়ে ভাবিসনা,
নেহা আমার মেয়ে ওকে আমি বউ করে নিয়ে আসবই।
আমি একটা জিনিস বুঝতে পারছি না তালাল এই বিয়েতে আগে কোন মত ছিল না,
এখন ঐ মেয়ে ছাড়া কিছু বুঝে না , সেই প্রথম বউ হিসেবে মেনে নেয়নি তাকে,,
কি এমন যাদু করছে যে এখন তালাল সব সময় ঐ মেয়ের গুণগান গায়,
আর সারিম সেও অনু ছাড়া কিছু বুঝে না,,
এক আমিই রয়ে গেলাম যাকে ওরা কেউ কিছু মনে করেনা,
আমি এই দুজনের মা এটাও যেনো ওরা ভুলে গেছে ।
— আপি তুমি জানোনা আজকালের মেয়েরা অনেক চালাক হয়, ওরা কাকে হাত করলে কি হবে এসব বাড়িতে পা রেখেই বুঝে যায়। তুমি জলদি কিছু না করলে তোমার এই বাড়িতে কোন মূল্য থাকবে না।
— আমি এটা হতে দেবো না, আমার ছেলেরা আমার পাশেই থাকবে, আমি ঐ মেয়েকে খুব জলদি কিছু করতে হবে।
আচ্ছা আপি আমি এখন যাই,
দেরি হলে নেহা আবার মনে করবে আমি এখানে চলে এসেছি,,,,
আচ্ছা ঠিক আছে যাও,
বাসায় গিয়ে নেহার সাথে আমার কথা বলাইও।
আচ্ছা ঠিক আছে।
.
— রাত প্রায় ১২ টা বেজে গেছে, অভি খাটের এক পাশে শুয়ে আছে,
ওর চোখে ততো সময় ঘুম আসেনা যতো সময় অনু না ঘুমায়,,,
ওরা দুজন এক বিছানায় ঘুমালেও অভি আজ পর্যন্ত অনুর গায়ে টাস করেনি,
কারণ অনু যে আজাব থেকে এসেছে সেই আজাবের ভয় কাটার আগেই যদি অভির হাতের
স্পর্শে সেই ভয় জেগে যায় আর এখান থেকে যদি পালিয়ে যায় সেই ভয়ে কখনো টাস করে দেখেনি।
অনেক্ক্ষণ ধরে অভি শুয়ে দেখছে অনু আয়নার সামনে নিজেকে সাজিয়ে তুলছে,
আর বার বার অভির দিকে তাকাচ্ছে।
অভি ওঠে অনুর পিছে গিয়ে দাড়ায়,,
.
আজ অনুকে অনেক সুন্দর লাগছে, অভির মনে অনুর স্পর্শ পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠে,,
অভিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অনু একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে অভির হাত
টেনে নিজের পিঠের সাথে লাগিয়ে দাড় করায়,,
অনু বসে আছে আর অভি দাঁড়িয়ে দুজন আয়নায় দুজনকেই দেখছে।
দুজন দুজনের চোখের গভীরে যেনো দুজন হারিয়ে যায়,,
অনু অভির দুই হাত টেনে বুকের মাঝে চেপে মুখটা ওপরে অভির দিকে করে চোখের জল ছেড়ে দেয়।
অভি আর দেরি না করে অনুকে কোলে তুলে আয়নার সামনে
থেকে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিয়ে আস্তে করে ঠোঁট দুটি অনুর কপালে রাখে,
অনু চোখ বন্ধ করে হাত দুটি ছড়িয়ে দেয়।
অনুর অনুমতি পেয়ে ওর গালে কিস দিয়ে ঠোঁটের ভেতর ঠোট ঢুকিয়ে দুজন
এক অজানা অনুভূতির সাগরে ডুবে যায়, অনু দুই হাত দিয়ে
অভির শরীরের পুরা কাপড় খুলে নিজের ওপর চাপিয়ে নক দিয়ে অভির পিঠে দাগ বসিয়ে দিচ্ছে।
.
অভি নিজেকে আরো এগিয়ে নিয়ে অনুর কানে জিব দিয়ে শুরশুরি দিয়ে পাগল করে দেয়,
কানে গলায় বুকে পেটের ওপর নাভীতে ওর ভালবাসার স্পর্শ পেতেই অনুর মুখ থেকে সুখের আওয়াজ বের হতে থাকে, অনু অভির চুল শক্ত করে মুঠির ভেতর নিয়ে নিজের ওপর আরো জোরে চেপে নেয়।
রাত তখন দুটো বাজে দুজনেই নগ্ন শুয়ে আছে একে ওপরের ওপর,,,
অভি অনুর কপালে চুমু খেয়ে গায়ে কিছু লাগিয়ে অনুকে বাহিরে সুইমিং পুলের ওপর নিয়ে বসায়, দুজনের পা পানিতে দিয়ে অনুকে অভির হাত দিয়ে নিজের সাথে লাগিয়ে আবারও দুজনে দুজনের ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে অজানা সেই সুখের সন্ধানে হারিয়ে যায়।
চাদের ঠান্ডা আলো তাদের ওপর এসে পরছে,, পানির নিচে দুজন দুজনের পা দিয়ে চেপে ধরে।
অনু ঠোট বের করে অভির গালে মুখে কপালে পাগলের মতো কিস করতে থাকে, আস্তে আস্তে মুখের ওপর থেকে নিচে গলায় কিস করে বুকের উপর থেকে শার্টের বাটন টান মেরে ছিড়ে বুকের বাম পাশে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়,,
অভি ওহহ বলে চিৎকার দিতেই অনু নিজের মুখ অভির মুখে লাগিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়।
অনু ওঠে অভির কোলে বসে দুই পা দিয়ে কোমড়ে আকড়ে ধরে অভির কাধে দুই হাত রেখে অভির দিকে এক ধ্যায়ানে চেয়ে আছে।
.
— কি হয়েছে অনু, তুমি এভাবে চেয়ে আছো কেন,,,
আমি জানিনা আজ কেনো যেনো তোমাকে অনেক
অনেক বেশি ভালবাসতে মন চাচ্ছে,, আমি কখনো ভাবিনি আমার জীবনটা এতো সুন্দর হয়ে যাবে,
হয়তো ঐ এক্সিডেন্ট ওটা একটা অচিলা মাত্র তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসার।
আমি ওখানে যদি না যেতাম তুমিও ওখানে যেতে না আর আমিও তোমাকে পেতাম না।
ওখানে যাওয়ার পর তুমি ঐ বিপদ থেকে উদ্ধার করলে, তারপর আমাকে এতো বড় বাড়িতে এতো বড় সম্মান দিয়ে নিয়ে আসলে,, আমার মা বাবার সাথে আমার দেখা করালে।
এতো কিছুর বিনিময়ে আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারছি না, আমাকে মন ভরে ভালবাসতে দাও, আমি তোমাকে অনেক অনেক বেশি ভালবাসতে চাই।
অনু এক শ্বাসে বলে আবার শ্বাস নিয়ে অভির একদম মুখের সামনে অনুর মুখ নিয়ে এসে বলে — তুমি ঠিকই বলেছো, দুনিয়ার সব পুরুষ অভির মতো হয়না,, আমি আজ মন থেকে বলছি আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি আজ জোরে জোরে বলতে ইচ্ছে করছে আই লাভ ইউ অভি।
, আমার এই দেহ মন, আমার অতীত বর্তমান ভবিষ্যত সব তোমার,, আমি নিজেকে তোমার হাতে সপে দিলাম। আমার বাচা মরা এখন সব তোমার হাতে।
অনু কথা গুলা বলতে বলতে চোখের পানি ছেড়ে দেয়।
অভি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে অনুর গণ চুলের ভেতর হাত ডুকিয়ে আরো কাছে নিয়ে এসে মাথায় চুমু দিয়ে বলে — আই লাভ ইউ মাই ওয়াইফ।
.
অনু হাসি দিয়ে হাতটা বুকের সেই কামড়ের উপর আনতেই অভি বলে তুমি এখন বলো আমার বুকে এতো জোরে কামড় মারলে কেন,,,
— এখন থেকে এই জায়গাটা আমার তাই আমি চাইনা এখানে কেউ আসুক এই জন্য কামড়ের দাগ বসিয়ে দিলাম যেনো কেউ এটা দেখে সাথে সাথে বুঝে যায় তোমার এখানে আমার বসবাস।
— ওহ মাই গড তোমার তো দেখি অনেক বুদ্ধিও আছে দেখি,, তবে একটা কথা শুনে রাখো আমার বুকের বাম পাশে তুমি ছাড়া আর কারো বসবাস হতেই দেব না,, তুমি তো আজ তোমার মনে জায়গা দিয়েছো আর আমি সেই প্রথম দিনেই তোমরা নামে এই জায়গাটা দিয়ে দিয়েছি।
অনু অভিকে আবার শক্ত করে ধরে কিস করতে থাকে, এক পর্যায়ে দুজন পানিতে পড়ে যায়,, দুজন দুজনকে গোসল করিয়ে, অভি অনুকে কোলে করে রুমে নিয়ে এসে আয়নার সামনে বসিয়ে নিজের হাতে সাজিয়ে দেয়।
সাজানোর পর অনুকে দুই হাতে ধরে মন ভরে দেখে।
রাত চারটা বেজে যায়, অনুকে বুকের উপর শুইয়ে দিয়ে অভি চুপ হয়ে কি যেনো ভাবতে থাকে।
–; অভি হঠাৎ চুপ হয়ে গেলে কেন, ঘুমিয়ে গিয়েছো নাকি?
— ঘুম আসছে না,, আমার মনে হঠাৎ কেমন জানি একটা আজব ভয় এসে জন্ম নেয়।
— কি এমন ভয় হচ্ছে,, সবকিছু তো ঠিকই চলছে,, আব্বু ভালো আছে, সারিমেরও বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,, আম্মুও তো ভালোই চলছে তাহলে আর কিসের ভয়।
.
— জানিনা কিসের ভয় তবে আমার মন বলছে কিছু একটা অঘটন ঘটতে চলেছে।
অভির কথায় অনুর হাত অভির বুকের ফশমে বিনি কাটতে থাকা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
— কেন এমন মনে হচ্ছে অভি,, তুমি টেনশন কইরো না এসব নিয়ে, এখন তো আমাদের জীবন সুখ আর সুখই থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আম্মু সারিমের পছন্দ একসেপ্ট করে নিয়েছে।
— আম্মু সবকিছু একসেপ্ট করে নেয় কিন্তু তোমাকে এক্সেপ্ট করতে পারছে না।
— তুমি টেনশন করো না, আমাকেও এক্সেপ্ট করে নেবে আস্তে আস্তে, তুমি যে আছো আমার পাশে।
ওর কথায় অভির হাসি আরো গভীর হয়ে যায়,,
— অনু তুমি আমাকে কখনো ছেড়ে তো যাবে না,,,
— কি হয়ে গেছে আজ তোমার, তুমি এসব কি বলছো আজ,,,
— বুঝতে পারছি না অনু, আমার কেন যেনো মনে হচ্ছে কিছু একটা হবেই,, আমার ডান চোখটা বার বার আমাকে বিপদের সংকেত দিচ্ছে।
.
— তোমার ডান চোখের আর কোন কাম নাই নাকি, আমি যে সামনে আছি এটা কি দেখতে পাচ্ছে না নাকি। এখন এসব ফাল্তু ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো,
আর শুনো আমাদের দুজনকে আর কেউ আলাদা করতে পারবে না বুঝছে,, এখন সবকিছু ঠিক আছে।
— অনু তুমি তোমার খেয়াল রাখবে, আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। ( অভি অনুর মুখের ওপর থেকে চুল গুলা সরিয়ে দিয়ে বলছে)
— কি হয়েছে অভি তোমার, আগে তো কখনো তুমি এমন কথা বলোনি।
ওর কথায় অভি হেসে দেয়, অনু ওর হাসিতে হারিয়ে যায়।
— আজকের আগে তুমি তো আমাকে কখনো ভালবাসি এই কথাটিও বলনি, তোমার মুখ থেকে এই কথাটি শুনার জন্য কতো কষ্টই না করেছি আমি।
আমি জানি অনু আমার মুখের হাসি অনেক সুন্দর, তুমি এভাবে আমাকে দেখো না আমার কেমন কেমন লাগে,,, তুমি এভাবে দেখলে আমার কলেজের কথা মনে হয়ে যায়, হায় কতো মেয়ে আমার এই হাসি দেখার জন্য আমার পিছে পিছে ঘুরেছে।
.
ওর কথায় অনু ওর বুকে আবারও কামড় মেরে বসে,,,
অভি একটু হাসি দিয়ে নড়ে উঠে বলে তুমি জানো অনু একটি মেয়ে তো আমার জন্য একেবারে পাগল ছিলো, কি যেন নাম তার হা মনে হয়েছে লাইভা তার নাম, ওর চোখ দুটি নীল ছিলো,।
অনু ওর বুকের উপর থেকে ওঠে অভিকে ধাক্কা দিয়ে এক সাইট করে বলে, তুমি এতো রাতে আমাকে বুকে নিয়ে অন্য মেয়ের তারিফ করছো, যাও রুম থেকে বের হয়ে যাও, আমি একা ঘুমাতে পারবো।
অনুর কথায় অভি হাসি দিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে, কি সুন্দর কাগছে তাকে এই রাগি চেহারায়।
অভি অনুকে আবারও টেনে বুকে নিয়ে বলে, সরি অনু আমি তো ফান করছি, তুমি ছাড়া কে আছে আমার বলো।
এভাবে দুজন রাত জাগে আর সকালের দিকে ঘুমিয়ে যায়।।
।
পরদিন সকালে অভির কাছে সিংগাপুরের বিষয়ে আবারও মিটিং এর খবর আসে এটা তার অফিসে আর ওদের এক অফিস আছে সেখানে বলে,,, এটা বলার জন্য অভি বাবার কাছে গিয়ে বলে।
— আব্বু আজ সিংগাপুর থেকে ডেলিগেশন আসছে আজ ৮ টার সময় মিটিং আছে তুমি আসবে তো আব্বু।
সারা নাস্তার টেবিলে বসে কান খাড়া করে শুনছে।
তালালও নাস্তা করছিলো সেখান থেকেই বলে কোথায় এই মিটিং,,
— প্রথমে অফিসে তারপর যেতে হবে ওদের সাথে ওদের অফিসে।
— এটা তোমার কাজ তাই তুমিই যাও,,,
— আব্বু তুমি সাথে গেলে ভালো হতো,,,
.
— অভি আমি সব সময় তোমার সাথে সব জায়গায় যেতে পারবো না, এগুলা তোমার বিজনেস তাই তুমিই কাবার করতে হবে, আমি জানি তুমি আগের মতো এটাও ম্যানেজ করে নেবে।
সারা জুস খেতে খেতে অভির সাথে দাড়ানো অনুকে দেখে,
ভাগ্য ওনাকে আরেকটা সুযোগ দিচ্ছে অনুকে তাড়ানোর,
এই সুযোগ ওনি কোন ভাবেই হাত ছাড়া করতে চায় না।
সারা এবার মুখ খুলে বলে, — অভি তুমি কি তাহলে আজ রাতের খাবার আমাদের সাথে খাবে না,,,
— আজ আসতে পারবো না আম্মু, ডিনার আমাকে ওদের সাথেই করতে হবে।
এবার সারা অভির কথায় মুচকি হেসে মাথা নাড়ে।
অভি চলে যায় মিটিং এ,,,
বিকেল বেলা সারা ব্যাগ নিয়ে বাহিরে যাওয়ার জন্য রেডি হয়,,
ইলেকশনের পর তালাল ওনার কাজে বিজি হয়ে যায়,,
সারিম কোথায় যেনো চলে গেছে, এই সময় বাসায় শুধু অনু একা,,,
সারা বেগম হিল পায়ে দিয়ে টিক টিক করে অনুর রুমে এসে বলে —
ফ্রী আছো, যদি ফ্রী থাকো তাহলে আমার সাথে একটু শপিংমল এ চলো না,
আমি রুবির জন্য শপিং করবো কিন্তু আমার তো কোন কিছু চয়েজ হয়না,
তোমার তো বান্ধবী রুবি তাই হয়তো তোমার পছন্দ ওর পছন্দ এক হতে পারে।
চলোনা আমার সাথে মার্কেট থেকে ঘুরে আসি………….
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com