Breaking News

ডেন্জারাস মেয়ে । পর্ব -০৫

 


কিছুক্ষন পরে একটা ছেলে এসে আমাকে পান্জাবি পাজামা দিয়ে বললো...

--জামাই বাবু এগুলো আপনার বিয়ের পোশাক তাড়াতাড়ি এগুলো পরে রেডি হয়ে যান
কিছুক্ষনের মধ্যে কাজী সাহেব চলে আসবেন।
আমিঃ- তোর পোশাকের মাথায় ঠাডা পড়ুক সালা।
বের 'হ' আমার রুম থেকে। (রাগ দেখিয়ে)
.
আমি চুপচাপ রুমের ভিতরে বসে আছি। কি করবো মাথায় কিছু আসছে না।
চার দেওয়ালের মাঝে আমি এখন বন্দি।
এমন সময় আব্বু রুমের ভিতরে এসে..
আব্বুঃ- কি হলো সুমন তুমি এখনো রেডি না হয়ে বসে আছো?
তাড়াতাড়ি পোশাক পরে নাও কাজী সাহেব চলে এসেছে।
আমিঃ- আব্বু তোমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে এখনো সময় আছে।
ভালো করে সব কিছু ভেবে চিন্তা করে দেখো।
আব্বুঃ- এতো কিছু ভাবার সময় নেই। মেয়েতো পছন্দ হয়ে গেছে।
.
কিছুক্ষন পরে সবাই জোর জবরদস্তি করে আমার মুখ দিয়ে তিন বার কবুল বলিয়ে নিলো।
মনে মনে ভেবে বসলাম বাসায় গিয়ে বাসর ঘরে না ঢুকে সোজা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবো
তবুও এই মেয়ের সাথে আমি সংসার করবো না।
বিয়ে শেষে বাসায় অাসার সময়..
জুলির আব্বুঃ- আমার একমাত্র আদরের মেয়ে কে আজ আপনাদের হাতে তুলে দিলাম দেখে শুনে রাখবেন।
আমার মেয়েকে কখনো যেনো কষ্ট দিয়েন না।
আম্মুঃ- আপনি একদম চিন্তা করবেন না বিয়াই সাব আপনার মেয়েকে নিজের মেয়ের মতো করে রাখবো।
আমি কিছু না বলে চুপচাপ বোবার মতো কথা শুনে যাচ্ছি।
আম্মুঃ- বিয়ে তো হয়ে গেলো তাহলে আজকে আমরা আসি।
জুলির আব্বুঃ- এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবেন?
আম্মুঃ- অাত্নীয় যখন হয়ে গেছেন তখন আর কি? যখন মন চাইবে তখনি চলে আসবো।
জুলির আব্বুঃ- আচ্ছা ঠিক আছে।
.
তারপরে জুলিদের বাসা থেকে আমাদের বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় আসতেই আমার যেই ভাবনা সেই কাজ রুম থেকে বেরিয়ে সোজা গেটের দিকে দিলাম দৌঁড়..
এমন সময় পিছন থেকে...
আব্বুঃ- সুমন তুই এভাবে কোথায় যাচ্ছিস? আগে রুমের ভিতরে যা।
আমিঃ- না মানে আব্বু এই তো কোথাও যাচ্ছি না। (নরম সুরে)
বাধ্য ছেলের মতো আব্বুর কথা মতো রুমের দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
দুররররর পালিয়ে যাওয়া আর হলো না।
রুমে ঢুকে দেখি জুলি ইয়া বড়ো একটা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।
আমি রুমে ঢুকতেই জুলি উঠে এসে আমার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে যাবে
আমি এমন সময় পা সরিয়ে নিয়ে বললাম..
আমিঃ- এসব ঢং আপনার করা লাগবে না।
আমি আপনাকে আমার স্ত্রী হিসেবে মানি না আর কখনো মানবোও না।
এখন আমার সামনে থেকে সরে দাড়ান। আমার খুব ঘুম পেয়েছে ঘুমাবো।
জুলি আমার সামনে থেকে সরে গেলো।
এবং আমার পিছু পিছু এসে খাটের উপরে বসলো।
আমিঃ- কি ব্যাপার আপনি খাটের উপরে কেন বসছেন?
জুলিঃ- তাহলে কি করবো? (ভারি কন্ঠে)
আমিঃ- কি করবেন মানে আপনি সোফায় গিয়ে নয়তো ফ্লোরে গিয়ে ঘুমান।
আমার সাথে ঘুমানোর চেষ্টা একদম করবেন না।
জুলিঃ- ফ্লোরে ঘুমাবো মানে! এই শীতে ফ্লোরে ঘুমানো যায় নাকি?
আমিঃ- যদি ফ্লোরে ঘুমাতে না পারেন তাহলে সোফায় অথবা দাঁড়িয়ে ঘুমান যতো সব।
জুলি কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো।
আমিঃ- এভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে যেটা বললাম সেটা করেন।
জুলি কিছু না বলে সোফায় গিয়ে বসে বসে কান্না করতে লাগলো।।
আমিঃ- আপনি কান্না করেন আর যাই করেন যেনো কোন শব্দ না হয়।
আমার ঘুমের মাঝে কেউ ডিস্টার্ব করলে সেটা একদম সহ্য করতে পারিনা।
এই বলে আমি জুলির গায়ে একটা কোম্বল ছুঁড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
অনেক রাতে ঘুমের মাঝে মনে হলো কেউ যেনো কান্না করতেছে।
আমি উঠে দেখি জুলি সোফায় বসে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে।
আমিঃ- কি সমস্যা আপনার? এতো রাতে না ঘুমিয়ে কেন কান্না করছেন?
জুলিঃ- সেটা তোমাকে জানা লাগবে না। (কান্না কন্ঠে)
আমিঃ- আমি না আপনাকে বললাম কেউ ঘুমের মাঝে আমাকে ডিস্টার্ব করলে
সেটা একদম সহ্য করতে পারিনা। কান্না না করে যান ঘুমিয়ে পড়ুন। (রাগ দেখিয়ে)
এই কথা বলতেই জুলি চুপচাপ সোফার উপরে শুয়ে পড়লো।
আমিও সেই সাথে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
পরের দিন..
সকালে আমি গভীর ঘুমে বিভোর এমন সময় কে যেনো আমার গায়ে হাত দিয়ে ডাকতেছে।
আমি চোখ খুলতেই...
জুলিঃ- সকাল হয়ে গেছে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আব্বু-আম্মু খাবার টেবিলে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমিঃ- আচ্ছা আসছি আপনি এখন যান।
তারপরে আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে খাওয়ার টেবিলে বসলাম।
জুলি আমার সামনে গিয়ে বসলো।
খাওয়ার সময় আম্মু জুলিকে বলতেছে..
আম্মুঃ- এটা একটু নাও ওটা অারেকটু নাও..
এসব দেখে আমি রেগে গিলে বললাম..
আমিঃ- এতো জোর করে খাবার দেওয়ার কি আছে পেটে ক্ষুধা লাগলে এমনিতেই খেয়ে নিবে।
আম্মুঃ- তোর কি কোন কান্ড জ্ঞান নেই খাওয়ার সময় কি এসব কথা বলতে হয়?
আমার কথা শুনে আব্বুও আমার দিকে রাগ দেখিয়ে চোখ বড় করে তাকালো।
আমি মাথা নিচু করে খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসলাম।
জুলিও একটু পরে রুমে আসলো।
বাইরে ঘুরতে যাবো বলে রেডি হচ্ছি এমন সময় জুলো বললো..
জুলিঃ- কোথায় যাবে তুমি?
আমিঃ- যেখানেই যাই না কেন সে প্রশ্নের উত্তর কি আপনাকে দিতে হবে?
জুলিঃ- হ্যাঁ অবশ্যই দিতে হবে কারন আমি তোমার স্ত্রী।
আমিঃ- আমি আপনাকে স্ত্রী হিসেবে মানি না।
আর আপনি কখনো স্ত্রীর অধিকার দেখাতে আসবেন না।
জুলিঃ- তোমার সাথে নরম ভদ্র ভাবে কথা বলছি বলে কি তোমার ভাব বেড়ে যাচ্ছে নাকি?
আমিঃ- সরি..!! এখানে ভাব নেওয়ার কিছু নাই যেটা সত্য সেটাই বলছি।
এখন সামনে থেকে সরে দাঁড়ান বের হবো।
জুলিঃ- তোমার সাথে আমিও যাবো।
আমিঃ- কোথায় যাবেন আপনি?
জুলিঃ- কোথায় আবার তুমি যেখানে যাবে আমিও সেখানে যাবো।
আমিঃ- পাগল না মাথা খারাপ আপনাকে আমার সাথে নেওয়ার টাইম নাই।
এই বলে আমি বেরিয়ে পড়লাম পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখি জুলি মন খারাপ করে আমার দিকে তাকিয়ে অাছে।
.
সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে রাত দশটার দিকে বাসায় আসলাম।
আব্বুঃ- কি ব্যাপার সুমন সারাদিন কোথায় ছিলি?
আর এখন কয়টা বাজে ঘড়ির দিকে কি একবারও তাকিয়েছিস?
আমিঃ- না মানে আব্বু কোথাও যাইনি।
বাসায় ভালো লাগছিলো না তাই বাইরে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম।.
আব্বুঃ- এমন ভুল যেনো আর দ্বিতীয় বার না হয়। (রাগ দেখিয়ে ধমক দিয়ে)
আমিঃ- আচ্ছা!!!!!
এই বলে আমি সোজা রুমে চলে গেলাম। রুমের ভিতরে ঢুকে দেখি জুলি খাবার নিয়ে বসে আছে।
.
.
চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com