Breaking News

দুই বেস্টফ্রেন্ড বউ । পর্ব - ০৬



রিমা: মজা করছেন।
মুন্নী: আজব তো মজা কেনো করবো।
রিমা:তো দুজনই যে বলেছেন এনার হবু বউ।
আহিঃ সেটা তুমি বুঝবা না।
তখন আম্মুর আগমন,,,
আম্মু: তোরা এখানে বসে আছিস আর সারা বাসা খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত।
আহিঃ কেনো আম্মু?
আম্মু: তোরা খেয়েছিস?
না আম্মু এখনো খাওয়া হয়নি।
আম্মু:ওকে তোরা আমার সাথে আয়।
হুম ,,,,,,,,
মুন্নী: বাই,, পরে দেখা হলে কথা হবে।
আমরা চলে এলাম,,, আর মেয়ে গুলো শুধু আমাদের চলে আসার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
অবশেষে বিয়েটা কম্পিলিট হলো, আপু যাওয়ার সময় সে কি কান্না শুরু করলো।
আপুর কান্না দেখে আমার চোখের কোণে পানি চলে এসেছে।

পরের দিন সকালে, আপুর শশুর বাসায়।
আপুর ননদ এর নাম মিম ।
মিম: ভাবি,,,
আপু:বলো,,,
মিম:এই ছেলেটা আপনার কে হয়। (মোবাইল ফোন একটা ফটো দেখিয়ে।।।।)
আপু: পছন্দ হয়েছে।
মিম:আরে তা না,বলো ।
আপু:এটা আমার চাচাতো ভাই।
মিম: সেদিন তোমাকে দেখতে গেলাম কিন্তু একে তো দেখতে পাইনি।
আপু: ওরা ঢাকায় থাকে।
মিম:ও ,এর নাম কি?
আপু: নীলাদ্র,,, এতো কিছু কেনো জিজ্ঞেস করছো জানতে পারি।
মিম: এমনিতেই,,, আর একটা জানার ছিলো।
আপু:কি,,,
মিম: নীলাদ্র ,, এর সাথে এই মেয়ে দুইটা কে?
আপু:ওরা তিনজন বেস্ট ফ্রেন্ড,ওর সাথে এসেছে।
মিম:কিইইইইইই,,

আপু: অবাক কেনো হলে?
মিম:ঐ মেয়ে দুইটা যে বললো এটা ওনার হবু হাজব্যান্ড।
আপু:ঠিকই বলেছে,,,।
মিম: কিন্তু আপনি যে বললেন ওরা তিনজন বেস্ট ফ্রেন্ড।
আপু: হুম, বেস্ট ফ্রেন্ড ,আর ওরা দুজন নীলাদ্রর হবু স্ত্রীও।
মিম: এ্যাঁ এটা কেমন করে সম্ভব।
আপু:পরে বলবো এখন অনেক কাজ আছে।
মিম: ওকে,
আপু চলে গেল। আর মিম মনে মনে বললো-
যাই একটু রিমা আপুকে চমকে দিয়ে আসি।
মিম রিমার কাছে গিয়ে বললো-
মিম: আপু নীলাদ্রর সম্পর্কে সব কিছু জানতে পেরেছি।
রিমা: নীলাদ্র, টা আবার কে।
মিম: তোমার ক্রাশ।
রিমা:আর ক্রাশ (মন খারাপ করে)
ওকে বল শুনি।
মিম: ছেলেটার নাম নীলাদ্র ,,, 
আপুর মেজো চাচ্চুর ছেলে।এবার অনার্স এ পরে। ওদের বাসা ঢাকা।
রিমা:এই পর্যন্ত বুঝলাম। তাহলে ঐ মেয়ে দুইটা।

মিম: তাহলে আমাদেরকে সবাইকে ফুচকা খাওয়াতে হবে।
রিমা:আগে বল। তার মানে ওরা নীলাদ্রর কেউ না।
মিম: আগে বলো ফুচকা খাওয়াবো।
রিমা:খাওয়াবো।
মিম:এই তোরা কিন্তু সাক্ষী থাকলি।
তাহলে শুনো।
ওরা দুজন নীলাদ্রর বেস্ট ফ্রেন্ড।
রিমা: সত্যি,,,
বলে মিমের হাত ধরে টেনে নাচতে লাগলো।
মিম: আরে থামো থামো , আগে পুরো কথাটা তো শুনো।
রিমা: তোদের যত ইচ্ছে খাবি।
মিম:সত্যি,
রিমা: হুম,,,
কিছুক্ষণ পর নাচ থামিয়ে দিলো।
রিমা:হাপিয়ে গেছি।
ওহ্ ওহ্ ওহ্,
শান্ত হয়ে বললো ,
রিমা: হুম এবার বল,কি বলবি?
মিম: কথা টা তেমন কিছু না। কিন্তু সামান্য একটু সমস্যা।
রিমা: একটু সমস্যা হলে আমি সামলে নিবো।
মিম: মেয়ে দুইটা সত্যি নীলাদ্রর হবু বউ।
রিমার কথা টা শুনে তো আকাশ থেকে পড়লো। 
থুক্কু মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা। রিমা এবার রেগে বললো-
রিমা: কুত্তি এটা সামান্য ব্যাপার।(খুব রেগে গিয়ে)
সবাই হা হা হা হা হা হা হা করে হাসতে লাগলো।
মিম:আপু ফুচকা।
রিমা:দাঁড়া তোকে জন্মের মত ফুচকা খাওয়াচ্ছি।
বলে আসে পাশে লাঠি খুঁজতে লাগল।
মিম: হাসতে হাসতে দৌড় দিয়ে পালালো।

রিমা: আমি কত যে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু কুত্তি আমাকে এটা আগে না বলে উল্টাপাল্টা বললো।এর মধ্যে আমি কত কি যে ভেবেছিলাম। কিন্তু সব মাটি হয়ে গেলো।

প্রেম করার আগেই ছ্যাঁকা খাইলাম।এই দুঃখ কোথায় রাখি।
রিমার কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো।
রিমা আরো রেগে গেলে। দিয়ে সবাইকে রুম থেকে বের করে দিল।
এই দিকে জান্নাত আপু কে নিয়ে আসার জন্য বড় আব্বু। 
আমাদের পাঠালো শুধু আমরা না আরো অনেকেই আছে।মোট দুই টা মাইক্রো গাড়ি।
ঘন্টা খানেক পর আপুর শশুর বাড়ি এসে পৌঁছালাম।
বিকেলে আপুকে নিয়ে যাওয়া হলো , সাথে দুলাভাই আর আপুর ননদ ছিল।
মিম রিমাকে দেখলেই বলে আপু ফুচকা তখনই রিমা তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে।
আর মিম কে তাড়া করে।

৪দিন পরে সবার কাছে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলাম।৭টা দিন বেশ মজা খুশি তেই কাটালাম। বিকেলে ঢাকায় পৌঁছালাম। আব্বু মুন্নী আহি কে ওদের বাসার কাছে রেখে আসলো।
অনেক ক্লান্ত তাই রুমে এসে পোশাক খুলে ব্যাগ রেখে বিছানায় চিৎ পটাৎ । শুতেই ঘুম চলে এলো।
আম্মু: নীলাদ্র উঠে পড় খেতে হবে তো।
আম্মু এতো তাড়াতাড়ি সকাল হয়ে গেছে।আর একটু ঘুমাই।(ঘুম ঘুম চোখে)
আম্মু:আরে বোকা এখন রাত নয়টা বাজে এখনো সকাল হয়নি।
ও,আর একটু ঘুমাই।
আম্মু: খেয়ে নে তারপর আবার ঘুমিয়ে যা।
চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে বসলাম। ফ্রেশ হয়ে নিচে খেতে আসলাম।
আম্মু খাবার বেড়ে দিচ্ছে।
তখন আব্বু বললো-
আব্বু: নীলাদ্র আমি যেটা শুনলাম সেটা কি সত্যি?
কি শুনলা ।(অবাক হয়ে)
আম্মু দিকে তাকিয়ে দেখি মিটমিট করে হাসছে।
আব্বু: শুনলাম মুন্নী আর আহি কে তুই বিয়ে করবি।
আম্মু মিটমিট করে হাসছে। আমি বললাম আম্মু তো আমার উপর দুজন কে চাপিয়ে দিচ্ছে।
আব্বু:তোর কি মত ,, কাকে বিয়ে করবি।
ওরা দুজন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমি কাউকে কষ্ট দিতে পারবো না।
আমি তো বলছিলাম ।
আব্বু: কি,
কিছু না।

আব্বু: মেয়ে দুইটাই আমাদের পছন্দ।
ধুর, তাড়াতাড়ি উঠে চলে এলাম। (কি যে লজ্জা লাগছে না)
আব্বু আর আম্মু হাসতে লাগলো।
রুমে এসে দুই প্রত্নীকে ফোন দিলাম। একবার রিং হতেই রিসিভ করলো।
হ্যালো।
কিন্তু আন্টি মানে , আহির আম্মু রিসিভ করলো।
আন্টি: হুম বাবা বলো। আন্টি আহি কোই। আন্টি: আহির অনেক জ্বর।
কি বলেন , কখন থেকে।(উত্তেজিত হয়ে)
আন্টি:প্রায় ৭টার দিক থেকে। জ্বরের ঘোরে শুধু তোমার না নিচ্ছে।

কেমন হচ্ছে অবশ্যই বলবেন আপনাদের কাছে খারাপ লাগলে কমেন্টে বলবেন তাহলে আর গল্প টা দিবো না,,,আর ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে পাশে থাকুন,, আর কেমন হচ্ছে অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
আমি এখনি আসছি।
আন্টি: এতো রাতে।
কোথায় রাত সবে মাত্র ১০ টা বাজে।
আমাদের কথা মুন্নী ও শুনছিলো।
মুন্নী: নীলাদ্র আমি ও যাবো আমাকে নিয়ে যা।
ওকে ফোন কেটে দিলাম,,, তাড়াতাড়ি নিচে এসে বাইকের চাবি নিলাম।
আম্মু: কোথায় যাবি এতো তাড়াহুড়ো করে।
আহির অনেক জ্বর,,, এটা বলে চলে এলাম।বাইক নিয়ে সোজা মুন্নীর বাসার সামনে। গিয়ে দেখি মুন্নী দাঁড়িয়ে আছে।
তাড়াতাড়ি উঠ।
মুন্নী: হুম,,
উঠে জড়িয়ে ধরলো, কিছু বললাম না শুধু একবার ওর দিকে তাকালাম।
পাঁচ মিনিট পর চলে এলাম।

গাড়ি থেকে নেমে , কলিং বেল চাপ দিতে আন্টি দরজা খুলে দিল। আন্টির চোখের কেনো পানি লক্ষ্য করলাম।
আন্টি আহি কোথায়?
ওর রুমে আছে।
ওকে,, তাড়াতাড়ি আহির রুম চলে এলাম।
এসে দেখি আহি শুয়ে আছে, মুখ টা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
নীলাদ্র, এই নীলাদ্র । বুঝতে পারলাম জ্বরের ঘোরে বলছে।
আমি তাড়াতাড়ি ওর কাছে গিয়ে বসলাম , হুম বল এই তো আমি তোর পাশে আছি। আহির শরীরের অনেক জ্বর। চোখের কোনে পানি চলে এসেছে আহির এমন অবস্থা দেখে। হঠাৎ সেন্সলেস হয়ে গেল।
আন্টি ওকে ঔষধ দেন নি। ও তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
আন্টি:দিয়েছি তো। তাও কমছে না।
আংকেল কোথায়?
আন্টি:আজ বিকেলে অফিস এর কাছে বাইরে গেছে ।
মুন্নী: তুই তাড়াতাড়ি গাড়ি টা বের কর।
ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। মুন্নী: হুম।
মুন্নী: গাড়ি বের করতে চলে গেল আমি আহি কে কোলে নিয়ে গাড়ির কাছে এলাম,
সাথে আন্টিও আসলো গাড়িতে উঠে । মুন্নী তাড়াতাড়ি গাড়ি চালা ।
মুন্নী: হুম।

১৫ মিনিট পর হাসপাতালে চলে এলাম।
মুন্নী হাসপাতালের ভিতরে আগে চলে গেল। আহি কে কোলে করে নিয়ে ভিতরে যেতেই ডাক্তার কে পেয়ে গেলাম। মুন্নী আগে থেকেই ডাক্তার কে বলেছে।
আহি কে একটা রুম নিয়ে গেলো। আমি ,মুন্নী ,আন্টি বাইরে বসে আছি।
আন্টির চোখে পানি।
মুন্নী: আন্টি কাঁদিয়েন না , আহির তেমন কিছু হবে না।
আন্টি: হুম,
চুপ করে বসে আছি, কিছু ভালো লাগছে না। তখনই ফোন টা বেজে উঠলো।
ফোন বের করে দেখি আব্বু ফোন দিয়েছে।
রিসিভ করলাম।
হুম আব্বু বলো।
আব্বু: কোথায় ?
হাসপাতালে।
আব্বু: হাসপাতালে কি করছিস?


চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com