Breaking News

আড়ালে সত্যটা । পর্ব -০৪

 


অধরা বাড়ির ভেতরে গিয়ে তার রুম থেকে তার মায়ের ছবিটা নিয়ে যখন বের হবে ঠিক তখনি,

দেখতে পেল একটা ডাইরি খাটের এক কোণায়।

ডাইরির ভেতর থেকে একটা ছবি বের হয়ে আছে। অধরা কিছু না ভেবেই ডাইরিটা বের করলো।

ডাইরির প্রতিটি পাতায় পাতায় প্রেম কাহিনী লেখা।

ছবিটা যে পাতায় সে পাতায় স্পষ্ট দেখতে পেল তার বোনের বিয়ের ছবি, তাও রাজের সাথে।

আমেরিকায় পড়ালেখা চলাকালীন দু'জন দুজনকে বিয়ে করে!

অধরার হাত পা কাঁপছে!

রাজ আর তিশা তাহলে স্বামী স্ত্রী! তাহলে কেন রাজ তাকে বিয়ে করলো?

কেন তার সুন্দর জীবনটা নষ্ট করলো?

😡😕.
.
- এদিকে তিশা বলতে লাগলো,' এই তোর কতক্ষণ লাগবে বের হবি?'
অধরা আর দেরী না করে তার মায়ের ছবিটার সাথে বাবার ছবিটা
নিয়ে ডাইরীটা যেখানে ছিল সেখানে রেখে দিল। 😓
- অধরা বাসা থেকে বের হতেই অধরার সৎ মা বললো,'
এই নষ্টা মহিলার নষ্টা মেয়ে তোর জন্য আজকে তিশার বাবা মারা গেল।
তোর জন্য আমার সাদা শাড়ি পরতে হলো।
তোর মতো কলঙ্কিনীর মুখ যেনো আমি আর কোনদিন না দেখি।
তুই মেয়ে নামে কলঙ্ক তোর জন্য তোর জন্মদাতা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
কতটা কষ্ট পেলে একটা মানুষ আত্মহত্যা করে জানিস?
দোআ করি তোর মতো নষ্টা মেয়ে যেন কোন শত্রুর ঘরেও না হয়।
আজকের পর থেকে তুই এই বাড়ির কেউ না।
তোর জন্য এই বাড়ির দরজা চিরদিনের জন্য বন্ধ।
- অধরা চোখের পানি মুছে বললো,' মা আমি নষ্টা না। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা।
সবকিছু শুনেন ও দেখেন।
তিনি সত্যিটা একদিন না একদিন ঠিকই প্রকাশ করবে।
আর আমি কোনদিন আপনাদের এই মুখ দেখাতে আসবো না।
আর তিশা বোন দোআ করি আল্লাহ যেন তোকে সুখে রাখে।
ভালো থাকিস আমি তোকে কোনদিন অভিশাপ দিবো না।
বিশ্বাস কর কোনদিন তোকে সৎবোন ভাবিনি। আর মা কেও সৎ মা ভাবিনি।
ভালো থাকিস মায়ের যত্ন নিস। 😢
- কথাগুলো শেষ করেই অধরা বাড়িটা আরেকবার পড়ক করে নিল।
এদিকে মাগরিবের আযান হয়ে গেল। চারি দিকে অন্ধকার হতে শুরু করলো।
ঠিক অধরার জীবনের মতো। কত স্মৃতিই না মনে পড়ছে।
বাবার মুখটা বারবার ভেসে উঠছে চোখে। বাবাকে শেষ বারের মতো দেখাও হলো না যে তার।
কি ভাগ্য নিয়েই না জন্মেছিল সে।
.
জন্মের সাথে সাথে জন্মদাত্রী মা টাও তাকে ছেড়ে চলে গেল।
বিয়ের পর স্বামীর বুকে একটা রাত কাটানোও হলো না।
তার আগে কলঙ্কের বোঝা মাথায় নিয়ে বের হয়ে আসতে হলো।
বিপদে যে বাবা বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিতো সে বাবা আত্মহত্যা করলো।
শুধু তারই জন্য। রাত বাড়তে থাকলো।
রাতের বাড়ার সাথে ভয়টাও বাড়তে লাগলো। কোথায় যাবে কোথায় থাকবে।
কোন বান্ধবীও তার সাথে কথা বলছে না।
সবার এক কথা কোন কলঙ্কিনী তাদের বান্ধবী হতে পারে না।
এদিকে রাজের বাসাতেও যেতে পারবে না।
রাজের সামনে গেলে যে তার মরা মুখ দেখতে হবে।
অধরা কোথায় যাবে ভেবে পারছে না। চোখের পানি গাল বেয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়ছে।
অধরা আর হাটতে পারছে না বাধ্য হয়ে এক বাসার নিচে গিয়ে দালানের সাথে হেলান দিয়ে বসে পড়ল। চোখটা কেমন যেন লেগে আসছে।
-এদিকে রাত প্রায় দশটা বাজে।
রাজ বিছানায় শুয়ে আছে। হঠাত তার ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠল!
- ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকাতেই রাজের বুকটা কেমন করে ওঠলো। তিশার ফোন।
রাজ রিং হওয়ার সাথে সাথেই ফোনটা রিসিভ করে বললো,' হ্যালো জান কেমন আছো? ''
- তোমাকে ছাড়া ভালো কিভাবে থাকি? খুব তাড়াতাড়ি আমরা এক হতে যাচ্ছি তাই না?
আর আমাদের পথে কোন বাঁধা নেই।
- আচ্ছা তিশা তুমি এতটা বুদ্ধিমতী আগে জানতাম না।
আচ্ছা অধরাকে বাসা থেকে বের করতে পারছো?
- হ্যাঁ বাবু! অধরা আর কোনদিন আমাদের সাথে দেখা করতেও পারবে না।
এমন খেলা খেলছি। এখন আর কারো করুণায় পড়ে থাকতে হবে না।
বাবার সব সম্পত্তির মালিক এখন আমি আর তুমি হবো। আচ্ছা রাজ আমরা বিয়ে কবে করছি?
- বিয়েত করছি আবার কিসের বিয়ে হু?
.
- আরে সেটা তো আমি আর তুমি জানি এদেশের মানুষ তো কেউ জানে না?
- আচ্ছা জান। আমি খুব তাড়াতাড়ি আম্মুকে তোমার কথা বলবো।
আর আশা রাখি আম্মু না করবে না। আর না করলেও আমার জানকে আমি বিয়ে করে ফেলবো।
- তাই বুঝি।
- হ্যাঁ তাই।
- আচ্ছা রাজ অধরা কোনদিন সন্তান নিয়ে এসে যদি বলে সন্তানের বাবা তুমি?
- আরে কিভাবে বলবো ওরে তো ডির্ভোস দিয়েছি?
- ডির্ভোস দিয়েছ তো কি হয়েছে? তোমার বউ থাকা অবস্থাই তো অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। তাই না?
- আরে জানেমন, এলাকার সবাই জানে ও কলঙ্কিনী। আমি দেশে আসিনি।
আর ও সবাইকে বলছে ও স্বপ্নে আমাকে দেখে গর্ভবতী হয়েছে।
এ কথা কেউ বিশ্বাস করেনি। সো ভবিষৎতে সন্তানের দাবি নিয়ে আসতে পারবে না।
- আচ্ছা বাদ দাও। তোমাকে খুব মিস করছি। খুব মিস করছি।
- ওহ্ আচ্ছা তাই বুঝি?
- হুম তাই।
-মিস করলে এসে পড়ো আমাদের বাড়ি। মা তো সব জানেন সো নো প্রবলেম।
- আচ্ছা আমি যাচ্ছি।
- আচ্ছা বাসায় নিচে এসে ফোন দিয়ো।
.
- রাজ তার মাকে বললো তার বন্ধু একসিডেন্ট করে হসপিটালে।
তাই তাকে হসপিটাল যেতে হবে। এই কথা বলে বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হতেই বৃষ্টি শুরু হলো।
বৃষ্টিও কি মোষল ধারায় বৃষ্টি।
-এদিকে বৃষ্টি শুরু হওয়াতেই অধরা দৌড়ে একটা বাসার নিচে গিয়ে দাঁড়ালো।
দাঁড়োয়ান অধরাকে দেখেই বললো,' কাস্টমার পাননি? আমাকে সময় দিবেন?
- অধরা ভয়ে জড়োসরো হয়ে যাচ্ছে।
- দাঁড়োয়ানটা অধরার কাছে আসতেই অধরা দৌড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লো।
হঠাৎ একটা গাড়ি অধরার কাছাকাছি এসে হার্ডব্রেক করলো।
-অধরা ভয় পেয়ে দু'চোখ বন্ধ করে ফেলল।
- রাজ গাড়ির গ্লাস নামিয়েই বললো,' এই মেয়ে মরার সখ তো আমার গাড়ির নিচে কেন?
রাস্তায় ট্রাক বাসের অভাব আছে? নাকি ব্যবসা করতে রাস্তাই নেমেছিস?
- অধরা রাজের দিকে তাকিয়ে চমকে যায়!
এত রাতে রাজ কোথায় যাচ্ছে! কাঁপা কাঁপা গলায় অধরা বললো,'
স্যার বৃষ্টি তো তাই দেখতে পারিনি। আপনি যেখানে যাচ্ছেন যান।
.
- রাজ অধরার কন্ঠ শুনেই চমকে যায়।
ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া মেয়েটি অন্য কেউ নয় অধরা!
রাজ আর কিছু বললো না।
অধরা রাজকে আর কিছু না বলে বৃষ্টির মাঝেই হাঁটতে লাগল। রাজ গাড়ি ছেড়ে দিল
। পিছনে লুকিং গ্লাসে দেখলো অধরা দাঁড়িয়ে আছে।
রাজ আর কোন ভ্রুক্ষেপ করলো না।
- অধরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাজের চলে যাওয়া দেখছে।
বুক ফেটে কান্না আসছে তার। বৃষ্টির ফোটার সাথে সমান তালে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে।
-রাজ তিশার বাড়ির সামনে এসেই তিশাকে ফোন দিল।
তিশা রাজকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে তার মায়ের সাথে কথা বলা শেষ করে রাজকে তার রুমে নিয়ে গেল।
বাইরে বৃষ্টি রোমান্টিক পরিবেশ।
রাজ তিশাকে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে এসে পড়ল।
তিশার ঠোঁট জোড়াতে তার ঠোঁট মিলিয়ে দিল।
তিশাও সমান তালে রেসপন্স দিতে লাগল।
রাজ তিশাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে তিশার শাড়ি খুলতে লাগল।
দুজনে অজানা এক ভালোবাসার দুনিয়ায় হারিয়ে গেল।
.
- এদিকে বৃষ্টি থেমে গেছে। অধরার শরীর কাপছে শীতে।
হঠাৎ অধরা খেয়াল করলো, তাকে দুটো ছেলে খেয়াল করছে।
অধরা আরো জুরে হাটতে লাগলো। এক পর্যায়ে একটা ছেলে অধরার সামনে এসে দাঁড়ালো।
- ভাইয়া কি করছেন? আমাকে যেতে দেন?
- তাই বুঝি! আচ্ছা বেবি কোথায় যাবে? চলো আমাদের বাসায় নিয়ে যায়।
তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তোমার শীত করছে। তোমার সারা শরীর গরম করে দিবো।
তোমার শরীর ম্যাসাজও করে দিবো!
- অধরা ছেলেটার গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দিল।
ছেলেটাকে চড় বসিয়ে দিতেই অধরার মুখ চেপে ধরলো ছেলেটা।
আরেকটা ছেলেকে ইশারা করে দুজনে ধরে রাস্তায় পাশে পুরাতন একটা বাড়িতে নিয়ে অধরাকে শুইয়ে দিয়ে শাড়ির আচলটা টান দিতেই অধরা বললো," ও ভাই আমাকে মাফ করে দাও।
আমার সর্বনাশ করো না। ভাই জানো আমার গর্ভে সন্তান আছে।
বোনটাকে ছেড়ে দাও। তোমাদের পায়ে পড়ি।
অধরা কথা গুলো বলে কান্না করে দিল।
- ছেলেগুলো যেন হিস্র বাঘ হয়ে গেল।
অধরার শাড়ির বেশি ভাগটাই খুলে ফেলেছে। অধরা নিজেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে ''''
.
চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com