শেষ বেলার তুমিটা । পর্ব -০৩
আমি রাগে একটু উচ্চ সরে বলে উঠলাম:
হৃদয়: একি নীলিমা!
আমার নীলিমা চট করে উঠে খাটের পাশে দাঁড়িয়ে বললো।
নীলিমা: না মানে....
হৃদয়: না মানে কি হুমম?
নীলিমা: দেখলাম তুমি ঘুমিয়ে আছো তাই....
হৃদয়: তাই কি ! তুই আমার বুকের ওপর শুয়ে ছিলি কেন?
নীলিমা: না এমনি।
হৃদয়: এমনি মানে
। ওয়েট! তখন তো তুই আমাকে ডাকতে এসে তোকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলাম। তোর তো দূরে থেকে ডাক দেওয়ার কথা। আমার কাছে এসে কি করছিল?
![😡](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t8d/1/16/1f621.png)
নীলিমা: না মানে ....
.
হৃদয়: কি বল!
নীলিমা: তোমাকে কিস করতে গেছিলাম।![🙊](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/tfb/1/16/1f64a.png)
![🙊](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/tfb/1/16/1f64a.png)
নীলিমা একথা বলেই রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে গেল। আমি থ মেরে দাঁড়িয়ে আছি। মেয়েটা বলে কি? আমাকে কিস!
ওকি পাগল হয়ে গেলো নাকি। কিছুদিন যাবত হলেই এমন আজব আজব ব্যবহার করেছে।শীঘ্রই পাবনা পাগলা গারদে না পাঠাতে না হয়।
আমি ওসব কিছু আর না ভেবে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।কাল তো আবার কলেজে যেতে হবে। ঐ পেত্নী টা তো আবার জ্বালিয়ে মারবে।
পরদিন একটু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলাম। মা তো আমাকে দেখে বলেই দিল কিরে নবাবজাদা এত সকালে উঠেছিস! আজ কোন দিকে সূর্য উঠছে!
হৃদয়: মা!
মা: তো এখন কি করবেন শুনি?
হৃদয়: ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে কলেজে যাব।
মা: তোর তো কলেজ দশটায় শুরু হয় এত সকালে গিয়ে কি করবি?
হৃদয়: একটু কাজ আছে।
মা:কি এমন কাজ এত সকালে?
আমি এখন কি বলবো বুঝতে পারতেছি না। আমতা আমতা করতে করতে বললাম:
হৃদয়: রিয়াজ যেতে বলল কি জানি দরকার ওর।
মা: ও তে যা।
.
আজ প্রথম মাকে মিথ্যা কথা বললাম খুব খারাপ লাগছে।
কিছু বলার ছিল না যে। আর কিছু না বললেও মা ছাড়বে না। আমি নিজেও জানিনা কেন আমি কলেজে যাচ্ছি এত সকালে।
ব্রেকফাস্ট টা করে আমি কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিছি। কেন জানি মনে একটু ভয় ভয় লাগতেছে ।যদি সামনে ও মেয়েটা পড়ে আজ আবার! যে দজ্জাল মেয়ে ,শাকচুন্নি একটা আমাকে পেলে তো চিবিয়ে খাবে।
আবার কেন জানি মেয়েটাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করতেছে। মনে হচ্ছে ক্যাম্পাসে গেলেই মেয়েটার দেখা পাব। তাইতো এত সকালে বেরিয়ে পরলাম।
আমি এসব কথা ভাবতে ভাবতে কলেজে পৌছে গেলাম। এসে পুরো ক্যাম্পাস তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। সে তো নেই!
নিজেকে মনে মনে গালি দিতে দিতে গিয়ে ঘাসের উপর বসলাম। আনমনা হয়ে বসে থেকে কি যেন ভাবছিলাম হঠাৎ কারও কন্ঠে আমার হুশ ফিরল।
রিমি:কিরে তুই এত সকালে!
হৃদয়: না মানে আপনি এত সকালে।
রিমি: কলেজে কিছু ফাইল জমা দিতে হতো।একটু সকালে এসেছি তাই। তুই এখানে কি করছিস? আবার কোন মেয়েকে পটাতে আছিস নাকি? এমন করতে দেখলে মেরে হাত-পা ভেঙে দেবো!
হৃদয়: কেন?
রিমি:কেন মানে দ্বিতীয়বার আবার কোন মেয়েকে প্রপোজ করতে গেলে তোর খবর আছে!
হৃদয়: আমার ইচ্ছে আমি করব যাকে খুশি তাকে প্রপোজ
রিমি:তবে রে দাড়া।
.
রিমি সামনে পড়ে থাকা একটা লাঠি হাতে তুলে নিল। আমি তাই দেখে দিলাম দৌড়। রিমি আমাকে এভাবে দৌড়ে তো দেখে বলল
রিমি: ওই দাঁড়া আবার কোন মেয়েকে প্রপোজ করবি না! করাচ্ছি তোর প্রপোজ!
হৃদয়:বেঁচে থাকলে আর প্রপোজ কেন কোন মেয়ের সামনে যাবনা।
রিমি কথাগুলো শুনছে আর হাসছে। আমি একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম।
মেয়েটাকে হাসলে খুব সুন্দর লাগে। কি যেন একটা আকৃষ্ট করে তার দিকে।
সেদিন ক্লাসে আমি পেছনের দিকে একটা বেঞ্চে বসেছি। রিয়াজ আমায় দেখে বলল:
রিয়াজ:কিরে আজ সূর্য কোনদিকে উঠিছে? রোজ তো বলি আমাদের সাথে এসে পেছনে বস।কখনো তো বসিস না আজ হঠাৎ।
হৃদয়:না ভাবলাম আজ তোদের সাথে বসবো।
হঠাৎ রিয়াজ এর রিমির দিকে চোখ পড়তেই বলল:
রিয়াজ: ও বুঝতে পারছি ব্যাপারটা। মেয়েটাও পিছনে! তো মামা পার্ক থাকতে ক্লাসরুমে প্রেম! বাহ্।
হৃদয়: রিয়াজ চুপ করবি!
রিয়াজ: আচ্ছা মামা ট্রিট টা পেলেই আর কিছু বলবো না।
হৃদয়:আচ্ছা আজ সন্ধ্যায় দেবো। সবাই আড্ডাখানায় চলে আসিস।
ক্লাস শেষে আমি যখন বেরিয়ে আসছিলাম। তখন হঠাৎ রিমি ডাক দিল। আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। না দাঁড়িয়ে উপায় নেই। কারণ শাকচুন্নি টা আবার কি করে ভাবতেও ভয় লাগে।
রিমি আমার সামনে এসে দাঁড়াল এমন সময় রিয়াজ বলে উঠলো সন্ধ্যাবেলা ঠিকমতো পায়।
রিমি: কিসের ট্রিট দিচ্ছিস ওদের?
হৃদয়: না মানে...
.
রিমি:মানে মানে কি! আমায় সরাসরি বল কিসের ট্রিট!
হৃদয়:আমি রিলেশনে গেছি তো সেই খুশিতে ট্রিট দিচ্ছি।
রিমি: কিহ! কার সাথে? কখন? কবে থেকে?
হৃদয়:আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার সাথে।( আমতা আমতা করে বললাম)
রিমি:আমি তোর সাথে কবে রিলেশন শুরু করলাম!
হৃদয়:না মানে।
রিমি:আর মানে মানে করতে হবে না। এই কাগজ টা ধর।
রিমি আমার হাতের ভেতর একটা কাগজে গুঁজে দিল।আমি কিছু বুঝতে না পেরে বললাম:
হৃদয়: কিসের কাগজ?
রিমি:বাহ আমার সাথে রিলেশনে গেছিস বলে? রাতে ঠিক বারোটার সময় কল দিবি ওটাতে আমার নাম্বার আছে। এক মিনিট যেন কম বেশি না হয়।
হৃদয়:আচ্ছা।
কলেজ থেকে সরে এলাম। বিকেলে আড্ডাখানায় গেলাম। তাদের ট্রিট দিয়ে রাতে ফিরতে একটু দেরি হলো।
রোমে আসার সময় নীলিমার রোমে একটা উকি দিলাম ডায়নি টা কি করে! দেখলাম রুমে নেই।
আমি ভাবলাম হয়তো চাচ্চু চাচীর কাছে আছে। তাই সে ব্যাপার নিয়ে আর তেমন মাথা না ঘামিয়ে রাতে খাওয়া দাওয়া করে বিছনায় শুয়ে থেকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছি কখন বার টা বাজে।
হঠাৎ 11:50 মিনিটে নিলিমা ফোন থেকে কল আসলো। আমি কল ধরতেই নীলিমা বললো:
নীলিমা: ভাইয়া তাড়াতাড়ি ছাদে আয়।(কান্না কান্না কন্ঠে)
আমি কোন কিছু না ভেবে এক দৌড়ে ছাদে চলে গেলাম.......
.
চলবে....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com