শেষ বেলার তুমিটা । পর্ব -০৭
শেষ বেলার তুমিটা । পর্ব -০৭
নীলিমা কথাগুলো শুনে রুম থেকে বের হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর একটা দা নিয়ে এসে বলল:
নীলিমা: শরীয়ত মোতাবেক আজ থেকে তুমি আমার স্বামী আর আমি তোমার স্ত্রী।
সো,আজ থেকে তুমি শুধু আমার।
অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা বললে এক কোপে ঘাড় থেকে মুন্ডুটা নামিয়ে দেব।
পা টা সামনে বাড়িয়ে দেও সালাম করব।
হৃদয়: দেখ এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আমি বললাম না। আমি এ বিয়ে মানি না।
আমি তোকে কখনই ভালবাসতে পারব না।
নীলিমা: কিভাবে ভালোবাসা আদায় করতে হয় সেটা এই নীলিমা ভালভাবেই জানে।
এবার সালাম করতে দেবে নাকি!
হৃদয়: হুম।
নীলিমা সালাম করে বললো:
নীলিমা: আমার ক্ষুদা লেগেছে যাও খাবার নিয়ে আসো।
হৃদয়: তোর ক্ষুধা লেগেছে জা তুই নিয়ে আয়।
নীলিমা: বড় আম্মু!
হৃদয়: যাচ্ছি যাচ্ছি।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে গিয়ে খাবার নিয়ে আসলাম।
খাবারটা নিয়ে এসে নীলিমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম:
হৃদয়: খাবার!
.
নীলিমা: খাইয়ে দিন!
হৃদয়: পারব না। জীবনেও না।
নীলিমা: বড় আম্মু।
হৃদয়: দিচ্ছি দিচ্ছি।
নীলিমা: হুমম।
হৃদয়: নে খাইয়ে দিচ্ছি খা!
হাজারো অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমি তোমাকে খাইয়ে দিতে লাগলাম।
নীলিমা প্লেট থেকে এক মুঠো ভাত পেলে আমার মুখের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল:
নীলিমা: তুমি খাবে না! খাও।
হৃদয়: হোয়াট! আমি খাব তোর হাত থেকে ইম্পসিবল।
নীলিমা: বড় আব্বু!
হৃদয়:আবার আব্বুকে ডাকছিস কেন?
নীলিমা:আম্মুকে ডাকলে তোমায় শুধু বকা দেবে।
আর আব্বুকে ডাকলে সাথে মাইরও দিবে। আর এখন তোমার মাইরও প্রয়োজন।
হৃদয়: তোরে আমি দেখে নেব।
নীলিমা: সেটা পরে দেখে নিও। এখন আপাতত খাও না হইলে...
হৃদয়: দে
নীলিমা আমাকে খাইয়ে দিতে শুরু করলো।
মেয়েটা চাচাতো বোন থাকতেই আমার জীবনটা তেজপাতা করেছে। এখন সেটা চিবিয়ে খাবে।
নীলিমা: কি হলো খাইয়ে দিচ্ছনা কেন। শুধু একাই খাচ্ছ? দেও!
হৃদয়: নে নে খা। আর কত খাবি রাক্ষস এত খায় না।
নীলিমা: কিহ!
.
হৃদয়: না বললাম তুই ভালো মেয়ে খুব সুন্দর ভাবে খাস।
নীলিমা: থানকু ঠানকু।
আমি নীলিমাকে খাইয়ে দিয়ে ফ্রেশ হতে গেলাম।
এসে দেখে নেবে না হলুদ কালারের একটা শাড়ি পরেছে।
আমি যেন তার মায়ায় আটকে গেলাম।
চোখ সরাতে পারছি না। একি আমি এসব কি ভাবছি!
আমি শুধু রিমিকে ভালোবাসিতাম।
ও শুধু আমার চাচাতো বোন হয়।
আমি ছোফায় শুতে গেলাম।
নীলিমা: খাটে এসে আমার পাশে শুয়ে পরো।
হৃদয়: আমি সোফাই ঘুমাবো! একদম বেশি কথা বলবি না।।
নীলিমা:বড় আব্বুকে আবার ডাকবো?
হৃদয়: কথা কথায় তো শুধু সেটাই পারিস। আসছি
আমি মাধ্যমে তা দেখে নিলীমার পাশে শুয়ে পরলাম।
হৃদয়: কি হল আমার বুকের উপর মাথা দিছিস কেন।
নীলিমা: আমিতো এখানে মাথা দিয়ে ঘুমাবো।
হৃদয়: কেন এটা কি তোর কার্ড পাইছিস নাকি
নীলিমা: না তবে তার থেকেও বেশি কিছু। বেশি কথা বললে বড় আব্বুকে ডাকবো।
হৃদয়: না ঘুমা ঘুমা।
আমি বুঝতে পারলাম এই মেয়ের সাথে পারব না তাই কিছু না বলে এভাবে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে চোখ বন্ধ করে আছে। বুকের ওপর প্রচণ্ড ভারি ভারি কিছু অনুভব করছে।
মনে মনে একটু ভয় হচ্ছে চোখ খুলছি না। শুনেছি রাতে নাকি ভূতে বুকের উপর বসে থাকে। আমার বুকের উপরে বসেছে!
.
ভয়ে ভয়ে চোখ খুলেই দেখি নীলিমা আমার বুকের ওপর গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে।
আমি রাগে নীলিমাকে নাড়া দিয়ে বললাম:
হৃদয়: ওই ওঠ কি করতেছিস এটা কি তোর বেড নাকি?
নীলিমা: উহুম! আর একটু ঘুমাতে দাও না। খুব ঘুম পাচ্ছে।
হৃদয়: ঘুমাবি বেডে গিয়ে ঘুমা আমার বুকের উপর কেন।
নীলিমা আমার কথায় চোখ খুলে মুচকি একটা হাসি দিল।
একে মেয়েটা আবার আমাকে জমে জমে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে।
হৃদয়: ঐ কি হলো ওঠ! না হলে কিন্তু এবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবো।
নীলিমা: উঠতেছি উঠতেছি।
নীলিমা উঠে উয়াশ রূমে গেল। আমি এখনো উঠিনি শুয়ে আছি।
ওয়াশরুম থেকে নীলিমা বের হতেই আমি আবার নীলিমার মায়ায় আটকে গেলাম।
হা করে নীলিমার দিকে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ নীলিমার চুটকির শব্দে আমার ঘোর কাটল। কি হলো এভাবে তাকিয়ে থেকে কি দেখছো!
ইয়া আমি কি করতেছি। ভুলে গেলে চলবে না ও আমার চাচাতো বোন।
হৃদয়: কিছু না
.
নীলিমা: ওহ্।
নীলিমা রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আমি ফ্রেস হতে গেলাম। নীলিমা রুম থেকে বের হতেই আম্মুর সাথে দেখা হয়।
আম্মু নীলিমাকে দেখেই বলে:
আম্মু:কিরে নিলু তোর চোখ এমন লাল হয়ে আছে কেন?
নীলিমা: ও কিছুনা বড় আম্মু এমনি।
আম্মু: আমার থেকে লুকাস না মা।
আমি সবই জানি।
সব জেনেশুনেই তারপরও তোকে ওই পাগল টার সাথে বিয়ে দিয়েছে।
যে বেচে নেই ও এখনো তার পিছে দৌড়াচ্ছে। তোর জীবনটা আমি নষ্ট করে দিলাম।
নীলিমা: এসব কি বলছ বড় আম্মু!
আমি সব জেনেশুনেই বিয়ে করেছি।
আমি ঠিক এ হৃদয় কে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনব। তোমরা দোয়া করো।
আম্মু: হ্যাঁ মা তুই আমার হৃদয় কে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আন।
আমি ফ্রেস হয়ে রূমে আসি আসতেই দেখি নীলিমা আবার রূমে আসছে।
হৃদয়:আবার আসিস আমার রুমে!তুই বের হ আমার রুম থেকে।
নীলিমা: তোমার রুম মানে! এখন তুমি আমার বিয়ে করা স্বামী। সো, তোমার সবকিছু আমার। আর সাথে তুমিও।
হৃদয়: তাহলে তুই থাক আমি গেলাম।
.
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com