ডেন্জারাস মেয়ে । পর্ব -০৪
আমিঃ- আপনি কে বলুনতো?
ভদ্রলোকঃ- আমি হলাম জুলির আব্বু।
ভদ্রলোকের কথা শুনে আমি একদম 'থ' হয়ে গেলাম।
জুলির আব্বুঃ- আরে বাবা চুপ করে আছো কেন? তোমার আব্বু-আম্মু কোথায়?
আমি কোনো কথা না বলে হাতের ইশারায় দেখিয়ে দিলাম।
.
এই মেয়ে দেখছি এবার আমার মান সম্মানের তেরোটা বাজিয়ে দিবে এখন কি করবো
আমি ভেবে পাচ্ছি না। রুমের ভিতরে আব্বু-আম্মু আর জুলির আব্বু কি যেনো সব বলা বলি করছে।
আমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় আব্বু আমাকে ডেকে বললো..
আব্বুঃ- সুমন আমি এসব কি শুনছি?
কলেজে গিয়ে লেখা পড়া না করে মেয়েদের সাথে ছি ছি আমার মান সম্মানের কিছু রাখলি না তুই।
(রেগে গিয়ে বললো)
আমিঃ- না মানে আব্বু... (মাথা নিচু করে নরম সুরে)
আব্বুঃ- একদম কথা বলবি না। বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছিস দিন দিন।।
আমিঃ- আব্বু আমার কথাটা তো শুনো?
আব্বুঃ- তোর কোন কথা শুনতে চাই না আমি।
এমন সময় জুলির আব্বু বলে উঠলো...
জুলির আব্বুঃ- আপনি অযথা আপনার ছেলেকে বকা বকি করছেন।
আমার একমাত্র মা মরা মেয়ে অনেক আদর যত্নে ওকে বড় করেছি।
আসলে আমার মেয়ে আপনার ছেলেকে পছন্দ করে।
ওরা একই কলেজে পড়ে। আমার একমাত্র মেয়ে ওর ছোট থেকে সমস্ত চাওয়া পাওয়া পুরন করেছি।
আর ওর এখন একটাই চাওয়া আর সেটা হলো আপনার ছেলে!!
আমার টাকা পয়সার কোনো কিছুর অভাব নেই আপনি যদি ..
আপনার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেন তাহলে অনেক সুখে থাকবে ওরা।
আব্বুঃ- আমাকে টাকা পয়সার লোভ দেখাচ্ছেন তাই না। বেরিয়ে যান আমার বাসা থেকে।
জুলির আব্বুঃ- আপনি কিন্তু কাজটা একদম ঠিক করলেন না।
আপনার হয়তো আমার সম্পর্কে কোন ধারনা নেই তাই এমন ব্যবহার করেলেন।
এই বলে জুলির আব্বু চলে গেলেন। আম্মু পাশে কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
আব্বু এমনিতেই অনেক রাগি মানুষ।
আব্বুর সামনে আমি কখনো মাথা উচু করে কথা বলিনি।
টাকার কথা বলাতে আব্বু অারো বেশি রেগে গেছেন।
.
পরের দিন..
কলেজে গিয়েই জুলিকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে..
আমিঃ- নিজেকে কি ভাবেন আপনি?
আমার মান সম্মানেরতো একদম তেরোটা বাজিয়ে দিয়েছেন এবার কি
আমার পরিবারের সবার সম্মানের তেরোটা বাজাতে চান আপনি?
জুলি কোন কথা না বলে কান্না করতে লাগলো।
জুলিঃ- তুই আমাকে থাপ্পড় মারলি তাই না?
আমার আব্বু আজ পর্যন্ত আমাকে থাপ্পড় মারার সাহস পায়নি আর তুই?
এর উচিৎ জবাব তোকে দিবো।
আমিঃ- আগে ভাবতাম শুধু আপনার মাথার তার ছিড়া এখন দেখছি বাবা মেয়ে দুজনের
মাথার তার ছিড়ে গেছে সময় থাকতে ভালো ডাক্টার দেখান না হলে পুরোটাই মেন্টাল হয়ে যাবেন।
জুলি কান্না কন্ঠে রাগি লুক নিয়ে আমার সামনে থেকে চলে গেলো।
সিজানঃ- তোকে নিয়ে আর পারি না কেন মেয়েটার সাথে বার বার এমন করছিস।
তুই জুলিকে দেখে কি একটুও বুঝতেছিস না ও তোকে সত্যি অনেক ভালোবাসে।
আমিঃ- বেশি কথা বলবি না আর আমাকে দিয়ে এসব ভালোবাসাবাসি হবে না।
সিজানঃ- আচ্ছা তোর যেটা ভালো মনে হয় তুই সেটাই কর।
.
আমি কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছি না।
ক্লাস শেষ করে বাসায় এসে রুমের ভিতরে ঢুকেই আমি অবাক হয়ে গেলাম এসব কি অবস্থা রুমের।
ঘরের জিনিস পত্র সব কিছু ভাংচুর এলোমেলো।
আব্বু আম্মু কে ডেকেও কোথাও পেলাম না।
সমস্ত রুম তন্ন তন্ন করে করে খুঁজে কোথাও কাউকে পেলাম না।
টেনশনে আমার মাথায় একদম কাজ করছে না।
নিশ্চয় কোনো কিছু একটা হয়েছে। টেবিলের উপরে একটা কাগজ দেখতে পেলাম।
কাগজে লেখা অাছে...
--তোর আব্বু আম্মু কে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছি।
তোর আব্বু আম্মু কে যদি তোর কাছে ফিরে পেতে চাস তাহলে
নিচের ঠিকানায় দুই ঘন্টার মধ্যে চলে অায়।
আমি লেখাটা পড়ে দেরি না করে কাগজে লেখা ঠিকানায় চলে গেলাম।
সেখানে গিয়ে যা দেখলাম সেটা দেখার জন্য আমি একদম প্রস্তুুত ছিলাম না।
আমার আব্বু আম্মু জুলির বন্ধুরা এবং জুলির আব্বুও সেখানে উপস্থিত এবং সবাই মিষ্টি মুখ করছে।
.
আমিঃ- আব্বু আম্মু তোমরা ঠিক আছো তো?
আব্বুঃ- ঠিক থাকবো না কেন?
মেয়েটা এতো সুন্দর নম্র ভদ্র তুই অাগে কেন আমাদের বলিসনি?
আমিঃ- আব্বু তোমার মাথা ঠিক আছেতো? কি বলছো এসব?
এই মেয়ের মাঝে তুমি ভদ্রতা কোথায় পেলে আমি সেটাই তো বুঝতে পারছি না।
আব্বুঃ- কে ভদ্র আর কে অভদ্র সেটা তুই আমাকে বোঝাতে আসবি না আমি যথেষ্ট বুঝি।
তোর থেকে আমার বউমা অনেক নম্র ভদ্র আচার ব্যবহার সব দিক থেকে
তোর চেয়ে হাজার গুনে ভালো।
আমিঃ- আব্বু কি বলছো এসব?
তোমার ছেলে এখনো বিয়ে করলো না আর তুমি ওকে বউমা বানিয়ে ফেলেছো?
এরা নিশ্চয় তোমাকে বাজে কিছু খাইয়েছে!!
()()() তোমাকে বলছি... তুমি হয়তো নতুন কোনো আইডি খুলেছো...
অনেক দিন থেকে তোমার কোনো খবর পাচ্ছি না...
তুমি যদি আমার এই পোস্ট টা পড়ে থাকো তাহলে সারা দিবে প্লিজ......
আব্বুঃ- বেশি কথা বলিস না।
আমিঃ- আব্বু তুমি ওই মেয়েটার মাঝে কি এমন দেখে তোমার ছেলের বউ মনে হচ্ছে?
আব্বুঃ- অনেক কিছু দেখেছি। ওর অনেক গুন আছে যা তোর মধ্যে নেই।
তোর মতো গাঁধা এই পৃথিবীতে আর একটা আছে বলে আমার মনে হয় না।
আব্বুর কথা শুনে জুলি মিছি মিছি হাসতেছে আর এদিকে ওর হাসি দেখে রাগে আমার গা জ্বলতেছে।
আমিঃ- আব্বু আম্মু তোমরা বাসায় চলো না হলে মাথাটা একেবারে খারাপ করে দেবে এরা।
আব্বুঃ- বাসায় যাবো মানে!! বাসায় যদি যেতে হয় তাহলে বউমাকে সাথে করে নিয়ে যাবো।
আমিঃ- আম্মু তুমি চুপ করে আছো কেন আব্বুকে প্লিজ তুমি বোঝাও।
আম্মুঃ- মেয়েটা কিন্তু আমার খুব পছন্দ হয়েছে। এমন লক্ষি মেয়ে পাওয়া ভাগ্যের বেপার।
আমিঃ- আম্মু তুমিও? এখন দেখছি এরা তোমাদের মাথা একদম নষ্ট করে দিয়েছে।
তোমরা এখানে থাকো আমি গেলাম।
.
আমি যখনি পিছন ঘুরে হাঁটা শুরু করলাম সাথে সাথে চার পাঁচ জন ছেলে এসে
আমাকে ধরে একটা রুমের ভিতরে আটকে রাখলো।
এখন আমি কি করবো রুম থেকে বের হবার কোন সিস্টেম নেই।
চুপ চাপ আমি রুমের ভিতরে বসে আছি এমন সময় জুলি রুমের ভিতরে এসে
আমার জামার কলার ধরে বললো...
জুলিঃ- তোকে বলেছিলাম না সময় হলে তোকে দেখে নিবো।
আজ তোকে আমি বিয়ে করবো। আর এই বিয়েতে আমার হবু শশুর শ্বাশুড়িও রাজি।
তাই বেশি কথা না বলে তুইও রাজি হয়ে যা।
আমিঃ- এই বিয়ে আমি কখনো করবো না। আর মরে গেলেও না।
আপনার মতো ফালতু মেয়েকে এই সুমন কখনো বিয়ে করবে না।
জুলিঃ- আর কিছুক্ষন অপেক্ষা কর। শুধু কাজী সাহেবের আসার অপেক্ষা মাত্র।
আমিঃ- অসম্ভব।
কিছুক্ষন পরে একটা ছেলে এসে আমাকে পান্জাবি পাজামা দিয়ে বললো..
--জামাই বাবু এগুলো আপনার বিয়ের পোশাক তাড়াতাড়ি এগুলো পরে রেডি হয়ে যান
কিছুক্ষনের মধ্যে কাজী সাহেব চলে আসবেন।
.
.
চলবে......
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com