ডেন্জারাস মেয়ে । পর্ব -০৩
আমিঃ- তোরা আমার বন্ধু না শত্রু আমি মরছি আমার সমস্যা নিয়ে আর তোরা আসছিস বিরিয়ানি খেতে। তোরা থাক আমি বাসায় গেলাম।
.
বাসায় এসে..
আমিঃ- আম্মু আমি কালকে থেকে আর কলেজে যাবো না।
আম্মুঃ- কেন বাবা কি হয়েছে?
আমিঃ- কি আর হতে বাকি আছে!! কালকে থেকে আর কলেজে যাবো না।
দরকার হলে অন্য কলেজে ভর্তি হবো।
আম্মুঃ- পাগলামি বাদ দে কলেজে না গেলে হয় নাকি!!
আমিঃ- দুররররররর ভালো লাগে না কিছু।
তারপরে দুই দিন রাগ করে কলেজে যাইনি।
দুই দিন পরে কলেজে গেলাম। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় জুলি এসে..
জুলিঃ- সুমন তুই দুই দিন কলেজে আসিস নাই কেন?
আমিঃ- কলেজে আসি নাই সেই প্রশ্নের উত্তর আপনাকে দিবো কেন?
জুলিঃ- দেখ সুমন তোকে আমি সত্যি অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
তুই দুই দিন কলেজে না আসার কারনে আমার খুব মন খারাপ হয়েছিলো।
তোকে না দেখলে আমার কিছু ভালো লাগে না।
আমিঃ- এসব অালগা পিরিত আমাকে দেখাতে আসবেন না।
আপনার এমন আলগা পিরিত দেখার টাইম আমার নেই।।
জুলিঃ- তোর সাথে ভাল ভাবে কথা বলছি বলে তোর ভাব বেড়ে যাচ্ছে তাই না??
তুই হয়তো জানিস না আমি কি করতে পারি আর না পারি।
আমিঃ- দয়া করে আপনি যদি আমাকে আর বিরক্ত না করেন তাহলে অনেক খুশি হবো।
এই কথা বলতেই জুলি আর কোন কথা না বলে চলে গেলো।
ফাহিমঃ- দোস্ত জুলি মনে হয় তোকে সত্যি অনেক ভালোবাসে।
যাই করিস ওকে এভাবে বার বার ফিরিয়ে দেওয়াটা তোর একদম ঠিক হচ্ছে না।
আমিঃ- তোর এই সব ফালতু কথা বন্ধ কর। বেশি কথা না বলে চল এখন ক্লাসে যাবো।
ফাহিমঃ- আচ্ছা চল তাহলে।
.
পরের দিন..
কলেজে একটু সকাল সকাল চলে আসলাম।
ফাহিম আর সিজান এরা দুই জন এখনো কলেজে আসেনি তাই আমারও একা একা ভালো লাগছে না
তাই কলেজে গাছের নিচে আনমনে বসে হেড ফোনটা ব্যাগের ভিতর থেকে
বের করে কানে লাগিয়ে ফুল ভলিউম দিয়ে গান শুনতে লাগলাম।
কিছুক্ষন পরে কলেজের গেটের দিকে তাকিয়ে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
দেখে মনে হচ্ছে একটা পরী হেটে আমার দিকে অাসছে।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে ভাবছি পরীটা মনে হয় আজকে প্রথম কলেজে আসছে
এর আগে তো কখনো এমন সুন্দর মেয়ে এই কলেজে দেখেনি।
আমি নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখলাম স্বপ্ন দেখছি নাকি বাস্তবে দেখছি।
পরীটা দেখতেছি আমার দিকেই আসছে।
একটু কাছে আসতেই বুঝতে পারলাম এটা নতুন কোন মেয়ে না এটা হলো জুলি।
জুলি আজকে আগের মতো ছেলেদের পোশাক পরে আসেনি মেয়েদের
পোশাক পরে এসেছে তাই এতো সুন্দর লাগছে।।
আমি নিজের চোখ দুটোকে জুলির দিকে না দিয়ে মোবাইলের দিকে দিয়ে
গেম খেলতে লাগলাম। দেখেও না দেখার ভান করে মোবাইলে গেম খেলছি..
জুলি সামনে এসেই বললো...
জুলিঃ- i love you sumon (হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ ফুল নিয়ে)
আমিঃ- সামনে না তাকিয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলাম আমি এখন লেবু খাবো না।
আপনি অাসতে পারেন।
(আসালে কানের মধ্যে হেডফোনে গান হচ্ছে
তাই জুলি আই লাভ ইউ বলেছে আমি মনে করছি কেউ আমাকে লেবু খেতে বলছে।)
জুলিঃ- আরে তোকে লেবু খেতে বলছি না সামনের দিকে তাকিয়ে দেখ।
আর কান থেকে হেড ফোনটা খোল।
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি জুলি এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি একটু ভাব নিয়ে বললাম..
আমিঃ- কিছু বলবেন?
জুলিঃ- আমি তোমাকে ভালোবাসি।।
আমিঃ- সরি আমার দ্বারা সম্ভব না!!
জুলিঃ- এই তোর কি সমস্যা? বার বার কেন আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছিস?
নাকি ভাব বেড়ে যাচ্ছে তোর?
আমিঃ- ভাব দেখানোর কি আছে? আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
এবার জুলি আমার শার্টের কলার ধরে..
জুলিঃ- আমার সাথে বেশি ভাব দেখাতে আসবি না।
শুধু তোকে ভালোবাসি বলে তুই এখনো সোজা হয়ে হাটতে পারছিস।
না হলে তোকে মেরে হাত পা সব ভেঙ্গে দিতাম।।
আমিঃ- পুরনো ডাইলগ বাদ দেন একই কথা বার বার শুনতে আমার ভালো লাগে না।।
জুলিঃ- তোকে দুই দিন সময় দিলাম আমার উত্তরটা যেনো পেয়ে যাই।
মনে থাকে যেনো মাত্র দুই দিন।
আমিঃ- দুই দিন তো দুরের কথা দুই বছর পরেও আমার কাছ থেকে আপনার উত্তর পাবেন না।।
যতো সব ফালতু মেয়ে।
জুলি মন ভার করে চলে গেলো।
আমি আবার কানের ভিতরে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে লাগলাম।
এমন সময় সিজান আর ফাহিম আমার সামনে উপস্থিত।
ফাহিমঃ- কি রে দোস্ত আজ মনে হচ্ছে সকাল সকাল কলেজে চলে অাসছিস।
নিশ্চয় জুলি কে দেখার জন্য তাড়াতাড়ি কলেজে আসছিস তাইনা? (হেসে বললো)
পাশে থেকে সিজান বললো..
সিজানঃ- হা হা দোস্ত আমরাও সব বুঝি জুলিকে নিশ্চয় তোর ভালো লাগে
আর দেখার জন্য এতো আগে কলেজে চলে অাসছিস।
আমিঃ- তোদের জন্য কি আমি সকাল সকাল কলেজেও আসতে পারবো না?
আজ একটু তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গেছে তাই চলে আসছি আর কি।
ফাহিমঃ- হুম বুঝি বুঝি সব বুঝি। আমাদেরকে ভুল বুঝাস না।
আমিঃ- আমাকে নিয়ে মজা না করে চল এখন ক্লাসে যাবো।
সিজানঃ- আচ্ছা চল।।
.
তারপরে ক্লাস শেষ করে বাসায় এসে আম্মুকে বললাম..
আমিঃ- আম্মু তুমি আব্বুকে বলো যে আমি আর এই কলেজে পড়বো না।
এখান কার মেয়েরা একদম ভালো না।
আম্মুঃ- তোর আব্বু পাশের রুমে টিভি দেখছে যাহ তুই গিয়ে বল।
আর কলেজের মেয়েরা কি শুধু তোর পিছনেই লাগে?
আমিঃ- আম্মু তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি আব্বুকে খুব ভয় পাই
এসব কথা আমি আব্বুকে বলতে পারবো না তুমি একটু বলো প্লিজ।
আম্মুঃ- তুই যদি বলতে না পারিস তাহলে আমিও বলতে পারবো না।
আমিঃ- ঠিক অাছে তোমাকেও বলতে হবে না। আজ থেকে লেখাপড়া কলেজে যাওয়া সব বাদ।
আম্মুঃ- পাগলামি বাদ দিয়ে এখন খেয়ে নে...
আমিঃ- তোমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।
.
পরের দিন..
মনটা খারাপ ছিলো তাই কলেজে যাইনি।
আর কলেজে গিয়েই বা কি করবো ওই মেন্টাল মেয়ের জন্য কলেজে গিয়ে কোন শান্তি নেই।
প্রতিদিন একটা না একটা সমসা তৈরি করবেই।।
বিকেল বেলা রুমে বসে মোবাইলে গেম খেলছি।
এমন সময় রুমে কলিং বেল বেজে উঠলো।
আম্মুঃ- সুমন দেখতো বাবা কে এসেছে দরজাটা খুলে দে।
আমি রুমের দরজা খুলতেই দেখলাম
রুমের সামনে এক ভদ্র লোক দাঁড়িয়ে আছে।
আমিঃ- কে অাপনি? কি চাই?
ভদ্রলোকঃ- আমি যেই হয় না কেনো। তোমার নাম কি সুমন?
আমিঃ- জ্বি আমার নাম সুমন।
ভদ্রলোকঃ- (আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো)
বাহ জামাই তো দেখতে অনেক সুন্দর আমার মেয়ের পছন্দ অাছে বলতে হয়।
আমিঃ- জামাই মানে? আপনার মাথা ঠিক আছেতো?
আমি তো এখনো বিয়েই করলাম না তাহলে আপনার জামাই হলাম কি করে?
ভদ্রলোকঃ- বিয়ে করো নি তো কি হয়েছে বাবা? সময় হলে বিয়েও হবে।
আমিঃ- আপনি কে বলুনতো?
ভদ্রলোকঃ- আমি জুলির আব্বু।
ভদ্রলোকের কথা শুনে আমি 'থ' হয়ে গেলাম।
.
.
চলবে.....
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com