Breaking News

শেষ বেলার তুমিটা । পর্ব -০২



আমার বলা শেষ হওয়ার আগেই মেয়েটা ঘুড়ে তাকালো। আমি যা দেখলাম তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।

এটাতো কলেজের সেই মেয়ে..............



অপরিচিতা: ইউ! সেদিন আমায় বললি যে আমি পেত্নী! ছেলে দেখলেই গায়ে পড়তে ইচ্ছে করে তাই না? আর আজ আমাকে প্রপোজ করছিস?



হৃদয়: না ইয়ে মানে!



অপরিচিতা: ইয়ে মানে কি হুম?



হৃদয়: না মানে আমি বুঝতে পারিনি যে আপনি ওটা।



অপরিচিতা: ও রাস্তায় সন্দর মেয়ে দেখলেই এভাবে প্রভাব করিস নাকি? তোর মত ছেলের এই রিমির চেনা আছে। হুমম



আমি মনে মনে বললাম ওহ তাহলে মেয়েটির নাম রিমি।



হৃদয়: আসলে তা না !



রিমি: তো কি হুমম। খুব প্রেম করার সাধ না?



হৃদয়: না মানে...



রিমি: না মানে কি হুমম। দ্বিতীয়বার আমার চোখের সামনে দেখলে তোকে থাপড়ায়ে দাঁত ফেলে দেবো।



হৃদয়: আচ্ছা।



কথাটা বলেই আমি চলে আসতে যাবো তখনই বলে উঠলো আবার



রিমি: এই যে ছোড়া শোন?



হৃদয়: হ্যাঁ আপু বলুন?



রিমি: ঐ ছোকরা আমি তোর কোন কালের আপু হই রে? নাক সোজা এমন এক ঘুসি মারবো না! বাঙ্গালার পাঁচের মতো মুখ খানা হয়ে যাবে।



হৃদয়: না মানে আপু তাইলে কি বলে ডাকবো?



রিমি: ঐ হারামজাদা, লাল টিকটিকি, হনুমান, সাদা চামড়া ,

বাঁদর আবার আমায় আপু বলিস! আমাকে কি দেখে বুড়ি মনে হয়?

.



হৃদয়: না না তা হবে কেন?



রিমি: তবে কি....



হৃদয়: সেটা বললে আর আস্ত থাকবো না মনে হয়।



রিমি: না বললে তোরে জেন্ত পুতে ফেলবো এখানে।



হৃদয়: না না বলতেছি। আপনি খুব ভালো। দেখতে খুব সুন্দর। ছেলেরা আপনারে দেখলেই গাঁয়ে পড়তে ইচ্ছে করে।



(মনে মনে বলতে থাকতাম: উম্ম, উনি যেনো কচি খুকি। এমন ভাব করছে যেনো ছোটো বাচ্চার মুখ থেকে ফিডার পড়ে গেছে। শালা আসতো একটা ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা।)



রিমি: হুমম এবার যা।



আমি চলে আসতে যাবো তখনই আবার শালা শাকচুন্নি টা ডাক দিলো। শালা মনে হয় আমায় ঝাল লবণ ছাড়ায় চিবিয়ে খাবে। আমি ঘুরিয়ে বললাম:



হৃদয়: হ্যাঁ ম্যাম বলুন।



রিমি: ঐ আমার নাম রিমি আমারে রিমি বলে ডাকবি।



হৃদয়:আচ্ছা ডাকবো।



রিমি: তখন কি যেনো বলতেছিলি? হাঁটু গেঁড়ে!



হৃদয়: কই না তো! ওটা মুখ ফসকে বলে ফেলছি।



রিমি: আবার বল হাঁটু গেঁড়ে।



হৃদয়: না মানে.....



রিমি:কি মানে মানে! ঠাটিয়ে এক চর মারবো না! বলবি!



হৃদয়: বলছি বলছি।



রিমি: হুমম বল।

.



আমি আবার হাঁটু গেরে চোখ বন্ধ করে বলতে শুরু করলাম:



হৃদয়:



তুমি কি হবে আমার স্বপ্নে দেখা সেই মেয়ে,

হবে মোর পড়ন্ত বিকালে থাকা পথ চেয়ে।

হবে কি মোর সেই কল্পনাতে আঁকা ছবিটা,

তোমার ছোঁয়ায় পাবে যে আঁকার পূর্ণতা।

তুমি কি হবে মোর হাতে হাত রেখে পথচলা, তুমি কি হবে মোর সেই না বলা কথা গুলা। তুমি কি হবে মোর রোজ ঝগড়া করার সাথী,

হাতে হাত দিতে পারবা কি অজানার হাটি।



শুধু একটিবার সাহস করে ধর মোর এই হাত,

আমি নিমিষেই করে দেবো সব বাঁধা বরবাদ।

ভালোবাসি তোমায় নিজের থেকেও বেশি,

তোমার হাসি অন্তরালে বার বার আমি ভাসি।



আমি মনে মনে ভাবছিলাম এই বুঝি জুতার বারি খেলাম। কিন্তু রিমির কথায় চোখ খুললাম।



রিমি: বাব বা! প্রপোজ তো ভালোই করতে পারিস।

এ পর্যন্ত কটা মেয়েকে প্রপোজ করছিস? না মেরে পা ভেঙে দেবো।

.



হৃদয়: এক টাও না।



রিমি: সত্যিই তো! মিথ্যা হলে তোর খবর আছে।



হৃদয়: হুমম।



রিমি ভুলটা আমার হাত থেকে নিয়ে বলল যা দুর হ।



আমি একটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে সামনে এগুতে থাকলাম। ভয় হচ্ছে এই পেত্নী টা যেনো আবার ডাক দিল বুঝি। না আর ডাক দিল না।



আমি বন্ধুদের দিকে যাচ্ছি আর মনে মনে বলছি।

আজ মান সম্মানের ফালুদা হয়ে গেলো। কিছুই আর বাকি থাকলো না।



বন্ধুদের কাছে যেতেই রিয়াজ বলে উঠলো:



রিয়াজ:কি রে কি এমন জাদু করলি যে মেয়েটা রাজি হয়ে গেল এক প্রপজেই!



(আমি মনে মনে বলতে লাগলাম বাহ্ এরা তাহলে আসল ব্যাপারটা বুঝতে পারে নী। ভালোই হয়েছে।)



সিরাজ: কিরে বল।কি বির বির করিস?



আমি একটু হিরোর মত ভাব নিয়ে বললাম:



হৃদয়: বুঝতে হবে। আমারে দেখে তো সব মেয়েই ক্রাশ খায়। শুধু পাত্তা দেই না তাই।



সিরাজ: বুঝছি। তো ট্রিট কিন্তু চাই মামা।



হৃদয়: হবে হবে সব হবে কয়েক দিন পরেই দিবো।



রিয়াজ: আচ্ছা।বাড়ি যাবো তোরা থাক। একটু কাজ আছে।



আমি সিরাজ কে বললাম আমিও বাড়ি যাবো থাক। মাথাটা ধরেছে।



রাস্তায় আসতে আসতে মনে হলো দুপুরের সেই ঘটনার কথাটা। না বাড়ি গিয়েই নীলিমাকে সরি বলতে হবে।



আমি এসে সোজা নীলিমার রুমে গেলাম। দেখি নীলিমা ঘুমিয়ে আছে। আমি বিছানার পাশে গিয়ে বসলাম।



আমি বসতে না বসতেই নীলিমা ধর ফরিয়ে উঠে বলল:



নীলিমা:ভাইয়া তুই!

.



হৃদয়: দুপুরের ঘটনা তার জন্য দুঃখিত। আমি ঘুমের মধ্যে বুঝতে পারিনি।



নীলিমা: না ভাইয়া আমার তেমন কোনো ব্যথা লাগেনি।



আমি দেখি নীলিমার কপালে ব্যান্ডেজ। তাড়াতাড়ি বললাম:



হৃদয়: মাথা কাটলো কেমনে?



নীলিমা: না মানে ভাইয়া!



হৃদয়: বল কেমনে!



নীলিমা: তখন ফ্লোরে পড়ে গেছিলাম মাথাটা বারি লাগছিল।



হৃদয়: ইসস আমার জন্য কষ্ট পাইছিস। ওষুধ লাগিয়েছি?



নীলিমা: হ্যাঁ বড় আম্মু লাগিয়ে দিয়েছে।



হৃদয়: আচ্ছা। তখন কি যেনো অংকের নাকি সমস্যা বলছিলি! একটু পর আমার রুমে আসিস আমি বুঝিয়ে দেবো নি।



নীলিমা: আচ্ছা।



আমি ফ্রেস হয়ে বিছানায় শুয়েছিলাম। কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম বুঝতে পারিনি। হটাৎ বুকের ওপর ভারী কিছু অনুভব করলাম।



আমি চোখ খুলে দেখি নীলিমা আমার বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে..........

.

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com