শেষ বেলার তুমিটা । পর্ব -০৫
নীলিমা: এই টা দিতে......................
আমি কিছু বুঝতে না পেরে নীলিমাকে জিজ্ঞেস করলাম কি এটা?
নীলিমা: একটা পাঞ্জাবী আছে পরে এসো।
হৃদয়: হঠাৎ পাঞ্জাবি! আর আমাকে পাগলা কুত্তায় কামড়াইছে নাকি যে এত রাতে পাঞ্জাবি পড়বো!
নীলিমা: যা বললাম তাই করো প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
আমি আর কিছু না বলে রুমে আসলাম পাঞ্জাবি পড়তে। প্যান্টটা খুলে দেখলাম একটা কালো রঙের পাঞ্জাবি। দেখতে ভালো মন্দ না।
আমি পাঞ্জাবীটা পরে নীলিমার রুমে গেলাম। এসে দেখি নীলিমা রুমে নেই।
কি আজব মেয়ে কখন কি করতে বলে কোথায় থাকে বুঝা যায় না।
রাগ করে চলে আসতে যাব তখনই পেছন থেকে নীলিমা ভাইয়া বলে ডাক দিল।
আমি পেছন ঘুরে দেখে নিলে তা ব্ল্যাক কালারের একটা শাড়ি পরেছে।
মনে হয় আমার পাঞ্জাবীর সাথে ম্যাচ করে কিনেছিল।
.
আমি নীলিমাকে একটু আরি চোখে জিজ্ঞেস করলাম:
হৃদয়: বা বাহ্! আজ সব এত ম্যাচ ম্যাচ কেন? তোর মাথার ভেতর কি চলতেছে!
নীলিমা কিছু না বলে হাত ধরে টানতে টানতে তার বেলকুনিতে নিয়ে গেল। আমায় উদ্দেশ্য করে বলল:
নীলিমা: দেখছো চাঁদটাকে কত সুন্দর লাগছে!
হৃদয়: হুমম। ভালোই লাগছে।
নীলিমা: আমার ইচ্ছা ছিল কোন একদিন তোমার পাশে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখবো।
হৃদয়: ওহ আচ্ছা! তো তোর বরের পাশে দাঁড়িয়ে চাঁদ দেখার শখ নেই বুঝি?
নীলিমা: হুম।
আমি চাদের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পেলাম নীলিমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে।
আমি নীলিমাকে কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম:
হৃদয়: কিরে কাঁদছিস কেন?
নীলিমা: এমনি।
হৃদয়: এমনি না। বল কেন কাঁদছিস?
নীলিমা: এটা দুঃখের কান্না না , খুশির কান্না।
হৃদয়: বাপরে পাগলিটা দেখছি অনেক বড় হয়েছে। আজকাল কি ভারী ভারী কথা বলে!
নীলিমা: হুমম তোমার জন্যই তো!
হৃদয়: হইছে হইছে এবার চল ঘুমাতে হবে।
নীলিমা: আরেকটু এখানে থাকি!
হৃদয়: বললাম তো চল! আর এক সেকেন্ডও এখানে থাকা যাবে না!
নীলিমা: হুমম চলো। তুমি ভালো না পচা ভাইয়া।
হৃদয়:হ্যাঁ এখন তো তাই বলবি।
নীলিমাকে রুমে রেখে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
.
এসে ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলাম। কার আবার রিমিকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।
ভাবতেই কি মজা লাগছে।
পরদিন কলেজ ফাঁকি দিয়ে রিমিকে নিয়ে ঘুরতে গেলাম।
রিমি নীল কালারের একটা শাড়ি পরেছে। দেখতে পুরোই পরীর মত লাগছে।
নিজেকে যেন তার মায়ায় জড়িয়ে ফেললাম। সারাদিন অনেক ঘোরাঘুরির পর সন্ধ্যায় রিমিকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমি আমার বাসায় আসলাম।
ফ্রেস হয়ে রুমে আসতেই দেখি নীলিমা হাজির। মনে মনে বললাম শালা শাকচুন্নি টা মনে হয় আমার অপেক্ষাতেই বসে থাকে। আমি একটু বিরক্তিকর লুক নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম:
হৃদয়: কিরে কি দরকার! আমার রুমে কেন!
নীলিমা: আমি আমার ভাইয়ার রুমে প্রয়োজন ছাড়া আসতে পারি না?
হৃদয়: না পারিস না!
নীলিমা: তুমি বললেই হলো নাকি! আমার যখন খুশি তখন আসবো! তোমার তাতে কি! এখনকার মতো যাচ্ছি। বাই
নীলিমা কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলে রুম থেকে চলে গেল।
পেত্নীটা সব সময় আমার পেছনে কেন লেগে থাকে। আজব ক্যারেক্টার মাইরি!
আমি রাতে খাওয়া-দাওয়া করে বিছানায় এসে শুয়ে আছি। এমনসময় রিমি ফোন দিল:
রিমি: বাবু কি করো?
.
হৃদয়: এই তো ডিনার করে আসলাম। তুমি?
রিমি: আমিও। কালকে কলেজে আসলে তোমায় একটা অনেক বড় সারপ্রাইজ দেবো।
হৃদয়: কি?
রিমি: এখন তো বলা যাবেনা!
হৃদয়: একটু তো বলো!
রিমি: না না না।
হৃদয়: আচ্ছা ঠিক আছে।
রিমি: হ্যাঁ ।আর ততক্ষণ পর্যন্ত আমার সাথে যোগাযোগ করবে না।
হৃদয়: এটা কেমন কথা!
রিমি: যা বললাম তা মনে থাকে যেন। না হলে কিন্তু খবর আছে ![😡](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t8d/1/16/1f621.png)
![😡](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t8d/1/16/1f621.png)
হৃদয়: ওকে ওকে।
রিমি: আচ্ছা বাবু গুড নাইট।
হৃদয়: গুড নাইট।
ফোনটা রেখে দিয়ে আমি ভাবছি যে কালকে আমায় কি এমন সারপ্রাইজ দিবে যে আমায় বলল না।যাইহোক আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
.
পরদিন আমি অনেক বেলা হয়ে গেলেও এখনো ঘুম থেকে উঠিনি। ফোনটার ক্রিংক্রিং শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি রিমি কল দিয়েছে। মনে মনে বললাম আজ আমার খবর আছে।
ভয়ে ভয়ে কলটা রিসিভ করলাম। কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে কেউ বলে উঠলো:
অপরিচিত লোক: এই ফোনটা যার আপনি কি তাকে চেনেন! একটু আগে মেয়েটা একসিডেন্ট করেছে। এখন তাকে জেনারেল ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। কল লিস্টে আপনার নাম্বার টা প্রথমে দেখলাম।
আপনি কি মেয়েটিকে চিনি? চিনলে তার বাড়ির লোকদের বিষয়টা জানান এবং দ্রুত জেনারেল ক্লিনিকে চলে আসুন........
.
চলবে...
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com