দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব - ৩৫
আহির টিংকু ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে এসব কথা চিন্তা করছিলো।
তখন টিংকু ভাই আবারো কথা বলে উঠলো।তাতে আহিরের হুঁশ এলো।
টিংকু ভাইঃ ফাইল?
আহিরঃ হ্যাঁ! এই যে সবগুলো ফাইল।
টিংকু ভাইয়ের দিকে ফাইল এগিয়ে দিলো আহির।টিংকু ভাই ফাইল গুলো খুলে দেখছে।আহির আবারো বললো!
আহিরঃ আয়…!
টিংকু ভাইঃ সব ফাইল ঠিক আছে।আপনি এখন আসুন।
আহিরঃ আমার কথা ছিলো তোমার সাথে।
টিংকু ভাইঃ নিউ প্রজেক্টের ব্যাপারে? আগামীকাল মিটিং হবে নিউ প্রজেক্ট নিয়ে।
তখন যা বলার বলবেন।
আহিরঃ আহ্ টিংকু ভাই! তুমি বারবার নিজে কেনো কথা বলছো।আমার কথা কেটে নিচ্ছো কেনো।
টিংকু ভাইঃ হ্যাঁ বলুন।
আহিরঃ আয়রা কেমন আছে?
টিংকু ভাইঃ হুয়াট?
আহিরঃ বুঝেও না বোঝার অভিনয় করছো?
টিংকু ভাইঃ ফার্স্ট অফ অল আয়রা আপনার অফিসের মালিক।আপনার মনে হয় না সম্মানের সাথে তার নাম নেওয়া উচিৎ আপনার?
আহিরঃ ফাইন! আয়রা ম্যাডাম কেমন আছে এখন।আই মিন ডক্টর কি বললো?
টিংকু ভাইঃ আপনি আমাদের ফ্যামিলি ম্যাম্বার?
আহিরঃ না।
টিংকু ভাইঃ আমাদের ফ্যামিলির ক্লোজ কেউ?
আহিরঃ মানে বুঝলাম না।
টিংকু ভাইঃ আয়রা ‘বা’ আমার বন্ধু আপনি?
আহিরঃ যা বলতে চাচ্ছো সরাসরি বলো টিংকু ভাই।
টিংকু ভাইঃ এটা আমাদের ফ্যামিলি ম্যাটার।আপনার না জানাই বেটার।আপনি এখন নিজের কাজে যেতে পারেন।
আহিরঃ এ্যাজ ইয়্যর উইশ।
টিংকু ভাইঃ আর একটি কথা।
আহিরঃ বলো!
টিংকু ভাইঃ আর কখনো আয়রার ব্যাপারে ‘বা’ আমাদের পার্সোনাল বিষয়ে কিছু জানার চেষ্টা করবেন না।
ইনফ্যাক্ট আয়রার সাথে কথা বলারও চেষ্টা করবেন না।
কিছু বলার থাকলে আমাকে বলবেন আপনি।নাউ ইউ মে গো প্লিজ।
আহির আর কথা বাড়ালো না।চলে গেলো আয়রার কেবিন থেকে বের হয়ে।
টিংকু ভাই নিজের কাজে মনোযোগ দিলো।আহিরের মনে কিছুতেই শান্তি লাগছে না।
এখন আহিরের মনে হচ্ছে রাগের মাথায় ভাঙচুর করা ঠিক হয়’নি।
আয়রা’কে এভাবে ধাক্কা দেওয়াও ঠিক হয়’নি।
আহির শুধু স্যরি বলতে চাচ্ছে আয়রা’কে।এর চেয়ে বেশি কিছু না।
রাত হয়ে গেলো।আকাশ বাড়ি এলো।
টিংকু ভাই বললো আয়রার হাত কেঁটে গিয়েছে।হাতে কাঁচ ফুঁটে গিয়েছে।
আকাশ দৌড়ে আয়রার রুমে গেলো।দেখলো আয়রা বসে টিভি দেখছে রুমে।
আকাশ গিয়ে আয়রার পাশে বসে! আয়রার হাত নিজের হাতের ভাজে নিলো।
আকাশঃ কি করে হলো এসব?
আয়রাঃ রিল্যাক্স আকাশ।
আকাশঃ রিল্যাক্স মানে? তোর হাতের অবস্থা দেখেছিস তুই?
আয়রাঃ কিচ্ছু হয়’নি ঠিক হয়ে যাবে।ব্যাস কাঁচের গ্লাস ভেঙে গিয়েছিলো।
আর কাঁচ ফুঁটে গিয়েছে হাতে।
আকাশঃ কাঁচের টুকরোর হাত-পাঁ আছে তাই না?
হেঁটে-হেঁটে এসে তোর হাতে ফুঁটে গেলো?
আয়রাঃ তুই কেনো এত চিন্তা করছিস?
আকাশঃ তুই বোস! আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
আকাশ রুমে গেলো ফ্রেস হতে।আকাশের কেমন খঁটকা লাগছে।
কারন আয়রা এতটা বেখেয়ালি আর ইরেসপন্সিবল মেয়ে না।আয়রা নিজের খেয়াল এবং সবার খেয়াল খুব ভালো করেই রাখতে জানে।
আহির বাসায় এসে রাতে বাহিরে একা-একা বসে সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া উড়াচ্ছে।ঈশা এসে বসলো আহিরের পাশে পাথরের উপর।আহির কিছু বললো না।
ঈশাঃ কিছু ভাবছিস ভাইয়া?
আহিরঃ আমার কাছ থেকে আর কি-কি লুকিয়ে রেখেছিস তুই?
ঈশাঃ বুঝলাম না আমি।
আহিরঃ তুই আকাশ’দের বাসায় সার্ভেন্ট হিসেবে কাজ করতি?
ঈশাঃ আহির ভাইয়া তোমাকে এসব কে বললো?
আহিরঃ সত্যিই তো! আমি তোর কে হই? আমাকে কেনো কিছু বলতে যাবি তুই?
আহির উঠে চলে যাচ্ছিলো! ঈশা উঠে দৌড়ে গিয়ে আহির’কে জরিয়ে ধরলো।আহির কিছু বললো না।ঈশা বললো!
ঈশাঃ ভাইয়া আমি যা করেছি।বস্তির লোকজনের জন্য করেছি।প্লিজ আমাকে ভুল বুঝিস না তুই।
আহিরঃ আকাশ তোকে ইউজ করেছে তাই না? তোকে নানা ভাবে অপমান করেছে আকাশ? ওর গার্লফ্রেন্ড সুমু সবার সামনে তোকে অপমান করেছে?
ঈশাঃ আহির ভাইয়া বাদ দাও না প্লিজ।
আহিরঃ আমি ছাড়বো না আকাশ’কে।যেদিন আমার হাতের সামনে আকাশ পড়বে।
সেদিন হবে আকাশের শেষ দিন এই পৃথিবীতে।
ঈশা এবার খুব ভয় পেয়ে গেলো আহিরের কথা শুনে।কারন আহির ভালোর সাথে ভালো।কিন্তু যদি কেউ খারাপ কাজ করে! তাকে আহির নিজের আসল রূপ দেখিয়ে দেয়।আহির নিজের আসল রূপে এলে কেউ আহির’কে আটকাতে পারবে না।আহির মেরেই ফেলবে তাকে।যে আহিরের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।আহির নিজের আসল রূপে এলে আকাশের রক্ষে নেই।আহির মেরে ফেলবে আকাশ’কে।আহির’কে ছেড়ে ঈশা বললো!
ঈশাঃ প্লিজ ভাইয়া! তুই এরকম কিছু করবি না।
আহিরঃ আমার বোন’কে কষ্ট দিয়েছে ও।শাস্তি আকাশ’কে পেতেই হবে।
ঈশাঃ তুই কিচ্ছু বলবি না আকাশ’কে ব্যাস।আমি তো এখন আর ওই বাড়িতে যাচ্ছি না।ছেড়ে দে ওদের।বাদ দে এসব কথা প্লিজ।
আহিরঃ অনেক রাত হয়েছে।গিয়ে শুয়ে পর তুই।
ঈশাঃ তুই বললি না কি হয়েছে তোর?
আহিরঃ আমার কি হবে নতুন করে? আরো একটি কথা!
ঈশাঃ বল!
আহিরঃ একটি ফ্ল্যাট দেখেছি আমি।কাল ফাইনাল করে ফেলবো।
ঈশাঃ মানে?
আহিরঃ মানে হলো নেক্সট মান্থে আমরা নতুন ফ্ল্যাটে উঠবো।
ঈশাঃ গুড নিউজ।
আহিরঃ গিয়ে ঘুমিয়ে পর।
ঈশাঃ গুড নাইট।
আহির চলে গেলো।ঈশা নিজের রুমে চলে গেলো।ওদিকে আকাশ এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে আয়রার রুমে গেলো।আয়রার পাশে বসে দুধের গ্লাস আয়রার সামনে ধরলো।আয়রা বললো!
আয়রাঃ তুই জানিস না? আমি দুধ পছন্দ করি না?
আকাশঃ তোর হাত কেঁটে গিয়েছে।গরম দুধ খেলে উপকার হবে।ব্যাথা কমে যাবে হাতের।শরীরে শক্তি পাবি তুই।
আয়রাঃ থাম তুই! ভাষন দিতে এসেছিস এখানে তুই?
আকাশঃ তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।
আয়রাঃ খেতেই হবে?
আকাশঃ হুমম খেতেই হবে।বাবা বাসায় থাকলে তোকে এভাবে জোর করেই দুধ খাওয়াতো।
আফসোস বাবা দেশে নেই।
আয়রা আর কথা বাড়ালো না।চুপটি করে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিলো।
আকাশ বেড সাইড টেবিলে দুধের খালি গ্লাস রেখে বললো!
আকাশঃ শুয়ে পর তুই।
আয়রাঃ এত তাড়াতাড়ি?
আকাশঃ মেডিসিন খেয়েছিস।ঘুমিয়ে পর! ঘুম থেকে উঠে দেখবি হাত ব্যাথা কমে এসেছে অনেক’টা।
আয়রাঃ উফফফ্ এত জ্বালানো শিখেছিস তুই।একদম বাবার মতো শাসন করছিস আজ।
আয়রা শুয়ে পরলো।আকাশ আয়রার পাশে বসে আয়রার কঁপালে হাত বুলিয়ে দিলো।
আয়রা আরাম পেয়ে ঘুমিয়ে গেলো।আকাশ নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে আয়রার কঁপালে ভালোবাসার পরশ দিলো।
তারপর আয়রার রুমের গেট চাঁপিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
টিংকু ভাইয়ের রুমে গিয়ে দরজায় টুকা দিলো আকাশ।
টিংকু ভাই এত রাতে আকাশ’কে নিজের রুমে আসতে দেখে একটু ঘাবড়ে গেলো।
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com