দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব - ৩৬
আকাশ টিংকু ভাইয়ের রুমের সামনে গিয়ে দরজায় ৩-৪ বার টুকা দিলো।টিংকু ভাই ভয়ে-ভয়ে দরজা খুলে রুমের ভেতরে চলে গেলো।আকাশ টিংকু ভাইয়ের রুমে ঢুকে, টাউজারের দু পকেটে হাত রেখে!
রাগি চোখে টিংকু ভাইয়ের দিকে তাকালো।টিংকু ভাই ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো।
টিংকু ভাইঃ এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো আমার দিকে?
আকাশঃ সত্যিই বুঝতে পারছো না? নাকি না বোঝার অভিনয় করছো কোন’টা?
টিংকু ভাইঃ বু.বুঝতে পারছি না।
আকাশঃ ওয়াও গ্রেট! তুমি তোতলা তেও জানো? আমি তো আমার জন্মের পর! তোমায় কোনোদিন তোতলাতে দেখি’নি।
টিংকু ভাইঃ ওওও আল্লাহ্! প্রেশার বেড়ে গিয়েছে বোধয় আমার। [ন্যাকা অভিনয় করে]
আকাশঃ টিংকু ভাই তুমি যদি আর একবারও আমার সামনে এসব অভিনয় করো।আমি কিন্তু…!
টিংকু ভাইঃ কি বলতে এসেছো বলো।আমার ঘুম পাচ্ছে।
আকাশঃ আপুর হাত এমন কাঁটলো কিভাবে? উঁহ্ কোনো অভিনয় না।সোজা জবাব চাই আমার।
টিংকু ভাইঃ হেহেহেহে! আয়রা তোমাকে বলে’নি? হঠাৎ করে কেঁটে গিয়েছে।
আকাশঃ আমার বোন এতটাও কেয়ারলেস নয়।সেটা তুমিও জানো ভালো করে আর আমিও।তাই এসব মিথ্যে আমাকে বোঝাতে এসো না।
.
টিংকু ভাইঃ [সত্যি বললে এবার দুটো আই.সি.ইউ কেবিন বুক করা লাগবে হসপিটালে।একটা আহিরের জন্য।আর একটা আকাশের জন্য]
আকাশঃ আমি তোমাকে কি বলছি? শুনতে পাচ্ছো না তুমি কানে?
টিংকু ভাইঃ আকাশ তুমি যা ভাবছো তা নয়।হঠাৎ করে কাঁচের গ্লাস ভেঙে যায়।আর এরকম এ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যায়।
আকাশ বুঝলো নিশ্চয়ই কোনো বড় লাফড়া আছে।টিংকু ভাই এত সহজে মুখ খুলবে না।একটাই রাস্তা আছে।টিংকু ভাইয়ের মুখ খুলানোর জন্য।আকাশ টিংকু ভাইয়ের সামনে গিয়ে! নিজের মাথায় টিংকু ভাইয়ের হাত রাখলো।টিংকু ভাই এসব “কসম” খুব মানে।তাই আকাশ ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করলো টিংকু ভাই কে।
আকাশঃ তোমাকে আমার কসম।এখন সব সত্যি বলো আমাকে খুলে।গোন্ডগোল পাঁকিয়েছো তা বুঝেছি তোমার চেহারা দেখে।
টিংকু ভাইঃ আকাশ কি করছো তুমি।
আকাশঃ বলবে তুমি! নাকি অন্যভাবে জানবো আমি কোন’টা?
টিংকু ভাইঃ বলছি সব।
টিংকু ভাই এক দীর্ঘশ্বাঃস ছেড়ে বলতে শুরু করলো আকাশ’কে সবকিছু খুলে।সেদিন রাতে ড্রাংক অবস্থায় যখন ঈশা’কে ওর বাসায় পৌঁছে দিতে যায়।তখন আহির দেখে ফেলে।ঈশার ভাই আহির বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করেছে।টিংকু ভাইয়ের সঙ্গে ঈশা’কে দেখে।ঈশা কিছু’ই বলে’নি বাসায়।ঈশা এই বাসায় কাজ করেছে সার্ভেন্টের।টিংকু ভাই সবকিছু বলে দেয় ঈশার ব্যাপারে।আকাশ,সুমু আর ঈশা’কে নিয়ে পার্টিতে সেদিন কি হয়।সবকিছু টিংকু ভাই আহির’কে বলেছে।আহির খুব রেখে যায়।আজ সকালে অফিসে এসে আয়রার সাথে আহির কি-কি করেছে।সবকিছু বললো টিংকু ভাই আকাশ’কে।আকাশ রাগে নিজের দু হাত মুঠ করে ধরলো।
আকাশঃ আহির! ঈশার বড় ভাই?
টিংকু ভাইঃ হ্যাঁ।
.
আকাশঃ আমার বোনের সাথে যা করেছে আহির।তার দাম কাল সকালে আহির’কে দিতে হবে।
ছাড়বো না আহির’কে আমি।
টিংকু ভাইঃ আয়রার সাথে আজ এমন বিহেভ করলো।না জানি গতকাল রাতে ঈশার সাথে কি করেছে রেগে।
আকাশের আরো রাগ উঠে গেলো টিংকু ভাইয়ের কথা শুনে।আকাশ কিছু বললো না।টিংকু ভাইয়ের রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
টিংকু ভাইঃ কাল অফিসে ধামাকা হবে মনে হচ্ছে।
সকাল হয়ে গেলো।আয়রা আজ অফিসে যায়’নি।আকাশ বলেছে নিজে সব কাজ সামলে নিবে।
আয়রা বাসায় রেস্ট নিচ্ছে।আকাশ অফিসে গিয়েছে।
টিংকু ভাই দুটো এ্যাম্বুল্যান্স বুক করে দিয়েছে হসপিটালে আগে থেকেই।
এদিকে আহির অফিসের জন্য বের হয়েছে।
আহির বেড়িয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ঈশা খেয়াল করলো।আহির নিজের ফোন বাসায় রেখে গিয়েছে।
ঈশা প্রথমে ভাবলো ব্যাপার না।পরে আবার ভাবলো।
যদি কোনো ইম্পর্ট্যান্ট ফোন আসে অফিসের?
ঈশা একটা জামা পরে,চুলগুলো উঁচু করে এক ঝুটি বাঁধলো।
তারপর আহিরের ফোন নিয়ে! আহিরের অফিসের দিকে গেলো।
আহির অফিসে গিয়ে নিজের কমপ্লিট করা ফাইল গুলো!
আবারো চেক করলো ভালো করে।তারপর মনে-মনে ভাবলো “হয়তো আয়রা এসে পরেছে।
গিয়ে ফাইল গুলো জমা দিয়ে আসি।আর স্যরি বলে আসি গতকালের জন্য”।
এসব ভেবেই আহির আয়রার কেবিনের সামনে গিয়ে বললো!
আহিরঃ মে আই কাম ইন।
টিংকু ভাইঃ ইয়েস কাম।
.
আহির মাথা নিচু করে ফাইল গুলো টেবিলে রাখলো।তখনি আহির খেয়াল করলো।একজন ছেলে আয়রার জায়গায় বসে আছে।আহির মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলো আকাশ।
আহিরঃ তুমি?
আকাশঃ তোর বাবার অফিস নাকি? অফিসের ওনারের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না?
আহিরঃ মাইন্ড ইয়্যর ল্যাংগুয়েজ।ভদ্র ভাবে কথা বলুন।অফিসের ওনার যদি অশিক্ষিতোর মতো কথা বলে তাহলে…!
আকাশঃ টিংকু ভাই দরজা চাঁপিয়ে দাও।
টিংকু ভাইঃ আকাশ শোনো বলি কি…!
আকাশঃ আই সেইড ক্লোজ দ্যা ডোর রাইট নাউ। [চিল্লিয়ে]
টিংকু ভাই দরজা চাঁপিয়ে দিলো।আকাশ নিজের জায়গা থেকে উঠে এসে! আহিরের সামনে দাঁড়ালো।আহির স্পষ্ট আকাশের চোখে রাগ দেখতে পেলো।
আকাশঃ গতকাল আমার বোনের সাথে কি করেছিস তুই?
আহিরঃ তোমাকে বলার প্রয়োজন বোধ করছি না আমি। [ঠান্ডা গলায়]
আকাশঃ তুই আমার বোনের চোখের পানি ফেলিয়েছিস।আমার বোনের হাতের রক্ত ঝড়িয়েছিস।
আহিরঃ আর তুই তোর বোনের বদলা নিতে এসেছিস আমার কাছে?
আকাশঃ তুই নাকি আমার বোন’কে অপেন চ্যালেঞ্জ করেছিস।
আমাকে সামনে পেলে উপরে টপকে দিবি।
আহিরঃ আমি অফিসে ঝামেলা করতে আসি’নি।
আশা করি তুই ভুলে যাস’নি।
তুই গত একমাস আমার বোনের সাথে কি করেছিস।
আমাকে মনে করাতে বাধ্য করিস না।তোর বোন তোর কাছে যত’টা ইম্পর্ট্যান্ট।
ঠিক ততোটাই আমার বোন আমার কাছেও গুরুত্বপূর্ণ।আই হোপ তুই বুঝতে পেরেছিস?
আমাকে দিয়ে মুখ খুলাস না।গোন্ডগোল হয়ে যাবে।
আকাশঃ তোকে ভয় পাই নাকি আমি? তোর বোন’কে জিজ্ঞেস করিস।
আমি তোর বোন’কে কোনো কষ্ট দিয়েছি কি-না।এসব কথা ছাড়।আমার গাঁয়ে হাত দিয়ে দেখা।
আহিরঃ আমার রাগ উঠে গেলে ক্ষতি হয়ে যাবে।আমি বলছি ঝামেলা করিস না অফিসে।অফিসের মালিক কে ঝামেলা করতে দেখলে খারাপ বলবে লোক।তোকে আমি শেষ বার বলছি।ঝামেলা করিস না।
আকাশঃ আমাকে থ্রেট দিচ্ছিস তুই।তোর বোনের এবার কি হাল করি আমি…!
.
আকাশ আর কিছু বলার আগেই! আহির দু হাত দিয়ে আকাশের কলার চেঁপে ধরলো।
এতক্ষণ কিছু বলে’নি আহির।কিন্তু এবার আকাশ নিজের সীমা পার করে ঈশার নাম নিয়েছে।
এটা আহির সহ্য করবে না।আকাশ নিজেও আহিরের কলার চেঁপে ধরলো।
টিংকু ভাই এতক্ষণ এই ভয় টাই পাচ্ছিলো।
তাই হচ্ছে এখন।টিংকু ভাই ভয় পেয়ে গেলো।ওদের কলার ধরা দেখে।
.
চলবে…..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com