নেশাগ্রস্ত ভালোবাসা । পর্ব -০৩
পেপার’স গুলোর হার্ড কপি আমাকে মেইল করুণ আর হ্যাঁ প্লিজ আমার এই নম্বরের আর কখনো ফোন কিংবা কল কোনো টাই করবেন নাহ…!”
সকাল থেকে ইমানের আচার-ব্যবহার মিমের কাছে একটু ও সুবিধাজনক বলে মনে হচ্ছিলো না….।।
বিকেলে রেনু রিজওয়ান সাহেব কে নিয়ে তার ভাইয়ের বাসায় দাওয়াতে চলে গেলেন,তার মধ্যে ছাঁদে বার্বিকিউ পার্টির সমস্ত আয়োজন করে ফেললো ওরা।।
যে যার মতো সময় কাটাচ্ছিলো,নিজের ঘরে জরুরী কাজ করছিলো একা একা বসে মেয়ে টা…! কিছুক্ষণ পর,
ইমা এসে বললো,
– “আরে এখানে একা একা বসে আছিস যে? চল,ছাঁদে যাবি না? চল আমার সাথে।।” মিম ইমার জোড়াজুড়ি তে ছাঁদে চলে এলো,এসে দেখলো ইমান গিটার বাজিয়ে গান করছে ওর বন্ধুদের মাঝে বসে…।।
প্রায় দশ মিনিট পর,
.
বারবিকিউ গ্রিল হয়ে গেলো,ইমান মিম বাদে নিজের হাতে খাবার সার্ফ করলো সবার প্লেটে।।
অতঃপর ইমানের বন্ধু ইমন এসে মিমের প্লেটে বার্বিকিউ গ্রিল তুলে দিলো,আশকারা এসে ইচ্ছে করে তখন ধাক্কা মে’রে প্লেট টা ফেলে দিলো মিমের হাত থেকে।।
ইমান সাথে সাথেই এগিয়ে এলো,আশকারা কে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “দেখি তোমার কোথায় লেগেছে?” আশকারা ন্যাকা কান্না কেঁদে বললো,
– “দেখ না বেবি? এই ভিখারি মেয়ে টা আমার বিশ হাজার টাকা দামের ড্রেস টা নষ্ট করে ফেলেছে?” ইমান এগিয়ে এসে মিম কে ঝাড়ি মেরে বললো,
– “এটা কি করেছেন আপনি? ইচ্ছে করে করেছেন আমার আশুর সাথে?” মিম কিছু বলতে চাইলো,আসিন উঠে এসে বললো,
.
– “আরে ভাই বাদদে…!
মেয়েটির কোনো দোষ নেই,তুই কেন শুধু শুধু কথা শোনাচ্ছিস মেয়ে টা কে?
আমি সবাই কে খাবার সার্ফ করে দিচ্ছি তোরা গিয়ে বয়,আপু তুমি ও গিয়ে বসো সবার সাথে।।
মিম এগিয়ে এসে চেয়ার নিয়ে বসতে গেলো,ইমান চেয়ার টা টেনে সরিয়ে দিলো পেছন থেকে…!
মিম বসতে গিয়ে পরে গেলো,তবুও সে যত সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো নিজেকে সবাই যদিও তা দেখে হাসাহাসি করছিল কিন্তু মিম কে স্বাভাবিক দেখে সবাই দমে গেছে।।
আজিন মিমের জন্য আলাদা প্লেটে খাবার নিয়ে এলো,তখন মিম একটু দূরে দাঁড়িয়ে গল্প করছিল ইশির সাথে।।
ও খেতে বসলো,ভুল বশত একটু ধাক্কা লেগে গেলো ইমানের সাথে।।
ইমানের হাতের গ্লাসের পানি টা গায়ে পরে ট্রাউজার ভিজে গেলো,ইমান রেগে গিয়ে খাবারের প্লেট টা ছুড়ে ফেলে দিলো মিমের হাত থেকে…! মিম ভয়ে আৎকে উঠলো,ইমান চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
– ” ঠাসসস করে দিতে হয় একটা কানের নিচে…! বেয়াদব মেয়ে সিমপ্যাথি কুইন,ড্রামা করে সিমপ্যাথি আদায় করার চেষ্টা করছ এখানে সবার কাছ থেকে?” ইমন ইমান কে ঝাড়ি মেরে বললো,
– “আরে কি হয়েছে কি তোর? শুধুশুধু কেন এমন উদ্ভট ব্যবহার করছিস ওই মেয়েটির সাথে?” মিম কোনো ঝামেলা না বাড়িয়ে ওখানে থেকে চলে আসতে চাইলো কিন্তু ইমান নিচে পরে থাকা খাবার তুলে জোর করে সেগুলো খাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলো ওকে।
তখন ইউসা এসে মিম কে ইমানের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেলো,সবাই মিলে বুঝিয়ে ইমান কে খেতে বসিয়ে দিলো আশকারার সাথে…।।
.
ইমান কোনোমতে খেয়ে নিজের ঘরে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো,
কিন্তু ওর খুব অস্বস্তি লাগছে একা ঘরে থেকে।।
মিম চুপচাপ ঘরে বসে আছে,ও বেশ বুঝতে পারছে গতকাল রাতে চর মরার জন্যই ইমান
এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে ওর সাথে,যদিও ওর তাতে কোনো মাথা ব্যাথা নেই
ও শুধু নিজের কাজ টা সেরে চলে যেতে চায় এ বাড়ি থেকে…।।
ইমান নিজের সাথে অনেক যুদ্ধ করে ও পেরে উঠলো না,
নিজেকে অনেক ছোটো মনে হচ্ছে ওর নিজের কাছে।।
কখনো সে খাবার নিয়ে এমন নোংরা আচরণ করেনি কারো সাথে কেন যেন অমানুষ বলে
হচ্ছে তার নিজেকে,ও ঝটপট রান্নাঘরে এসে খাবার গরম করে মিমের ঘরে নিয়ে এলো,
এসে দেখলো ইউসা নিজের হাতে মাছ বেছে ভাত খাইয়ে দিচ্ছে ওকে,
ও দরজা থেকে ফিরে এলো,এসে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো বারান্দায় দেওয়ালের সাথে।।
কিছুক্ষণ পর ইউসা মিমের ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো, ইমান ওকে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি সম্পর্ক তোর ওনার সাথে?”
– “দেখ ভাইয়া…! আমি তোকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই,যদি একান্ত দিতেই হয় তাহলে দেবো বাবা-মায়ের কাছে।।”
– “তুই এই সমস্ত মেয়েদের চিনিস না ভাই…!”
– “হ্যাঁ,তুমি খুব চেনো ওকে? তুমি নিজের দোষটা কখনো দেখতে পাও না তাই না? কি মনে হয় তোর নিজেকে?”
– “ইউসা?”
– “প্লিজ আমাকে বোঝাতে আসিস না…! আমি বয়সে ছোটো হলেও মানুষ চিনতে আমার কখনো ভুল হয় না ঠিক আছে?” ইউভান দুই ভাইয়ের কথা শুনে এগিয়ে এসে ইমান কে বললো,
– “কাজ টা তুই একদম ঠিক করলি না…।”
– “ভাইয়া?”
.
– “গতকাল রাতে তোদের দু’জনের মধ্যে যা হয়েছে,তা আমার অজানা না আর আজ যা ঘটলো তার দায় সম্পূর্ণ তোদের অর্থাৎ তোর এবং আশকারার মিমের কোনো দোষ’ই ছিলো না…!” ইউসা এগিয়ে এসে বললো,
– “আমি ও সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করছি ভাইয়া কিন্তু ও নিজের দোষ টা দেখতেই পাচ্ছে না…! সামান্য খাবার নিয়ে এতো বড় একটা ইসু বানিয়ে ফেললো…!
অথচ এতো ড্রামা করার কোনো প্রয়োজন ছিল না।গতকাল রাতে ও জানিস ভাইয়া মিমের কোনো দোষ ছিলো না,ভাইয়া ওকে জোর করে ওয়াইন খাইয়ে দিয়েছিল বাসায় সবাই জানে মিম এসব পছন্দ করে না।
তাহলে জেনে-বুঝে এমন ব্লান্ডার করার কোনো মানে হয়? কোনো মানেই হয় না।।” ইমান দুই ভাইয়ের কথা শুনে নিজের ঘরে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো কিন্তু ওর অস্থিরতা কিছুতেই কমলো না।
ও নিজেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করলো,
– “আমি ওনার সাথে এমন আচরণ কেন করছি? যেটা আমি নাহ…!”
.
চলবে,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com