Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -২৭



আকাশঃ তুমি আমাকে আর ঈশা’কে নিয়ে ভুল বুঝছো সুমু।তুমি যা ভাবছো তা নয়।
সুমুঃ আমি সবকিছু স্পষ্ট বুঝতে পারছি আকাশ।তুমি বদলে গিয়েছো।
আকাশঃ সুমু আমি তোমাকে ভুলে যাবো? এটা কিভাবে ভাবলে তুমি?
সুমুঃ তুমি আমাকে ভুলে যাও’নি?
আকাশঃ সুমু…!
সুমুঃ ফাইন! তাহলে আজ তুমি কিভাবে ভুলে গেলে এই দিনটার কথা? আজ আমাদের জন্য কি কোনো ইম্পর্ট্যান্ট ডে ছিলো না?
আকাশঃ আমি…!
.
সুমুঃ ফোন করে একবার ভালোভাবে কথাও বলো’নি আজ আমার সাথে তুমি।ফুল এ্যারেঞ্জমেন্ট ঈশা করলো।তোমার বন্ধুরা তোমাকে যখন জিজ্ঞেস করলো আজ কিসের পার্টি? তখন তুমি কোনো জবাব দিতে পারলে না।এই ভালোবাসো আমাকে তুমি তাই না আকশ?
আকাশঃ সুমু তুমি যা নয় তা বলে যাচ্ছো।আমাকে বলার কোনো সুযোগ দিচ্ছো না।আমার কোনো কথাও শুনছো না।তোমার যা ভালো মনে হচ্ছে! তুমি তাই বলে যাচ্ছো।প্লিজ একবার মাথা ঠান্ডা করে আমার কথা শোনো সুমু।আমি কি বলতে চাই একবার বোঝার চেষ্টা করো তুমি।
সুমুঃ আর মাথা ঠান্ডা করে শোনার মতো কিছু নেই।বোঝার মতো আর কিছুই বাকি নেই।কারন আমি সবকিছু বুঝে গিয়েছি।সবকিছু বোঝার,শোনার আর বলার সময় শেষ আকাশ।
আকাশঃ মানে!
সুমুঃ মানে আমাদের সম্পর্ক এখানেই সমাপ্ত।হয়তো এটাই আমাদের ভাগ্যে ছিলো।
আকাশঃ সুমু তোমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে? তুমি কি বলছো এগুলো? সম্পর্ক শেষ মানে? এটা একটু বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে সুমু।
.
সুমুঃ ব্রেকাপ আকাশ।আজ থেকে না তুমি আমার সাথে কন্টাক্ট করার চেষ্টা করবে।আর না আমি তোমার সাথে কন্টাক্ট করবো।আমাদের সম্পর্ক আজ থেকে এখানেই শেষ।
সুমুর কথা শুনে আকাশ মনে হলো শূন্যে দাঁড়িয়ে আছে।আকাশের মাথায় কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।আকাশ আজ সুমু’কে চিনতে পারছে না।এটা সুমুর কোন রূপ? সুমু তো কখনো এরকম করে না।
আয়রা,টিংকু ভাই,ঈশা,নিলয়,আবির,রিহান সবাই অবাক হয়ে তাকালো সুমুর দিকে।কারন আবির,নিলয় আর রিহানের সাথে সুমুর পরিচয় আজকের নয়।৬ বছরের বন্ধুত্ব ওদের সবার।আজ ওরা কেউ সুমু’কে চিনতে পারছে না।সুমু আর যাই হোক আকাশ’কে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারে না।সেখানে সুমু ব্রেকাপের মতো এত বড় একটা কথা বললো? এটা কিছুতেই মানতে পারছে না কেউ।
.
আকাশঃ সুমু তোমার কিছু হয়েছে? আই মিন ফ্যামিলি প্রবলেম,পার্সোনাল প্রবলেম এনিথিং?
সুমুঃ আমার কোনো সমস্যা হয়’নি।আমি একদম ঠান্ডা মথায় কথাগুলো বলেছি।আমি একদম ঠিক আছি।
আকাশঃ সুমু তুমি এরকম করো না আমার সাথে।আমার সাথে এরকম কিভাবে করতে পারো তুমি? আমাকে ভালোবাসো তুমি।আর আমি তোমাকে…!
সুমুঃ তুমি আমাকে ভালোবাসো না।আর এটা আমি আজ নয় অনেক দিন আগেই বুঝে ফেলেছি।তুমি অন্য মেয়েদের মতো আমাকে ইউজ করতে চেয়েছিলে! কিন্তু আমার ভালোবাসার কাছে তুমি হেরে গিয়েছো।আর আমি তোমার অভ্যাসে পরিনত হয়ে গিয়েছি।এর চেয়ে বেশি কিছু না।তাই আমার মনে হয়! আমাদের সম্পর্ক এখানেই শেষ হয়ে যাওয়া উচিৎ।
.
আকাশঃ সুমু তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে।প্নিজ তুমি শান্ত হয়ে বসো।এটা কোনো ছোটো-খাটো ডিসিশন না।
সুমুঃ আমি এখানে বসতে আসি’নি।আমার যা বলার ছিলো! আশা করি বলে ফেলেছি।আজ থেকে আমরা আলাদা।আমাদের সম্পর্ক শেষ ব্রেকাপ।ভালো থেকো তুমি আকাশ।লাইফে অলওয়েজ খুশি থাকো তুমি আকাশ বায়।
সুমু চোখের পানি মুছতে-মুছতে আকাশের বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো।রাস্তায় বের হতেই সুমু থেমে গেলো ঈশা’কে দেখে।
.
সুমুঃ তুমি?
ঈশাঃ আজ যত ইচ্ছে তুমি আমাকে অপমান করতে পারো।আমি কিছু মনে করবো না তোমার কথায়। [নরম গলায়]
সুমুঃ তোমাকে এত অপমান করি।তবুও তোমার লজ্জা হয় না?
ঈশাঃ উঁহু! কারন প্রতিবার তোমার অপমানের যোগ্য জাবাব দেই আমি।তাহলে লজ্জা কেনো পাবো আমি?
সুমুঃ সরে যাও আমার সামনে থেকে।
সুমু ঈশার সামনে থেকে সরে একটু এগিয়ে যেতেই! ঈশা আবার কথা বলে উঠলো।তাতে সুমু দাঁড়িয়ে ঈশার দিকে ফিরে তাকালো।ঈশাও সুমুর দিকে তাকিয়ে বললো!
ঈশাঃ ছোটো থেকে একটা কথা শুনেছি।”মানুষের চোখ নাকি মনের আয়না”।যে মানুষের চোখের ভাষা বুঝতে পারে! সে মানুষের মনের কথাও বুঝতে পারে।
সুমুঃ রিয়্যেলি! বলো আমার চোখে তুমি কি পড়তে পেরেছো?
ঈশাঃ আমি জানি না তুমি কেনো আকাশ’কে ছেড়ে চলে যাচ্ছো।আমার ঘাড়ে সব দোষ চাঁপিয়ে দিয়ে! তুমি আকাশের সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে চলে যাচ্ছো।কিন্তু…!
সুমুঃ কিন্তু কি? [কান্নারতো অবস্থায়]
ঈশাঃ কিন্তু তুমি আকাশ’কে ভালোবাসো।আর তুমি আকাশ’কে ছেড়ে যেতে চাচ্ছো না।তবুও পরিস্থির চাঁপে পরে তুমি বাধ্য হয়ে! আকাশের সাথে নিজের সম্পর্ক শেষ করেছো।
সুমুঃ [ঈশা বুঝলো কিভাবে এতকিছু।আমার মনের কথা ঈশা কিভাবে বুঝে ফেললো।যাই হোক না কেনো! আল্লাহ্ তুমি তো সবকিছু জানো? আমি কেনো এসব করেছি?]
ঈশাঃ জানি না তুমি কোন সমস্যার ভেতরে আছো।আর কেনো এরকম ভয়ঙ্কর ডিসিশন নিলে তুমি।কিন্তু যাই করেছো তুমি মন থেকে করো’নি।এতটুকু বুঝতে পেরেছি আমি।
সুমুঃ তোমার জন্য সবকিছু হয়েছে।তুমি আমার আর আকাশের সম্পর্ক ভাঙার কারন।
ঈশাঃ আমি যে তোমাদের সম্পর্ক ভাঙার কারন না।সেটা তুমিও ভালো করেই জানো।
সুমুঃ শাট আপ!
.
সুমু কাঁদতে-কাঁদতে চলে গেলো।ঈশা বুঝতে পারলো না।আসলে সুমু কেনো এরকম করলো আজ আকাশের সাথে।ঈশা ভেতরে চলে গেলো।
রাত অনেক হয়েছে।রাস্তা ফাঁকা বললেই চলে।সুমু একা-একা হাঁটছে আর চোখের পানি ফেলছে।সুমুর কি হয়েছে সুমু সেটা কাউকে বলতে পারবে না।সুমু শুধু চায় শেষ মুহূর্তে আকাশের মনে যেনো সুমুর জন্য দয়া আর সিমপ্যাথি না থাকে।শুধু ঘৃণা থাকে আকাশের মনে সুমুর জন্য।তাই সুমু আজ পার্টিতে ইচ্ছে করে ঈশার উপর দোষ চাঁপিয়ে! আকাশের সাথে ব্রেকাপ করলো।সুমু আজ এটাও ভাবলো! ঈশার সাথে সময়-অসময় কত খারাপ ব্যবহার করেছে সুমু।কিন্তু ঈশা আজ সুমুর মনের কথাগুলো বলে দিলো? আসলেও ঈশা খারাপ মেয়ে নয় সুমু ভাবছে।
এসব ভাবতে-ভাবতে কখন সুমুর একদম কাছে গাড়ি চলে এসেছে সুমু খেয়াল’ই করে’নি।গাড়ির হর্ণও শুনতে পায়’নি ভাবনায় এতটা মগ্ন ছিলো সুমু।সুমুর একদম কাছে গাড়ি আসতেই! সুমুর চোখে লাইটের আলো পরলো।সুমু চোখের সামনে হাত রাখলো।গাড়িতে থাকা মানুষটি যেমন-তেমন ভাবে গাড়ি ব্রেক করলো।আর একটু হাফ ইঞ্চি দূরত্বের জন্য সুমু বেঁচে গেলো।ছেলেটি ভয়ের নিঃশ্বাস নিলো।গাড়ি থেকে নেমে দেখলো একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।চোখে পানির বন্যা বয়ে যাচ্ছে মেয়েটির।ছেলেটি বললো!
.
—: হ্যালো ম্যাডাম! আর একটু হলে আকাশে উড়ার টিকিট কনফার্ম ছিলো।
সুমুঃ নিশ্চুপ…!
—: মরার জন্য আমার গাড়ির সামনেই আসতে হলো আপনাকে?
সুমুঃ নিশ্চুপ…!
—: এক মিনিট-এক মিনিট! আপনি সুইসাইড করতে বেরিয়েছেন? সুইসাইড করার জন্য অন্যকোনো গাড়ি পেলেন না? আমার গাড়ির নিচেই সুইসাইড করতে হবে আপনাকে?
সুমুঃ আ’ম স্যরি!
সুমু স্যরি বলে আবারো সামনে হাঁটতে শুরু করলো।সুমুর মাথায় এখন কিছুই কাজ করছে না।ছেলেটি বোকার মতো দাঁড়িয়ে রইলো।
—: মেয়েটি পাগল নাকি বোবা! অদ্ভুত টাইপের মেয়ে।
.
চলবে…..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com