Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -২৮



আকাশ কারো সাথে কোনো কথা বললো না।উপরে নিজের রুমে চলে গেলো।ঈশা বললো!
ঈশাঃ টিংকু ভাই আমি বাসায় যাচ্ছি।
আয়রাঃ সাবধানে যেও।
ঈশাঃ থ্যাংক ইউ। [আয়রা’কে উদ্দেশ্য করে]
আয়রাঃ কেনো?
ঈশাঃ আমাকে সবার সামনে সাপোর্ট করার জন্য।
আয়রাঃ ইট’স ওকে।
.
ঈশা বাসায় চলে গেলো।টিংকু ভাই আর কথা বাড়ালো না।আয়রা উপরে আকাশের রুমে গেলো।
আকাশ নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে! রুমের জানালার সামনে দাঁড়ালো।আকাশের চোখে শুধু একটু আগের ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো ভাসছে।আকাশ এখনো ভাবতে পারছে না।সুমু এভাবে আকাশ’কে সবার সামনে অপমান করলো? আকাশের খুব মাইন্ডে লেগেছে ব্যাপার’টা।তাছাড়া সুমুর ব্যবহার আজ অন্যরকম ছিলো।আকাশ এতদিনে সুমু’কে একটু হলেও চিনেছে।
আয়রা এসে আকাশের রুমে ঢুকলো।আকাশ গেটের লক খোলার আওয়াজ পেয়ে হাল্কা আড় চোখে তাকিয়ে দেখলো আয়রা।আকাশ বাহিরের দিকে তাকালো।রাতের অন্ধকারে সবকিছু কালো দেখাচ্ছে।আয়রা এসে আকাশের পিছনে দাঁড়ালো।
.
আয়রাঃ সুমু এরকম বিহেভ কেনো করলো?
আকাশঃ ডোন্ট নো।
আয়রাঃ সুমুর সাথে তোর ঝগড়া হয়েছিলো এক সপ্তাহ্ আগে?
আকাশঃ না।
আয়রাঃ তাহলে গত এক সপ্তাহ্! তুই সুমুর সাথে কথা কেনো বলিস’নি?
আকাশঃ নিশ্চুপ…!
আয়রাঃ সুমুর ফোন কেনো ধরিস’নি গত এক সপ্তাহ্?
আকাশঃ নিশ্চুপ…!
আয়রাঃ সুমু নাকি প্রতিদিন তোকে ফোন দিয়েছে গত এক সপ্তাহ্ ধরে।তুই ফোন রিসিভ করে বলেছিস পরে কথা বলবি।কিন্তু আর একবারও সুমু’কে ফোন করিস’নি কেনো?
আকাশঃ নিশ্চুপ…!
.
আয়রাঃ তুই কেনো সুমু’কে এভাবে এভয়েড করেছিস প্রতি’নিয়ত?
আকাশঃ নিশ্চুপ…!
আয়রাঃ আকাশ চুপ করে থাকবি না।আমার জবাব চাই। [চিল্লিয়ে]
আয়রার চিল্লানো শুনে টিংকু ভাই উপরে আকাশের রুমে চলে এলো।আকাশ এবার আয়রার চিল্লানোতে রেগে গেলো।কারন আকাশ এখন একটু একা থাকতে চেয়েছিলো।কিন্তু আয়রা এসে এসব কথা বলতেই! আকাশের রাগ উঠে গেলো।আকাশ চিল্লিয়ে রেগে বললো!
আকাশঃ কারন গত এক সপ্তাহ্ আগে আমি ঈশার সাথে কি করেছি জানি না।ঈশা হঠাৎ আমার সাথে কথা বন্ধ করে দেয়।আমার সাথে ঝগড়া করা বন্ধ করে দেয়।আমি অপমান করে কথা বললেও ঈশা পাল্টা জবাব দেয়’নি।আমি অনেক চেষ্টা করেছি নানা ভাবে ঈশার সাথে কথা বলার! এই এক সপ্তাহের মধ্যে।কিন্তু ঈশা আমার সাথে একটা কথাও বলে’নি।
.
টিংকু ভাইঃ তুমি…!
আকাশঃ ঈশা আমাকে ইগনোর করেছে? আমার ইগো হার্ট করেছে? ওর সাহস কিভাবে হলো আকাশ ইসলাম কে অপমান করার? হু ইজ সি?
আকাশ একদম বেখেয়ালি ভাবে কথাগুলো বললো।আকাশ ঠিক কিছুক্ষণ আগে যেভাবে ঈশা’কে দেয়ালে চেঁপে ধরে বেখেয়ালি ভাবে কথাগুলো বলেছিলো।এখন ঠিক ওভাবেই বললো কথাগুলো।কিন্তু আকাশের কথা শুনে আয়রা আর টিংকু ভাই হাল্কা অবাক হলেও! অতটা বেশি অবাক হয়’নি।
টিংকু ভাইঃ ডু ইউ লাভ হার?
আকাশঃ হুয়াট?
আয়রাঃ তাহলে সুমুর কথাগুলো ঠিক ছিলো? তুই ঈশার জন্য! সুমুর থেকে দূরে সরে গিয়েছিস?
আকাশঃ হ্যাঁ এটা ঠিক! ঈশা আমাকে যথেষ্ট এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।কেনো করে আমি জানি না।আর ঈশা আমাকে যত বেশি এড়িয়ে চলে! আমার ততো বেশি রাগ হয় ঈশার উপর।ঈশা যেদিন আমার লাইফে প্রথম এসেছিলো! সেদিন থেকে আমার মনের উপর “নিজের জোর” নেই বললেই চলে।আমার মন মতো কিছুই হয় না।আমি যা ভাবি ঈশা’কে নিয়ে! তার উল্টো করে ফেলি ঈশার সাথে।এটা আমি নিজেও ফিল করেছি।
টিংকু ভাইঃ তার মানে তুমি! সুমু আর ঈশা দু’জন কেই ভালোবাসো? [ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে]
টিংকু ভাইয়ের কথায় আকাশ এবার খুব রেগে গেলো।আয়রা না চাইতেও টিংকু ভাইয়ের কথায় হেসে ফেললো।টিংকু ভাই কথাটা বলে নিজেই বোকা বনে গেলো।
.
আকাশঃ ঈশার প্রতি আমার নিজের কন্ট্রোল নেই! সেটা আমি মেনে নিচ্ছি।কিন্তু তার মানে এই নয়! আমি সুমু’কে ভালোবাসি না।সুমুর প্রতি আমার মায়া না থাকলে! কখনোই আমি এতদিন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতাম না সুমুর সাথে।ভালোবাসতাম বলেই সম্পর্ক টিকে ছিলো সুমুর সাথে আমার।
আয়রাঃ তুই কি চাচ্ছিস? ঈশা তোর সাথে কথা না বললে,ঈশা তোকে ইগনোর করলে তোর কি আসে যায়?
আকাশঃ সেটাই তো আমার কথা।কিন্তু আমার মন বুঝতে চায় না।
আয়রাঃ ঈশা মেয়েটিকে কম অপমানিত হতে হয়’নি আজ।সবাই মিলে অপমান করেছে ঈশা’কে।যেখানে সবার উচিৎ ছিলো ওকে ধন্যবাদ জানানো।
আকাশঃ কে বলেছিলো এসব এ্যারেঞ্জমেন্ট করতে ওকে?
টিংকু ভাইঃ তোমার আর সুমুর খুশির জন্য করেছিলো।উল্টে সবার কাছে খারাপ হয়ে গেলো ঈশা।
আয়রাঃ সুমুর সাথে সবকিছু ঠিক করে নিস।
.
আকাশঃ সুমুর নাম! এই বাড়িতে আর কখনো কেউ নিবে না।
টিংকু ভাইঃ মানে সুমুও বাদ? আই মিন তোমার এক্স গার্লফ্রেন্ড এখন সুমু?
আকাশঃ আমি চেয়েছিলাম সুমুর সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে।আমি সুমুর সাথে থাকতে চেয়েছিলাম।কারন সুমুর প্রতি আমার মায়া কাজ করে।এক আলাদা মায়া আছে সুমুর প্রতি আমার।কিন্তু সুমু আমাকে একটুও ভালোবাসে না।আমার গুরুত্ব যদি থাকতো সুমুর কাছে! তাহলে সুমু এভাবে আমার সাথে ব্রেকাপ করতে পারতো না সবার সামনে।আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারতো না।আমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিতে পারতো না সুমু।পেরেছে কারন! আমাকে সুমু কখনো হয়তো ভালোবাসে’নি।
আয়রাঃ তুই কি চাচ্ছিস ভালো করে বল?
আকাশঃ সুমু যেহেতু নিজের ইচ্ছেতে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে।তাই সুমু’কে আমি আর মনে করতে চাচ্ছি না।শুধু এটাই চাইবো! সুমু যেখানেই থাকুক সুস্থ থাকুক ভালো থাকুক।এর চেয়ে বেশি কিছু আমার চাওয়ার নেই।কিন্তু সুমুর নাম! এই বাড়িতে আমি আর শুনতে চাই না।
টিংকু ভাইঃ ঠিক আছে! তুমি যা বলবে তাই হবে।অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পরো।গুড নাইট।
আকাশঃ গুড নাইট। আর একটা কথা।
টিংকু ভাইঃ কি?
.
আকাশঃ সুমুর নাম এই বাড়িতে কেউ নিবে না ঠিক আছে।তার মানে এই না যে! আমি ঈশা’কে ভালোবাসি ‘বা’ ঈশা’কে পছন্দ করি।ঈশা’কে কখনো আমি ওই চোখে দেখিনি।ঈশা যদি পৃথিবীর একমাত্র মেয়ে হয়।তবুও ঈশা’কে আমি কখনো ভালোবাসবো না।তাই ঈশা’কে নিয়েও তোমরা উল্টো-পাল্টা কিছু ভেবো না।
টিংকু ভাই চলে গেলো নিজের রুমে।টিংকু ভাই মনে-মনে যা ভেবেছিলো তাই হলো।আয়রা একটু সামনে এগিয়ে! নিজের ছোটো ভাই কে বুকে জরিয়ে ধরলো।আকাশের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।
আয়রাঃ আমার ভাইয়ের খুব কষ্ট হচ্ছে নাকি?
আকাশঃ একটু-একটু!
আয়রাঃ কার জন্য? নায়কা তো দু’জন। [ফাজলামো করে]
আকাশঃ আপু প্লিজ! [বিরক্ত হয়ে]
আয়রাঃ ঠিক আছে আর বলবো না।তুই শুয়ে পর! আমি তোর চুলে বিলি কেঁটে দিচ্ছি।
আকাশ গিয়ে বেডে শুয়ে পরলো।আয়রা আকাশের চুলে বিলি কেঁটে দিলো।আকাশ ঘুমিয়েও গেলো কিছুক্ষণের মধ্যে।আয়রা কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে আকাশ’কে তেমন ভাবে সময় দিতে পারে না।আকাশ’কে শুইয়ে দিয়ে রুমের লাইট বন্ধ করে দিলো।আকাশের শরীরে কম্বল জরিয়ে দিলো।
আয়রাঃ আমি বুঝতে পারছি আকাশ।তুই দো- টানায় পরে গিয়েছিস।তোর মন কি চাচ্ছে! নিজেও বুঝতে পারছিস না তুই।
.
চলবে……..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com