দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -২৬
ঈশাঃ কোথাও যাচ্ছিলে?
আকাশঃ তোমাকে কেনো বলবো? বাড়ির সার্ভেন্ট! সার্ভেন্টের মতো বিহেভ করো।
ঈশাঃ সেটা নিশ্চয়ই একটু আগে তুমি ভুলে গিয়েছিলে তাই না?
আকাশঃ তুমি…!
ঈশাঃ রেডি হয়ে নিচে এসো।সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য।
আকাশঃ হুয়াট! কিসের সারপ্রাইজ?
ঈশাঃ নিচে এলেই বুঝতে পারবে।
আকাশঃ পারবো না নিচে যেতে।
ঈশাঃ তোমার সুমু আসবে।ইনফ্যাক্ট তোমার ক্লোজ ফ্রেন্ডস সবাই আসবে।সো, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে চলে এসো কেমন।
.
ঈশা হাসি মুখে কথাগুলো বলে চলে গেলো।আকাশের এখনো মনে পরছে না আজ কি।টিংকু ভাই সুমু’কে ফোন দিলো।সুমু ফোন রিসিভ করলো।
সুমুঃ বলুন টিংকু ভাই।
টিংকু ভাইঃ বাসায় চলে এসো এখনি।
সুমুঃ কেনো?
টিংকু ভাইঃ এলেই বুঝতে পারবে।
সুমুঃ আমি এখন আসতে পারবো না।আর কেনোই বা আসবো আমি?
টিংকু ভাইঃ এসো আগে তুমি।
সুমুঃ রাখছি ফোন।
.
টিংকু ভাই এসে দাঁড়ালো ড্রইং রুমে।ঈশা বসে ফোন টিপছে।আকাশ রেডি হয়ে নিচে নেমে এসে অবাক হয়ে গেলো।এত সুন্দর ডেকরেশন দেখে।
আকাশঃ ওয়াও ওয়ান্ডারফুল এ্যারেঞ্জমেন্ট।কে করলো এগুলো?
ঈশাঃ থ্যাংক ইউ! আমি করেছি সবকিছু।
ঈশা ফুল ডেকরেশন করেছে শুনে আকাশ বললো!
আকাশঃ একদম বাজে ডেকরেশন।কি করেছো এসব টিংকু ভাই।
আকাশের কথা শুনে টিংকু ভাই চোখগুলো বড়-বড় করে আকাশের দিকে তাকালো।ঈশা তীক্ষ্ন দৃষ্টিতে তাকালো আকাশের দিকে।ঈশা রেগে মাজায় দু হাত রেখে বললো!
ঈশাঃ একটু আগে ওয়ান্ডারফুল এ্যারেঞ্জমেন্ট ছিলো।যেই বললাম আমি সব করেছি! অমনি বাজে ডেকরেশন হয়ে গেলো? [মুখ ভেংচি দিয়ে]
.
আকাশঃ তা নয়তো কি? দু মাসের বাচ্চাও তোমার চেয়ে ভালো ডেকরেশন করতে পারে।
টিংকু ভাইঃ একটু বেশি বড় হয়ে গেলো না বাচ্চা? না মানে! দু মাসের বাচ্চা তো অনেক বড় তাই না?
ঈশাঃ এমনি-এমনি আকাশের বাচ্চা কাঁকাশ বলি আমি? বিটকেল একটা,মাথামোচা কোথাকার।
আকাশঃ আমিও কি এমনি-এমনি ঈশার বাচ্চা কিশা বলি? চুরায়েল একটা,কাঁচামরিচ কোথাকার।
টিংকু ভাইঃ সাইলেন্ট প্লিজ! তোমরা বাচ্চাদের মতো ঝগড়া কেনো করছো।একটু পর আমাকে কোমায় শিফট হতে হবে।তোমাদের ঝগড়া এভাবে চলতে থাকলে।
ঈশাঃ বিটকেল কে চুপ করতে বলো। [ভেংচি দিয়ে]
আকাশঃ চুরায়েল কে চুপ করতে বলো। [চুল ঠিক করে]
টিংকু ভাইঃ দু’জনেই চুপপপপ!
এর মধ্যেই আকাশের সব বন্ধু বান্ধব চলে এলো।আয়রা রেডি হয়ে নিচে নেমে এলো।টিংকু ভাই ড্রিংক করছে।ঈশা অপেক্ষা করছে কখন সুমু আসবে।সুমু এখনো আসে’নি।আকাশের ফ্রেন্ডস’রা সবাই বললো!
আবিরঃ কিরে কিসের পার্টি দিচ্ছিস আজ?
নিলয়ঃ আমাদের আগে তো কিছুই বললি না।
রিহানঃ এ্যাকজ্যাকলি! হঠাৎ পার্টির এ্যারেঞ্জমেন্ট কেনো?
আকাশঃ ইয়্যার আমার নিজেরও মনে পরছে না কিছু।এই এক সপ্তাহ্ খুব ডিস্টার্বড ছিলাম আমি।তাই কিছুই মনে নেই আমার।
.
সুমুঃ এতটাই ডিস্টার্বড ছিলে তুমি যে! আমাদের আজ রিলেশনের এইট মান্থ পূর্ণ হলো সেটাই ভুলে গিয়েছো।
আকাশের এতক্ষণে মনে পরলো আজ ফ্রাই ডে।আজ ওর আর সুমুর ৮ মাস পূর্ণ হলো রিলেশনের।সবাই মিলে “কংগ্রাচুলেশন” জানালো আকাশ আর সুমু’কে।আকাশ সুমুর কাছে আসতে চাইলে! সুমু হাত দিয়ে ইশারায় ওখানেই দাঁড়াতে বললো আকাশ’কে।সবাই একটু অবাক হলো।আকাশ সুমুর দিকে তাকালো করুন ভাবে।সুমু বললো!
সুমুঃ লাস্ট এক সপ্তাহ্ আগে তোমার সাথে আমার শেষ বারের মতো কথা হয়েছিলো আকাশ।এই এক সপ্তাহের মধ্যে তুমি আমার সাথে একবারও কন্টাক্ট করার চেষ্টা করেছো? একবারও আমার ফোন রিসিভ করেছো? একবারও আমার সাথে তুমি টাইম স্পেন্ড করেছো?
আকাশঃ নিশ্চুপ…!
.
সুমুঃ তোমার কাছে কোনো আন্সার নেই।একটা রিলেশনশিপে একজনের গুরুত্ব থাকলে হয় না।দু’জনের সমান গুরুত্ব থাকা প্রয়োজন।
আকাশঃ তার মানে তুমি কি বলতে চাচ্ছো? আমি তোমাকে নিয়ে সিরিয়াস না? আমি তোমাকে গুরুত্ব দেই না?
সুমুঃ আমি একবারও সেটা বলিনি আকাশ।আমি তোমাকে এই ১ সপ্তাহের মধ্যে বারবার ফোন করেছি।তুমি বলেছো বিজি আছো পরে কথা বলবে।বলে ফোন কেটে দিয়েছো।আমি রাতের পর রাত,ঘন্টার পর ঘন্টা তোমার ফোনের অপেক্ষা করেছি।বাট তুমি একবারও আমাকে ফোন করো’নি।
আকাশঃ আমি একটু ডিপ্রেশনে ছিলাম সুমু তুমি…!
.
সুমুঃ ডিপ্রেশন? এমন কিসের ডিপ্রেশন যা আমার সাথে শেয়ার করা যায় না।আমি তোমার গার্লফ্রেন্ড।হয়তো ক’দিন পর তোমার ওয়াইফ হবো।আমার জানার অধিকার নেই তোমার কি হয়েছে?
আকাশঃ অফকোর্স আছে! আমি এতাটা ডিপ্রেশনে ছিলাম যে…!
সুমুঃ যে তুমি আমাকেই ভুলে গেলে?
আকাশঃ সুমু তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।একবার আমার কথা শোনো।ওকে ফাইন! তুমি মাথা ঠান্ডা করে বসো।আমরা দু’জনে মিলে প্রবলেম সলভ করবো।
সুমুঃ বসার জন্য সময় আর নেই আকাশ।সবকিছু তুমি শেষ করে দিয়েছো।
আকাশঃ হুয়াট! সুমু তুমি কি বলছো এগুলো?
.
সুমুঃ আকাশ তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না।আগের মতো আমার কেয়ার করো না।আগের মতো আমাকে সময় দাও না।সবকিছু বদলে গিয়েছে তোমার।ইনফ্যাক্ট তুমি নিজেই বদলে গিয়েছো।শুধু এই মেয়েটার জন্য।
সুমু আঙুল তুলে ঈশার দিকে ইশারা করলো।ঈশা রীতিমতো ভরকে গেলো।ঈশা পুরো চমকে উঠলো।আকাশ একটুও শক হলো না সুমুর কথায়।আকাশ এটা নিজেও ফিল করেছে।ঈশা আসার পর থেকে আকাশের মন মতো কিছুই হচ্ছে না।মন বলছে এটা করতে! কিন্তু আকাশের ইচ্ছের বাহিরে মন নিজের মতো চলছে।ঈশার কাছে আকাশ না চাইতেও বারবার কিসের টানে চলে যায় নিজেও জানে না।আকাশ নিজের একহাত কঁপালে রেখে মাথা নিচু করে! নিজের রাগ কন্ট্রোল করছে।
.
নিলয়ঃ আমি আগেই বলেছিলাম।বস্তির মেয়েরা খুব চালাক হয়।
আবিরঃ আমি ওই মেয়ের চেহারা দেখেই বুঝেছিলাম।মেয়েটার মতলব ভালো না।
রিহানঃ সুমু তোকে আমি আগেই বলেছিলাম।আকাশ’কে সামলে রাখ নিজের কাছে।
নিলয়ঃ এখন বুঝলি তো? এসব দু পয়সার মেয়েরা কেমন হয়।
সবার কথা শুনে আকাশ আরো রেগে যাচ্ছে মাথা নিচু অবস্থায়।টিংকু ভাই ড্রিংকের গ্লাস রেখে এগিয়ে এলো।ঈশার চোখের পানি গাল গড়িয়ে পরছে।ঈশা ভালোর জন্য এসব করতে গেলো।কিন্তু নিজেই খারাপ হয়ে গেলো।আয়রা রেগে বিরক্ত হয়ে বললো!
.
আয়রাঃ স্টপ ইট গাইজ! কি বলে যাচ্ছো তখন থেকে তোমরা? ঈশা এই পুরো ডেকরেশন করেছে।সুমু আর আকাশ’কে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।
টিংকু ভাইঃ তোমাদের সবাইকে ফোন করে ইনভাইট করতে বলেছে ঈশা।আর তোমরা ওকেই অপমান করছো? [আকাশের সব বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে]
আয়রাঃ আমি ঈশার ব্যাপারে আর একটা বাজে কথাও শুনবো না।
সুমুঃ সবকিছু এই বাজে মেয়েটির নাটক। [ঈশা’কে উদ্দেশ্য করে বললো সুমু।]
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com