দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -১০
ঈশা মাটি থেকে উঠে দাঁড়ালো।আকাশের কাছে তেড়ে আসতে গেলে! আকাশ নিজের একহাত উঁচু করে ঈশা’কে ওখানেই দাঁড়াতে বললো! ঈশা ওখানেই দাঁড়িয়ে রইলো।
আকাশঃ তুমি আহির নামে ছেলেটির বোন?
ঈশাঃ কেনো! একবার বললে কানে শুনতে পাও না কথা?
আকাশঃ জাস্ট সাট আপ।যা বলছি তার আন্সার দাও শুধু।
ঈশাঃ আমি তোমার সমস্ত কথার উত্তর দিতে বাধ্য না।
আকাশঃ ফার্স্ট অফ অল! হাউ ডেয়ার ইউ? তোমার সাহস কিভাবে হলো আকাশ ইসলাম এর শরীরে টাচ করার?
ঈশাঃ তোমার সাহস কিভাবে হলো আমার ভাই কে অপমান করার?
আকাশঃ তোমার মতো লো-কোয়ালিটির মানুষ’দের শিক্ষা না দিলে যা হয় আর কি।অবশ্য শিক্ষা পাবে কিভাবে? বস্তিতে আবার শিক্ষা হাউ ফানি!
.
ঈশাঃ মাইন্ড ইয়র ল্যাঞ্জুয়েজ মিস্টার.আকাশ।প্রথমে ভেবেছিলাম তুমি একটা ভালো ছেলে।বাট আই ওয়াজ রং।
আকাশঃ আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যাও রাইট নাউ।তোমাদের মতো মানুষের কোনো যোগ্যতা নেই এই বাড়িতে পাঁ রাখার।
ঈশাঃ ভাই/বোন এর মধ্যে দেখছি কোনো তফাত নেই।এ্যাকচুয়্যলি দোষ তোমাদের না।দোষ হলো অহংকার আর টাকা-পয়সার।
আকাশঃ আমি যা করেছি বেশ করেছি।আজকের পর থেকে যেনো আমার সামনেও তোমাকে না দেখি আমি।আমার থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবে তুমি।আমি আবার লো-কোয়ালিটি,বস্তি আর ভিক্কুক’দের দেখতে পারি না।ইয়াক নোংরা প্রজাতির মানুষ এরা।
ঈশাঃ নোংরা ওরা নয়।নোংরা তুমি আর তোমার মন।এনিওয়ে আমি এখানে কথা বাড়াতে আসি’নি।আর যদি কখনো তোমাকে আর তোমার বোন’কে দেখেছি! আমাদের বস্তিতে গিয়ে ঝামেলা করতে তোমাদের জন্য ভালো হবে না।
আকাশঃ ইডিয়ট এর মতো কথা।আমাদের জমি ওটা।আর আমি ওই জমি নিয়ে ছাড়বো।এভাবে থ্রেট আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই।
.
ঈশাঃ আমি যা বলি করে দেখাই।কোনো থ্রেট দিচ্ছি না আমি।
আকাশঃ চ্যালেঞ্জ হয়ে যাক?
ঈশাঃ মিস্টার.কাঁকাশ স্যরি আকাশ।আপনি আমার চেহারাও দেখতে চাচ্ছেন না।চ্যালেঞ্জ নিবেন কিভাবে আমার সাথে।
আকাশঃ রাস্তায় প্রতিদিন’ই ভিক্কুক দেখতে হয়।তোমাদের মতো বস্তিদের দেখতে হয়।সো,তোমাকে ১ মাস নাহয় সহ্য করে নিবো।
ঈশাঃ কিসের চ্যালেঞ্জ?
আকাশঃ তুমি চাও তোমাদের বস্তি আমরা ছেড়ে দেই রাইট?
ঈশাঃ হ্যাঁ চাই।
আকাশঃ কন্ডিশন-1। ১ মাস আমার কথা শুনতে হবে।আমি যা বলবো তাই করতে হবে।শুধু তাই নয়! আমার বাড়িতে কাজের মেয়ে হয়ে থাকতে হবে।কন্ডিশন-2। যা বলবো সেটাই করতে হবে।কোনো কাজে “পারবো না” ওয়ার্ড ইউজ করা যাবে না।কন্ডিশন-3। আমার উপর কোনো রাগ দেখানো যাবে না।যদি রাজি থাকো।তাহলে ওই বস্তি তোমাদের “দান হিসেবে ভিক্কা” দিয়ে দিব।
ঈশাঃ নিজেকে খুব বড়লোক মনে করো?
আকাশঃ অফ কোর্স। [অহংকারের সাথে]
ঈশাঃ আমাকে টাকা দিয়ে কেনা অত সহজ নয়।
আকাশঃ তোমার মতো ২ পয়সার বস্তির মেয়েকে আমি টাকা দিয়ে কিনতেও চাই না।
ঈশা কিছুক্ষন চুপ করে বিষয়’টা ভেবে দেখলো।ঈশা ছোটো থেকে কখনো কোনো চ্যালেঞ্জে হারে’নি।আজ আকাশের একটা চ্যালেঞ্জে হেরে গেলে বস্তির মানুষগুলো রাস্তায় এসে দাঁড়াবে।কারন আকাশ’রা টাকার জোরে পুলিশ দিয়ে বস্তি ঠিকই খালি করাতে পারবে।ওদের কাছে এটা বাম হাতের খেলা।
আকাশঃ কি চ্যালেঞ্জ এ্যাক্সেপ্ট করার আগেই! হেরে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে নাকি?
ঈশাঃ ঈশা কখনো কোনো কিছুতে হারতে শেখে’নি।আজও ঈশা হারবে না।তোমার চ্যালেঞ্জ এ্যাক্সেপ্ট করলাম।কিন্তু আমার একটা কন্ডিশন আছে।
.
আকাশঃ হুয়াট?
ঈশাঃ আহির ভাইয়া ‘বা’ বস্তির কেউ যেনো এই চ্যালেঞ্জের ব্যাপারে না জানতে পারে।আর আমার কলেজের সময় আমাকে ছাড় দিতে হবে।
আকাশঃ ডান।
ঈশাঃ বায়। আর হ্যাঁ! আমরা গরিব হতে পারি কিন্তু ছোটোবেলা থেকে সঠিক শিক্ষা পেয়েছি।তাই আমাদের মতো বস্তির লোকেদের শিক্ষার প্রয়োজন নেই।বাট আমার যতদূর ধারনা তোমার শিক্ষার অভাব আছে হয়তো।তোমার সঠিক শিক্ষার প্রয়োজন আছে।আগে নিজে শিক্ষা গ্রহন করো।তারপর নাহয় অন্য জন’কে বলবে!
ঈশা আর একবারও আকাশের দিকে তাকালো না।ঘৃণা হচ্ছে আকাশের প্রতি ঈশার।ঈশা কল্পনাও করে’নি আকাশের ভেতরে এত অহংকার।আকাশ গরিব মানুষ’দের এত ঘৃণা করে।জানলে হয়তো আকাশের প্রতি এতটা দূর্বল হতো না ঈশা।ঈশার খুব কান্না পাচ্ছে।বড়লোক’রা এত খারাপ হয়।বড়লোক’দের মন এত নিচু হয়।সেটা ঈশার জানা ছিলো না।ঈশা কাঁদতে-কাঁদতে বাসায় চলে গেলো।
টিংকু ভাই দূরে দাঁড়িয়ে সবকিছু দেখেছে এবং শুনেছে।ঈশা যেতেই টিংকু ভাই এসে দাঁড়ালো আকাশের সামনে।আকাশ বল নিয়ে খেলছে।
.
আকাশঃ হেই গাঁধা! কিছু বলবে? [দুষ্টুমি করে]
টিংকু ভাইঃ একটু বেশি বলা হয়ে গেলো না মেয়েটাকে?
আকাশঃ কাম অন গাঁধা! কি আসে যায়।এসব বস্তির লোকেদের জম্মই হয় মানুষের কথা আর লাথি খাওয়ার জন্য।
টিংকু ভাইঃ ওরাও আমাদের মতোই মানুষ।
আকাশঃ তুমি কি আমাকে ভাষণ দিতে এসেছো?
টিংকু ভাইঃ আজকে এই মেয়েটার ভাই আমাদের অফিসে এসেছিলো ইন্টারভিউ দিতে। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
আকাশঃ সিরিয়াসলি? ওর ভাইয়ের যোগ্যতা আছে আমাদের অফিসে জব করার।সিকিউরিটি ডেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে পারলে না ওর ভাই কে? [ঈশার ভাই আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
টিংকু ভাইঃ ওর ভাইয়ের এডুকেশন জানো?
আকাশঃ তুমি সত্যিই গাঁধা।আমি কিভাবে জানবো না বললে?
টিংকু ভাইঃ সব কিছুতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট।এম.বি.এ কমপ্লিট।ইনফ্যাক্ট কম্পিউটার কোর্সও কমপ্লিট।
আকাশঃ তাই নাকি?
টিংকু ভাইঃ শুনেছি ঈশা নামের মেয়েটিও পড়াশোনায় খুব ভালো।
আকাশঃ কে ঈশা?
.
টিংকু ভাইঃ এক্ষুনি যে মেয়েটার সাথে ঝগড়া করলে তুমি।
আকাশঃ ফরগেট ইট।ইডিয়ট মেয়ে একটা। [ঈশা’কে উদ্দেশ্য করে]
টিংকু ভাইঃ আয়রা ওই আহির নামে ছেলেটিকে জব্দ করবে বলে! অফিসে জব এর জন্য রাখবে।
আকাশঃ ভালো করেছে।শিক্ষা দেওয়া উচিৎ ছেলেটাকে।আমি অফিসে দেখে নিবো ছেলেটিকে।
টিংকু ভাই খুশি হলো।কারন আহির অনেক গুলো থাপ্পড় মেরেছে টিংকু ভাই কে।সেসব প্রতিশোধ নেওয়াবে আকাশ’কে দিয়ে।জানে আকাশ অফিসে গেলে ছাড়বে না আহির’কে।টিংকু ভাই খুশি হয়ে চলে যাচ্ছিলো।আকাশ ডাকলো টিংকু ভাই কে!
আকাশঃ গাঁধা ওয়েট এ মিনিট।
টিংকু ভাইঃ বলো!
আকাশঃ পুলিশ কে ফোন করেছিলে তুমি? আহির নামে ছেলেটিকে এ্যারেস্ট করতে বলেছিলে?
টিংকু ভাইঃ না এখন ফোন করবো।
আকাশঃ থাক ফোন করতে হবে না।ছেড়ে দাও আমি দেখে নিবো ছেলেটিকে অফিসে গিয়ে।পুলিশ কে বলতে হবে না।
টিংকু ভাইঃ তোমার জ্বর-টর আসে’নি তো আকাশ? তুমি নিজের কথা থেকে কখনো পাল্টে যাও না।যা বলো সেটাই করো।তাহলে আজ…!
আকাশঃ ধরে নাও মিস্টার.আহির এ্যান্ড মিস. ঈশার উপর দয়া করলাম।ওদের ভাই/বোন কে আমি দেখে নিবো।
টিংকু ভাইঃ হুমম।
টিংকু ভাই আর কথা বাড়ালো না।কারন টিংকু ভাইয়েরও খারাপ লেগেছে আজ।যেভাবে ঈশা’কে অপমান করেছে আকাশ গরিব আর বস্তিতে থাকে বলে।আকাশ নিজের মতো বল নিয়ে বাস্কেটের ভেতরে ছুঁড়ে মারলো।
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com