দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -০৮
আহিরঃ মে আই কাম ইন?
আয়রাঃ ইয়েস কাম।
আয়রা মাথা নিচু করে কিছু ফাইল চেক করতে করতেই আহির’কে ভেতরে ঢুকতে বললো।
আহির ভেতরে ঢুকে সামনের চেয়ারে বসলো।
আয়রার চেহারা নিচের দিকে থাকায় আহির নিজেও এখনো খেয়াল করে’নি যে আয়রা বসে আছে।
ওদিকে টিংকু ভাই শুধু অপেক্ষা করছে এই বুঝি বোম ফাঁটলো ঠাসসসস্।
আয়রা মাথা উঁচু করে উপরের দিকে তাকাচ্ছে।আহিরও আয়রার দিকেই তাকিয়ে আছে।
যার ফলে এখনো আশেপাশে তাকিয়ে টিংকু ভাই কে দেখে’নি আহির।
টিংকু ভাই পাশে দাঁড়িয়ে কাউন্ট করছে।
টিংকু ভাইঃ 5,4,3,2,1…ধুম!
আয়রা উপরে তাকিয়ে আহির’কে দেখেই ধপ করে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
আহিরও আয়রা’কে দেখে চমকে উঠলো।আহির পাশে তাকিয়ে দেখলো টিংকু ভাই দাঁড়িয়ে আছে।
আহির বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
আয়রাঃ তুমিহ্?
আহিরঃ আমি মানে…!
আয়রাঃ গেট আউট।
আহিরঃ আমি…!
আয়রাঃ আই সেইড! জাস্ট গেট আউট ফ্রম হেয়ার।
আহিরঃ ওহ্ গড! সকাল-সকাল ইন্টারভিউ দেওয়ার মুড নষ্ট করে দিলো।
আহির প্রচন্ড রেগে বিরক্ত হয়ে আয়রার কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো।
আয়রা রেগে পুরো বোম।টিংকু ভাই কথা বলার সাহস টুকু পাচ্ছে না।
আয়রাঃ এই ফাজিল ছেলে এখানে কি করছিলো?
টিংকু ভাইঃ ইন্টারভিউ দিতে এসেছিলো।
আয়রাঃ তুমি আগে থেকেই জানতে তাই না? [রেগে]
টিংকু ভাইঃ না মানে…!
.
আয়রাঃ তুমি আগে থেকেই জানতে বলে আজব-আজব কথা বলছিলে আমাকে।
টিংকু ভাইঃ মাথা গরম করো না।একটা আইডিয়া দিব?
আয়রাঃ আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না।
টিংকু ভাইঃ দেখো! সবার মতো ওই ছেলেরও ইন্টারভিউ দেওয়ার অধিকার আছে।
আয়রাঃ আমি আমার অফিসে ওই ছেলের চেহারাও দেখতে চাই না।
টিংকু ভাইঃ ভুলে গেছো? কিভাবে ভরা বস্তিতে সবার সামনে তোমাকে অপমান করেছিলো?
অপমানের প্রতিশোধ নিতে চাও না?
আয়রাঃ সেটা কিভাবে? [ভ্রুঁ কুঁচকে]
টিংকু ভাইঃ ওই ছেলেকে আমাদের অফিসে রেখে! ইচ্ছে মতো যা মন চাবে তাই করাবো।
অপমানের উত্তর জবাব দিয়ে আরও বেশি অপমান করবে তুমি ওকে।
আয়রাঃ আইডিয়া খারাপ না।
টিংকু ভাইঃ তাহলে?
আয়রাঃ নিচে ফোন করে বলো! পার্পেল কালার চেক
শার্ট ইন করে পরা।ওই ছেলেকে আমার কেবিনে পাঠিয়ে দিতে।
টিংকু ভাইঃ হুমমম।
টিংকু ভাই নিচে ফোন করলো।
একজন দাড়োয়ান ফোন রিসিভ করলো।টিংকু ভাই বললো!
টিংকু ভাইঃ এখনি একটি ছেলে নিচে গেছে।পার্পেল কালার শার্ট পরা।
ওকে বলো উপরে ম্যাডামের কেবিনে আসতে।
দাড়োয়ানঃ ওকে স্যার।
আহির খুব বিরক্ত বোধ করছে।আগে জানলে কখনোই এখানে ইন্টারভিউ দিতে আসতো না আহির।
মনে-মনে এটাই ভাবছে ও।আহির বের হতে যাবে তখনি পেছনে কেউ ডাকলো।আহির পেছনে তাকালো।
দাড়োয়ানঃ আপনি একবার উপরে ম্যাডামের কেবিনে যান।
আহিরঃ কেনো?
.
দাড়োয়ানঃ সেটা বলতে পারবো না।আপনাকে উপরে ডেকেছে।
আহিরঃ ঠিক আছে আপনি যান।
দাঁড়োয়ান চলে গেলো।আহির এখনো দাঁড়িয়ে আছে।ভাবছে যাবে নাকি যাবে না।
আহিরের যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই বললেই চলে।তাও আহির উপরে গেলো।
আর কিছু না বলে আয়রার কেবিনে ঢুকে পরলো।
আয়রাঃ মিনিমাম সেন্স টুকুও নেই।কেবিনে নক করে ঢুকতে হয় জানেন না?
আহিরঃ আমি আপনার কেনা গোলাম না।যা বলবেন তাড়াতাড়ি বলুন।
আয়রাঃ প্রথমত গরিব ঘরের ছেলে।দ্বিতীয়ত এত কষ্টে ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন।
আর ইন্টারভিউ দিতে এসে আবার ইন্টারভিউ না দিয়েই চলে যাচ্ছেন?
আহিরঃ আমি কি ‘বা’ কে! সেটা আপনাকে ভাবতে হবে না।
আয়রাঃ আপনার যোগ্যতা বা কয়্যালিফিকেশন আছে?
আমাদের অফিসে চাকুরি করার জন্য? কতদূর স্টাডি করেছেন।আর কম্পিউটার ইউজ করতে পারেন?
উপস্ আপনারা কিভাবে কম্পিউটার ইউজ করবেন।
আহির বিরক্ত হয়ে নিজের সার্টিফিকেট এক প্রকার ছুঁড়ে মারলো আয়রার দিকে।
আয়রা পাত্তা দিলো না।সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে বললো!
আয়রাঃ ইউ ক্যান সিট ডাউন প্লিজ।
আহিরঃ নো থ্যাংক’স।
আয়রা তেমন একটা গুরুত্ব দিলো না।আহিরের প্রতিটা সার্টিফিকেট খুলে দেখলো।
সবকিছুতে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট।এম.বি.এ কমপ্লিট।ইনফ্যাক্ট কম্পিউটার কোর্সও কমপ্লিট আহিরের।
সবকিছুর সার্টিফিকেট রয়েছে।আয়রা একবার টিংকু ভাইয়ের দিকে তাকালো।
তারপর আহিরের দিকে তাকিয়ে বললো!
আয়রাঃ বসুন আপনি।
.
আহিরঃ আমি এখানে বসতে আসিনি।
আয়রাঃ না বসলে আমি ইন্টারভিউ নিবো কিভাবে?
আহিরঃ আমি আপনার অফিসে ইন্টারভিউ দিব না।
আয়রাঃ তাহলে সার্টিফিকেট দেখালেন কেনো?
আহিরঃ আপনার অহংকারে ভরা মুখ বন্ধ করার জন্য।
আয়রাঃ আপনি কিন্তু আবার আমাকে ইনসাল্ট করছেন।
আহিরঃ আপনি অপমান করার মতো কাজ করেছেন তাই।
আয়রাঃ ইউ…!
আহিরঃ আশা করি এটাই আমাদের দ্বিতীয় এবং শেষ দেখা।আল্লাহ্ হাফেজ ভালো থাকবেন।
আহির নিজের সার্টিফিকেট গুলো নিয়ে আয়রার কেবিন থেকে বের হতে যাবে!
কিন্তু আয়রার কথা শুনে আহির থেমে গিয়ে আয়রার দিকে তাকালো।
আয়রাঃ ভয় পাচ্ছেন নাকি ইন্টারভিউ দিতে? যদি ফেল হয়ে যান সেজন্য?
আহিরঃ আমি জীবনের খাতায় পরীক্ষা দিতে কখনো ভয় পাই না।
আয়রাঃ দ্যান কাম অন।বসুন আর ইন্টারভিউ দিন।
আহিরঃ ওকে।ইন্টারভিউ আমি দিব।কিন্তু সিলেক্ট হলেও জব করবো না।
আয়রাঃ নিজের যোগ্যতায় সিলেক্ট হলে! নিজেস্ব স্বাধীনতায় জব করবেন।
আহির এসে চেয়ার টেনে বসলো।আয়রা একবার টিংকু ভাইয়ের দিকে তাকালো।
তারপর আহিরের ইন্টারভিউ নিলো।ইন্টারভিউ শেষে আয়রা বললো!
আয়রাঃ থ্যাংক ইউ।এ্যান্ড ইউ ক্যান লিভ নাউ।
আহিরঃ থ্যাংক ইউ।
আহির কেবিন থেকে বের হয়ে বাহিরে দাঁড়ালো।কিছু একটা ভাবতে লাগলো।
এদিকে ভেতরে আয়রা শয়তানি হাসি দিয়ে টিংকু ভাই কে বললো!
.
আয়রাঃ বিকেলে ফার্স্ট ম্যাসেজ যেনো মিস্টার.আহিরের ফোনে যায়।
টিংকু ভাইঃ ইন্টারভিউ তে পাশ?
আয়রাঃ ইয়েস। [শয়তানি হাসি দিয়ে]
টিংকু ভাইঃ ঠিক আছে।আমি একটু বাহির থেকে আসছি।
আয়রাঃ হুমম।
টিংকু ভাই বাহিরে এসে বড় নিঃশ্বাস নিলো।খুব ডিস্কো ডান্সে নাচতে ইচ্ছে করছে টিংকু ভাইয়ের।
কারন এখন থেকে আহিরের উপর ছুরি ঘোরাবে টিংকু ভাই অফিসে।
ভাবতেই আনন্দ হচ্ছে টিংকু ভাইয়ের।
টিংকু ভাই নিজের গালের একপাশে হাত রেখে রেগে একা একাই বললো!
টিংকু ভাইঃ আমাকে সেদিন খুব জোরে চড় মেরেছিলি তাই না?
শালা শুকনো মরিচ তোকে দেখাচ্ছি মজা।একবার শুধু অফিসে জয়েন কর তুই।
তোর ঠ্যাং লুলা করে যদি না দেই! আমার নামও টিংকু ভাই না।
টিংকু ভাই কথাগুলো বলে পেছনে ঘুরতেই চমকে উঠলো।
কারন পেছনে আহির দাঁড়িয়ে টিংকু ভাইয়ের সমস্ত কথা শুনে নিয়েছে।
এ্যাকচুয়্যলি আহির ওয়াশরুমে গিয়েছিলো চোখে-মুখে পানি দেওয়ার জন্য।
আর ফিরে এসেই দেখলো! টিংকু ভাই উল্টো দিকে ফিরে একা-একা পকপক করছে।
টিংকু ভাই আহিরের থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে আগে থেকেই গালের দু পাশে দু হাত দিয়ে রেখেছে।
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com