Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -০৬



পরদিন সকালে উঠে ঈশা ফ্রেস হয়ে এক্সাম দিতে চলে গেলো।আহির গিয়ে ঈশা’কে দিয়ে এলো।আহির এসে চায়ের দোকনে বসলো।সাথে এক কাপ চা আর একটা সিগারেট ধরিয়ে নিলো।
ভিন্টুঃ তোর ইন্টারভিউ কখন দোস্ত?
আহিরঃ ১২ টায়।
মোটুঃ এখন বাজে ৯:০০ টা।
আহিরঃ অফিস বেশি দূরে না।ঈশার কলেজের একটু সামনে।
বাম্বঃ তুই ইন্টারভিউ দিতে গেলে!ঈশা’কে নিয়ে আসবে কে কলেজ থেকে?
আহিরঃ তোরা একটু ম্যানেজ করে নিস আজ।
ভিন্টুঃ টেনশন নিস না।আমরা গিয়ে নিয়ে আসবো ঈশা’কে।
আহিরঃ থ্যাংক’স ইয়ার।
মোটুঃ ভাই!বন্ধুত্বে নো থ্যাংক’স এ্যান্ড নো স্যরি।
আহিরঃ তোরা পারিসও।
.
ভিন্টু পেপার হাতে বসে আছে।মোটু বাটার-বন রুটি খাচ্ছে।বাম্ব রং চা খাচ্ছে।আহির সিগারেট টেনে ধোঁয়া উড়াচ্ছে।ওরা বন্ধুরা বসে চায়ের দোকানে সব’সময় আড্ডা দেয়।এটা ওদের কাছে নতুন কিছু নয়।একদম ছোটো বেলা থেকেই।
হঠাৎ করে জোরে গাড়ির হর্ণ বাজতে শুরু করলো।গাড়ি কোনো মানুষ,কোনো দোকান দেখছে না!সবকিছু উড়িয়ে ফেলে দিচ্ছে।বস্তির সকলে সাইড হয়ে দাঁড়াচ্ছে গাড়ির জন্য।আহির’রা সকলে তাকিয়ে দেখলো! বি.এম.ডাব্লু ব্ল্যাক কার।গাড়ি এসে থামলো ঠিক চায়ের দোকানের মাঝ বরাবর রাস্তায়।
ভিন্টুঃ এ আবার কোন নতুন জিনিস।
মোটুঃ আমাদের খাওয়াতে এসেছে নাকি ভাই। [খুশি হয়ে খেতে-খেতে]
বাম্বঃ শালা চুপ কর তুই।সারাদিন খালি খাই-খাই আর খাই।
আহিরের বাকি ৩ বন্ধু বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।আহির গুন্ডা স্টাইলে বসে এখনো সিগারেট টেনে ধোঁয়া উড়াচ্ছে।গাড়ি থেকে আকাশ নেমে দাঁড়ালো।চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে আকাশ গেঞ্জিতে ঝুলিয়ে রাখলো।গাড়ি লক করে চাবির রিং হাতের এক আঙুলে ঘুরাতে-ঘুরাতে চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে এলো।
সবাই একবার আকাশের দিকে তাকালো।এ্যাশ গেঞ্জি।ব্লু শার্ট,শার্টের সবগুলো বোতাম খোলা,শার্টের দু হাতা ফোল্ড করা।ব্ল্যাক জিন্স।চুলগুলো সিল্কি।একহাতে ব্ল্যাক ঘড়ি,অন্যহাতে ব্লু ব্রেসলেট।গেঞ্জিতে ব্ল্যাক সানগ্লাস ঝুলানো।কেডস্ পরা পাঁয়ে।বেশ হ্যান্ডসাম,ড্যাসিং,গুড লুকিং দেখতে।কিন্তু আহির মাথা থেকে পাঁ পর্যন্ত দেখেই বুঝে ফেলেছে যে! একদম বাজে ছেলে আকাশ।এক কথায় “বড়লোক বাপের বিগড়ে যাওয়া ছেলে আকাশ”।আকাশের সাথে টিংকু ভাই এসে দাঁড়ালো।তাও চড় মারা গালে একহাত রেখে।
আকাশঃ খবর নিয়েছো? [টিংকু ভাইয়ের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে]
.
টিংকু ভাইঃ কি খবর নিব? [কাঁজুমাজু হয়ে ভয়ে]
আকাশঃ আরে গাঁধা! গতকাল যে ছেলের হাতে মার খেলে।সেই ছেলেটার ব্যাপারে খবর নিয়েছো? নাম কি ছেলেটার?
টিংকু ভাইঃ আহির সুলতান।
আকাশঃ হুমম ওকে।এখানে আহির নাম কার?
আকাশের মুখে আহির নাম শুনে! আহির নিজের হাতে থাকা সিগারেট নিচে মাটিতে ফেললো।তারপর পাঁ দিয়ে পিসে ফেললো সিগারেট।উঠে দাঁড়িয়ে দু হাত দিয়ে নিজের শার্টের কলার উঁচু করে ঘাড়ের পেছনে সরিয়ে দিলো।এসে আকাশের সামনে দাঁড়ালো আহির।আকাশ একবার আহিরের দিকে তাকিয়ে বললো!
আকাশঃ ওহ্ তাহলে তুই’ই সেই গুন্ডা।
আহিরঃ ফার্স্ট অফ অল!ভদ্র ভাবে সম্মানের সাথে কথা বলো।নয়তো আমিও ভদ্রতা-সম্মান ভুলে!নিজের আসল রূপে আসতে বাধ্য হবো।
আকাশঃ ওহ্ রিয়্যেলি? নিজের গুন্ডা রূপে এসে আমাকে হুমকি দিবি? আমাকে ভয় দেখাবি নাকি? যেমন ভাবে গতকাল আমার বোন’কে ভয় দেখিয়েছিস? এসব লো-ক্লাস গুন্ডামি আর হুমকি দেওয়া ছাড়া আর কি পারে!তোদের মতো আনএডুকেটেড বস্তির লোকেরা?
.
আহিরঃ এইইইইই! [রেগে চিল্লিয়ে]
আকাশের কথা শুনে! আহির একহাত তুলে আকাশ’কে ঘুষি মারতে গিয়েও হাত উঠিয়ে থেমে গেলো।ভিন্টু আর বাম্ব এসে ধরলো আহির’কে।আকাশ নিজেও তেড়ে হাত উঠিয়ে আহির’কে ঘুষি মারতে গেলো।কিন্তু টিংকু ভাই আকাশের পিছন থেকে আকাশের পেট জরিয়ে ধরে! আকাশ’কে পিছনে সরিয়ে আনলো।দু জনেই মারামারি করার জন্য তেড়ে আসছে কিন্তু ওদের থামিয়ে দিচ্ছে টিংকু ভাই , ভিন্টু আর বাম্ব।মোটু পরিস্থিতি সামলাতে ব্যস্ত।
মোটুঃ ভাই মারামারি করছেন কেনো? ঠান্ডা মাথায় বসে কথা বললেই তো হয়। [আকাশ’কে উদ্দেশ্য করে]
আহিরঃ তোকে বারন করেছিলাম এভাবে কথা বলতে।তুই আমাদের অপমান করছিস? তাও আমাদের বস্তিতে এসে?
আকাশঃ এটা আমাদের জমি।আমাদের জায়গা এটা।খবরদার নিজেদের বস্তি বলবি না।
টিংকু ভাইঃ আকাশ! তুমি প্লিজ শান্ত হয়ে দাঁড়াও।আমার কথা শোনো আকাশ।দেখো এখানে কত বস্তির ছেলে।সবাই মিলে তোমাকে মারতে আসলে আমরা সামলাতে পারবো না।এমনিও এসব বস্তির ছেলেরা ভালো না।দেখছো না কেমন গুন্ডা টাইপের ছেলে।
আকাশঃ ছাড়ো আমাকে তুমি। [রেগে]
আহিরঃ এই তোরা আমাকে ছাড়।
ভিন্টুঃ দোস্ত তুই মাথা ঠান্ডা কর।
আহিরঃ ওকে আজ জ্যান্ত মাটিতে পুতবো আমি। [আকাশ’কে উদ্দেশ্য করে]
আকাশঃ আমি কি তোকে নিজের “৪০ শা” খাওয়াবো নাকি? তোকে এখানেই খুন করবো আজ আমি। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
.
বাম্বঃ দোস্ত পাবলিক প্লেস।আশেপাশে সবাই তাকিয়ে আছে।তুই নিজেকে কন্ট্রোল কর প্লিজ।
আহিরঃ ছাড় আমাকে।ঠিক আছি আমি।
টিংকু ভাই ছেড়ে দিলো আকাশ’কে।আকাশ সোজা হয়ে দাঁড়ালো।ভিন্টু আর বাম্ব ছেড়ে দিলো আহির’কে।আহির নিজের দু হাত দিয়ে শার্টের কলার ঘাড়ের পিছনে সরিয়ে দাঁড়ালো।
আকাশঃ আমার বোন’কে তুই অপমান করেছিস।তোকে আমি ছাড়বো না।
আহিরঃ তোর বোন এখানে এসে আমাদের বস্তির লোকজন কে অপমান করেছে।আমি অপমানের সঠিক জবাব দিয়েছি।তোর বোন দোষ করেছে।তাই অপমানিত হয়েছে।
আকাশঃ ইউ ব্ল্যাডি-রাস্কেল।
আহিরঃ সাট আপ এ্যান্ড মাইন্ড ইয়র ল্যাংঞ্জুয়েজ।জাস্ট গেট আউট ফ্রম হেয়ার।
আকাশঃ আমাদের জমি এটা।তোদের আমি কিছুতেই এখানে থাকতে দিব না।এই বস্তি ছেড়ে তোদের যেতেই হবে।
আহিরঃ যা করার করে নে।চল যা এখান থেকে নিজের বি.এম.ডাব্লু কার নিয়ে।আমরা এই বস্তিতেই থাকবো।এটা আমাদের বস্তি।
আকাশঃ জাস্ট ওয়েট এ্যান্ড সি।তোদের ১ মাসের মধ্যে এই বস্তি ছাড়া করাবো।তারপর এখানে শপিং-কমপ্লেক্স তৈরি করবো।
আহিরঃ চল যা ফুঁট এখান থেকে।
আকাশঃ ননসেন্স কোথাকার।
আকাশ গাড়ি নিয়ে চলে গেলো ওখান থেকে।টিংকু ভাই চুপ করে বসে আছে গাড়িতে।তাও আকাশের পাশের সিটে।আকাশ রেগে খুব স্পিডে গাড়ি ড্রাইড করছে।
টিংকু ভাইঃ [জানতাম মারামারি-পাঁটাপাঁটির কাছাকাছি যাবে।না আটকালে আজ দুটো অ্যাম্বুলেন্স আনা লাগতো বস্তিতে]
.
আকাশঃ পুলিশ কে ফোন করো।
টিংকু ভাইঃ কিন্তু একবার আয়রা’কে জানালে ভালো হতো না ব্যাপার’টা?
আকাশঃ আই সেইড!কল দ্যা পুলিশ রাইট নাউ। [জোরে চিল্লিয়ে]
টিংকু ভাইঃ [এই রে কেস কেমন ঘেঁটে গেলো।]
আকাশঃ কি হলো? কানে শুনতে পাচ্ছো না?
টিংকু ভাইঃ হ্যাঁ-হ্যাঁ এখনি কল করছি পুলিশ’কে।
আকাশঃ শালা কে জেলে ঢুকিয়ে এমন কেস দিব আর পুলিশের মার খাওয়াবো।বুঝবে আকাশ কি জিনিস। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
টিংকু ভাইঃ আম আর ছাঁলা দুটোই গেলো।বাকি রইলো আঁটি। [ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে]
.
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com