দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -০৫
ঈশাঃ চলে গেলে কেনো হুট করে?
আকাশঃ তোমার ওড়না। [ঈশার দিকে হাত এগিয়ে]
ঈশাঃ তুমি কোথায় পেলে? [আকাশের হাত থেকে নিজের ওড়না নিয়ে]
আকাশঃ তুমি চলে আসার পর যখন আমি ওদিকে গেলাম।তখনি দেখতে পেলাম গাছের ডালে তোমার কামিজ এর কালার ওড়না ঝুলছে।বুঝে নিলাম তোমার ওড়না।
ঈশাঃ থ্যাংক ইউ।
আকাশঃ ইট’স ওকে।
ঈশাঃ আরও একটা কুয়েশ্চেন আছে আমার।
আকাশঃ ওহ্ গড! বলো তাড়াতাড়ি।
ঈশাঃ তুমি বুঝলে কিভাবে আমি এদিকে আছি? আর তুমি জানলে কিভাবে ছেলেগুলো আমাকে ফলো করছে ‘বা’ আমার ক্ষতি করতে চায়? তুমি আবার ছেলেগুলোর সাথে যুক্ত না’তো?
আকাশঃ আরে দম নিয়ে কথা বলো।হুয়াট!কি বললে তুমি? আমি তোমাকে নিজের লাইফ রিস্ক নিয়ে গুন্ডা গুলোর হাত থেকে বাঁচালাম।তুমি আমাকেই ওদের দলে জুড়ে দিচ্ছো? এখন মনে হচ্ছে তোমাকে না বাঁচালেই ভালো হতো।
ঈশাঃ এই না-না!তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।ওকে আ’ম স্যরি।
আকাশঃ বায়।
ঈশাঃ বললে না কিভাবে এখানে এলে?
আকাশঃ আমি ছেলে গুলোকে দেখেই বুঝেছিলাম।ওরা খুব খারাপ।তার উপর যা অভিনয় করেছো তুমি ওদের মার খাওয়ানোর জন্য।এর পরেও ওরা ৩ জন তোমাকে ছেড়ে দিবে ইজিলি?
ঈশাঃ তুমি না আসলে তো…!
আকাশঃ তুমি ওখান থেকে আসার পর!ছেলেগুলো তোমার পিছু নেয়।তাই আমিও গাড়ি ঘুরিয়ে তোমার ওড়না নিয়ে ওদের পিছু-পিছু এখানে আসি।
ঈশাঃ এগেইন থ্যাংক ইউ।
আকাশঃ ফর হুয়াট?
ঈশাঃ আমাকে বাঁচানোর জন্য।
আকাশঃ এই শোনো!তুমি মেন্টাল হসপিটালে গিয়ে তোমার মাথার ট্রিটমেন্ট করাও।
ঈশাঃ কি বললে তুমি? [রেগে]
.
আকাশঃ তাঁড় ছিড়া পাগলি তুমি।আমার মাথা খারাপ করে দিলো স্টুপিড মেয়ে। [আনমনে]
আকাশ গাড়ি ড্রাইভ করে ওখান থেকে চলে গেলো।ঈশা মুচকি হাসলো আকাশের কথা ভেবে।
ঈশাঃ বাচ্চু তোমাকে আমি ছাড়ছি না। [আকাশ’কে উদ্দেশ্য করে]
ঈশা বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে নিলো।তারপর বাহিরে গিয়ে ইটের উপর বসে রইলো একলা রাতের অন্ধকারে।আহির গিয়ে ঈশার পাশে বসলো।
আহিরঃ কি হয়েছে বল আমাকে।
ঈশা প্রথম থেকে সবকিছু খুলে বললো।আকাশের কাহিনী।গুন্ডা গুলোর কাহিনী।তারপর আবার গুন্ডাগুলো ঈশার ক্ষতি করতে এসেছিলো।আকাশ এসে ঈশা’কে বাঁচালো।ঈশা সব বললো আহির’কে।
আহিরঃ আমি ওই ছেলে গুলোকে ছাড়বো না।
ঈশাঃ ছেলেগুলো ভয়ে পালিয়ে গেছে।
আহিরঃ কে ছেলেটা? নাম কি ওর? আর কোথায় থাকে ছেলেটা?
ঈশাঃ আহির ভাইয়া!আমি কিছুই জানি না ছেলেটার ব্যাপারে।ওর নামও জানি না আমি।
আহিরঃ বুঝলাম।তুই আবার ওর পিছে পরিস না।
ঈশাঃ পিছে তো পড়তেই হবে।কিন্তু পাবো কোথায় ছেলেটাকে।
আহিরঃ এখানে কি হয়েছে জানিস?
ঈশাঃ কি হয়েছে?
আহির সবকিছু খুলে বললো ঈশা’কে।আয়রা এসে জায়গা খালি করার কথা বলেছে।সবাইকে আয়রা অপমান করেছে।আহির কি-কি বলেছে।সবকিছু আহির বললো ঈশা’কে।
ঈশাঃ আমি থাকলে মেয়েটাকে এক কষিয়ে থাপ্পড় দিতাম।অসভ্য মেয়ে কোথাকার। [আয়রা’কে উদ্দেশ্য করে]
আহিরঃ বাদ দে।বড়লোক বাপের মেয়ে।
ঈশাঃ তাই বলে যা নয় তা বলবে? আর একদিন আসুক খালি।মেরে ওকে মুরগি বানিয়ে দিব।
আহিরঃ কাল তোর এক্সাম।গিয়ে শুয়ে পর কেমন।
ঈশাঃ ওকে গুড নাইট ভাইয়া।
আহিরঃ গুড নাইট।
ঈশা উঠে নিজের রুমে চলে গেলো।আহিরও নিজের রুমে চলে গেলো।ঈশা রুমে গিয়ে নিজের ওড়না হাতে নিলো।যেটা আকাশ ওকে দিয়েছিলো।ঈশা নিজের দু হাত দিয়ে ওড়না বুকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলো।মুচকি-মুচকি হাসছে ঈশা চোখ জোড়া বন্ধ করে।কিন্তু ঘুম কিছুতেই আসছে না ঈশার।ঈশা বিছানায় উঠে বসলো।
ঈশাঃ কি মার দিলো ছেলে গুলোকে।পুরো রিয়্যেল তামিল মুভির হিরো।আমার স্বপ্নের রাজকুমার।আমি স্বপ্নে যেমন তামিল মুভির হিরো’কে দেখি!একদম ছেলেটি তেমন হিরো।আমার ঘুম কেনো আসছে না।ভেবেই যাচ্ছি ছেলেটার কথা।”প্রেমে পরে গেলাম না’তো ছেলেটার? প্রথম প্রেমের অনুভূতি বুঝি এরকম’ই হয়?”
ঈশা মুচকি হেসে ওড়না বুকে জড়িয়ে শুয়ে পরলো।এদিকে আহির শুয়ে আছে সোজা হয়ে।চোখগুলো বন্ধ করলেই আজ সকালের ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে পরছে।আয়রার বাজে ব্যবহার গুলো মনে পরছে আহিরের।আহির বিরক্ত বোধ করছে আয়রার উপর।আহির মনে-মনে ভেবে পাচ্ছে না।একটা মেয়ে কিভাবে এতটা বাজে হতে পারে? আহির চোখ মেলে তাকালো।
আহিরঃ ফালতু,বাজে,অভদ্র মেয়ে একটা।মাথা থেকে যাচ্ছেই না ওর বেয়াদবি গুলো।
আহির কথাগুলো বলে আবারো নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে ঘুমের চেষ্টা করলো।আয়রা’কে একদম মাথা থেকে ‘ময়লার’ মতো ঝেড়ে ফেলে দিলো আহির।
আকাশ রুমে বসে ভিডিও গেম খেলছে।আয়রা একবারও আকাশের রুমে আসে’নি।আকাশ বুঝেও কিছু বললো না।টিংকু ভাই আকাশের রুমে এসে বসলো ওর পাশে।
আকাশঃ আজ আপু কাজ নিয়েও বসে’নি।বাড়ি এত চুপচাপ কেনো?
টিংকু ভাইঃ অনেক কিছু হয়ে গেছে এখানে।
আকাশঃ মানে? [ভিডিও গেম অফ করে]
টিংকু ভাইঃ আমরা আজ গিয়েছিলাম তিনশো ফিট।
আকাশঃ দ্যান?
টিংকু ভাই সব ঘটনা বললো আকাশ’কে।আহির কি-কি বলে অপমান করেছে আয়রা’কে।আহির কি-কি বলেছে সবাইকে।দ্বিতীয় বার বস্তিতে পাঁ রাখতেও বারন করেছে।এসব বললো টিংকু ভাই আকাশ’কে।আকাশ শুনেই রেগে গেলো।
আকাশঃ আমি ওই ছেলেকে ছাড়বো না। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
টিংকু ভাইঃ পুলিশ’কে বলবো?
আকাশঃ না!কাল আগে আমরা ওখানে যাই।তারপর ভেবে দেখবো।
টিংকু ভাইঃ আমি যাবো না। [নিজের গালে হাত রেখে]
আকাশঃ গালে হাত দিয়ে আছো কেনো? হাত সরাও দেখি।
টিংকু ভাই গাল থেকে হাত সরালো।আকাশ দেখলো গাল লাল হয়ে আছে টিংকু ভাইয়ের।আকাশ বললো!
আকাশঃ তোমার গাল বানরের মতো লাল হলো কিভাবে?
টিংকু ভাইঃ আর বলো না দুঃখের কথা। [ন্যাকা কান্না করে]
আকাশঃ আবার চড় খেয়েছো কারো কাছে?
টিংকু ভাইঃ আমার কি চড় খাওয়ার জন্যই জন্ম হয়েছে।
আকাশঃ ওহ্!তার মানে ওই ছেলের কাছে চড় খেয়ে এসেছো?
টিংকু ভাইঃ আমার নরম গাল শেষ।
আকাশঃ গাধা কোথাকার। [দুষ্টু হেসে]
আকাশ নিজের রুম থেকে বের হয়ে গেলো দুষ্টু হেসে।টিংকু ভাই আবার নিজের গালে হাত দিয়ে বসে রইলো।আকাশ ছাঁদে গিয়ে দাঁড়ালো।খোলা বাতাসে চোখ বন্ধ করে।
আকাশ চোখ বন্ধ করতেই সকালের ঘটনা চোখে ভাসতে লাগলো ওর।গাড়ি থেকে বের হতেই ঈশা নিজের চুলগুলো খুলে ফেললো।বাতাসে ঈশার খোলা চুলগুলো উড়ছে।চোখে ভাসতেই আকাশ নিজের চোখ জোড়া মেলে তাকালো।
আকাশঃ হুয়াট দ্যা হেল!কি হচ্ছে এগুলো আমার সাথে।আমি কি ভাবছি এগুলো?
আয়রা চুপ করে বালিশ বুকে জড়িয়ে শুয়ে আছে।চোখ জোড়া খুলে।আয়রার চোখে ভাসছে আহিরের ফর্সা বুকে কুঁচকুঁচে কালো লোমগুলো।আহিরের গুন্ডা টাইপ স্টাইল গুলো।সাথে আহিরের করা অপমান গুলো মনে পরতেই আয়রা চরম রেগে গেলো।
আয়রাঃ রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে আমার।আমি কিছুতেই ছেলেটাকে ছাড়বো না।নোউ ওয়ে!
.
চলবে….
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com