Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -১৪



প্রকৃতি আর আহির নিজের কাজে ব্যস্ত।প্রকৃতি সব বুঝাচ্ছে।আহির সব বুঝে নিচ্ছে।এদিকে আয়রার রাগে অবস্থা টাইট।আয়রা ঠাসসস্ করে ল্যাপটপ বন্ধ করে দিলো।তাতে সোফায় বসে থাকা টিংকু ভাই চমকে উঠলো।টেবিলে আয়রা পাশে থাকা পানির গ্লাস হাতে নিলো।ঢকঢক করে পুরো এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলো আহিরের দিকে তাকিয়ে রেগে।টিংকু ভাই আয়রার চেহারা দেখে বুঝলো আয়রা রেগে আছে।উঠে আয়রার কাছে গেলো টিংকু ভাই।আয়রা শব্দ করে কাঁচের গ্লাস টেবিলে রাখলো।তারপর রক্ত লাল চোখে টিংকু ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো!
আয়রাঃ ওই ফাজিল ছেলেটিকে ডেকে পাঠাও আমার কেবিনে।
টিংকু ভাইঃ কোন ফাজিল ছেলে?
আয়রাঃ কেনো নতুন যে ফাজিল ছেলেটি জয়েন করেছে আজ।
টিংকু ভাইঃ আজ কম্পিউটার সেকশনে নতুন ১০ জন জয়েন করেছে।কার কথা বলছো তুমি।
আয়রা এবার খুব রেগে চেয়ার থেকে উঠে! টিংকু ভাইয়ের দিকে হাল্কা ঝুঁকে বললো!
আয়রাঃ তুমি বুঝতে পারছো না? আমি কোন ফাজিলের কথা বলছি?
টিংকু ভাইঃ তুমি আহির ছেলেটির কথা বলছো?
.
আয়রাঃ যাও ডেকে আনো ওকে। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
টিংকু ভাইঃ আমি ওই ছেলের কাছে যাবো না।আমি গেলেই থাপ্পড় মারবে আমাকে। [গালের একপাশে হাত রেখে]
আয়রাঃ না গেলে তোমাকে আমি…আমি…আমি…! লিফটে বন্ধ করে রাখবো বলে দিলাম। [হাল্কা কান্না ভাব করে]
টিংকু ভাইঃ ঠিক আছে যাচ্ছি আমি। টিংকু ভাই গেলো আহিরের কাছে।
আয়রা নিজের কেবিনে বসে দেখছে! টিংকু ভাই কথা বলছে আহিরের সাথে।
আহির চেয়ার থেকে উঠে আয়রার কেবিনের দিকে আসছে।
আয়রা আহির’কে আসতে দেখে! নিজের ল্যাপটপ খুলে ল্যাপটপের দিকে
তাকিয়ে রইলো।আহির কেবিনের ভেতরে ঢুকে বললো!
আহিরঃ আমাকে ডেকেছেন? [অন্যদিকে তাকিয়ে]
আয়রাঃ হ্যাঁ ডেকেছি। [আহিরের দিকে তাকিয়ে]
আহিরঃ বলুন কি বলবেন?
আয়রাঃ [ইশশশ! এতক্ষন প্রকৃতির সাথে লেগে বসে ছিলো।
আর এখন অন্যদিকে তাকিয়ে আছে]
আহিরঃ হ্যাঁলো মিস…!
আয়রাঃ ওয়েট!
আয়রা একটা পেপার আহিরের সামনে রাখলো।আহির পেপারের দিকে তাকালো।তারপর আয়রার দিকে তাকালো!
আয়রাঃ এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো?
আহিরঃ কি এটা?
.
আয়রাঃ পেপারে এটা লিখা আছে যে! আজ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত আপনি না চাইলেও আপনাকে এখানে জব করতে হবে।আপনি চাইলেই নিজের ইচ্ছেতে এই চাকুরি ছাড়তে পারবেন না ৬ মাসের আগে।আর যদি ৬ মাসের আগে চাকুরি ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন! তাহলে অফিস ডিপার্টমেন্ট পুলিশের সাহায্য নিতে বাধ্য হবে দ্যাট’স ইট।
আহিরঃ আমাকে এখন কি করতে হবে?
আয়রাঃ বেশি কিছু না! একটা সাইন করতে হবে।
আহিরঃ করবো না সাইন আমি।
আয়রাঃ হুয়াট? [চেয়ারে বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে]
আহিরঃ একবার বললে শুনতে প্রবলেম হয় না’কি আপনার?
আয়রাঃ সাইন করুন।
আহিরঃ আপনাদের উপর কোনো ভরসা নেই।এই হাফ-টিকিটের উপর আরো বেশি বিশ্বাস নেই। [টিংকু ভাই’কে উদ্দেশ্য করে বললো আহির]
আয়রাঃ ভয় পাচ্ছেন?
আহিরঃ আমি প্রথম দিন’ই বলেছি।জীবনের পরীক্ষায় আমি কখনো ভয় পাই না।
আয়রাঃ তাহলে সাইন করুন।
আহিরঃ সাইন করলে আমি ৬ মাসের আগে এই জব ছাড়তে পারবো না।আর সেই সুযোগ নিয়ে আপনারা আমাকে নানা ভাবে টর্চার করবেন।সেটা বুঝতে আমার বাকি নেই।
আয়রাঃ তার মানে আপনি ভয় পাচ্ছেন?
আহিরঃ আপনার কানের সমস্যা আছে মেইবি।
আয়রাঃ ভয় পেয়ে সাইন নিজে করছেন না।আর বলছেন আমার কানে প্রবলেম সিরিয়াসলি? যদি আমার সাথে মোকাবেলা করতে ভয় না পান! তাহলে এই পেপারে সাইন করুন।৬ মাস দেখতে-দেখতে চলে যাবে।
আহির বিরক্ত হয়ে গেলো আয়রার কথায়।কেনো যেনো আয়রার কথা শুনলেও আহিরের শরীর জ্বলে যায়।আহির জলদি করে সাইন করে দিলো পেপারে।তারপর আয়রার দিকে তাকিয়ে বললো!
আহিরঃ নাউ হ্যাপি? আমি আসি এখন?
আয়রাঃ সিয়্যর!
.
আহির বড় নিঃশ্বাস ছেড়ে যেই আয়রার রুম থেকে বের হতে যাবে! তখনি আয়রা আবার ডাকলো আহির’কে।আহির খুব রেগে আয়রার দিকে তাকালো পিছন ফিরে।
আয়রাঃ শুনুন!
আহিরঃ নাউ হুয়াট?
আয়রাঃ এখানে আপনি কাজে এসেছেন।সেটা ভুলে যাবেন না।স্টাফ’দের সাথে কথা একটু কম বলবেন।
আহিরঃ নিশ্চুপ…! [এই মেয়ের মাথায় প্রবলেম আছে]
আহির কোনো উত্তর না দিয়ে আয়রার কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো।আয়রা নিজের কাজে মনযোগ দিলো।টিংকু ভাই সবটা বোঝার চেষ্টা করেও বুঝলো না।
টিংকু ভাইঃ ডাল মে কুঁছ কালা হ্যায়।
“রাতে”
সন্ধ্যার পর রাতে অফিস ছুটি হয়ে গেলো।আহির অফিস থেকে বের হয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলো।তখনি প্রকৃতি এসে আহিরের সামনে গাড়ি ব্রেক করলো।আহির গাড়ির দিকে তাকাতেই! প্রকৃতি গাড়ির গ্লাস খুলে বাহিরে তাকালো।
প্রকৃতিঃ আমি ড্রপ করে দিব?
আহিরঃ তার কোনো প্রয়োজন হবে না।আমি একাই চলে যেতে পারবো।
প্রকৃতিঃ এ্যাজ লাইফ ফ্রেন্ড।এতটুকু আমি করতেই পারি।প্লিজ কাম ইন সাইড।
আহিরঃ কিন্তু…!
প্রকৃতিঃ প্লিজ ইয়্যার।
আহিরঃ ওকেহ্।
প্রকৃতি খুশি হয়ে গাড়ির ডোর খুলে দিলো।আহির গাড়িতে বসলো।প্রকৃতি গাড়ি লক করে স্টার্ট দিলো।ওরা চলে গেলো।
.
আয়রা অফিস থেকে বের হতেই দেখলো! আহির প্রকৃতির গাড়িতে উঠে চলে যাচ্ছে।আয়রা কিছু মনে নিলো না।নিজের মতো গাড়িতে উঠে চলে গেলো বাসায়।
রাত ৯:০০ টা বাজে।এখন ঈশার বাসায় যেতেই হবে।কারন বেশি রাত হলে আহিরের হাজার’টা প্রশ্নের জবাব দিতে হবে ঈশা’কে।আর ঈশা মিথ্যে বলতে পারবে না।নিচে পায়চারী করছে ঈশা।কখন আকাশ এসে বলবে বাসায় যেতে।
সুমুঃ এখন আমাকে বাসায় যেতে হবে।
আকাশঃ আমি ড্রপ করে দিব?
সুমুঃ আমি গাড়ি নিয়ে এসেছি।
আকাশঃ সাবধানে যেও কেমন।
সুমুঃ হুমম।আর শোনো আকাশ।
আকাশঃ হুমম বলো!
সুমু আকাশের কাছে গিয়ে ওর শার্টের কলার দু হাতে চেঁপে ধরলো।আকাশ কিছুই বুঝলো না।
আকাশঃ কি করছো তুমি?
সুমুঃ তুমি ওই ফালতু মেয়েটির থেকে দূরে থাকবে কিন্তু। [ঈশা’কে উদ্দেশ্য করে]
আকাশঃ আর ইউ জেলাস ডার্লিং?
সুমুঃ অফ কোর্স ডার্লিং।
আকাশঃ আরে বাসার সার্ভেন্ট।বস্তিতে থাকে ও।
সুমুঃ হুয়াট! বস্তিতে থাকে মেয়েটি? ইয়াক থুউউ।
আকাশঃ তুমি সাবধানে বাসায় যাও।
সুমুঃ বায়।ওই মেয়েটি কখন বাসায় যাবে?
আকাশঃ এখনি ওকে বাসায় পাঠিয়ে দিব।
সুমুঃ ওকে।
আকাশ আর সুমু কথা বলতে-বলতে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে।ঈশা ফোনে কথা বলছিলো আর পায়চারী করছিলো।ঈশা আকাশ’কে নামতে দেখে তাড়াতাড়ি করে আকাশের সামনে গিয়ে বললো!
ঈশাঃ আকাশ আমাকে এখনি বাসায় যেতে হবে।
ঈশার মুখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ভয়ের ছাঁপ।নিশ্চিত কিছু একটা ঘটেছে।আকাশ একটু অবাক হলো ঈশা’কে এভাবে ঘাবড়াতে দেখে।সুমু পুরো অবাক! ঈশা নাম ধরে ডাকলো আকাশ’কে।রাগে কটমট করছে সুমু ঈশার দিকে
তাকিয়ে।
.
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com