গল্পঃ অত্যাচার । পর্ব-০২
শান্তা মনে মনে ভাবছে……..
তাকে তো অন্য একটা কাজে নিয়োজিত করা
হয়েছে।তাহলে সে কেনো প্রথম রাতেই শাহরিয়ারের
মায়ায় জড়িয়ে যাচ্ছে। সে কি সত্যি সত্যিই তার
কাজটা ঠিক মতো করতে পারবে? কি পারবে না।
যদি কাজটা সে দ্রুত করতে না পারে তাহলে তো
টাকার অভাবে হাসপাতালে থাকা তার ভাইটা মারা
যাবে?……
___ পরের দিন সকালে শান্তা ঘুম থেকে উঠে দেখতে
পেলো শাহরিয়ার এখানো ঘুমিয়ে রয়েছে একদম
বাচ্চাদের মতো।তার ঘুমন্ত চেহারায় অনেক
আঘাতের চিন্হ ও স্পষ্ট ফুটে উঠেছে? যা দেখে
শান্তার খুব খারাপ লাগলো।শান্তা ফ্রেস হয়ে এসে
শাহরিয়ার কে আলতো ভাবে ছুয়ে ডাকতে লাগলো।
শাহরিয়ার ঘুম ঘুম চোখে শান্তা কে বলল…….
শাহরিয়ারঃ প্লিজ আমাকে আরেকটু ঘুমাতে দেন না?
শান্তাঃ না এখন আর ঘুমানো যাবে না? উঠো
বলছি, ফ্রেস হয়ে আমার সাথে নিচে চলো নাস্তা
করতে?
___ নিচে যাওয়ার কথা শুনে শাহরিয়ারের ঘুম
বাতাসে উরে গিয়ে মিশে, অদিশ্য হয়ে গেলো। ভয়ে
সে লাফ মেরে উঠলো আর শান্তা কে কাঁদো কাঁদো
গলায় বলল……….
শাহরিয়ারঃ না, না, না মোটেও না।আমি নিচে যাবো
না? প্লিজ আমাকে নিচে নিয়ে যেতে চাইবেন না?
আমাকে দেখলেই ওরা খুব মারবে?
শান্তাঃ আহা কেউ কিছু করবে না? আমি আছি না।
শাহরিয়ারঃ না আমি যাবো না? আমার খুব ভয়
করে?
শান্তাঃ বলছি তো কেউ তোমাকে কিছু করবে না?
শাহরিয়ারঃ না আমি জানি ওরা আমাকে দেখলেই
মারধোর শুরু করবে?
শান্তাঃ তুমি যাবে কি যাবে না?
শাহরিয়ারঃ না আমি যাবো না?
___শাহরিয়ারের কথার জবাবে শান্তা আর কিছুই
বলল না। সোজা শাহরিয়ারকে জোড় করে ফ্রেশ
করিয়ে নিচে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।
শাহরিয়ার একবার রুমের এপাশ আরেক বার
রুমের ওপাশে দৌড়াচ্ছে আর তার পিছু পিছু
ছুটছে শান্তা? এক সময় শাহরিয়ার কিছু একটার
সাথে হোচট খেয়ে যখন পড়ে যেতে রইলো তখনি
শান্তা দ্রুত শাহরিয়ারের কোমর ধরে নিজের
সাথে জড়িয়ে ধরলো আর বলল……
শান্তাঃ আমি থাকতে তোমার কেউ কিছু করবে না।
শাহরিয়ারঃ সত্যি বলছো?(অভাক করা চাহিনিতে) শান্তাঃ হ্যা?
.
শাহরিয়ারঃ তাহলে চলো?
___ তারপর শান্তা শাহরিয়ার কে নিচে নিয়ে গেলো।
নিচে গিয়ে শাহরিয়ার দেখতে পারলো?যে তার
দুই ভাবী ও দুই ভাই খাবার খাচ্ছে? শাহরিয়ার এটা
দেখে খুব আশ্চার্য হয়েছে যে তাকে এখনো কেউ
কিছু করছে বা বলছে না কেনো?
___ শান্তা একটা চেয়ার টেনে শাহরিয়ার কে খাবার
টেবিলে বসিয়ে দিলো এবং খাবার বেড়ে শাহরিয়ার
কে দিতে লাগলো……..
___ হঠাৎ শাহরিয়ার দেখতে পেলো রফিক কাকা
তার দিকে একটা কিছু নিয়ে তেরে আসছে।
শাহরিয়ার ভয়ে চেয়ার থেকে ওঠে শান্তার পিছনে
গিয়ে লুকিয়ে পড়লো………
রফিক কাকা একটু কাছে আসতেই? শান্তা টেবিল
থেকে খাবারের বাটি তা ছুরে মারে রফিক কাকার
উপর? গরম খাবারের বাটিতা রফিক কাকার
মুখে পড়তেই যন্ত্রনায় চিৎকার দিয়ে ওঠে।
এবং গার্ড ডেকে এনে শান্তা রফিক কাকা কে বাড়ি
থেকে বের করে দিলো।
___ শাহরিয়ার আশ্চার্যের পর আশ্চার্য হচ্ছে
এটা দেখে এখনো তার দুই ভাই ও দুই ভাবী
কিছুই বলছে না।তারা নিজেদের নিজের নিজের
খাবার খেতে বেস্তো কেউ একবার ঘুরেও তাকাচ্ছে
না?শাহরিয়ারের খাবার খাওয়া শেষ হলে শান্তা
তাকে রুমে নিয়ে আসে।
শাহরিয়ারঃ আচ্ছা রফিক কাকা কে আপনি বাসা
থেকে বের না করে দিলে ও পারতেন? বেচারা
এখন কি খাবে কি করবে?
শান্তাঃ এরকম কাজের লোকদের বাসা থেকে
বের করে দেওয়াই উচিত?
শাহরিয়ারঃ আমার না খুব ভয় লাগছে? তোমাকে দেখে?
.
শান্তাঃ কেনো?
শাহরিয়ারঃ তুমি খুব রাগি তাই?
শান্তাঃ তো কি হয়েছে?
শাহরিয়ারঃ শুনেছি রাগি মেয়েরাও নাকি…….
শান্তাঃ কি?
শাহরিয়ারঃ মারধোর করে?
শান্তাঃ তো আমি কি তোমায় মারধোর করি?
শাহরিয়ারঃ না?
শান্তাঃ তাহলে চুপচাপ থাকো আর কোনো কথা
বলো না?(চোখ রাঙিয়ে)
___ শান্তার কথার জবাবে শাহরিয়ার আর কিছুই
বলতে পারলো না।বিছানায় বসে বসে গেম খেলছে
সে কখনো হাসছে বা কখনো মন খারাপ করছে
তা দেখে কিন্তু শান্তার বেশ ভালো লাগছে?
রাতে শান্তা নিজ হাতে শাহরিয়ার কে খাবার
খাইয়ে দেয় অবশ্য জোড় করে খাইয়ে দিতে
হয়েছিল তাকে লজ্জায় প্রথমে খেতে চাইনি?
ঘুমানোর সময় শাহরিয়ারের কেনো যানি খুব
ইচ্ছে করছিলো শান্তা তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাক
কারন শান্তা তাকে জড়িয়ে ধরলে খুব ভালো লাগে
তার।অজানা এক অনভুতিতে হারিয়ে যায় সে।
শাহরিয়ারঃ এই একটা কথা বলার ছিলো?
শান্তাঃ কি?(ভ্রু কুচকে)
শাহরিয়ারঃ না মানে যদি রাগ না করো তাহলে
বলবো?
শান্তাঃ কথা না বাড়িয়ে বলে ফেলো?
শাহরিয়ারঃ আমাকে একটু জড়িয়ে ধরে
ঘুমাবে(ভয়ে ভয়ে)
শান্তাঃ এটা বলতে এতো সময় লাগে? আচ্ছা ঠিক
আছে আমার কাছে আসো?
.
শাহরিয়ারঃ না তুমি আসো আমার খুব লজ্জা লাগে?
(লজ্জায় মুখ লাল করে)
শান্তাঃ ওরে আমার লজ্জা বাবুটা?
___ তারপর শান্তা শাহরিয়ার কে জড়িয়ে ধরলো।
শাহরিয়ারের কেনো যানি এখন বেশ লজ্জা লাগছে
আবার অনেক ভালোও লাগছে।
___ এভাবে প্রায় অনেক দিন চলে গেলো
শাহরিয়ারের। বলতে গেলে খুব ভালোভাবেই?
আর আজ রাতে শান্তা শাহরিয়ার কে নিজের হাতে
রান্না করে খাইয়ে দিচ্ছে আর শাহরিয়ার পরম
সুখে নিজের স্ত্রীর হাতে খাবার খাচ্ছে খাওয়া-দাওয়া
শেষ হলে শাহরিয়ার আজ নিজে থেকেই এই প্রথম
শান্তা কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে……….
কিন্তু তার পরের দিন শাহরিয়ার ঘুম থেকে ওঠে যা
দেখলো তাতে তার বুক সঙ্গে সঙ্গে কেপে ওঠে?
শাহরিয়ার দেখতে পেলো শান্তা রক্তাত্ব অবস্থায়
ফ্লোরে পরে আছে।সে দেড়ি না করে শান্তার হাত
ধরে তাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু সে উঠছে না।
শাহরিয়ার বেশ বুঝতে পারছে শান্তার হাত ঠান্ডা
হয়ে আছে।শাহরিয়ার শান্তাকে ভালোভাবে দেখে
বুঝতে পারে তার দেহে আর প্রান নেই। অর্থাৎ সে
মৃত।সাথে সাথে শাহরিয়ার শান্তা বলে চিৎকার
দিয়ে শান্তার শীতল দেহটা নিজের বুকের সাথে
আকরে ধরে চোখের অশ্রু ফেলছে?
.
শাহরিয়ারঃ শান্তা ও শান্তা তুমি কথা কেনো বলছো
না।একটি বার চোখ খুলে দেখো না এই যে আমি
শাহরিয়ার।কি হয়েছে তোমার চোখ কেনো
মেলছো না। তুমি এভাবে আমাকে একা করতে
পারো না।তুমি চলে গেলে কে আমাকে আমার
ভাইয়া ও ভাবীদের হাত থেকে বাঁচাবে।তুমি না
থাকলে তো তারা আমাকে প্রতিদিন খুব অত্যাচার
করবে।ও শান্তা কি হয়েছে তোমার চোখ কেনো
মেলছো না…………….
___ শান্তার মৃত শীতল লাশটি জড়িয়ে অনাবরত
চিৎকার দিয়ে কেঁদে কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে শাহরিয়ার।
হঠাৎ শাহরিয়ার বুঝতে পারে কেউ একজন তার
রুমের দিকে আসছে।আর সে যখন তার রুমে
আসে তাকে দেখে শাহরিয়ারের ভয়ে তার
শরীর সিউরে উঠে…………….
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com