দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব -০৯
টিংকু ভাইঃ কিছু না।তুমি এখনো যাও’নি যে?
আহিরঃ আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
আহির এক-পাঁ এক-পাঁ করে আগাতে লাগলো টিংকু ভাইয়ের দিকে।টিংকু ভাই ভয়ে পিছিয়ে গেলো।টিংকু ভাই এক গালের হাত সরাতেই! আহির ঠাসসস্ করে টিংকু ভাইয়ের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।টিংকু ভাই লাফিয়ে উঠলো।
টিংকু ভাইঃ আমি কিন্তু বয়সে তোমার বড়…!
আহিরঃ শালা তুই আমার চেয়ে বড় বয়সে? তোকে তো…!
আহির আবারো ঠাসসস্ করে টিংকু ভাইয়ের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।টিংকু ভাই গাল ডলতে-ডলতে বললো!
টিংকু ভাইঃ ভাই আজকে “থাপ্পড়ের ডোজ” এখানেই শেষ কর।আমার গাল বাংলাদেশ থেকে উড়ে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাবে একটু পর।
আহিরঃ আমার থেকে প্রতিশোধ নিবি? আবে সালে তেরি তো! হাফ টিকিট কোথাকার।
আহির আর কথা বাড়ালো না।চলে গেলো সেখান থেকে।টিংকু ভাই বসে-বসে গাল ডলতে লাগলো।ফোনের সেল্ফি ক্যামেরা অপেন করে দেখলো! আজ ওর গাল দুটো কমলা রূপ ধারন করেছে।
ঈশার এক্সাম শেষ হয়েছে আরো ১ ঘন্টা আগে।আসার সময় ঈশা’কে সবকিছু বললো! ভিন্টু,মোটু আর বাম্ব।ঈশা আজ প্রচন্ড রেগে গেলো।
.
ঈশাঃ ওদের বাসা কোথায় জানো তোমরা?
ভিন্টুঃ হ্যাঁ খবর নিয়েছিলাম ওদের।
ঈশাঃ বাড়ির এ্যাড্রেস দাও আমাকে।
মোটুঃ ঈশা তুই কি করবি ওদের বাড়ির এ্যাড্রেস দিয়ে?
ঈশাঃ আগে দাও তারপর বলছি।
বাম্বঃ দাঁড়া তোর ফোনে ম্যাসেজ করে দিচ্ছি এ্যাড্রেস।
বাম্ব ঈশার ফোনে ম্যাসেজ করে দিলো আকাশ’দের বাড়ির এ্যাড্রেস।ঈশার ফোনে ম্যাসেজ আসতেই ঈশা দেখে নিলো।তারপর বললো!
ঈশাঃ তোমরা বাসায় যাও।আমি একটু পর আসছি।
ভিন্টুঃ তুই কি ওদের বাড়ি যাবি? দেখ ওরা মোটেও ভালো নয়।তাছাড়া আহির জানতে পারলে আমাদের খুব বকবে।
ঈশাঃ তোমরা কিছু চিন্তা করো না।আমার কিছু হবে না।ওদের ১২টা বাজিয়ে ছাড়বো আজ আমি।
মোটুঃ চল আমরাও যাবো তোর সাথে।
ঈশাঃ আমি একাই সবকিছু ম্যানেজ করে নিবো।
বাম্বঃ তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরিস।নয়তো আহির বাসায় এসে ঝামেলা করবে।
ঈশাঃ হুমম ডোন্ট ওয়্যারি।আই উইল ম্যানেজ।
ভিন্টুঃ বায়।
ভিন্টু,মোটু আর বাম্ব ওখান থেকে একটা অটো ধরে বাসার দিকে গেলো।ঈশা একটা অটো ধরে এ্যাড্রেস অনুযায়ী যেতে বললো।
আকাশ বাসায় এসে চেঞ্জ করে ফ্রেস হয়ে নিলো।তারপর নিচে সুইমিং পুলের অপর পাশে মাঠে গিয়ে বাস্কেট বল খেলছিলো একা।
.
আকাশের মন বসছে না কোনো কিছুতে।ওই মেয়েটা আকাশের মনে চুম্বুকের মতো লেগে আছে।আকাশ চাইতেও ভুলতে পারছে না।আকাশ কি করবে বুঝতেও পারছে না।মেয়েটা মাথায় “জেঁকে” বসে আছে। আকাশ বল পাস করতে-করতে নিজের চোখ বন্ধ করলো।ব্যস আবারো ঈশার রাগে জড়ানো মায়াবী চেহারা আকাশের চোখে ভাসতে লাগলো।ঈশার খোলা চুলগুলোর চোখে ভাসতেই! আকাশ চোখ মেলে বল ছুঁড়ে মারলো বাস্কেটে।কিন্তু বল বাস্কেটে যাওয়ার আগেই কেউ ক্যাচ ধরলো।আকাশ তাকিয়ে দেখলো ঈশা।প্রচন্ড ভাবে আকাশ চমকে উঠলো।এটা ভেবে যে! ঈশা ওর বাড়ি চিনলো কিভাবে? ঈশা নিজেই বল বাস্কেটে ছুঁড়ে মারলো।আকাশ দেখলো ঈশার চেহারায় স্পষ্ট রাগ বোঝা যাচ্ছে।
আকাশঃ তুমি এখানে?
ঈশাঃ সেটা আমারও কুয়েশ্চেন।তুমি এখানে কিভাবে?
আকাশঃ এটা আমার বাসা।
ঈশাঃ তাহলে আকাশ তোমার জমজ ভাই? অন্যের বাড়ি’কে নিজের বাসা বলতে লজ্জা করে না?
আকাশঃ হুয়াট? [বোকা ভাবে]
ঈশাঃ আজকে ওই “আকাশের বাচ্চা কাঁকাশের” খবর আছে।ওকে মেরে কাঁক বানিয়ে দিব।
আকাশঃ কিহ্? [ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে]
ঈশাঃ তুমি ডাকবে আকাশ নামের “হুলো বান্দর” টাকে।
আকাশঃ হুলো বিড়াল শুনেছি।কিন্তু হুলো বান্দর কবে থেকে পয়দা হলো পৃথিবীর বুকে?
ঈশাঃ ও হ্যালো! তোমার কি মনে হচ্ছে আমি মজা করছি তোমার সাথে? [রেগে]
আকাশঃ মোটেই না।
ঈশাঃ তাহলে?
.
আকাশঃ তুমি চিনো কে আকাশ?
ঈশাঃ চিনলে এতক্ষনে খুন করে ফেলতাম।
আকাশঃ তাহলে বুঝলে কিভাবে! এটা আকাশের বাসা?
ঈশাঃ তোমাকে সব কথার উত্তর দিতে হবে? তুমি চিনো আকাশ’কে?
আকাশঃ না। [ফাজলামো করে]
ঈশাঃ তুমি কি করছো এখানে শুনি?
আকাশঃ কানা নাকি তুমি? দেখছো না খেলছি আমি।
ঈশাঃ আকাশের বাচ্চা কাঁকাশ! তোকে আমি ছাড়বো না।
আকাশঃ [আমি এই মেয়ের কি ক্ষতি করলাম হঠাৎ করে।]
আকাশ এগুলো ভাবছিলো।ঈশা এখনো আকাশ’কে ওর সামনে দাঁড়িয়ে ইচ্ছে মতো গালি দিচ্ছে।আকাশ সব হজম করে নিচ্ছে।ঈশার ঝগড়া শুনে বাড়ির মেইন গেটের দাড়োয়ান এলো।এসে দেখলো আকাশের নাম ধরে গালি দিচ্ছে।দাড়োয়ান বললো!
দাড়োয়ানঃ আপনি আকাশ স্যারের সামনে দাঁড়িয়ে তাকে গালি দিচ্ছেন?
ঈশাঃ হুয়াট?
আকাশঃ এখানে কিছু হয়’নি।তুমি যাও। [দাড়োয়ান’কে উদ্দেশ্য করে]
দাড়োয়ানের কথা শুনে ঈশা মনে হয় মাটির ভেতরে ঢুকে গেলো।দাড়োয়ান চলে গেলো।এদিকে আয়রার গাড়ি বাসায় ঢুকলো।আয়রা বাড়ির ভেতরে ঢুকে গেলো।টিংকু ভাই সুইমিং পুলের দিকে এসে দাঁড়িয়ে পরলো! একটি মেয়েকে আকাশের সাথে কথা বলতে দেখে।
টিংকু ভাইঃ এটা আবার কোন নতুন টুইস্ট।
ঈশাঃ তুমি আকাশ? আই মিন তোমার নাম আকাশ ইসলাম?
আকাশঃ তুমি কি কানার সাথে-সাথে বয়রাও নাকি?
.
ঈশাঃ আমি যা কুয়েশ্চেন করেছি।তার আন্সার চেয়েছি আমি। [খুব সিরিয়াস ভাবে]
আকাশঃ হ্যাঁ! আমিই আকাশ।আর এতক্ষন তুমি আমাকেই বকছিলে।কিন্তু রিজন? কি করেছি আমি?
ঈশার রাগ এবার আরো বেড়ে গেলো।ঈশা আকাশের একদম কাছে গিয়ে! ওর টি-শার্টের কলার চেঁপে ধরলো শক্ত ভাবে।টিংকু ভাই অবাক হলো আকাশের কান্ডে।কারন আকাশের কাছের বন্ধু-বান্ধব,টিংকু ভাই আর আয়রা ছাড়া অন্য কোনো ছেলে/মেয়ে কেউ ওকে স্পর্শ করলে! তাকে আকাশ মেরে আধমরা করে দেয়।কিন্তু ঈশা এত জোরে কলার চেঁপে ধরেছে তবুও আকাশ কিছু বলছে না ঈশা’কে?
টিংকু ভাইঃ লাভ টুইস্ট এর গন্ধ পাচ্ছি মনে হচ্ছে।
ঈশাঃ তুমি আজ তিনশো ফিট বস্তিতে গিয়েছিলে?
আকাশঃ হ্যাঁ! তাতে তোমার কি?
ঈশাঃ তাতে আমার কি মানে? হাউ ডেয়ার ইউ? তোমার সাহস কিভাবে হলো আমার আহির ভাইয়া কে অপমান করার?
আকাশঃ আমি তোমার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না।
ঈশা আরো রেগে গিয়ে আকাশের টি-শার্টের কলার ঝাঁকিয়ে! আকাশ’কে একদম কাছে টেনে নিলো।ঈশা খুব রেগে চাঁপা স্বরে বললো!
ঈশাঃ তুমি তিনশো ফিট যে বস্তিতে গিয়েছিলে! সেই বস্তিতে থাকি আমি।তোমার বোন দু দিন আগে গিয়ে বস্তির সবাইকে অপমান করেছে।আমার আহির ভাইয়া কেও অপমান করেছে।আজ তুমি গিয়ে আমার ভাইয়া কে মারতে চেয়েছিলে? তোমার সাহস তো মন্দ নয়।
আকাশ এতক্ষন কিছুই বলে’নি ঈশা’কে।কিন্তু যখনি ঈশা বললো “ও তিনশো ফিট বস্তিতে থাকে আর আহির নামে গুন্ডা ছেলেটির বোন”।তখনি জোরে এক ধাক্কা দিয়ে ঈশা’কে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিলো।ঈশা তাল সামলাতে না পেরে মাঠে পরে গেলো।ঈশা রেগে তাকালো আকাশের দিকে।আকাশ নিজের শরীর ঝাড়তে ব্যস্ত হয়ে পরলো।এমন ভাবে নিজের জামাকাপড় ঝাড়ছে যেনো রাস্তার ‘বা’ ড্রেনের ময়লা লেগেছে ওর গাঁয়ে! ঈশা ওর কাছে আসায় আর ওর শার্টের কলার ধরে ওকে স্পর্শ করায়।
.
চলবে…..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com