Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ২৭
হুমম,জানি তো! তাই সারাক্ষণ আগলে আগলে রাখছি ওকে।” সকালে মিম ভয়ে ভয়ে এসে ইমান’কে অনুরোধ করে বলে,
– “স্যার! আমি কি একটু কথা বলতে পারি আমার বাবার সাথে?” ইমান বলল,
– “না! কারণ নেটওয়ার্ক নেই জঙ্গলের এই জায়গা টা তে…! মিম বলল,
– ” ও আচ্ছা! আমি ভেবেছিলাম হয়তো নেটওয়ার্ক জ্যামার লাগানো আছে।” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “এই জায়গার যে অবস্থা কোনো নেটওয়ার্ক জ্যামার লাগানোর প্রয়োজন নেই তাতে।” মিম অবাক হয়ে বলল,
– “যদি কখনো এমারজেন্সি হয়?” ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
– “তার জন্য স্পেশাল ব্যবস্থা করা আছে।” মিম বলল,
– “ওহ আচ্ছা! এখানে কি রাডার আছে?” ইমান বলল,
– “বলবো কেন? এতো জেনে কি হবে?” মিম বেশ ভাব নিয়ে ইমান’কে বলল,
– “পালিয়ে যাবো! আপনি খুব জ্বালাতন করছেন আমাকে।” ইমান বলল,
– “এমা” তাই বুঝি? আগে কেন বলোনি আমাকে?” মিম বলল,
– “ইসস,বললেই যেন আমার প্রবলেম সল্ভ হয়ে যাবে?” ইমান দুষ্টু হেসে বলল,
– “হবে হবে! বিকেল বেলা ঠিক চার টা’র সময় নদীর ঘাটে এসে দেখা করতে হবে আমার সাথে।” মিম চমকালো,বলল,
– “সে নয় ভেবে জানাবো আপনাকে?” ইমান মিমের হাত চেপে ধরে বলল,
– “এতো জানাজানির কি প্রয়োজন? পরপুরুষের কাছে তো আর যাচ্ছ না,যাচ্ছ তোমার হবু স্বামীর কাছে।” মিম মুখ বাঁকিয়ে বললো,
– “হবু স্বামী! আমার বাবাকে জানালে আপনাকে শূলে চড়িয়ে দেবে।” ইমান বলল,
– “দেবে না! কারণ বাবা হয়তো রাগ করবেননা বরং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন তুমি আমার সাথে আছো এই কথা ভেবে।” মিম অবাক হয়ে বললো,
.
– “আপনি কি এর মধ্যে হাত করে ফেলেছেন আমার সহজসরল বাবা টা কে?” ইমান মিমের গাল টেনে বললো,
– “সে তো সময় হলেই জানা যাবে।” মিম দ্রুত পায়ে ইমানের তাঁবু থেকে বেড়িয়ে গেলো আর তখন নাজনীন এগিয়ে এলো মিমের কাছে আর উনি সরাসরি মিম’কে জিজ্ঞেস করলেন,
– “তুমি কি ভালোবাসো আমাদের ইমান স্যার কে?” মিম মেজাজ গরম করে বলল,
– “হুমম ম্যাম! আপনার কি কোনো সমস্যা আছে?” নাজনীন সাথে সাথেই মিম’কে ঝাড়ি মেরে বললো,
– “তুমি এরকম বেয়াদবের মতো আচারণ করছ কেন আমার সাথে?” মিম নিজেকে শান্ত রেখে বলল,
– “আমি কোনো বেয়াদবি করিনি ম্যাম আপনার সাথে বরং আপনি হিংসে করছেন কারণ আপনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা না যে ইমান স্যারের মতো একজন মানুষ আমাকে ভালোবাসা আর আমি ও ভালোবাসি তাকে।”
– “তাহলে সেদিন কেন মিথ্যে বললে আমাকে?” মিম বললো,
– “আপনার কি মনে হয়? আমি কৈফিয়ত দিতে বাধ্য আপনাকে?”
– “বেয়াদবি করো না প্লিজ!” ইমান বেরিয়ে এসে বলল,
– “ও কোনো বেয়াদবি করেনি আপনার সাথে।” নাজনীন বললো,
– “স্যার! ওর ভালোবাসা কি অন্ধ করে ফেলেছে আপনাকে?” ইমান বলল,
– “আমরা দু’জনেই একে অপরকে ভালোবাসি,আপনার কোথায় সমস্যা হচ্ছে? বলুন আমাকে?” নাজনীন বললো,
– “স্যার! আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই,ভালোবাসি আপনাকে।” ইমান বলল,
– “সরি! আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই না,আমি ভালোবাসি না আপনাকে।”
– “বিয়ে একটা পবিত্র জিনিস।” ইমান মিমের হাত চেপে ধরে বললো,
– “আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাই এই মেয়েটির সাথে…আর কিছু?” নাজনীন বললো,
– “এখনো পরিপক্কতা আসেনি ওর মাঝে।” ইমান বলল,
– “আপনি কম্প্রোমাইজ করতে পারবেন?”
.
– “কম্প্রোমাইজ করার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে? ইমান ভণিতা না করে স্পষ্ট ভাষায় বলল,
– ” তাহলে আমি কেন বিয়ে করবো আপনাকে? না মানে আমার রুচি কি এতোই খারাপ? যে নূন্যতম কম্প্রোমাইজ করার মন-মানসিকতা নেই বিয়ে করে সারাজীবন সংসার করবো এমন একটা মেয়ের সাথে?” নাজনীন বললো,
– “ওহ! আপনি চাইলে আমি বদলে ফেলার চেষ্টা করতে পারি নিজেকে।” ইমান বলল,
– “তার কোনো প্রয়োজন নেই কারণ আমি যে ভালোবাসি না আপনাকে।” নাজনীন মাথা নিচু করে চলে গেলো,তবে তার মনে একটা ক্ষোভ রয়ে গেছে।বিকেলে,
মিমের হাতে টগর ফুল দেখে নাজনীন ওকে জিজ্ঞেস করলো,
– “তুমি এগুলো এনেছ কোথা থেকে?” মিম বললো,
– “ম্যাম! সকালে ট্রেকিং করতে করতে জঙ্গলের আরো গভীর চলে গিয়েছিলাম আর এই ফুল গুলো ও নিয়ে এসেছি সেখান থেকে।” নাজনীন মৃদু হেসে মিম’কে বলল,
– “আমাকে টগর ফুল এনে দেবে প্লিজ? আমার ও টগর ফুল খুব ভালো লাগে।” মিম আমতা আমতা করে বলল,
– “ম্যাম! সকালে এনে দেই? একটু পরেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে।” নাজনীন বললো,
– “এখুনি এনে দাও নয়তে তোমাকে শাস্তি পেতে হবে আর সাথে ইমান স্যারের চাকরি টাও যাবে” মিম বলল,
– “কিন্তু ম্যাম,ইমান স্যার ডেকেছিল আমাকে।” নাজনীন বলল,
– “তুমি যাও! আমি কিছু একটা বলে দেবো তাকে।” মিম রেইন কোর্ট পরে একটা দিকনির্দেশক যন্ত্র নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বেড়িয়ে পরলো,এদিকে ইমান নদীর ঘাটে এসে বসে আছে।
তার মনমেজাজ খুব খারাপ,মেজাজ টা মিমের দেখা না পেয়ে আরো বিগড়ে গেছে।কিছুক্ষণ পর ইমান তাঁবুতে ফিরে আসলো,মনেমনে ভাবলো,
– “এতক্ষণ একা একা বৃষ্টিতে ভিজেই বা কি হবে?” ওদিকে মিম টগর ফুল নিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে আসছে বন-জঙ্গলের মধ্যে থেকে।
.
তবে হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকালো আর ওর লাইট টা ছিটকে পানিতে পরে গেলো সাথে সাথে।মিম তবুও সাহস জুগিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে অন্ধকারের মধ্যে এগিয়ে যেতে লাগলো।তবে কিছুক্ষণ পর,তীব্র ব্যাথা অনুভব করলো নিজের কাঁধে।
রাত তখন প্রায় সাতটা সারা এসে ইমান’কে জিজ্ঞেস করলো,
– “স্যার! মিম কোথায়? ও এখনো ফিরে আসেনি তাঁবুতে।” ইমান অবাক হয়ে বলল,
– “কি বলছ তুমি? ও যে বিকেলে দেখা করতে ও আসেনি আমার সাথে?” নাজনীন চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলল,
– “দেখুন ও বোধহয় আশেপাশের কোনো টেন্টে আছে?” অনসূয়া নিজের তাঁবু থেকে বেড়িয়ে এসে বললো,
– “আপনি মিথ্যে বলছেন কেন ম্যাম? আপনি না মিম’কে বিকেলে ভয় দেখিয়ে টগর ফুল এনে দিতে বললেন আপনাকে?” ইমান চমকে জিজ্ঞেস করলো,
– “মানে?” অনসূয়া বলল,
– “আপনার চাকরি খেয়ে দেবে সেই ভয় দেখিয়েছিলো,এই মহিলা ওই বাচ্চা মেয়ে টা কে,স্যার ও নিশ্চয়ই কোনো বিপদে পরেছে? আমার খুব ভয় করছে।” নাজনীন জোর গলায় ইমান’কে বলল,
– “কর্নেল সাহেব উনি আমার ব্যাপারে আপনার কাছে মিথ্যে বলছে।” ইমান আচমকা নাজনীন’কে একটা চড় মেরে বলে,
.
– “যদি ওর কিছু হয়! তাহলে আজ তোর বাপদাদা,চোদ্দগুষ্টির নাম আমি ভুলিয়ে দেবো তোকে।
অসভ্য মহিলা,লজ্জা করে না,হিংসে করে বেড়াও একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে?” জেনারেল ইমাদ ইমান’কে বললেন,
– “শান্ত হও ইমান! আগে ওকে খুঁজে বের করতে হবে।” ইমান বলল,
– “কোথা থেকে খুঁজে বের করবো স্যার? আমি জানি না মেয়ে টা কোথায় আগে?” রায়হান এসে ইমানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
– “চিন্তার কোনো কারণ নেই! চারটি দল গঠন করেছি,চারটি দল চারদিকে যাবে।” জেনারেল ফিদান বলল,
– “ইমান তুমি বেইজ ক্যাম্পে থেকে যাও,খুঁজে পেলে সাথে সাথে তোমাকে জানানো হবে।” ইমান বলল,
– “স্যার! আমি সুস্থ হয়ে কি করে এখানে থেকে যাবো স্যার বলুন আমাকে?” ব্রিগেডিয়ার উল্লাস বললেন,
– “সময় নষ্ট করে লাভ নেই ইমান! ইমারজেন্সি সার্চ টিম গুলো যাক? আমি থেকে যাচ্ছি তোমার সাথে।” ইমান স্থির হয়ে থাকতে পারেনি,
সে ও বেরিয়ে পরেছে পূবের ইমারজেন্সি সার্চ টিমের সাথে।ওকে চুপচাপ দেখে মেজর কিয়ান বললো,
– “ভয় পাবেননা ভাই,আমরা খুব তাড়াতাড়ি খুঁজে বের করবো মেয়েটা কে…।” ইমান বলল,
– “আমি আমার বাবা-মা কে হারিয়েছি এবার আমি কোনো কিছুর বিনিময় হারাতে পারবো আমার ভালোবাসার মানুষ টা কে।” অনেক খোঁজাখুঁজির পর সবাই যখন ব্যার্থ হয়ে ফিরে আসছিল জঙ্গল থেকে ঠিক তখন খুশির খবর পাওয়া গেলো কর্নেল রায়হানের কাছ থেকে।
.
খবর পাওয়া মাত্রই ইমান ছুটে গেলো দক্ষিণ দিকে কিছুক্ষণ দৌড়ে ইমান দেখতে পেলো মিম’কে স্ট্রেচারে করে নিয়ে আসা হচ্ছে বেইজ ক্যাম্পে ওর গায়ে রেনকোট বাম হাতের মুঠোয় শক্ত করে টগর ফুল চেপে ধরে রেখেছে।ইমান এগিয়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে ওর কপালে চুমু খেয়ে মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে প্রিয়া’কে জিজ্ঞেস করে,
– “ডক্টর ওর কি হয়েছে?” প্রিয়া ইমান’কে বললো,
– “এখনো শিওর হয়ে আমি কিছু বলতে পারছিনা স্যার! মনে হচ্ছে বিষাক্ত কোনো পোকামাকড় ওকে কামড়ে দিয়েছে।” ইমান বলল,
– “কিছু হয়ে যাবে না তো ওর?” প্রিয়া বলল,
– “ঔষধ লাগিয়ে দিয়েছি! একটু অপেক্ষা করে দেখা যাক স্যার কি রেজাল্ট আসে?” ইমান এসে থেকে মিমের হাত ধরে ওর পাশেই বসে আছে,রাবা,নীলাসা,সারা এবং স্বর্না মনেমনে আল্লাহ কে ডাকছে।” ইমান কি ভেবে চার রাকআ’ত নফল নামাজ পড়ে এসে আয়াতুল কুরসি সহ বিভিন্ন দোয়া-দরুদ পরে মিমের গায়ে মাথায় ফুঁ দিয়ে দিচ্ছে।তবুও মিমের কোনো জ্ঞান ফেরার নাম নেই,এতে ইমানের দুশ্চিন্তা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।ও সোজা টেবিলের ওপর থেকে টগর ফুল গুলো তুলে নিয়ে বাহিরে এসে লেফটেন্যান্ট নাজনীনের মুখের ওপরে ছুড়ে মে’রে বলে,
– “ডাইনি,খুব ইচ্ছে করছিলো সব ফুল গুলো তোর মুখে ঠুসে দিতে আর যাই হোক তোর আমার বাড়ির কাজের লোক হওয়ার কোনো যোগ্যতা নেই,তুই আমার বউ হওয়ার স্বপ্ন দেখো কি ভাবে?” মুহূর্তে ঝড়ের বেগে সারা ছুটে এসে ইমান’কে বলল,
.
– “স্যার! মিমের জ্ঞান ফিরেছে।” ইমান ব্যস্ত পায়ে মিমের কাছে এসে ওর কপালে হাত দিয়ে দেখে ওর খুব জ্বর এসেছে।” মিম চোখ মেলে ইমান দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসলো,ইমান ঝুঁকে চুমু খেলো ওর দু’হাতে।” নাজনীন বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিল,চুপচাপ সে দেখছিল তাকে ফিরিয়ে দেওয়া মানুষ টা কে…! মিম আবারো জ্ঞান হারালো,ইমান ভয় পেয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো ডক্টর প্রিয়া’র মুখের দিকে,প্রিয়া বলল,
– “চিন্তার কোনো কারণ নেই স্যার! আমি ওকে ঘুমের ঔষধ দিয়েছি মিনিট দুয়েক আগে।” ইমান সারারাত মিমের পায়ের কাছে বসে রইলো,ঘুম কাবু করতে পারেনি তাকে,সবাই ইমান’কে খাবার খাওয়ার জন্য অনুরোধ করছিলো কিন্তু এক দানা খাবার ও নামেনি তার গলা থেকে…!” ভোর রাতে মিমের চোখ খুলতেই,সে দেখতে পেলো ইমান ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে পেটের ওপরে মাথা রেখে শুয়ে আছে,
মিম আস্তে আস্তে নিজের ডান হাত নিয়ে ইমানের মাথার ওপরে রাখলো।ইমান সঙ্গে সঙ্গেই চোখ মেলে তাকালো মিমের দিকে,মিম একটু ধাতস্থ হয়ে ইমান’কে বলল,
– “স্যার! আপনার কি হয়েছে?” ইমান উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– “কিছু না কিছুনা! খুব ব্যাথা করছে না কি তোমার কাঁধে?” মিম বললো,
– “হুমম! কাঁধের ডান পাশ টা খুব ব্যাথা হয়ে আছে।” ইমান বলল,
– “তুমি কেন? নাজনীনের কথা শুনে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে বেরুতে গেলে? কি ভেবে?”
– “না মানে।”
– “আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া কি এতোই সহজ? উনি কি ভাবে নিজেকে? বেয়াদব মহিলা একটা! ওর কপালে খুব দুঃখ আছে।” তখন সারা খাবারের প্লেট নিয়ে এসে ইমান’কে বলল,
– “স্যার! আপনি জান,আমি খাইয়ে দিচ্ছি ওকে।” ইমান সারার হাত থেকে খাবারের প্লেট টা কেড়ে নিয়ে বলে,
– “তুমি এখন যেতে পারো,আমি খাইয়ে দিচ্ছি ওকে।” মিম চুপচাপ ইমানের হাতে খেয়ে নিলো,এরপর মিম জিজ্ঞেস করলো,
– “আপনার মুখ টা কেন শুকিয়ে আছে?” ইমান কোনো উওর করলো না,মিম বলল,
– “আপনি কি কিছু খেতে পাননি গত রাতে?” ইমান বলল,
– “খাইনি,খাওয়ার ইচ্ছে মরে গেছে।” মিম বলল,
– “আপনি কাওকে দিয়ে খাবার আনিয়ে নিন স্যার! আমি খাইয়ে দিচ্ছি আপনাকে।” ইমান চমকালো,রায়হান ইমানের জন্য খাবার পাঠিয়ে দিলো শহীদ স্টাফের হাতে।মিম ঝটপট ইমান’কে মিম’কে নিজের মাছ দিয়ে ভাত মাখিয়ে খাইয়ে দিলো,ইমান বলল,
.
– “বিয়ের পর রোজ তিন বেলা ভাত মেখে খাইয়ে দেবে আমাকে?” মিম লজ্জা পেয়ে বলল,
– “আগে বিয়া হোক! তারপর অবশ্যই খাইয়ে দেবো আপনাকে।” ইমান দুষ্টু হেসে বলল,
– “তার মানে তুমি আমাকে খেতে চাও?” মিম গাল ফুলিয়ে বলল,
– “আমি কি করে খাবো আপনাকে?” ইমান হাসতে হাসতে বলল,
– “না মানে আমার আদর পেতে চাও,পেতে চাও তুমি আমাকে?” মিম চুপচাপ কম্বল মুড়ি দিয়ে অন্য দিকে মুখ করে তাকিয়ে রইলো,ইমান মিটিমিটি হাসলো ওর হঠাৎ রেগে যাওয়া দেখে…!
কিছুক্ষণ পর,
জেনারেল ইমাদ এবং ফিদান সাহেব মিম’কে দেখতে এলো,দেখলো মিম ঘুমিয়ে আছে।ফিদান সাহেব এবং ইমাদ সাহেব ইমানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
– “কি বাবা? এখন তুমি কেমন আছো? বলে আমাদের দু’জন কে?” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “আলহামদুলিল্লাহ্ স্যার! এখন আমি অনেক ভালো আছি শুধু মিমের কথা ভেবে আমার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে।” ইমাদ সাহেব হাসতে হাসতে বললেন
– “এখন কিসের দুশ্চিন্তা বাবা? মিম এখন একদম ঠিক আছে।” ইমান বলল,
– “ভাবছি! আমি এখন কি জবাব দেবো বাবা-মা কে? তারা আমার ওপরে অনেক টা ভরসা করে মেয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন এখন আমি অনেক ছোটো হয়ে যাবো তাদের কাছে।” ফিদান সাহেব বললেন,
– “তুমি অতিরিক্ত চিন্তা করছ বাবা! আমি বলছি উনি নিশ্চয়ই ভুল বুঝবে না তোমাকে।”
– “আমি যে বড় মুখ করে তাদের বলেছিলাম স্যার।”
– “অহেতুক চিন্তা করছ তুমি! আচ্ছা বিপদ কি বলে কয়ে আসে?” ইমান মন খারাপ করে বসে রইলো,মিম আড়মোড়া ভেঙে চোখ মেলে বললো,
.
– “আপনার কি হিটলার বলে মনে হয় আমার বাবা-মা কে?”
– “না মানে আসলে।”
– “ও সব শুনতে চাই না আমি আপনার মুখে,তবে এতোটুকু বুঝে গেছি আপনার আমার বাবা-মায়ের মাথাটা খাওয়া হয়ে গেছে।” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “ইসস! এ কেমন কথা? আমি কি করে খাবো বাবা-মায়ের ওই বুদ্ধিদীপ্ত মাথা টা কে?” আমি বড়জোর তোমার মাথা টা খেতে পারি কারণ ওটা আমার হকের জিনিস ঠিক আছে?” মিম চোখ কপালে তুলে বলল,
– “মানে কি? আমি কি নিজেকে দান পএ করে দিয়েছি না কি আপনাকে?” ইমান মৃদু হেসে বললো,
– “দিলে মন্দ হয় না! তাহলে আর এতো কাঠখড় পোড়াতে হয় না আমাকে।” মিম মুখ ভেঙিয়ে বললো,
– “আমি যেন কাঠখড় পোড়াতে বলেছি ওনাকে?” ইমান এগিয়ে এসে মিমের পাশে বসে ওর কাঁধে হাত রাখলো,মিম বলল,
– “দেখুন! আমি কিন্তু ঔষধ লাগাতে দেবো না আপনাকে।” ইমান হাসলো,তারপর ওড়নার কিঞ্চিৎ অংশ সরিয়ে দিলো মিমের কাঁধের উপর থেকে,ও লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে বসে রইলো,ইমান ঔষধ লাগিয়ে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরলো মিম’কে সাথে সাথে।
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com