Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ১৮
অনেক বড় হও তুমি তোমার সামনে একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যত আছে।” মিম হাসলো,তারপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বিদায় জানতে চলে এলো ইমান এবং জেনারেল ইমাদ সাহেবের সাথে।
অতঃপর প্রথম দিনের অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলো,মিম এসে নিজের ক্লান্ত শরীর টা এলিয়ে দিলো বিছানার এক পাশে।তারপর কি সব ভাবতে ভাবতে ওর চোখ লেগে গেলো,যখন ওর চোখ খুললো,তখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত আটটা বাজে।মিম বিছানা ছেড়ে উঠতেই সারা এসে বললো,
– “নিচে চল না,এখনো অডিটোরিয়ামে নাচ গান হচ্ছে।” লেইলা এসে বললো,
– “হ্যাঁ নিচে চলো না মিম! জানো? ইমান স্যার বেশ কয়েকবার তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছিল আমাদের কাছে।” মিম চোখ কপালে তুলে বললো,
.
– “কেন? আমি ওনার বউ লাগি না ওনার প্রেমিকা লাগি? যে ওনার এতো অসুবিধে হচ্ছে?” নীলাসা এসে বললো,
– “এভাবে বলছ কেন বান্ধবী? তুমি জানো ইমান স্যার সবাই কে ট্রিট দিচ্ছে? তোমার জন্য স্পেশাল গার্লিক সুপ আর স্পাইসি নাগা পিৎজা ও পাঠিয়েছে।” মিম চমকালো,হাসতে হাসতে বললো,
– “মজা করছিলাম আর এই লোকটা সিরিয়াসলি নিয়ে নিয়েছে?” স্বর্না এসে মিম’কে ঠেলতে ঠেলতে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে বললো,
– “ফ্রেশ হয়ে আয় না? চল না আমাদের সাথে নিচে?”
অজ্ঞতা মিম ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে এলো,তারপর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে শুতে চলে এলো তখন রাত দশ টা বাজে।
সকালে ইমান জগিং করে এসে দেখে,মিম ওর পাঠানো গার্লিক সুপ আর স্পাইসি নাগা পিৎজা খাচ্ছে ডাইনিং এরিয়ায় বসে।তবে ওকে দেখা মাএই মিম এগিয়ে এসে বললো,
– “স্যার,আমি শুধু মজা করে কথাটা বলেছিলাম আপনা’কে…!” ইমান হাসলো,বললো,
– “তাতে কি হয়েছে? তুমি আমার যোগ্য একজন সহকর্মী হতে যাচ্ছ অদূর ভবিষ্যতে আর আমি চাই সহকর্মী হিসেবে তোমাকে নিজের পাশে।” মিম হাসলো,বললো,
– “হয়তো একদিন হবে?” তখন নুসাইবা,রাবা ছুটে এলো মিম’কে বললো,
– “কোয়ার্টারে চল,অনসূয়া ম্যাম ডাকে।” মিম হন্তদন্ত হয়ে কোয়ার্টারে ছুরে এলো,অনসূয়া’কে জিজ্ঞেস করলো,
– “ম্যাম বলুন কি হয়েছে?” অনসূয়া মিটিমিটি হাসলো,বললো,
– “কিছু হয়নি কি হবে? বলছিলাম তুমি আজ রাতের অনুষ্ঠানের জন্য একটু সাজিয়ে দিতে পারবে আমাকে?” মিম বললো,
.
– “অবশ্যই ম্যাম! বলুন আপনাকে কিভাবে সাজিয়ে দিতে হবে?” অনসূয়া বললেন,
– “সিম্পল মেক-ওভার,আই মিন তুমি সবসময় সাজো যে ভাবে।” মিম একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো,বললো,
– “ঠিক আছে।” রাতে মেক্সিমাম অফিসার সবাই মেজর অনসূয়ার সাজপোশাকের প্রশংসা করছে।তবে হঠাৎ করেই মিম’কে দেখে ইমান ওর পরনের শাড়ি টা দেখে জিজ্ঞেস করলো,
– “তুমি এই কোটি শাড়ি টা কিনেছ কার কাছ থেকে?” মিম ভ্রু কুঁচকে বললো,
– “বলা যাবে না কর্নেল সাহেব,বলবো কেন আপনাকে? ইমান মনেমনে বললো,
– “এই সেইম শাড়ি টা আমি দেড় বছর আগে স্পর্শীয়ার জন্য বার্থডে গিফট হিসেবে পাঠিয়েছিলাম লন্ডন থেকে।” মিম ইমানের চেহারা দেখে বললো,
– “কি হলো স্যার? এভাবে কেন তাকিয়ে আছেন আপনি আমার দিকে?” ইমান বললো,
– “তেমন কিছু না,জাস্ট ভাবছি,এই শাড়ি টা বোধহয় কেউ লন্ডন থেকে পাঠিয়েছে তোমাকে?” মিম চমকে গেলো,বললো,
– “স্যার! বলুন তো কে পাঠাবে আমাকে?”
– “কেন তোমার সেই বন্ধু?” মিম স্বাভাবিক থেকে বললো,
– “স্যার! আমি দেখেছি তাকে।” ইমান চুপ করে রইলো,মিমের কথা গুলো কেন যেন বিশ্বাস যোগ্য মনে হলো না তার কাছে?
তবুও ভাবলো হয়তো মনের ভুল? এতো ভেবেই বা কি হবে? তবে মিম দুশ্চিন্তায় পরে গেলো,মনেমনে ভাবলো,
– “স্যারের কি সম্পর্ক থাকতে পারে ওনার সাথে? নাকি এটা আমার মনের ভুল? এতো দুশ্চিন্তা করেই বা কি হবে?” এভাবেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পঞ্চাশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের ছয় ছয়টি দিন হেসেখেলে কেটে গেছে।মিম মেজর অনসূয়া এবং লাবনী’কে অনুরোধ করে বললো,
.
– “ম্যাম,আমরা মেয়েরা সবাই সেইম কালারের শাড়ি পরে সেজেগুজে একদিন একটু সময় নিয়ে ফটোসেশান করতে চাই শুধু আপনাদের আই মিম ম্যাম আপনাদের সাথে।” লাবনী হাসতে হাসতে বললো,
– “প্রস্তাব টা মন্দ না! আচ্ছা মিম তুমি তোমার ওই রেইবো কালারের শাড়ি টা নিয়ে ছিলে কোথা থেকে? শাড়ি টা অনেক সুন্দর আর গতকাল’কে তোমার সিম্পল সাজ টাও সবার অনেক পছন্দ হয়েছে।” মিম বললো,
– “ম্যাম আপনারা চাইলে আমি অনলাইন থেকে সবার জন্য শাড়ি টা অর্ডার করে দিতে পারি ফটোসেশানের উদ্দেশ্যে?” অনসূয়া বললো,
– “করে ফেলো,তবে আমরা ফটোসেশান করবো আগামী সপ্তাহে মিম!”
– “আচ্ছা ম্যাম,ঠিক আছে।” তারপর সেই অনুযায়ী ফটোসেশানর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে,তবে সেই দিন ছিল মেজর অনসূয়ার বার্থডে আর উনি সব মেয়েদের কাছ থেকে হঠাৎ করেই এমন সারপ্রাইজ পেয়ে খুব খুশি হয়েছে।ইমান ছাঁদে পায়চারী করতে করতে হঠাৎ মিম’কে দেখে মিটিমিটি হেসে স্পর্শীয়া (মিম) কে ফেসবুকে মেসেজ করে বলে,
– “তোমার কিছু ছবি দেবে?” মিম কি ভেবে ওর সদ্য তোলা নতুন ছবির গুলোর কিছু ছবি ইমান’কে পাঠালো,ইমান চমকে গেলো স্পর্শীয়ার (মিম) হাত এবং পায়ের ছবি দেখে…!
তবুও কি ভেবে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো,
– “এখন কি করছ তুমি? কোথায় আছো তুমি? বন্ধুদের সাথে?” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “আজ্ঞে না জনাব! আমি ফটোশুট করছি আমার একাডেমির ম্যামের সাথে।” ইমান জিজ্ঞেস করলো,
– “কি কালারের শাড়ি পরেছ তুমি?
.
– ” কেন রেইনবো? কি হয়েছে?” ইমান নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
– “কিছু না,জাস্ট কল্পনা করছিলাম তোমাকে।” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “হুমম! রাখুন জনাব,আমার কিছু কাজ আছে।” ইমান উত্তেজিত হয়ে ফোন টা বুকের সাথে চেপে ধরলো,তারপর হঠাৎ হাত থেকে আইফোন টা ছিটকে গিয়ে পরে গেলো সোজা নিচে।মিম পায়ের সামনে ইমানের আইফোন পরে থাকতে দেখে ওপর তাকিয়ে দেখে ইমান যেন কেমন করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।তিন তলায় দাঁড়িয়ে ইমানের কাণ্ড দেখে ইমাদ সাহেব হাসতে হাসতে নিজের স্ত্রী’কে বললেন,
– “লামিসা,প্রেমে পরে বোধহয় ছেলেটার মাথা টাই গেছে?” লামিসা স্বামীর কথা শুনে হাসলেন,নিশ্চিন্তে মাথা টা রাখেন ইমাদ সাহেবের কাঁধে।ইমান ঝড়ের বেগে ছুটে নিচে চলো এলো,মিমের হাত থেকে আইফোন টা নিয়ে পকেটে পুরে ওর গাল টেনে বললো,
– “গুলুগুলু,তোমাকে অনেক ভালো লাগে।” ইমানের অবস্থা দেখে মিম গালে হাত দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো,এদিকে বাদবাকি সবাই মিটিমিটি হাসতে লাগলো ইমানের কাণ্ড দেখে…।
এরপর ইমান মিমের চারপাশে এক বার চক্কর কেটে,মিটিমিটি হেসে বললো,
– “ঝগরুটে,জাস্ট কিডিং,ফাজলামি করলাম আবার অন্য কিছু মনে করো না ঠিক আছে?”
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com