Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ২৩
পরক্ষণেই,
একটা পাগল করা মিষ্টি গায়ের গন্ধ মাতাল করে তুললো মেয়ে টা কে…! মিম এগিয়ে এসে ইমানের গলা জড়িয়ে ধরে ওর গায়ের গন্ধ নিতে লাগলো,ইমান মিটিমিটি হেসে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ওকে।মিম ঘুমিয়ে গেলো,যখন ও চোখ খুললো,
তখন প্রায় সাড়ে চার টা বাজে,ও ঝটপট পেছনে রাস্তা দিয়ে ইমানের তাঁবু থেকে বেড়িয়ে গেলো,তারপর চলে এলো নদীর ঘাটে,সেখান থেকে হাত,মুখ ধুয়ে মিম ফ্রেশ হয়ে তাঁবুতে ফিরে এসে দেখে লেফটেন্যান্ট নাজনীন তাঁবুর সামনেই দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু ওকে দেখা মাএই দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে বলে,
– “তুমি কেন শাস্তি পাওয়া সত্ত্বেও পাহারা দাওনি এখানে বসে?” ব্রিগেডিয়ার আনোয়ারা পেছন থেকে বললেন,Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ২৩
– “কারণ আমি ওকে পাহারা দিতে বলেছিলাম আমার তাঁবুর সামনে বসে।” নাজনীন এবার থেকে গিয়ে মিম কে বললো,
.
– “একটু ওদিকে চলো কিছু কথা আছে তোমার সাথে।” মিম নদীর ঘাটে এসে বললো,
– “জ্বি ম্যাম! বলুন,অজান্তে কোনো ভুল,কোনো ভুল করে ফেলেছি না কি আমি এখানে এসে?” লেফটেন্যান্ট নাজনীন বললেন,
– “নাঃ! ঠিক তা না,তবে আমি জানতে চাইছি তোমার কি সম্পর্ক কর্নেল সাহেবের সাথে?” মিম বলল,
– “ম্যাম! স্যার যেমন স্নেহ করেন,ঠিক তেমনই শাসন করেন আমাকে…ওনার সাথে এ ছাড়া আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই থাকার কথা ও না কারণ আমার জীবনে অন্য আরেকজন মানুষ আছে কিংবা বলতে পারেন তার অস্তিত্ব আছে।”নাজনীন হাসতে হাসতে বললেন,
– “হেয়ালি না করে,তোমার সেই স্পেশাল মানুষের কিছু ছবি দেখাও আমাকে।” মিম নিজের ফোন থেকে ইমানের একটা ছবি বের করে ফোন টা এগিয়ে দেয় নাজনীনের কাছে।নাজনীন ছবিতে ভালো করে চোখ বুলিয়ে বললো,
– “তার চেহারার কোন ছবি নেই? হাতের জন্য ফেইস টা বোঝা যাচ্ছে না ভালো ভাবে।” অজ্ঞতা মিম বিরক্ত হয়ে মিথ্যের আশ্রয় নিলো এবং ওর মামাতো ভাই নিহানের ছবি দেখিয়ে দিলো তাকে…নিহানের ছবি দেখে নাজনীন যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো,দ্রুত পায়ে চলে এলো নদীর ঘাট থেকে।মিম নদীর ঘাট থেকে ফিরে আসার সময় দেখতে পায় ইমান কি যেন পারছে গাছে উঠে,তবে ও কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইমান গাছ থেকে নেমে মিম’কে জিজ্ঞেস করলো,
– “জাম খাবে?” মিম অবাক হয়ে বলল,
– “জাম?” ইমান তখন একটা থলে ধরিয়ে দিলো মিমের হাতে।মিম সেটা খুলে দেখলো অনেক অনেক জাম,খুশি হয়ে ইমান’কে বলল,
..
– “স্যার,অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।” ইমান বললো,
– “অযথা এখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি করো না এখানে কিন্তু কয়েক প্রজাতির বিষাক্ত সাপ আছে।” মিম লক্ষী মেয়ের মতো মাথা দোলাতে দোলাতে বললো,
– “আচ্ছা স্যার! ঠিক আছে।” অতঃপর দ্রুত পায়ে তাঁবুতে ফিরে এলো,সারা বললো,
– “কি রে? কোথায় ছিলি গতকাল রাতে?” মিম বললো,
– “পাহারার ছিলাম আনোয়ারা ম্যামের তাঁবুতে।” স্বর্ণা বললো,
– “আমি বলেছিলাম না? তোরা অযথা দুশ্চিন্তা করছিস কেন মিমের কথা ভেবে?” নীলাসা হাসতে হাসতে বলল,
– “সেটাই,ওকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করার লোক এখানেই আছে।” মিম নীলাসার কাছে এগিয়ে এসে বললো,
– “ফাজিল মেয়ে একটা দেবো কানের নিচে।” নীলাসা হাসতে হাসতে বলল,
– “সে তুই যাই বলো না কেন ট্রেনিং শেষ হলে আমরা তোকে বিয়ে দেবো ইমান স্যারের সাথে।” মিম রাগ করে হনহন করে বেড়িয়ে গেলো,এরপর দেখতে পেলো আমি স্টাফ কথা বলছে ইমানের সাথে।ইমান বলল,
– “আচ্ছা আসুন! আর খেয়াল রাখুন ওই লোক গুলোর দিকে এবং সন্দেহ জনক কিছু মনে হলে তাড়াতাড়ি আমাকে জানাবেন,
.
কারণ আমি চাই না কিছুতেই ছেলেমেয়ে গুলো’কে বিপদের মধ্যে ফলতে।” মিম এগিয়ে এসে একটু চিন্তিত হয়ে ইমান’কে জিজ্ঞেস করলো,
– “স্যার,কি হয়েছে?” ইমান বলল,
– “কিছু না! তুমি এখন যাও এখান থেকে আর হ্যাঁ বনেবাদাড়ে বেশি ঘোরাফেরা করবে না কারণ তুমি আগে থেকেই জানো,
আগেই বলা হয়েছে তোমাকে এবং গিয়ে প্লিজ সবাই’কে তাঁবু খাটাতে সাহায্য করো যারা গত দু’দিন ধরেও তাঁবু খাটিয়ে উঠতে পারেনি বোঝা গেছে?” মিম নতমুখী হয়ে বললো,
– “জ্বি,স্যার! আমি যাচ্ছি,গিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করছি অন্য সব ক্যাডেটদের কে…!” ইমান বললো,
– “সাবধান আবার নিজের হাত পা কেটে ফেলো না কিন্তু?”
– “ঠিক আছে।” অতঃপর মিম ওর ব্যাচমেট জাহিদের কাছে এলো,জাহিদ বললো,
– “তুই ওদিকে যা,ওখানে জংলী জানোয়ার আসা ঠেকানোর জন্য কাঁটার বেড়া দেওয়া হচ্ছে।” মিম ছুটতে ছুটতে কাটার বেড়ার কাছে চলে এলো ইমান ওকে পেছন থেকে টেনে ধরে বললো,
– “আস্তে দৌড়াও লেগে যাবে!” মিম হঠাৎ ইমানের হাত চেপে ধরে বললো,
– “কি অবস্থা আপনার? স্যার আপনার কি হাতে কাঁটা ফুটে গেছে?” লেফটেন্যান্ট নাজনীন এসে মিম’কে ঝাড়ি মেরে বললো,
.
– “তুমি স্যারের হাত ধরে বসে আছো? দেখতে পাচ্ছ না রক্ত বের হচ্ছে কর্নেল সাহেবের হাত থেকে?” মিম কিছু বললো না,চুপচাপ পকেট থেকে ফাস্ট এইড বক্স টা বের করে পরিষ্কার করে দিলো ইমানের হাত টা কে…!
ইমান মিটিমিটি হাসলো,মিম যেতেই নাজনীন বললো,
– “স্যার! আপনি কেন এতো বেশি স্নেহ করেন ওই মেয়ে টা কে?” ইমান ভ্রু কুঁচকে বলল,
– “আমি ওকে স্নেহ করব না কি আহ্লাদ করবো সেটা কি আপনি বলে দেবেন আমাকে?”
– “না মানে!”
– “শুনুন প্লিজ,এতো জ্ঞান দিতে আসবেন না আমাকে…! কারণ আমি ভালো কারেই জানি,কার সাথে কেমন ব্যবহার টা করতে হবে।”
– “কিন্তু…?”
– “কি কিন্তু? আরে ভাই জান না নিজের কাজে অযথা আমার কানের কাছে বাজনা বাজাবেন না বিরক্ত লাগে।লেফটেন্যান্ট নাজনীন অপমানিত হয়ে চলে এলেন ইমানের কাছ থেকে।মেজর প্রীতি এসব দেখে এসে অনসূয়া’কে বললেন,
– ” আমি নিশ্চিত স্যার! মিম’কে অন্য নজরে দেখে না মানে, উনি বোধ হয় মিম’কে নিয়ে একটু সিরিয়াস?”
– “একটু সিরিয়াস! আমার যে আরো বেশি সিরিয়াস বলে মনে হয় তাকে দেখে….। না আসলে,স্যার আজকাল মিম’কে নিয়ে অনেক ভাবে।”
– “তবে আমার মনে হয় অনসূয়া,মিমের দিক থেকে কিছু না থাকলেও ইমানের দিক থেকে হান্ড্রেড পারসেন্ট সামথিং সামথিং আছে।
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com