Breaking News

Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ২৮



দেখুন! আমি কিন্তু ঔষধ লাগাতে দেবো না আপনাকে।” ইমান হাসলো,তারপর ওড়নার কিঞ্চিৎ অংশ সরিয়ে দিলো মিমের কাঁধের উপর থেকে,ও লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে বসে রইলো,ইমান ঔষধ লাগিয়ে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরলো মিম’কে সাথে সাথে।কিছুক্ষণ পর,মিম লজ্জা পেয়ে ইমান’কে বলল,
– “অনুরোধ করছি স্যার! প্লিজ আপনি এখান থেকে জান,নয়তো কেলেংকারী হয়ে যাবে।” ইমান বললো,
– “কিছু হবে না,তুমি এতো ভেবো না,ঔষধ গুলো খেয়ে নাও টেবিলের ওপরে রাখা আছে।” মিম চুপচাপ ঔষধ গুলো খেয়ে নিলো আকবর স্টাফ এসে বলল,
– “ইমান স্যার! জেনারেল ইমাদ স্যার আপনাকে একটু ডেকে পাঠিয়েছে।” ইমান বলল,
– “বুঝলাম,আপনি এখন জান! আমি ও একটু পরে যাচ্ছি স্যারের কাছে।” লেফটেন্যান্ট নাজনীন কথায় কথায় জেনারেল ফিদান সাহেব’কে বলল,
.
– “আপনারা যে যাই বলুন না কেন আমি লিখিত অভিযোগ দেবো ইমান স্যারের বিরুদ্ধে।” কর্নেল রায়হান সব টা শুনে বললেন,
– “ইমান সাহেব এমন কিছু করেনি যে আপনি লিখিত অভিযোগ করবেন তার বিরুদ্ধে আর হ্যাঁ একটা মানুষ আপনার সাথে হেসেখেলে কথা বলে তার মানে এই নয় যে সে ভালোবাসে আপনাকে…! আর তাছাড়া এখানে সম্পূর্ণ ভাবে দোষ আপনার, কারণ এক্সপেকটেশানস তৈরি হয়ে ছিল আপনার তরফ থেকে।
কাজেই আপনি এখন তাকে পাচ্ছেন না বলে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে তার ক্ষতি করতে চাইছেন সেটা কিন্তু এক্সেপ্টেবল নয় ঠিক আছে?”
– “তাহলে ইমান স্যারের সাথে মিমের যে সম্পর্ক? এই ব্যাপারে আপনাদের কি বলার আছে?” ব্রিগেডিয়ার আনোয়ারা বললেন,
.
– “তারা দু’জনেই দু’জনের লিমিটের মধ্যে আছে,কাজেই আপনার অভিযোগ এক্সেপ্টেবেল হবে কি না সেটা জেনারেল ইমাদ স্যারের ওপরে নির্ভর করছে আর আপনি লিখিত অভিযোগ করলেই যে ইমাদ সাহেব গ্রহণ করে নেবেন এমন ভ্রান্ত ধারণা আপনার হলো কিভাবে?
এমন ও হতে পারলো ইমান সাহেব আপনার
বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ জেনারেল ইমাদ স্যারের কাছে করলো,তখন আপনার কি হবে? সব টা আপনি শুরু করেছেন ইমান স্যার কিংবা মিমের কোনো ইনভলমেন্ট নেই তাতে…!
আর তাছাড়া আপনাকে যারা সাপোর্ট করতে যাবে এমন ও হতে পারে তাদের চাকরি চলে যাবে,কারণ এখানে সবাই কিন্তু ভালো চোখে দেখে না আমাদের ইমান সাহেব’কে…।”
ব্রিগেডিয়ার আনোয়ারা’র কথা শুনে লেফটেন্যান্ট নাজনীন বুঝতে পারলো,এখানে কোনো সুবিধা করে উঠতে পারবে না সে আর তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে নিজের তাঁবুতে ফিরে আসছিল সে….!” তবে তার সাথে ইমানের দেখা হয়ে গেলো পথিমধ্যে আর সে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো,ইমান’কে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে লাগলো,
– “উফফ! আমার মাথা টা খুব ধরেছে,ইসস এতো কেন ব্যাথা করছে? “ইমান নাজনীন’কে গ্রাহ্য না করে তার পাশ কাটিয়ে চলে এলো,
তখন নাজনীন বলে উঠলো,
– “কর্নেল! আপনার কি একটু কথা বলতে হচ্ছে হয় না আমার সাথে?” ইমান হাসতে হাসতে ফিরে এসে নাজনীন’কে বললো,
– “Your trick is getting old already so don’t use old tricks okk? এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে এই সব মাথায় হাত নাটুকে ট্রিকস,শুনিয়ে শুনিয়ে কথা বলা পুরোনো হয়ে গেছে।
নাটক করতে হয় কোনো টিভি চ্যানেলে গিয়ে করুণ,ভালো টি.আর.পি দেবে আর রইলো এ সব ট্রিকসের কথা? নো ম্যাটার কে কি করছে কার সাথে।আমি বলবো,”keep trying” যদি কখনো আপনার সফলতা আসে?” নাজনীন রাগে ফুঁসতে লাগলো,ইমান বলল,
– “মিম’কে দয়া করে জড়ানোর চেষ্টা করবেননা কোনো ভাবে…!
কারণ আমি একবার আপনাকে ওর কথায় ছেড়ে দিয়েছি এর মানে এই নয় যে বারবার ছেড়ে দেবো আপনাকে।” নাজনীন চমকালো,ইমান দ্রুত পায়ে চলে এলো জেনারেল ইমাদ সাহেবের কাছে।ইমাদ সাহেব বললেন,
– “তুমি চাইলে কাবিন করে রাখতে পারো বাবা! এরপর না হয় এক বছর পাঁচ মাস পর বউ’কে অনুষ্ঠান করে তুলে আনবে নিজের কাছে?” ইমান বলল,
– “বাবা ও এটাই বলছিলেন স্যার! তবে আমি সিদ্ধান্ত জানাবো একাডেমি তে ফিরে…! কথা বলবো এই ব্যাপারে বাবার সাথে।
.
স্যার,অন্তত আংটি বদল করে বিয়ের পাকা কথা টা আমি সেরে ফেলবো বাবার সাথে বসে…! এরপর মিমের চাকরি টা হলেই বিয়ের পর্ব টা মিটিয়ে ফেলবো স্যার কেমন হবে?” ব্রিগেডিয়ার উল্লাস বললেন,
– “ভালোই হবে! আর তাছাড়া তোমাদের দু’জন কে নিয়ে যে গুজব নাজনীন রটিয়ে বেড়াচ্ছে সেটাও বন্ধ হবে।”
– “হুমম! বুঝতে পারছি স্যার,তবে ভাবছি মিম কি রাজি হবে? না মানে,আসলে বিয়ের ব্যাপারে মিমের সিদ্ধান্তে নেওয়া টাও অনেক ম্যাটার করে আমার কাছে এবং বাবা বলেছেন তার মেয়ের সিদ্ধান্ত টাই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তার কাছে।” জেনারেল ইমাদ ইমান’কে আস্বস্ত করে বললেন,
– “তোমাকে অপছন্দ করার মতো কোনো কিছু পরেনি এখন অব্ধি আমার চোখে।” আড়াল থেকে লেইলা সবটা শুনে এসে মিম’কে বলল,মিমের লজ্জায় মুখ টা লাল হয়ে গেছে আর তা দেখে রাবা বলল,
– “Are you blushing? ইসস? লজ্জ করছে বিয়ের কথা ভেবে?” মিম মুখ বাঁকিয়ে বলল,
– “মুখ ভেঙে ফেলবো সব ক’টার দূর ‘হ’ আমার চোখের সামনে থেকে।” রাবা বলল,
– “আমি মানতেই পারছিনা এখন থেকে বান্ধবী’কে ম্যাডাম বলেব ডাকতে হবে?” মিম বলল,
– “কার বিয়ে? কার সাথে? ওই তোদের কি মাথা ঠিক আছে?” লেইলা বলল,
– “তোর কি বিশ্বাস হচ্ছে না,আমি নিজের কানে শুনে এসেছি ইমাদ স্যারের তাঁবু থেকে।” মিম মিটিমিটি হেসে বলল,
– “তোরা কি ফাজলামো করছিস আমার সাথে?” সারা বলল,
– “ফাজলামো করবো কেন? আমিও এই মাএ শুনে এসেছি ইমান স্যারের কাছ থেকে।” মিম বড়সড় চোখ করে বললো,
.
– “আজ তোদের স্যারের খুব খবর আছে।” নীলাসা বলল,
– “হুমম! তোর জামাই,তুই গিয়ে ভালো মন্দ বোঝ তার সাথে।” বেশ কিছুক্ষণ পর,ইমান মিমের কাছে এলো,মিম বলল,
– “আপনি নাকি বিয়ে করতে চান আমাকে?” ইমান বলল,
– “হ্যাঁ! সে তুমি নতুন শুনলে না কি লোকের কাছে?” মিম বলল,
– “আপনি কি সত্যি কথা বলেছেন আমার বাবা’র সাথে?” ইমান হাসিমুখে কতগুলো কন্টেইনার মিমের দিকে এগিয়ে দিলো,মিম সে গুলো খুলে দেখলো মোরগ,পোলাও এর সাথে বেশ কয়েক পদের মাছ আছে।
ও কৌতুহল বশত এক টুকরো মাছ মুখে দিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ইমানের মুখের দিকে।ইমান বলল,
– “মা ঘেরের মাছ রান্না করে আমাদের দু’জনের জন্য পার্সেল পাঠিয়েছেন গ্রাম থেকে।” মিম বলল,
– “কি ভেবে বলল,জনাব আমি যদি বিয়ে করতে রাজি না হই আপনাকে?” ইমান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
– “তাহলে আর আমার কিছু করার থাকবে না,নিরদ্বিধায় সরে যেতে হবে।তুমি আমাকে ভালো নাই বাসলে কিন্তু আমি সত্যি ভালোবেসেছি তোমাকে।” মিম চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো,তারপর হঠাৎ হাসতে শুরু করলো কি ভেবে? ইমান এগিয়ে এসে বলল,
– “ঔষধ গুলো খেয়ে নাও! নয়তো ব্যাথা বেড়ে যাবে।” মিম আচমকা ওকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলো,
– “তার মানে কি আপনি সত্যি ভালোবাসেন আমাকে?” ইমান মিমের মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে বলে,
– “সব কথা কি তোমায় বলে বোঝাতে হবে?” মিম বলল,
– “জানি না,কিন্তু আমি সত্যি বুঝতে পারি না আপনাকে।” ইমান বলল,
– “আমাদের বিয়ে হয়ে গেলে তোমার সেই জাস্ট ফ্রেন্ডের কি হবে?” মিম বলল,
– “কি করে বলবো? আমি যে জানি না ওনার মনের মধ্যে কি আছে? তবে আপনি মানুষ টা আমার কাছে একদম পরিষ্কার,মনে হয় না আমার সিদ্ধান্ত নিতে কোনো সমস্যা হবে।”
.
চলবে..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com