Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ২১
তেমন কিছু না স্যার! শুধু আমার মাথাটা একটু ঝিমঝিম করছে।মনে হচ্ছে,রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে।”জেনারেল ইমাদ সাহেব বললেন,
– “বেশি খারাপ লাগলে মেডিকেল রুমে চলে এসো আর নয়তো ডক্টর’কে ডেকে পাঠিয়ো কোয়ার্টারে চলে যাবে ঠিক আছে? মিম বললো,
– “জ্বি স্যার,এখন আসি? নীলাসা ওরা সবাই নিজের কাজকর্ম ফেলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।” সারা হাসতে হাসতে মিমের গাল টেনে বললো,
– “আরে কোনো ব্যাপার না,ইট’স ওকে।” ইমাদ সাহেব অনুমতি দিলেন,ইমান নীলাসা,সারা ওদের বললো,
– “একটু দেখে রেখো ওকে আর তুমি প্লিজ একটু সাবধানে হাঁটাচলা করো রাস্তা ঘাটে।” মিম আস্তে আস্তে বললো,
– “আচ্ছা স্যার! মনে থাকবে,দেখেই চলাফেরা করবো আজ থেকে পথেঘাটে আর আপনি এমন ভাবে বলছেন যেন আমি জানতাম ওখান টায় লোহার রড রাখা আছে?” পাশ থেকে লেইলা মিম’কে সাবধান করে বললো,
– “ভাইরে ভাই,এবারে তুই থাম,নয়তো স্যারের সাথে ঝগড়া বেঁধে যাবে।” মিম মুখ বাঁকালো,সারা এবং রাবা মিম’কে ধরে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি রে পায়ে কি তোর খুব ব্যাথা করছে?” মিম বললো,
– “না রে,তেমন না,লাগেনি সে ভাবে…! চল কোয়ার্টারে চল ভালো লাগছে না এভাবে এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে।” ইমান মিম’কে উদ্দেশ্য করে বললো,
– “সাবধানে থেকো আর যেটা বলেছি সেটা মাথায় রেখো।”
– “ঠিক আছে।”
– “আর কোনো প্রয়োজন হলে আমাকে ফোন করবে আর নয়তো তোমাদের প্রভেস্ট জেইদা ম্যাম’কে জানাবে।” মিম নিচু স্বরে ইমান’কে বললো,
– “ওকে স্যার! মনে থাকবে।” এরপর রুমে এসে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে করে মিমের খুব লজ্জা লাগছে আর তাই নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো,
– “কি হয়েছিল আমার? কেন আমি বাঁধা দিতে পারিনি ওই মানুষ টা কে?” ইমান বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতে করতে ভাবলো,
– “আচ্ছা,ওই মেয়ে টা কি আবার ভুল বুঝলো আমাকে? না মানে,আমি সত্যি নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি কেন সামলে রাখতে পারিনি নিজেকে?” সকালে ইমান মিমের সাথে ওই বিষয়ে কথা বলতে চাইলে,মিম ওকে বললো,
– “স্যার! দোষ দু’জনেরই ছিল,আমি শুধু একা দোষারোপ করতে পারিনা আপনাকে।”
– “কিন্তু?”
– “প্লিজ স্যার! ভুলে জান,আমি ও দুঃস্বপ্ন মনে করে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি গতরাতে ঘটে যাওয়ার ঘটনাকে।”
– “সে নয়,বুঝলাম,তবে তোমার শরীর ঠিক আছে?”
– “হুমম!”
– “পায়ের ব্যাথা টা কি কমেছে?”
– “জ্বি,মেডিকেল রুমে গিয়েছিলাম প্রিয়া ম্যামের কাছে।”
– “যাক! বাই দ্যা ওয়ে,জাস্ট ফ্রেন্ড কি এখনো ফোন করেনি তোমার কাছে?” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “নাঃ! পুরুষ মানুষ,বোধহয় নতুন কাওকে খুঁজে পেয়েছে?” ইমান হাসতে হাসতে বিড়বিড় করে বললো,
– “এতো বড় একটা মিথ্যে অপবাদ তুমি কি করে দিতে পারলে আমাকে? আমি এখনো তোমারি আছি,তোমারি থাকবো কারন আমি ভালোবাসি তোমাকে।” মিম এগিয়ে এসে,আবারও জিজ্ঞেস করলো,
– “স্যার! আপনি কি কিছু বললেন আমাকে?” ইমান বলল,
– “কোই না তো? বেফাঁস কিছু শুনতে পেয়েছ তুমি আমার মুখ থেকে?” মিম বলল,
– “না স্যার,তবে মনে হলো যেন আপনি কিছু বলতে চাইছেন আমাকে?”
– “হ্যাঁ,আমি বলতে চেয়েছি গিয়ে সকালের নাশতা টা করে নাও তোমাকে আবার ঔষধ খেতে হবে।” মিম মৃদু হেসে বলল,
– “আমাকে নিয়ে এতো না ভাবলেও চলবে স্যার! প্লিজ রাস্তা টা ছাড়ুন,যেতে দিন আমাকে।” ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
– “আমি কি ধরে রেখেছি তোমাকে? কথা টা এভাবে বললে কেন আমাকে?” মিম বললো,
– “সরি স্যার,কথাটা অন্য ভাবে নিবেন না প্লিজ।আমি স্বাভাবিক ভাবেই কথাটা বলেছি আপনাকে।” ইমান ভ্রু কুঁচকে বললো,
– “তাই বুঝি? আচ্ছা যাও যাও,খেতে দিয়েছে তোমাদের সবাই’কে…!” মিম দ্রুত পায়ে হেঁটে ডাইনিং এরিয়ার চলে এলো,ওর খুব রাগ হচ্ছে ইমানের হাবভাব দেখে,ইমান সামনে দাঁড়িয়ে মিম’কে ফোন করলো,মিম কল রিসিভ করে বললো,
– “কি হয়েছে?”
– “না মানে,এখনো কি রেগে আছো?”
– “বলবো কেন আপনাকে?”
– “তবুও বলো না?”
– “ফোন টা রাখুন! মেজাজ টা খারাপ আছে।”
– “আরে শোনো না লক্ষী বউ?”
– “কে আপনার লক্ষী বউ? আপনি বিয়ে করেছেন কবে?”
– “কবুল কবুল কবুল,আজ থেকে নিজের স্ত্রী হিসেবে কবুল করে নিলাম তোমাকে।” মিম চোখ কপালে তুলে বললো,
– “তাহলে আমি ও এই মুহূর্তে ফোন টা রাখলাম ঠিক আছে?” ইমান দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
– “ভাগ্যিস! তালাক দিতে চাওনি আমাকে।” মিম ইমান’কে ঝাড়ি মেরে বলল,
– “এই ক্রেইজি,আপনার মাথা খারাপ? পাবনায় পাঠাতে হবে আপনাকে?”
– “ইসস,এভাবে বলছ কেন?”
– “তো? কিভাবে বলবো আপনাকে? বউ বউ বউ,আপনার বউ আতাগাছে তোঁতার সাথে বাসা বেঁধেছে।” ইমান হাসি সামলে নিয়ে বললো,
– “এভাবে বলো না প্লিজ! তুমি কি বুঝেও বোঝো না,আমি কত ভালোবাসি তোমাকে?” মিম দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
– “ভালোবাসার গুল্লি মারি আপনার,ভালোবাসার নাম শুনলে ও গায়ে রাগ লাগে।” ইমান মিটিমিটি হাসছে,হাসতে হাসতে বললো,
– “একটু চুমু দেবে আমাকে?” মিম গতরাতের কথা মনে করে বললো,
– “খবিশ কোথাকার যেন একটা! চুমু ভাতে মাখিয়ে খাইয়ে দেবো আপনাকে?” সামনাসামনি মিমের রাগান্বিত চেহারা দেখে ইমান নিঃশব্দে হাসতে হাসতে বলে,
– “বলি ধরে মারবে টারবে নাকি আমাকে?” মিম বললো,
– “সামনে পেলে চ্যাংদোলা করে ড্রেনে ফেলে দিতাম আপনা’কে।” বেচারা ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “হেই সুইটি,তুমি তুলতে পারবে আমাকে?” মিম দাঁত কেলিয়ে বললো,
– “কেন পারবো না? লোক ভাড়া করবো আর নয়তো ক্রেনে টেনে তুলবো আপনাকে…!
আপনি নিশ্চয়ই হাতি-ঘোড়া নন যে কাঠখড় পোড়াতে হবে আমাকে?”
– “আচ্ছা,শোনো?” মিম সামনে ইমান’কে দেখে’ই বললো,
– “দেখুন,শোনার সময় নেই আমার।”
– “ঠিক আছে,কিন্তু কেন?”
– “সামনে আমার একজন স্যার দাঁড়িয়ে আছে আর সে এখন এসে শুধু শুধু লেকচার দেবে আমাকে।” মিমের কথা শুনে ইমান হাসতে হাসতে মুখ ফসকে বলে ফেললো,
– “কি আমি শুধুশুধুই লেকচার দেই তোমাকে?” মিম চমকে বললো,
– “কি?”
– “কিছুই না,নিজের প্রতি যত্নশীল হও আর খেয়াল রাখো নিজের দিকে!”
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com