Eternal love । গভীরের প্রেম । পর্ব – ০৮
আমি হলে আর বাঁচিয়ে রাখতাম না তোমাকে।” মিম বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি চাই আপনার? কেন এসেছেন আমার কাছে?” ইমান দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
– “আমাকে তোমার স্কেচ গুলো দাও! এগুলো লাগবে আমার কাজে।”
– “দেবো না! এলেম থাকে তো এগুলো ছাড়াই কেস সল্ভ করুন।”
– “ঠিক আছে,তবে কাজ টা তুমি ঠিক করলে না আমার সাথে।” মিম হাসতে হাসতে ইমান’কে বললো,
– “কি বলবো স্যার? যে এই সবের সাথে আপনাদের কোনো অফিসার জড়িয়ে আছে? না কি বলবো সে রাঘববোয়াল? এতো সহজে ধরা ছোঁয়া যাবে না তাকে।” ইমান হঠাৎ দু’হাত দিয়ে মিমের গাল চেপে ধরে বলে,
– “তুমি কি আইডেনটি ফাই করে ফেলেছ? আসল অপরাধী কে?”
– “না জাস্ট সন্দেহ হচ্ছে! আর সেই লিস্টে আপনার মতো রাঘববোয়ালদের ও নাম আছে।” ইমান এগিয়ে এসে মিমের গাল টেনে বললো,
– “তবে কি ইমাদ স্যার ও তোমার সন্দেহের তালিকায় আছে?” মিম উঠে দাঁড়িয়ে ইমানের চোখেচোখ রেখে বললো,
– “ডেফিনিটলি! কারণ কেউ আমার সন্দেহের উর্ধ্বে নয়,সে যেই হোক।
– “ঠিক আছে।”
.
– “সিম্পল হিসেবে,কোন চুনোপুঁটি এতো সিকিউরিটি থাকা সত্ত্বেও ও গার্লস কোয়ার্টারে এসে এতো দুঃসাহস দেখাবে?
মানলাম,কিছুদিন আগে একজোড়া কপোত-কপোতী কে আপনারা হাতেনাতে ধরেছেন,তার মানে এই নয় যে চোর সন্তর্পণে সদর দরজা দিয়ে পালাবে।” মিমের কথা শুনে ইমান বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ওর মুখের দিকে,তবে ওর রুমের দরজায় জেনারেল ইমাদ সাহেব’কে দেখে ইমান বলল,
– “স্যার! বাহির চলুন,প্লিজ।কিছু কথা আছে আপনার সাথে।” ইমানের মুখ থেকে সবটা শোনার পর,ইমাদ সাহেব বললো,
– “ব্যাপার না! মামণি নিজের সন্দেহের তালিকায় রাখতেই পারে আমাদের সবাই’কে! ইনফ্যাক্ট,আমার প্রথম থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল যে এই নোংরা কাজে মিলিটারি একাডেমির ক্ষমতা সম্পন্ন কিছু লোকের হাত আছে।” তখন মেজর কিয়ান ছুটে এলো,ইমান’কে বললো,
– “বড় ভাই স্যান্ড্রেলিয়ার মোটা দড়ি টা ইচ্ছেকৃত ভাবে কাটা হয়েছে।”
– “ইউ মিন তুমি বলছ প্রি-প্ল্যান্ড মার্ডার?”
– “ডেফিনিটলি,সেটাই মনে হচ্ছে।তবে আপনার কপাল ভালো আর মেয়েটির ও উপস্থিতবুদ্ধি আছে।” ইমান বাহিরে চলে এলো,অস্থির হয়ে ফোন করলো স্পর্শীয়ার কাছে,স্পর্শীয়া ফোন রিসিভ করে বললো,
– “একে তো নিজের জ্বালায় বাঁচি না এখন আবার আরেকজন জ্বালাতে ফোন করেছে।” ইমান বললো,
– “তুমি এভাবে আমার সাথে কথা বলছ কেন? তোমার কথাবার্তায় ওই নাক উঁচু মেয়েটির (মিম) মতো ভাব আছে।” মেয়েটি বলল,
.
– “কোন মেয়ে? হায় আল্লাহ! নতুন করে প্রেম করছেন কারো সাথে? ইমান বললো,
– ” একটা কে নিয়ে পারি না আবার আরেক টা জোটাতে যাবো কোন দুঃখে?”
– “বাবা বাহ! ক’দিন আগে বলছিলেন একটা মেয়ে (মিম) নাকি দিন রাত আপনার মগজ চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে?”
– “ওই মেয়ে টার বড্ড বেশি উঁচু নাক,রাগ হয় আমার ওকে দেখে।”
– “তাহলে বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই? মেয়েটির ও নিশ্চয়ই খুব রাগ হয় আপনার হাবভাব দেখে?” ইমান হাসলো,জিজ্ঞেস করলো,
– “মনে হলো চোটে আছো? কার সাথে?”
– “বলবো কেন? কেন বলবো আপনাকে?”
– “না মানে?”
– “অনেক লোক দেখেছি,তবে ওনার মতো অকৃতজ্ঞ লোক দেখিনি আগে! অন্তত আমাকে একটা থ্যাংক’স বলতে পারতো? কিন্তু না! লাট সাহেবদের মতো গটগট করে চলো গেলো চোখের সামনে থেকে।” ইমান একটু ভাবলো,ভেবে বললো,
– “হ্যাঁ,গো তুমি কার কথা বলছ আমার কাছে?” মেয়েটি বলল,
.
– “কেন আমার শশুর,শশুরের (স্যার) কথা বলছি আপনার কাছে। এখন রাখি? ভাই আমার মেজাজ টা বড্ড বেশি খারাপ হয়ে আছে।” ইমান চমকালো,মনেমনে বললো,
– “স্পর্শীয়া! এমন করে কেন কথা বললো আমার সাথে? আমার খুব খারাপ লাগছে,কেন? তবে মিম ও কি আমাকে এমন’ই ভাবে?” রাতে মিম তৈরি হয়ে নিচে চলে এলো,স্বর্ণা হাসতে হাসতে বললো,
– “একদম হুররাম সুলতানের মতো দেখতে লাগছে তোমাকে।” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “সি ইজ মাই ফেভারিট ওয়ান,তাই একটু কসপ্লে করে ফেললাম।
– “ঠিক আছে।” সাথে সাথে নীলাসা এসে মিমের মাথায় ক্রাউন টা পরিয়ে দিলো,সারা এগিয়ে এসে বললো,
– “এবার একদম পারফেক্ট দেখতে লাগছে তোকে।” মিম তখন লাল গালিচা পেরিয়ে স্টেজে গিয়ে উঠলো উপপরিচালক তেভভিক সাহেব মিম’কে বললো,
– “এঞ্জেল! আজ তোমাকে একটা গান গাইতে হবে।” মিম হাসলো,বললো,
– “আচ্ছা স্যার! ঠিক আছে।” ইমান নিজের কাজকর্ম শেষ করে অনুষ্ঠানে এলো,মিম’কে দেখে বললো,
– “আজ কার মতো দেখতে জানো লাগছে ওকে।” মেজর তনিমা বললেন,
– “হুররাম সুলতান! অটোমান সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী’র মতো দেখতে লাগছে ওকে।” কর্ণেল উজান বললো,
– “হুমম,নিজেই বললো হুররাম সুলতানের কসপ্লে করেছে।” ইমান বাঁকা ঠোঁটের হাসি দিয়ে বললো,
– “হ্যাঁ,ঠিক তার মতোই ধূর্ত এবং খুঁড়ো ধর সম্পন্ন বুদ্ধি রাখে।”
এদিকে,
.
সিদ্ধান্ত হলো মিম জুটি বেঁধে গান গাইবে রনির সাথে,রনি কথায় কথায় মিম’কে বললো,
– “সরি,সেদিন কে বাড়াবাড়ি করার জন্য তোমার সাথে।” মিম বলল,
– “আমি ও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,ইমান স্যার শুধুশুধু আমার জন্য বকলো আপনা’কে।” যাগগে,অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো,মিম এবং রনি এসে গান গাইতে উঠলো স্টেজে।
ওদের গান শেষ হলো,সাথে সাথেই করতালি’র রোল পরে গেলো স্টেজে।মিম স্টেজ থেকে নামলো,ইমান এসে বললো,
– “কিছু কথা ছিলো তোমার সাথে।” মিম ইমান’কে অনুরোধ করে বললো,
– “আপনি কাইন্ডলি খবর নিয়ে জানতে পারবেন একাডেমির কোন কোন অফিসারের গায়ে কিংবা পায়ে ট্যাটু আছে?” ইমান চমকালো,জিজ্ঞেস করলো,
– “কেন?”
– “সময় হলো বলবো আপনা’কে।”
– “তাহলে কি রাঘববোয়ালদের লিস্ট থেকে আমার নাম বাদ?”
– “নাঃ! তবে সহায়ক এসিস্ট্যান্টের পদে নিয়োগ দিয়েছি আপনা’কে।” ইমান হাসলো,বললো,
– “তোমার কি মনে হয়? এই রাঘববোয়াল এমনি এমনি বসে আছে? অকর্মন্য একটা? কোনো কাজ নেই তার? শুধু শুধুই ঘুরঘুর করছে তোমার পিছে?” মিম ধূর্ত হেসে বললো,
– “আপনি হলেন ভাই গভীর জলের মাছ! তাই কিছু শেয়ার করেননা আমার সাথে,তাই আমি ও কিছু বলছি নাঃ! ওকে বায় কালকে দেখা হবে?” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “কি জানি? এতো বুদ্ধি নিয়ে মেয়ে টা ঘুমোয় কি করে রাতে?”
.
সকালে ইমান জগিং করে এসে দেখলো,মিম চুপচাপ এক জায়গায় শান্ত হয়ে বসে আছে।ইমান এসে মিমের পাশে বসলো,খেয়াল করে দেখলো,ও খুব লজ্জা পাচ্ছে ইমান’কে দেখে,
কারণ অনুসন্ধানের তাড়নায় ইমান এদিক সেদিক করে দেখে মিমের ট্রাউজারে লাললাল কিছু একটা লেগে আছে।
তবে ও কিছু না ভেবেই কি ভেবে? জুস ফেলে দেয়,মিমের কাঁধে।মিম লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে বসলো,ইমান নিজের ওভার কোট টা একরকম জোর করেই জড়িয়ে দিলো ওকে।মিম রুমে এসে ইমান’কে অনেক গালাগালি করলোও,পরক্ষণেই ব্যাপার টা তার নজরে আসে।লজ্জায় মরে যাচ্ছে মেয়েটা মনেমনে ভাবছে,
– “কি করে মুখ দেখাবো স্যার’কে? আগে তো কখনো হয়নি এমন? এগুলো কেন আমার সাথেই হতে হবে?” কিছুক্ষণ পর,গার্লস কোয়ার্টারের প্রভেস্ট এসে মিম’কে বলল,
– “একটু আসো মিম! তোমার জন্য একটা পার্সেল এসেছে?” মিম মনেমনে কৌতূহলী হয়ে বললো,
– “বাব-মা,আপু কিংবা ভাইয়ারা কেউ তো পাঠায়নি? তাহলে কে পাঠিয়েছে?” মিম পার্সেল টা এনে খুলে দেখলো তার মধ্যে একশো প্যাকেট স্যানিটারি প্যাড! মনেমনে বললো,
– “এগুলো কে পাঠিয়েছে?” পাশে দেখলো,ছোটো করে একটা চিরকুট,তাতে লেখা,
– “সাতটা দিন সময় দাও নিজেকে।”
“ইতি তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী”
.
চলবে,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com