তীব্র ভালোবাসার অনুভূতি । পর্ব - ০৫
আমি এতো নিচ নই যে…!” সারা টা দুপুর ছেলের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্ধ্যায় ইতি ছেলের ঘরে এসে দেখে সে এক মনে,এক ভাবেই কাজ করে যাচ্ছে।
এগিয়ে এসে কি ভেবে ইতি ছেলের কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করে,
– “কি ব্যাপার আব্বু তোমার? কি হয়েছে?” ইমান ল্যাপটপ থেকে মুখ তুলে হাসতে হাসতে মায়ের দুই হাতে চুমু খেয়ে বলল,
– “নাথিং সিরিয়াস মা…! এতো দুশ্চিন্তা কে করতে বলেছে তোমাকে?” ইতি ছেলের মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে বললেন,
– “মা তো হওনি…হতে বুঝতি কেমন লাগে।” ইমান হাসতে হাসতে বলল,
– “আচ্ছা…! এবার নিচে চলো মা,আমার সমস্ত কাজ কমপ্লিট হয়ে গেছে।” খাবার ঘরে সবাই কে খাবার সার্ফ করার সময় মিমের বুকের মধ্যে হঠাৎ করেই ধুকবুকানি বেড়ে গেছে আর ও মুহূর্তে বাথরুমে ছুটে এসে মুখে পানি দিলো,তবে মাথা তুলে দেখলো ইমান বুকের ওপরে হাত বেঁধে ওর পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে,ও ভাবলো হয়তো ইমান ওর কল্পনা,তবে কল্পনার মানুষ টাই হঠাৎ জিজ্ঞেস করে বসলো,
.
– “আপনার শরীর ঠিক আছে?” মিমের মুখ থেকে কোনো শব্দ বেরোলো না বরং বোকাবোকা মুখ করে তাকিয়ে ছিলো সে ইমানের মুখের দিকে…। ইমান মিম কে ধরে এনে চেয়ারে বসিয়ে দিলো,স্বাভাবিক ভাবেই জিজ্ঞেস করলো,
– “ডক্টর ডাকতে হবে…!” মিম বিচলিত হয়ে বললো,
– “নাঃ,,,,তবে আপনি কেন খাবার ছেড়ে কেন উঠে এলেন টেবিল থেকে?” ইমান মৃদু হেসে বললো,
– “উঠে আসিনি তো…হুমম,সত্যি বলছি মিম! আমার খওয়া হয়ে গেছে,তবে হ্যাঁ…মা আপনার খোঁজ করছিল আর তাই আমি চলে এলাম আপনার খোঁজ নিতে।” মিম নিজেকে কিছু টা স্বাভাবিক করে বলল,
– “আমি বাচ্চা নই জনাব,খুব করে পারি নিজের যত্নে নিতে।” ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
– “আমি কিন্তু একবার ও বলিনি আপনি বাচ্চা…তবে কি জানেন? আপনার বাচ্চা গুলো,আপনার খোঁজ করছে।” মিম একরকম ইমান কে রান্না ঘরে ফেলেই ব্যস্ত পায়ে,খাবার ঘরে চলে এলো,তারপর ঔষধ খাইয়ে দিলো ইতি কে,ইতি মিম কে বলল,
– “শরীর খরাপ লাগছে না কি তোর মা? আমার ছেলে কে বলবো ডাক্তারের কাছে ফোন দিতে?” মিম ইতি কে বললো,
– “একদম উত্তেজিত হবেন না আন্টি,আমার শরীর একদম ঠিক আছে।” ইমা হঠাৎ এসে ওর প্রেশার মাপা যন্ত্র দিয়ে মিমের প্রেশার মেপে বলল,
.
– “না আপু ঠিক নেই…তোমার প্রেশার একদম লো হয়ে গেছে।” ইমান বলল,
– “হুমম…! আন্দাজ করে ছিলাম,তা প্রিয় বোন আমার,আপনার পেসেন্ট কে কি কি খাওয়াতে হবে।” ইমা বললো,
– “তেমন কিছু না পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি প্রপার রেস্ট নিতে হবে এবং বেশি বেশি দুধ,ডিম,কলা এগুলো আমার পেসেন্ট কে খাওয়াতে হবে।” ইমান বললো,
– “সে নয় বুঝলাম,তবে আপনার পেসেন্ট কে বোঝাবো কিভাবে? না আসলে,তার কাজ শুধু একটাই বাড়িময় চরকির মতো ঘুরে বেড়াবে।” পাশে বসে ইতি মিম কে রাগী গলায় বললেন,
– “কতবার মানা করেছি মা? একটু ও তুমি কেন গ্রাহ্য করো না আমাকে…!” মিম বলল,
– “আপনি শুধুশুধু রাগ করছেন আন্টি…। বিশ্বাস করুণ,আমার শরীর এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছে।” তবে ইতি তা মানতে নারাজ,নিজের হাতে ভাত মেখে খাইয়ে দিলেন ওকে আর এদিকে আজিন সারাক্ষণ ঘুরঘুর করছে মিমের আশেপাশে এবং তা দেখে ইমান ছেলে কে ঘুম পারিয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘরে নিয়ে এলো,
কিন্তু আজিন কিছুতেই থাকতে চাইছে না বাবার কাছে,জাবিনের পেছনে ইমান কে তেমন খাটতে হয়নি কারণ সে নিজের লেখাপড়া সেরে আগেই ঘুমিয়ে গেছে।
.
অতঃপর,ইমান আজিন কে গল্প শুনিয়ে শুনিয়ে ঘুম পারিয়ে দিলো…কিন্তু হঠাৎ মাঝরাতে ইমানের ঘুম ভেঙে গেছে আর সে তড়িঘড়ি করে বিছানা ছেড়ে উঠে বসলো,দেখলো,ছোটো ছেলে টা নেই তার ডানপাশে…! এরপর সে খেয়াল করলো,ঘরের দরজা খোলা,তাই দ্রুত পায়ে বেড়িয়ে এলো ঘর থেকে…। অশান্ত মন নিয়ে ইমান প্রমীর ঘর ছাড়িয়ে বাঁদিকে মোড় নিল,ভালো করে তাকিয়ে দেখলো,আজিন মিমের ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে,সে কি ভেবে যেন কোনো শব্দ করলো না,আজিন ততক্ষণে মিমের ঘরে ঢুকে গেছে।ইমান এস্ত পায়ে এসে মিমের ঘরের দরজায় দাঁড়লো,দেখলো,
ছেলেটা মিমের বুকের ওপরে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে।মিমের ঘুম খুব হালকা,সে দরজা খোলার শব্দে জেগে গেছে,
যখন সে বুঝতে পারলো আজিন…! আজিন ততক্ষণে নড়েচড়ে বসে কতগুলো চুমু খেলো তার আম্মু মণির হাতে,গালে কত গুলো চুমু খেলো মিম অস্থির হয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলো,
– “বাবা কি হয়েছে…!” আজিন মৃদু হেসে মিম কে জড়িয়ে ধরে বললো,
-.”তুমি উঠে গেছো আম্মু মণি…? আমি তো চাইনি তোমাকে ওঠাতে।” মিম সাথে সাথেই বুকে জড়িয়ে ওকে অনেক আদর করলো,কম্বল গায়ে দিয়ে বললো,
-“দেখ আমার ছেলেটার অবস্থা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেছে।” আজিন বলল,
– “তুমি ঠিক আছো আম্মু মণি? ফোন করবো ডক্টরের কাছে?” মিম আজিন কে বলল,
– “কাওকে ফোন করার দরকার নেই বাবা…! তুমি শুধু নাইট সুট পরেছ কেন? ঠান্ডা লেগে যাবে।” আজিন তার আম্মু মণির বুকের সাথে লেপ্টে রইলো,মিম বলল,
.
– “বাবা কে বলে এসেছ আমার কাছে?” আজিন চোখ বুঝে বলল,
– “না…! আম্মু মণি,আমি এখন তোমার কাছে ঘুমবো,তোমার সাথেই থাকবো,যদি তোমার কিছু লাগে?” মিম আজিনের পাকা পাকা কথা শুনে হাসতে লাগলো,ইমান দরজায় দাঁড়িয়ে চুপচাপ দেখছিল তার বাচ্চা ছেলে টা কে…!
তবে মিনিট পাঁচেক পর সে দরজার কাছ থেকে সরে দাঁড়ালো,জাবিন এসে নিঃশব্দে বসে পরলো মিমের পাশে।
মিম জাবিন কে দেখেই উঠে বসলো,জাবিন বিষ্ময় ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মিমের দিকে…! মিম জাবিন কে তাড়াতাড়ি বিছানায় শুইয়ে দিলো,গায়ে সরিষা তেল মালিশ করে দিতে দিতে বললো,
– “সোয়েটার পরোনি কেন বাবা? দু’জনেই দেখছি অসুস্থ হয়ে যাবে।” জাবিন বলল,
– “আমাদের দেখাশোনা তুমি করো…বাবা কি এতো কিছু বোঝে?” মিম জাবিনের কপালে চুমু খেলো,জাবিন চোখ বুঝে ফেললো সাথে সাথে।ইমান ছেলেদের দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো,অতঃপর হাসিমুখে পা বাড়ালো নিজের ঘরের দিকে।সকালে মিম ঘুম থেকে উঠে নিচে এসে দেখে ইমানের ঠান্ডা লেগেছে,এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো,
– “আপনি ও কি সোয়েটার পরেননি রাতে?” ইমান বলল,
.
– “চুপচাপ সিদ্ধ ডিম দু’টো খেয়েনিন,নয়তো এখুনি ডেকে পাঠাচ্ছি মা কে…!” মিম বলল,
– “এক মাঘে শীত জায়না জনাব,আমি আপনার বউ হলে বুঝতেন কেমন লাগে?” ইমান কিঞ্চিৎ ঝুঁকে বলল,
– “আপনি হতে চান? খবর জানাবো মা কে…?” বেচারি থতমত খেয়ে তাকিয়ে রইলো,ইমান হাসতে উপরে চলে গেলো হল থেকে…। কিছুক্ষণ পর,প্রমী ইমা এসে মিম কে বলল,
– “আপু জেইদা কে বলে দিয়েছি,আজিই বারবিকিউ পার্টি হবে।” মিম চিন্তিত হয়ে বললো,
– “ওনার শরীর খারাপ।” ইমান বললো,
– “নো ম্যাটার,আমি ঠান্ডার থেকেও শক্তিশালী।” কথা টা শুনেই মিমের মেজাজ বিগড়ে গেছে,মিম কিছু বললো না,
কারণ আজ থেকে তিন দিন তার রান্না ঘরের আশেপাশে যাওয়া বারণ আছে।ইমান বিকেলে লোকলস্কর লাগিয়ে ছাঁদ টা পরিষ্কার করালো,তারপর বারবিকিউ করার চুলো টা তৈরি করে ফেললো নিজের হাতে…এরপর মাগরিবের নামাজ পড়ে ইমান কাজে লেগে পরলো,তবে মিম বাদে সবাই এখানেই আছে,
কিছুক্ষণ পর,মিম একটা আকাশি পাড়ের হলুদ শাড়ি পরে হালকা সেজেগুজে ছাঁদে চলে এলো।ইমা ওকে দেখে বলল,
.
– “ওয়াও মিম আপু…! আজ অনেক সুন্দর দেখতে লাগছে তোমাকে।” মিম বললো,
– “ধ্যনবাদ আপু,তবে এতো টাও সুন্দর দেখতে লাগছে না আমাকে…!” তখন আজিন এসে মিমের হাত ধরে বললো,
– “ওদিকে চলো না আম্মু মণি,ভাইয়া ছবি তুলে দেবে আমাদের দু’জন কে…।” মিম আজিনের জোরাজুরিতে ছবি তুলতে রাজি হয়ে গেলো প্রমী এগিয়ে এসে বলল,
– “জাবিন বাবু ছবি তুলবে না তোমাদের সাথে?” মিম মৃদু হেসে বললো,
– “তুলবে,অবশ্যই তুলবে…! ইমা তুমি ও আসো এদিকে…।” ইমান এগিয়ে এসে জাবিন কে জিজ্ঞেস করলো,
– “বাবা লাইটার কোথায় রেখেছ? চুলো ধরিয়ে বারবিকিউ গ্রিলার টা প্রি-হিট করতে হবে।” জাবিন আমতা আমতা করে বললো,
– “মনে নেই ড্যাড…!” “মনে নেই” কথা টি শুনে ইমান কিঞ্চিৎ রেগে গেছে,মিম দ্রুতই লাইটার টা খুঁজে এনে ইমান কে বলে,,,
.
– “চলুন,আমি চুলো টা ধরিয়ে দিচ্ছি আপনাকে…।” ইমান কিছু বললো না অবাক চোখে তাকিয়ে শুধু বললো,
– “আচ্ছা, ঠিক আছে।” মিম চুলো টা কাঠ,কেরোসিন দিয়ে ইমান কে ধরিয়ে দিলো,ইমান ম্যারিনেট করা মাংস গ্রিলারের উপরে দিতে দিতে মিম কে বলল,
– “আজ অনেক সুন্দর দেখতে লাগছে আপনাকে…।” মিম কথা টা শুনেই লজ্জা পেয়ে গেলো,তাড়াতাড়ি এসে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাইয়ে দিলো ইতি কে,,,
ইমান কাজের ফাঁকে ফাঁকেই মিমের দিকে তাকাচ্ছিল,পরক্ষণেই চোখ নামিয়ে বিড়বিড় করে বলল,
– “আজ বড্ড বেশিই বেহায়া বলে মনে হচ্ছে নিজেকে…।” মিম রান্না হতে দেরি হচ্ছে দেখে জাবিন এবং আজিন কে দুধ গরম করে এনে খাইয়ে দিলো আর জেইদা নুডলস করে আনলো সবার উদ্দেশ্যে…।” সবাই মোটামুটি নাস্তা করে ফেললো,জাবিন এসে ইমান কে বললো,
– “ড্যাড, তোমার ফোন টা দেবে? একটু সেলফি তুলবো সবার সাথে?” ইমান ছেলের গালে চুমু খেয়ে বললো,
– “আমি পকেটে হাত ঢোকাতে পারছিনা বাবা…। তুমি একটু নিয়ে নাও পকেট থেকে…।” জাবিন পকেট থেকে ফোন টা নিয়ে নিলো,তারপর মিম কে এসে বলল,
.
– “ওদিকে চলো না,সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে দিচ্ছি তোমাকে।” মিম জাবিনের কথা মতো ছবি অনেক গুলো ছবি তুললো,জাবিন আজিন কে দেখিয়ে বলল,
– “দেখতো ছোটো ভাইয়া কেমন হয়েছে?” আজিন বললো,
– “অনেক সুন্দর,আমাকে একটা গালে হাত দিয়ে ছবি তুলে দেবে আম্মু মণির সাথে?” জাবিন বলল,
– “হুমম,যাও! তুমি ডেকে নিয়ে আসো তাকে।” অতঃপর তাদের ফটোসেশান শেষ হলো,রান্না শেষ হতেই ইমান সবাই কে বলল,
– “বসে পরুন প্লিজ,আমি আজ খাবার সার্ফ করবো নিজের হাতে।” একে একে সবাই খেতে বসে পরলো,ইমান বারবিকিউ দিচ্ছিলো সবার প্লেটে আর তখন মিম কে বারবিকিউ দিতে এসে জিজ্ঞেস করলো,
– “মিম ডিম বুকের মাংস,লেগ পিস না উইংস দেবো আপনাকে?” মিম চোখ পাকিয়ে বলল,
– “এই ডিম টা আবার কে জনাব? ভদ্রভাবে “মিম” বলে ডাকুন আমাকে।”
– “আর যদি না ডাকি?”
– “তো ডাকবেন না আমাকে..।”
– “মিম পারে ডিম,এই বার ঠিক আছে…!”
– “না ঠিক নাই।”
.
– “মিম পারে নাই ডিম,এবার ঠিক আছে.” বেচারি এবার রেগেই গেছে,চলে যেতে নিচ্ছিলো কিন্তু ইমান ওকে জোর করে বসিয়ে লেগ পিস আর বুকের মাংস খেতে দিলো নান রুটির সাথে।মিম রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললো,
– “খাবো না।” ইমান জোর করেই খাবার পুরে দিলো ওর মুখে,মিম গাল ফুলিয়ে ইমানের দিকে তাকিয়ে ছিল…।
বাড়ির সবাই হাসতে লাগলো দু’জনের কাণ্ডকারখানা দেখে,আজিন বলল,
– “ড্যাড…! তুমি এতো পচা কেন? এমন কেন করলে আম্মু মণির সাথে।” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “তোমার আম্মুর ড্যাড,তার মেয়ের খুব সুন্দর একটা নাম রেখেছে তো…। তাই আমার ভেঙাতে খুব ভালো লাগে।” মিম খাওয়া শেষ করেই বাচ্চাদের নিয়ে ঘরে চলে এলে,তখন ইতি এসে বলল,
– “মা তুই আবার ভুল বুঝিস না আমার ছেলের ছেলেমানুষী দেখে,আসলে আমার প্রাক্তন বউ মা মানে আরিশফার ডাক নাম “মিম” ছিল আর ইমান এই নামে ডাকতেই বেশ পছন্দ করতো ওকে।” কথাটা শুনে মিম লজ্জা পেলো,মৃদু হেসে বললো,
– “ও আচ্ছা,সরি আন্টি! এই ব্যাপারে আমি কিছু জানতাম না।”
– “না না ঠিক আছে।”
– “উনি খেয়েছেন?”
.
– “হুমম! গিয়ে দেখ,এতক্ষণে নাক ডেকে ঘুমের দেশে চলে গেছে।” মিম হাসলো,তারপর ঔষধ খাইয়ে বিছানা ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে আসলো ইতি কে…ইমান বারান্দায় বসে আজকের তোলা ছবি গুলো দেখছিল..। দুই ছেলে মিলে মিমের ছবি দিয়ে গ্যালারী ভরে রেখেছে।
সকালে সবাই ঘুম থেকে ওঠার পর,ইমান সবাই কে বলল,
– “দুপুর দু’টোর মধ্যে রেডি থেকো সবাই,আজ কিন্তু তামান্না ফ্যাম-লি পার্কে ঘুরতে নিয়ে যাবো সবাই কে..। ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে জাবিন এবং আজিন মহাখুশি,ওদের এতো এক্সাইটমেন্ট দেখে মিম যত দ্রুত সম্ভব সব গোছগাছ সেরে ফেলেছে।তারপর ইমান দু’টোর সময় সবাই কে নিয়ে পার্কে ঘুরতে চলে এলো,ইতি মিম কে বলল,
– “লাল পারের কালো শাড়িতে তোমাকে অনেক সুন্দর দেখতে লাগছে।” মিম মৃদু হেসে বলল,
– “অথচ আমার মা থাকলে বলতেন,’এটা পরিস না,একদম মানাচ্ছে না তোকে।অনির কে দিয়ে দে নয়তো ভাবিদের কাওকে দিয়ে দে,ওরা তো ফর্সা,ওরা পরলে অনেক সুন্দর লাগবে ওদের সবাই কে…!” ইতি কথা গুলো শুনে মিমের গাল টেনে ধরে বললেন,
.
– “তোকে আর কোথাও যেতে দেবো না আমাদের বাড়ি থেকে।” মিম হাসলো,বলল,
– “আমিও যেতে চাই না,খুব ভালোবেসে ফেলেছি তোমাদের সবাই কে…।” তখন জাবিন বলল,
– “একটু পোজ দাও তোমরা,ছবি তুলে দিচ্ছি আমি তোমাদের দু’জন কে…।” ইতি আর মিম ছবি তুলে নিলো,তখন ইমান ফোনে কথা বলতে বলতে এসে বসলো মিমের পাশে।ইতি মিম কে বলল,
– “আপু পোজ দাও..।” মিম খেয়াল করে না দেখেই ইমানের হাত জড়িয়ে ধরে তাকাল ক্যামেরার দিকে।ইমান চমকে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো,যখন বুঝতে পারলো কাজ টা না বুঝে করেছে সাথে সাথেই ইমানের ঠোঁটর কোণে মৃদু হাসির রেখা ফুটে উঠেছে।মিম যখন চোখ তুলে ইমানের দিকে তাকালো,ইমান হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলো,
– “কি হয়েছে?” মিম লজ্জা পেয়ে উঠে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো,বাড়িতে সবাই তা নিয়ে হাসাহাসি করছে।প্রমী এগিয়ে এসে মিম কে খোঁচা মেরে বলল,
– “ব্যাপার না আপু,এমন হতেই পারে ইট’স ওকে।” আজিন ইমান কে ছবি দেখাতে দেখাতে বললো,
– “ড্যাড,তোমার আর আম্মু মণির এই ছবি টা অনেক সুন্দর না? খুব সুন্দর লাগছে আম্মু মণি কে.…!” ইমান হাসতে হাসতে বললো,
– “সুন্দর তো লাগছে,তবে তোমার আম্মু মণি অনেক লজ্জা পেয়েছে।”
– “কেন?”
– “আমি জানবো কিভাবে?” আজিন এগিয়ে এসে মিম কে বলল,
– “আম্মু মণি! লজ্জা কি করে পেতে হয়? একটু শিখিয়ে দেবে আমাকে?” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “এটা শিখতে হবে না বাবা…! বড় হলে এটা তোমার মধ্যে এমনিই তেই এসে যাবে।”
– “ওহ! তাই তুমি শুধু লজ্জা পাও আমার ড্যাড কে দেখে?” মিমের তখন হঠাৎ ইমানের সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো,মিম ঝটপট চোখ তুলে তাকালো আকাশের দিকে।” ইমান পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় মিম কে উদ্দেশ্য করে বলল,
– “তাঁরা দিনের আকাশে থাকে না,রাতের আকাশে থাকে…ওভাবে তাকাবেননা প্লিজ,নয়তো সূর্যি মামা ও লজ্জা পেয়ে যাবে।” মিম ইমানের কথা শুনেও না শোনার ভান করলো,হেসে হেসে কিছুক্ষণ গল্প করলো প্রমী এবং ইমার সাথে।
.
চলবে,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com