গল্পঃ বারবনিতা । পর্ব -০২
সুখটানে এক লহমা ধোঁয়া বৃষ্টির ছাঁটে ছুড়ে মারে, মুখটাকে ইংরেজি বর্ণমালার ও বানিয়ে। নিয়নবাতির আবছায়া আলো ভেদ করে সেই ধোঁয়াটা বৃষ্টিকে ধরার জন্য মিশে যাচ্ছে শূন্যে আলো আধারের বিভ্রমে।
সে ইশারায় দেয়ালের সাথে ল্যাপ্টে থাকা মখমলী হাতকে
ধন্যবাদ জানায়।
.
হঠাৎ বিশাল শব্দে একটা বজ্রপাত হয়,আর বিদ্যুৎ চমকে,সে এক ঝলক দেখতে পায় তাকে।
মনে মনে চমকে উঠে সে,মাই গড এত দেখছি রীতিমতো শাড়ী পড়া সুন্দরী তরুণী। চোখ জোড়া মায়াবী।
হৃদয় ভাঙ্গবার ভয়ে সে নিজেকে শামুকের খোলসে গুটিয়ে নেয়। হাল্কা আলোর বিচ্ছুরণে ঝাপসা বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে অপয়া বৃষ্টিকে অভিশাপ দিতে থাকে,বৃষ্টি তুই মর!
নীরব চারিদিক,শুধু একটানা বৃষ্টির রিমঝিম গান বেজে চলেছে। একটা কাশির শব্দে সম্বিৎ ফিরে জাকিরের।
ঘাড় ফেরাতেই চোখাচোখি হয় তার সাথে। জাকিরের হৃদয়ের রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হল কি? যদি হৃদয় ভাঙে,থাক বাবা এইত বেশ আছি।
.
আরেকটা সিগারেট ধরাবেন?সে প্রশ্ন করে।
জ্বী না,আপনার চাই?
আমি সিগারেট খাই না,
একটু অবাক হয় জাকির,তবে যে লাইটার?
হি হি হি
আপনি এই লাইনে নতুন বুঝি?
হি হি হি হাসির স্রোত যেন বৃষ্টির শব্দকে ছাপিয়ে যেতে চাইছে।
জাকির যেন মোহাবিষ্ট,সে মিষ্টি হাসির মেয়েটিকে দেখতে লাগল।
আমি কি হাসা’র মত কিছু বলেছি।
ঐ দেখ,সাহেব আবার রাগও করে দেখি।
হি হি হি,,হো হো হো
বাস্তবিকই জাকির বুঝতে পারছে না। এখানে সে আর এই মেয়েটা বৃষ্টির জন্য আটকা পড়েছে,এর বেশী কিছু’ত নয়।
মেয়েটা এবার লাইটারটা তার মুখের সামনে জ্বালিয়ে ধরে বলে,দেখ সাহেব,ভালো করে দেখ।
কি দেখব?
আমাকে?
কেন?
.
আজই প্রথম বুঝি,তাই লজ্জা পাচ্ছ?
ও কিছুনা,একবার আড় ভেঙে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
এই মেয়ে জাকির তোতলাতে থাকে,আপনি/তুমি এগুলো কি বলছ?
তুমি করেই বল সাহেব,এত সন্মান আমাদের মানায় না।
হায়!এবার যে হৃদয় ভাঙার গান সত্যি বেজে উঠল।কলেজ লাইফের বন্ধু সানিদের কথা মনে হল তার।
ও একবার হাইকোর্টের সামনে এমন একটার পাল্লায় পড়েছিল।কিন্ত সেটা’ত পুরাই বারবনিতা ছিল।
কিন্তু এই পথে এমনটা আশা করেনি সে।আর তাছাড়া এই মেয়েটাকে দেখলে কেউ বিশ্বাসও করবেনা।
হায়,কি বিচিত্র আমাদের জীবন!
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com