Breaking News

কালো মেয়ে যখন বউ । পর্ব -০২



রাতে একটা unknown নাম্বার থেকে কল আসলো>
মিমঃ অনেক রাত হলো এবার বাসায় আসেন।(কন্ঠ শুনে বুঝতে পারলাম মিম)
!! …………(কিছুই বললাম না)
মিমঃ প্লিজ।আমাকে মাফ করে দিন। আর আপনাকে আমার জন্য বকা শুনতে হবে না।প্লিজ আসুন।
আমিঃ ……………
মিমঃ প্রয়োজন হলে আমি আপনাদের বাসা থেকে চলে যাবো।
তবুও প্লিজ বাসায় আসুন।বিশ্বাস করুন আমি নিরবে আপনাদের বাসা থেকে চলে যাবো।
আপনাকে কোনো কথা শুনতে হবে না।প্লিজ বাসায় আসুন।
(কাদতে কাঁদতে কথা গুলো বললো মিম) সত্যি বলছি আমি আগামীকাল সকালে চলে যাবো।
প্লিজ আপনি বাসায় আসুন।(কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলো বললো)
.
আমিঃ হুম,আসতেছি।।
(বাসায় গিয়ে রাতের খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে গেলাম।
এর মাঝে মিমের সাথে কোনো কথা ই হলো না।
খুব ভোরে মিম আবার প্রতিদিনের মতো নামাজ পড়ার জন্য ডাকলো।
নামাজ পড়ে প্রতিদিনের মতোই ঘুমিয়ে গেলাম।ঘুম থেকে উঠে দেখলাম।
মিম সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে।)
আমিঃ কোথাও যাচ্ছেন নাকি?(আমি)
মিমঃ ………..(কোনো কথা বললো না)
আমিঃ কোথাও যাচ্ছেন?
মিমঃ হুম।
আমিঃ কোথায়?
মিমঃ বাবার বাসায়।
আমিঃ কেনো?
মিমঃ ইচ্ছে হচ্ছে তাই।
আমিঃ একা যাবেন?
মিমঃ হুম।আপনাকে আর কারো জন্য কথা শুনতে হবে না।
কারো জন্য বাবা-মায়ের কাছে বকা খেতে হবে না।কারো
জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যেতে হবে না।এক কথায় বলতে পারি
আপনার লাইফে আর কোনো ঝামেলা থাকবে না।
আমিঃ ও রাগ করে আছেন। যে টা গতকাল ঘটেছে তা নিয়ে আবার
এখন এতো ঝামেলা করার কি দরকার।আর আপনি বাসা থেকে গেলেও
তো আমাকে বকা শুনতে হবে।
মিমঃ হবে।কিন্তু একবারই শুনতে হবে।বারবার না।
আমিঃ আপনার জন্য আমি বারবার বকা শুনতে রাজি আছি।
মিমঃ দরকার নেই,আমার জন্য কারো বারবার বকা শুনার।আমি কাউকে বকা
শুনাতে চাই না।বাই,ভালো থাকবেন।
আমিঃ দাঁড়ান (বলেই হাত ধরে একটানে মিম কে বুকে জড়িয়ে ধরলাম)
মিমঃ এসব কি করছেন।(বলেই মিম নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো)কোনো
কালো মেয়ের এতো সুখ থাকতে নেই।
আমিঃ প্রমিস করছি এখন থেকে আর কোনোদিন রাগ দেখাবো না।
সারাজীবন ভালোবাসবো আপনাকে।
মিমঃ ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা পৃথিবীর কোনো কালো মেয়েরাই
রাখে না।আর আজ যা আপনি বলছেন সেটা হলো আপনি আবেগ
দিয়ে বলছেন।আজকের আবেগ আগামীকাল বাস্তবতার কাছে হার মেনে নিবে।
আর তখনি আপনি আবার আগের মতো আচরণ করতে থাকবেন।
আমিঃ কিসব বলছেন?
.
মিমঃ যে টা আমাকে সহ প্রতিটা কালো মেয়ের সাথে ঘটে সেটাই বলছি।
জন্মের পর থেকেই শুরু হয় একটা কালো মেয়ের অবহেলা।
যখন একটা কালো মেয়ের বয়স ৫বছর থাকে।তখন সে ছুটে যায় খেলার সাথি
দের কাছে।কিন্তু সবাই তাকে কালো বলে অবহেলা করে।তখন সেই মেয়েটি
বাসায় এসে যখন তার মাকে প্রশ্ন করে যে”মা আমি কি দেখতে খুব
কালো?”।তখন শান্তনা শুধু মা ই দিয়ে থাকে এটা বলে যে,”কে বলেছে
কালো?যে বলেছে মিথ্যে বলেছে।আর কালো হলেও বা সমস্যা কি?কালো
মেয়েদের বর খুব ভালো হয়।”তারপর যখন সে স্কুলে যেতে শুরু করে।
তখনও ক্লাসমেট সহ সবার হাসি-ঠাট্টা, টিটকারির শিকার হয় বাসায় এসে
মাকে ঠিক একই প্রশ্ন টাই করে। আর মায়ের উত্তর টাও একই থেকে যায়।
যখন মেয়েটা আরো বড় হতে থাকে সব কিছু বুঝতে থাকে।
তখন সেই মেয়েটি বুঝতে পারে যে,সে সত্যি ই কালো একটা মেয়ে।
কিন্তু তারপরও সে বেচে থাকে একটি স্বপ্ন নিয়ে যে কালো মেয়েদের বর
অনেক ভালো হয়।কিন্তু এতোদিনের স্বপ্ন যখন বিয়ের পর ভেঙে যায়
তখন শুধু এক একটা কালো মেয়ে, এক একটা লাশ হয়ে বেচে থাকে।
এসব মেয়েদের অন্যসব মেয়েদের মতো অনেক গুলো টাকার চাহিদা
থাকেনা।এদের শুধু স্বামীর বুকে মাথা রেখে মরতে পারবার চাহিদা টাই শুধু থাকে।
(কেঁদে কেঁদে কথা গুলো বললো মিম।আর সত্যি বলতে ওর কথা গুলো শুনে
আমার চোখ থেকেই পানি বের হয়ে আসলো।আমি এ কি করলাম।একটা নষ্টা
মেয়ের জন্য ওকে ভুল বুঝলাম।আসলে সব মেয়েরাই যে এক হয় না সে ধারনা
টাই আমার ছিলো না।)
আমিঃ আসলে আপনার মা কথা গুলো কিন্তু মিথ্যে বলেননি। আজ আমাকে
আপনি যতোটা খারাপ ভাবছেন।আসলে এই ছেলেটাও ততোটা খারাপ না।
কোনো মেয়ে যখন একটা ছেলের জীবন থেকে ৪টা বছর মিথ্যে ভালোবাসা
দিয়ে যখন বাকি জীবন টাও নষ্ট করে চলে যায়।তখন সেই ছেলেটার জীবন
থেকে প্রেম-ভালোবাসা,আবেগ,মেয়েদের প্রতি সম্মান সব কিছু নষ্ট হয়ে যায়।
আর তাই এতোদিন আপনার সাথে ওরকম ব্যবহার করা হয়েছে।কিন্তু যখন
ছেলেটি এই ধারণা টা করতে পারে যে সব মেয়েরাই এক রকম হয় না।
তখন সেই ছেলেটিকে একটা ভুল শুধরানোর সুযোগ দেয়া উচিত।
মিমঃ প্লিজ আপনি কোনো সুযোগ চাইবেন না আমার কাছে।আমি
বলছি তো আপনার কোনো ভুল নেই।এটা জেনারেশনের প্রভাব।
আমিঃ আমি চাই সেই জেনারেশন কে ফাঁকি দিয়ে দুজন নতুন করে জীবন শুরু করতে।
মিমঃ কিন্তু আমি চাই না।
আমিঃ কেনো?
মিমঃ এমনি।
আমিঃ তাহলে তো সব মেয়েরাই এক ধরনের।ওরা কোনো
পুরুষের জীবন নষ্ট করতে পারলেও। গড়তে পারে না।
মিমঃ দেখুন আমি ওরকম না।
আমিঃ তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
মিমঃ দেখতে পাচ্ছেন তো যেতে দিচ্ছেন না কেনো?
আমিঃ ওকে।চলে যেতে চান তো।অবশ্যই যাবেন।কিন্তু আমার বাসা
থেকে আমার অনুমতি ছাড়া যেতে হলে আপনাকে ডিভোর্স পেপারে
সাইন করে যেতে হবে।কি রাজি আছেন?
মিমঃ না।
আমিঃ তাহলে যেতেও পারবেন না।
মিমঃ কিন্তু….
আমিঃ কোনো কিন্তু না।অনেক কিন্তু হয়েছে। আর কোনো ঝামেলা চাই না।
মিমঃ কিন্তু আমি থাকলে যে ঝামেলা হবেই।
আমিঃ ওটা ম্যানেজ করে নিবো।
মিমঃ কিন্তু আপনি যে রাগ করেন শুধু।
আমিঃ রাগ করবো না বলছি তো।আর আপনি করে তো অনেক কথাই বললাম।এখন তুমি করে বলি।
মিমঃ না,সেটা কি করে বলবো।আমার লজ্জা লাগে।
আমিঃ তুমি করে না বললে কিন্তু আবার রাগ করবো।
মিমঃ এই তো আবার রাগ করা শুরু করছেন।
আমিঃ এটা তো রাগ না।এটা তো বউ কে শাসন করলাম।
মিমঃ হুম।
আমিঃ বলোনা একটু তুমি করে।
মিমঃ আপনি চোখ বন্ধ করেন।
আমিঃ কি সামান্য তুমি শোনার জন্য চোখ বন্ধ করতে হবে?
মিমঃ হুম।আমার লজ্জা করে।
আমিঃ আচ্ছা চোখ বন্ধ করলাম।(বলেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম)
মিমঃ তুমি।
আমিঃ আবার বলো।
মিমঃ তুমি
আমিঃ আবার বলো।
মিমঃ তুমি
আমিঃ আবার।
মিমঃ আর পারবো না।
আমিঃ এখন থেকে তুমি করেই বলতে হবে।তা না হলে তোমার কথা গুলো আমার কানে আসবে না।(বলেই একটানে মিম কে খুব কাছে টেনে নিলাম।)
মিমঃ কি করছেন?
আমিঃ উহহহ,কিছু শুনছি না।কি বলছো?
মিমঃ ওহহ সরি।বলতেছি,কি করতেছো তুমি এসব?
আমিঃ বউয়ের সাথে যেটা করে সবাই।
মিমঃ ছাড়ো।
আমিঃ এতো সোজা।
মিমঃ ছাড়ো তো বলছি।
আমিঃ পিপড়া হয়ে এতো জোড় দেখাচ্ছো?
মিমঃ কাছে আসবা না।
আমিঃ কোনো কথা আর শুনছি না।
মিমঃ বলছি না কাছে আস………..(আর কোনো কথাই বলতে দিলাম না।ভালোবাসার রংধনু টা একে দিলাম ওর ঠোঁটে।ঠিক কতোক্ষন ওভাবে ছিলাম জানা নেই।)
মিমঃ কুত্তা,শয়তান কি করছো।(এসব বলেই খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে আমাকে।ওর এভাবে জড়িয়ে ধরা টাই আমাকে বলে দিচ্ছে যে কখনো হারাতে চায় না আমাকে।) এভাবে সারা জীবন ভালোবাসবে তো।।
আমিঃ তোমার মন কি বলে?
মিমঃ মন তো অনেক কিছুই বলে।তারপরও তুমি মুখে বলো না,শুনতে ভালো লাগে।
আমিঃ সারাজীবন ভালাবাসবো।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com