Breaking News

তীব্র ভালোবাসার অনুভূতি । পর্ব - ০৬




মিম ইমানের কথা শুনেও না শোনার ভান করলো,হেসে হেসে কিছুক্ষণ গল্প করলো প্রমী এবং ইমার সাথে।
তারপর ইমান সবাই কে ডিনার করাতে নিয়ে গেলো রেস্টুরেন্টে।সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে এসে দেখলো,
ইফতি সাহেব খবরের কাগজ হাতে ইজি চেয়ারে বসে আছে।ইমান চমকে গিয়ে ইফতি সাহেব কে বললো,
– “বাবা তুমি…!” ইফতি সাহেব মৃদু হেসে ছেলেকে বললেন,
– “বাবা…! একটু সারপ্রাইজ করে দিলাম তোমাদের সবাই কে…।” ইতি স্বামীর ওপর রেগে গিয়ে বললেন,
– “এই বুঝি তোমার সারপ্রাইজের নমুনা?”
– “আচ্ছা,ভুল হয়ে গেছে বাবাহ! তুমি রাগ করছ কেন এভাবে?” সাথে সাথেই একটা মেয়ে এসে ইতি কে জড়িয়ে ধরলো,মিম অবাক হয়ে জেইদা কে জিজ্ঞেস করলো,
– “আপু,ইনি কে…?” জেইদা মিমের কৌতুহল দেখে বলল,
– “ইনি ঐই বাড়ির বড় বউ রিকিয়া বিদেশ থেকে এসেছে।” মিম বলল,
– “তাহলে ভাইয়া…!” পেছন থেকে প্রমী বললো,
– “দু’বছর আগে সে রেসিং করতে গিয়ে বাইক এক্সিডেন্টে মারা গেছে।” মিম মন খারাপ করে তখন জাবিন এবং আজিন কে নিয়ে ঘরের দিকে এগিয়ে গেলো,রিকিয়া এগিয়ে এসে ইমান কে জিজ্ঞেস করলো,
– “ওই মেয়ে টি কে…?” ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
– “ভাবি,সে আমার হবু বউ…মা’ই তাকে আমার জন্য পছন্দ করেছে।” কথা টা যেন রিকিয়ার ঠিক হজম হলো না,সে অবাক চোখে বাড়িতে সবার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
ইফতি সাহেব একটু রাগান্বিত কণ্ঠে ছেলে কে বললেন,
– “তাহলে ও ‘ই’ সেই মেয়ে যাকে তুমি তুলে এনেছ রাস্তা থেকে…?” ইমান বাবার চোখে চোখ রেখে বলল,
– “হ্যাঁ,তোমার কি কোনো সমস্যা আছে তাতে?” ইফতি সাহেব রেগে গিয়ে ইতি কে বললেন,
– “আমাকে না জানিয়ে তুমি এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলে কি ভেবে…?” ইমান বললো,
– “মায়ের কোনো দোষ নেই বাবা,কারণ আমি পছন্দ করি ওনাকে।”
– “কিন্তু কেন…?”
– “ক’টা দিন যাক…এমনি ‘ই’ দেখতে পাবে।” রিকিয়া বলল,
– “তাই বলে ইমান,,,,তুমি বিয়ে করতে চাও একটা চালচুলোহীন মেয়ে কে…?” ইমান বলল,
– “নয়তো কি ভাবি আপনাকে বিয়ে করবো? এমন মনে হচ্ছে আপনার আমাকে দেখে…?” ইফতি সাহেব ছেলে কে বললেন,
– “বেয়াদবের মত আচরণ করছ কেন ইমান তুমি রিকিয়ার সাথে…?” ইমান বলল,
– “তো বাবা,তুমি কি এক্সপেক্ট করো আমার কাছ থেকে…? আমি তোমার বোনের এই মেয়ে কে বিয়ে করবো।
কেন? আমি কি মাথার দিব্যি দিয়ে রেখেছিলাম তোমাকে…? আমার আত্মীয়স্বজনে মধ্যে বিয়ে পছন্দ না বাবা হাজার বার বলেছি তোমাকে।”
.
– “কিন্তু…।”
– “কি কিন্তু…? নিজের সিদ্ধান্ত ভুলেও চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে না আমার কাঁধে।খবরদার বাবা,বলে দিচ্ছি এর ফল কিন্তু খুব খারাপ হবে।” ইফতি সাহেব ছেলের আর কথা বাড়ালেন না,চুপচাপ ঘরে এসে নিজের গা এলিয়ে দিলেন বিছানাতে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন লেবু চা বিছানার পাশে রাখা।
আর ইমান বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।উনি উঠে ছেলের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন,বললেন,
– “তোমার যখন এতোটাই মেয়ে টি কে পছন্দ,তখন আমার কোনো অসুবিধে নেই তাতে…। তবে আমি তাকে অবজারভেশনে রাখবো এবং দেখবো আমার ছেলে ঠিক কি দেখে দু’দিনের আসা মেয়ে টা কে এতো পছন্দ করেছে।” ইমান মিটিমিটি হেসে বললো,
– “রাতের জন্য সরি বাবা…! তবে সত্যিই আমি রুড বিহেভিয়ার করতে চাইনি তোমার সাথে।” ইফতি সাহেব হাসতে হাসতে ছেলের কাঁধে হাত রেখে বললেন,
– “আরে এখন নিচে চলো বাবা! পরের টা না হয়,পরেই ভেবে দেখা যাবে…?’ নিচে এসে ইফতি সাহেব খাবার টেবিলে এতো আয়োজন দেখে বললেন,
– “এতো ঝামেলা আবার কে করেছে রাত জেগে?” আজিন দাদা ভাই কে বলল,
– “কেন আমার আম্মু মণি…। আমার আম্মু মণিই এতো সব রান্না করেছে।” রিকিয়া বিরক্ত হয়ে প্রমী কে বলল,
– “বিয়েশাদি তো কিছুই হয়নি আর এখুনি ছেলেরা আম্মু বলে ডাকতে শুরু করেছে?” মিম চমকে রিকিয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো,ইমান হাসতে হাসতে বললো,
.
– “হয়নি যখন হবে…। আপনি এতো ভাবছেন কেন ভাবি? আপনা কে তো এই বাড়ি থেকে হাজার বার বিয়ে করার কথা বলা হয়েছে।” রিকিয়া দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
– “ইমান তুমি কি আমাকে বের করে দিতে চাইছ এই বাড়ি থেকে…?” ইমান ধূর্ত হেসে বললো,
– “কোই না তো…? ভাবছি,বিয়ের দিন আমার বউ কে সাজাবো আপনার হাতে।না মানে,আপনি আফটার অল আপনি একজন মেক-আপ আর্টিস্ট।
আমার পার্লার থেকে বউ সাজানোর খরচ টা বেঁচে যাবে।” ইমানের কথা শুনে সবাই ওর দিকে তাকিয়ে রইলো,ইমান বললো,
– “আশ্চর্য…! কি হলো? এভাবে তোমরা সবাই তাকিয়ে আছো কেন আমার দিকে? আমি ভাই হিসাবি মানুষ,
তাই আর কি অকপটে কথা টা বলে ফেললাম ভাবির কাছে।না মানে, বড় ভাবি তো মায়ের সমান…তা ছেলে কি একটু আবদার করতে পারে না তার পরম পুজ্জ নিয়ো ভাবি মায়ের কাছে…?” ইমান কথা শুনে প্রমী এবং ইমা হেসে ফেললো,পরক্ষণেই বলল,
– “ইয়ে মানে সরি’হ ভুল হয়ে গেছে।” রিকিয়া ফুঁসতে ফুঁসতে নিজের ঘরে চলে এলো,সবার খাওয়া শেষে মিম ইমান কে জিজ্ঞেস করলো,
– “আপনি ওমন করলেন কেন ওনার সাথে?” ইমান এগিয়ে এগিয়ে মিমের কানে ফিসফিস করে বললো,
– “কারণ আমি বাবা কে মিথ্যে বলেছি যে আমি খুব শীঘ্রই বিয়ে করছি আপনাকে…! আসলে এই ফুফাতো বোন মামাতো বোন বিয়ে করে সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাই নাঃ…! আশা করি বোঝাতে পেরেছি আপনাকে….?”
– “কিন্তু কেন?”
.
– “আপনার কি মনে হয়? ওই মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায় আমার অবুঝ এবং ভালোবাসার কাঙাল বাচ্চা দু’টো কে মায়ের ভালোবাসা দিতে…? নাঃ, মোটেই নাঃ,,,
কারণ ওই মহিলা চাইছে আমার কষ্টে উপার্জন করা পয়সা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ফুর্তি করে উড়িয়ে দিতে আর তা কখনোই হবে না।কারণ আমি এটা হতেই দেবো না আমার সাথে,কাজেই আমি আপনার কাছে দু’হাত জোড় করে সাহায্য চাইছি…। করবেন আমাকে…?” মিম ইমানের অসহায় চোখের চাওনি দেখে বলল,
– “হুমম! বলুন কি করতে হবে?” ইমান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
– “এখন না অফিস থেকে ফিরে এসে বলছি আপনা কে..।” ইমান চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ইমা প্রমী এসে মিম কে বলল,
– “আপু,,,,তুমি পার্টিতে যাবে আমাদের সাথে?” মিম দু’জনের গাল টেনে বললো,
– “মাথা খারাপ না কি…? তোমার ভাই জানলে তিনজন কে একেবারে মাটি দিয়ে দেবে।” ইমা বললো,
– “কচু…! চলো না আপু মজাই হবে।” মিম বললে,
– “যদি বাড়িতে সবাই জেনে যায়?”
– “আরে চিন্তা নেই,মা ও আমাদের সাপোর্ট এ আছে।”
– “কিন্তু?”
– “আরে কি কিন্তু মা? যা না ঘুরে আয় বাইরে থেকে…।”
– “কিন্তু তোমার ছেলে?”
– “আরে আমার ছেলে কি? তোর ছেলেপেলে ও যাচ্ছে তোর সাথে।” জাবিন এগিয়ে এসে মিম কে বলল,
– “চলো না ‘বিউটিফুল’ প্লিজ…। মজাই হবে।” মিম জাবিনের কথা শুনে হাসলো,বললো,
– “আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে।” ঘরের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় জেইদ সব শুনে ফেললো, মনেমনে বললো,
– “যাই,এই সব খবর ফাঁস করে আসি বড় ভাবির কাছে।” ও হাসিমুখে সামনের দিকে পা বাড়াতেই,হঠাৎ ইতি ওর মুখের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো,
.
– “খবরদার ‘জদু’…এই খবর গিয়ে লাগাবি না কারো কানের কাছে।যদি কেউ জানতে পারে,তুই তাইলে শেষ মা,তোর জন্মের মতো ভাত উঠে যাবে এই বাড়ি থেকে…।” জেইদা সব শুনে ভয় পেয়ে বললো,
– “ক্ষমা করে দেন আম্মা,আমার ভুল হয়ে গেছে।আমি কিছুই শুনিনি এবং জানি না ঘরের মধ্যে কি কথা হয়েছে?” তখন প্রমী এসে ওর মুখের সামনে পাঁচশো টাকার নোট ধরে বলল,
– “আমার কথা শুনে চললে,তোর বড় ভাবি যা দেয়,তার থেকে অনেক অনেক বেশি আমি দেবো তোকে।” তখন জেইদা পাঁচশো টাকার নোট টা প্রমীর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বললো,
– “ছোটো বুবু আপনি যা বলবেন তাই হবে।” পেছন থেকে ইমা এসে জেইদা কে বললো,
– “তাহলে তোর বড় ভাবি কে গিয়ে বল……..আপনি কি আপনার মামাশ্বশুরের বাসায় যাবেন বুবুদের সাথে?” জেইদার কথা শুনে রিকিয়া বললো,
– “নাঃ,ওখানে গিয়ে করবো? ওখানে ইমান থাকবে না ওর অফিসে কনফিডেনসিয়াল মিটিং আছে।” ইমার কথা মতো জেইদা বলল,
.
– “বড় ভাবি আপনি জান,আপনার যাওয়াই উচিত,ওই (মিম) মেয়ে টা যাচ্ছে বুবুদের সাথে।” রিকিয়া বলল,
– “যাচ্ছে যাক,আমার বিয়ে টা ইমানের সাথেই হবে।” ইমা আড়ি পেতে সব শুনে বিড়বিড় করে বললো,
– “বজ্জাত বেটি,সেই আশায় থাক…! আমরা হতে দিলেই তো হবে।” তারপর মিম ওরা সবাই ইমানের মামামামীর বাসায় এসে তাদের দেখা দিয়ে গেলো এবং মামা তো বোন শ্রুতি কে পার্টিতে নিয়ে এলো নিজেদের সাথে।পার্টিতে শ্রুতি মিমের সাথে গল্প করতে করতে বলল,
– “এবার বুঝলাম আপনু মণি,আমরা ভাইটুসু কেন এতো পছন্দ করে আপনাকে?” মিম বড় বড় চোখ করে শ্রুতি কে বলল,
– “বোন আমি যাকে দেখতে পাচ্ছি,তুমি কি দেখতে পাচ্ছ তাকে…?” অতঃপর আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো,
কেউ নেই।মিম দ্রুতই মুখটা ঢেকে ফেললো সাথে সাথে।” ইমানের বন্ধু সাদিক জিজ্ঞেস করলো,
– “কি ব্যাপার ভাই? তুই এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন ওই ছিপছিপে গড়নের মেয়েটির দিকে?” ইমান মৃদু হেসে চোখ সরিয়ে নিয়ে বলল,
– “না মানে,মনে হলো যেন আমি কোথায় দেখেছি ওনাকে?” মিম চুপচাপ হেঁটে ইমানের পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল,ইমান হঠাৎ পেছন থেকে ওকে ডেকে বললো,
– “ম্যাম..! আপনার এই ওয়ালেট টা পার্স থেকে পরে গেছে।” মিম খুব দ্রুতই ইমানের হাত থেকে পার্স টা নিয়ে পালিয়ে গেলো,ইমানের বন্ধুরা বলল,
– “যাহ বাবাহ…! ‘সুন্দরী’ একটা থ্যাংক’স পর্যন্ত দিয়ে গেলো না তোকে?” ইমান মেয়ে টি কে পালিয়ে যেতে দেখে মিটিমিটি হেসে বললো,
.
– “আপাতত থ্যাংক’স টা তোলা থাক! আমার সন্দেহ সঠিক হলো সুদ সমেত উসুল করে নেবো দু’টো কে…।” মিম ক্লাবের বাহিরে আসার পর,ইমা বলল,
– “আপু ঠিক আছো তুমি? প্লিজ রাগ করো না,আমরা জানতাম না…ভাইয়া ক্লাবে আসবে তার বন্ধুদের সাথে।” মিম নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,
– “মরতে না চাইলে বাসায় ফিরে চলো এখান থেকে…।” আজিন গাল ফুলিয়ে বলল,
– “এই পচা ড্যাড টা এখানে কেন এসেছে তার বন্ধুদের সাথে?” মিম বলল,
– “কেন এসেছে পরে দেখা যাবে…! এখন বাবা চলো এখান থেকে।” মিম ওরা বাড়িতে পৌঁছে দেখে ইমান লিভিং রুমে চা খাচ্ছে সবার সাথে বসে,তবে ওদের দেখা মাএই ইমান এগিয়ে এসে বলল,
– “কারো কোনো কষ্ট হয়নি তো পথেঘাটে…?” সবাই হাসিমুখে বললো,
– “কোই না তো…বেশ ভালোই লেগেছে সময় কাটিয়ে মামামামীর সাথে।” ইমান হাসিমুখে বললো,
– “হুমম…! সেটা তো বুঝতেই পারছি আমি এক একজনের চেহারা দেখে…!” মিম তারপর বাচ্চাদের রুমে নিয়ে এলো,হাত,মুখ ধুয়ে শীতের জামাকাপড় পরিয়ে পাঠিয়ে দিলো ইফতি সাহেবের কাছে।ইফতি সাহেব মিমের সাথে কথা বলার ইচ্ছে নিয়ে নাতিদের ঘরে এলেন এবং দেখতে পেলেন,
মিম খুব যত্ন নিয়ে গোছাচ্ছে ঘর টা কে…ঘরের কোথাও কোনো ময়লার ছিটেফোঁটা নেই বরং মেঝে,বিছানা,বালিশ উভয় চকচকে হয়ে আছে।মিমের হঠাৎ ইফতি সাহেবের দিকে নজর পরতেই ও এগিয়ে এসে বলল,
– “ক্ষমা করবেন,বুঝতে পারিনি।আপনার কিছু লাগবে?” মিমের মার্জিত মুখের ভাষা শুনে ইফতি সাহেব বললেন,
– “না না,ঔষধ খাইয়ে ছিলে ইতি কে?” মিম বললো,
.
– “জ্বি,একটু চা কিংবা কফি করে দেই আপনাকে?” ইফতি সাহেব বললেন,
– “না থাক! তবে বলছিলাম, যে একটু খেয়াল রেখো আমার নাতি দু’টোর দিকে।” তখন জাবিন এসে মিম’কে বলল,
– “আমার ঘুম এসেছে।” মিম বলল,
– “যাও গিয়ে শুয়ে পরো বাবা! আমি ভাই কে নিয়ে আসছি নিচ থেকে।” তখন ইমান এসে আজিন কে মিমের কোলে দিলো,মিম বিছানায় শুইয়ে দিলো ওকে…। ইফতি সাহেব কি যেন ভাবতে ভাবতে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন? ইমান এসে শুয়ে পরলো তখন ছেলেদের মাঝে…! মিম আমতা আমতা করে বলল,
– “আজ কি আপনি এখানে ঘুমবেন? ছেলেদের সাথে…?” ইমান হঠাৎ মিম কে ঝাড়ি মেরে বলল,
– “তার আগে আপনি বলুন,,,,
আপনি পার্টিতে গিয়েছিলেন কার সাথে?” মিম নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
– “কোই না তো? কোথায় যাবো আমি? আমি যে সারাক্ষণ বাসায় ছিলাম আপনার মামামামীর সাথে…।” ইমান হঠাৎ বিছানা ছেড়ে উঠে এসে মিম কে ওয়ালের সাথে চেপে ধরলো,বলল,
– “আপনি একদম মিথ্যে বলবেন না আমার কাছে।” মিম হাতে ব্যাথা পেয়ে কুঁকড়ে উঠলো,চোখ থেকে পানি বের হয়ে গেলো তার সাথে সাথে।তারপর সে কাঁপা কাঁপা গলায় ইমান কে বলল,
– “ক্ষমা করে দিন প্লিজ,আমার ভুল হয়ে গেছে।” ইমান রাগে গজগজ করতে করতে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো,মিম এসে চুপচাপ শুয়ে পরলো ছেলেদের মাঝে।
.
মাঝরাতে তার ঘুম ভেঙে গেলো,ঘুম ঘুম চোখে চেয়ে দেখলো ইমান ওর পায়ের কাছে বসে আছে।ও ভয় পেয়ে চুপচাপ জাবিন আজিন কে জড়িয়ে ধরলো,ইমানের মনে হলো যেন একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে সে মিমের সাথে।
আর তাই ও এসে আস্তে আজিনের পাশে শুয়ে পরলো,
সকালে মিম ঘুম থেকে উঠে দেখলো,একটা বলিষ্ঠ হাত ওকে আঁকড়ে ধরে আছে।ও যখন বুঝতে পারলো মানুষ টা আর কেউ নয় বরং ইমান,তখন তার লজ্জার পরিমাণ টা বেড়ে গেছে।তবে বেশ কিছুক্ষণ পর,
ইমানের ঘুম ভেঙে গেলো,উঠে দেখলো সেন্টার টেবিলের ওপরে ওর জন্য একটা কফির মগ রাখা আছে।
ও ফ্রেশ হয়ে কফি খেতে খেতে নিচে আসলো,তখন রিকিয়া এসে ইমানের বুকে হাত রেখে বললো,
– “তোমাকে যেভাবে দেখি না কেন সেভাবেই ভালো লাগে।” ইমান এক হ্রাস বিরক্তী নিয়ে রিকিয়া কে ঝাড়ি মেরে বলল,
.
– “স্কট সার্ভিস দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে অন্য জায়গায় গিয়ে দিন,আমার এসব পোষায় না ঠিক আছে?” মিমের সামনে ইমানের কাছ থেকে অপমানিত হয়ে রিকিয়া নিজের ঘরে চলে এলো।মিম ইমানের কথা শুনে বুঝতে পারলো সে এখনো রেগে আছে।” ও চুপচাপ এগিয়ে এসে ইমান কে সকালের নাস্তা করতে বললো,ইমান রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল,
– “আমি না খেলে আপনার কি তাতে?” মিম এগিয়ে এসে ইমানের হাত ধরে বললো,
– “আপনি আমার সন্তানের বাবা,আপনি না খেলে আমার খাওয়া কি করে হবে…?” ইমান বলল,
– “রেয়ালি…? তাহলে পার্টিতে গিয়েছিলেন কেন রাতে? তখন আপনার মনে হয়নি,আপনার সন্তানদের বাবার খারাপ লাগতে পারে? পার্টিতে যাওয়া পছন্দ করে না সে…!” তখন প্রমী,ইমা,জাবিন এবং আজিন এসে বলল,
– “ওর কোনো দোষ নেই,আমারই পার্টিতে নিয়ে গিয়েছিলাম ওকে।” ইতি এসে ছেলে কে বললেন,
– “আমি এর মদত দাতা বাবা,তুই আর প্লিজ বকাবকি করিস না মেয়ে টা কে…।” ইমান মিনিট দশেক সবার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে মিম কে বলল,
– “সবক’টাই খারাপ…আপনি আর কখনো মিশবেন না ওদের সাথে।”
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com