Breaking News

সাইকো জামাই । পর্ব -০৪

আমি রুমে ডুকতে যাবো ওমনি কেউ আমার হাত ধরলো, আমি পিছন ঘুরেই চমকে গেলাম।।
পিয়াস ভাইয়া, আমার মামাতো ভাই।
পিয়াস— কেমন আছো, অথৈ?
অথৈ— ভালো আছি।। আমার হাত টা ছাড়ো।।
পিয়াস আমার হাতটা ছেড়ে দিলো।।
আমি রুমে ডুকে দেখি ভাইয়া আর মেঘ কথা বলছে। আমাকে দেখে ভাইয়া আমার কাছে এসে,,
ভাইয়া— মেঘ, দেখো ভাই, আগে যা হয়েছে সব ভূলে যাও।।
আমার কারনে আমার বোনকে প্লিজ কষ্ট দিও না।।
ভাইয়ার কথা শুনে আমি একবার ভাইয়ার দিকে আর একবার মেঘের দিকে তাকালাম।
তারপর ভাইয়া রুম থেকে চলে গেলেন।
.
মেঘ আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো।।
মেঘ— আমার এত আদরের বউকে কি আমি কষ্ট দিতে পারি??
তারপর আবার হেসে দিলো।। আমার রুমে থাকতে একদম ভালো লাগছিলো না, তাও আবার মেঘের সাথে থাকার, কোনো প্রশ্নই আসে না।।
রুম থেকে বেরুতেই আবার পিয়াস ভাইয়ার সাথে দেখা হলো।। আমাকে দেখেই পিয়াস ভাইয়া হেসে দিলো।।
পিয়াস— কোথায় যাচ্ছো অথৈ??
অথৈ— নিচে।।
আমি কথাটা বলেই তারাতারি নিচে চলে আসলাম।। রান্না ঘরে ঢুকে দেখি আম্মু রান্না করছে।।
অথৈ— আম্মু তুমি রান্না ঘরে আসছো কেন?? তুমি না অসুস্থ??
আম্মু— আরে অসুস্থ না।। আমি ঠিক আছি। তুই যা সবাইরে চা দিয়ে আয়।
আমি সবাইকে চা দিলাম। বৃষ্টি তো আমাদের বাড়িতে এসে খুব খুশি।।
আমি আবার রান্না ঘরে এলাম।। আম্মুকে হেল্প করার জন্য।
আম্মু— মেঘকে চা দিয়েছিস??
আমি তো ভূলেই গেছিলাম ওর কথা।
আম্মু— যা ওকে চা দিয়ে আয়।।
আম্মুর হাত থেকে চা নিয়ে ভাবতাছি এখন না জানি কি করবে।।
আমার কাজিনগুলো কে বললাম ওরা বললো “তোর জামাই তুই নিয়া যা।।”
রুমে ডুকে দেখি ওনি মোবাইলে কি যেনো করছে।। আমাকে একবার দেখে আবার মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পরলেন।
অথৈ— চা,
.
মেঘ– কার চা??
আমার দিকে না তাকিয়েই বললো।।
অথৈ— তোমার।।
মেঘ– ওহ,, হাত বাড়িয়ে চা টা নিলো। মেঘ— তো মা,,,,,
আমাকে কিছু বলতে চায়ছিলো কিন্তু পারে নি।।
আমার কাজিন গুলো রুমে ডুকে যায়। ওরা ডুকেই মেঘের সাথে দুষ্টামি শুরু করে দিলো।।
আর মেঘ ও দুষ্টামি করছে ওদের সাথে।। তারপর সবাই দুপুরের খাবার খেলাম।।
ওরা মেঘকে নিয়ে বাইরে বের হলো।। সাথে আমাকেও যেতে হলো।
আমার কাজিনগুলার কান্ড দেখে না হেসে পারা যাচ্ছে না। আর মেঘ মনে হচ্ছে বিরক্ত হচ্ছে এখন।
মেঘের মুখটা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে। আমি একটু জোরেই হেসে দিলাম।।
.
মেঘ— খুব হাসছো দেখছি।। হাসির পরে কিন্তু কান্না…
মেঘের কথাটা শুনে আমি মেঘের দিকে তাকালাম। সাথে আমার মুখ থেকে হাসিটাও চলে গেলো। সন্ধায় আমরা বাড়িতে আসলাম।মেঘ রুমে এসেই শুয়ে পড়লো।। আহারে বেচারা হাপিয়ে গেছে একেবারে।
মেঘ— আমরা কিন্তু কাল চলে যাবো।।সকাল সকাল রেডি থেকো।
আমি মেঘের দিকে অসহায়ের মতো তাকালাম।।।
মেঘ– কোনো লাভ নাই এই ভাবে তাকিয়ে।
আমি আর কিছু বলতে পারবো না।। সত্যি আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো, সবাইকে ছেড়ে যেতে হবে ভাবলেই কান্না পাচ্ছে।।
ওয়াশরুমে চলে গেলাম।। ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই মেঘ গেলো।। তারপর দুজনেই নিচে গেলাম।।
নিচে সবার সাথে আড্ডা দিলাম।।তারপর খাবার খেলাম।।এত হই হল্লোরের মাঝে থাকতে আমার ভালো লাগছিলো না বলে খাবার খেয়েই আমি ছাদে চলে গেলাম। ছাদটা অনেক নিরব।। হালকা হালকা বাতাস বইছে, কুয়াশা পড়েছে, শীত শীত লাগছে। সকল নিরবতা ভেঙ্গে দিলো একটি কন্ঠস্বর,,”” এখানে একা একা কি করছো অথৈ?””
আমি পিছনে ঘুরে দেখি পিয়াস ভাইয়া। আমি কিছু না বলে চলে আসছিলাম। পিয়াস ভাইয়া পথ আটকে ধারালো।।
পিয়াস — অথৈ, প্লিজ আমার কথাগুলো একবার শুনো।।
ওর কথাগুলো এখন না শুনলে আমি এখান থেকে যেতে পারবো না।
তাই বললাম..
.
অথৈ– বলো, কি কথা??
পিয়াস ভাইয়া আমার একটু কাছে আসলো।।আর আমি একটু পিছিয়ে দাড়ালাম।
পিয়াস — অথৈ,, আমি এখোনো তোমাকে ভালোবাসি।। শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।।
অথৈ— পিয়াস ভাইয়া, আমি তোমাকে কতোবার বলবো, আমি তোমাকে ভালোবাসি না, আর তাছাড়া এখন আমার বিয়ে হয়ে গেছে,, এখন এই কথা কেনো বলছো।।
পিয়াস— বিয়ে হয়েছে ঠিক,, কিন্তু তুমি তো এই বিয়েতে রাজি ছিলে না।।
অথৈ— হুম, রাজি ছিলাম না। আমি আরও পড়ালেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন যখন বিয়ে হয়ে গেছে, তখন আমি বিয়েটা মেনে নিয়েছি। আর প্লিজ আমাকে ডিস্টার্ব করো না। আমার স্বামী দেখলে প্রবলেম হতে পারে।।
কথা গুলো আমি চলে আসার জন্য পা বাড়াতেই পিয়াস ভাইয়া আমাকে টান দিয়ে আমার কোমর ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিচ্ছে। আমি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি।
অথৈ— কি হচ্ছে,, আমাকে ছাড়ো,, ছাড়ো বলছি।।
পিয়াস ভাইয়ার হাত আমার কোমর থেকে পেটের উপরে চলে এসেছে।।
অথৈ— আমাকে ছাড়বে,, না হলে আমি কিন্তু চিৎকার করবো।।
পিয়াস— ছেড়ে দিবো।। শুধু বলো তুমি আমাকে ভালোবাসো।।
অথৈ— জীবনেও না।। ছাড়ো বলছি।।
“”অথৈ”” কে যেন আমাকে ডাকলো।।
ছাদের দরজার দিকে তাকাতেই দেখলাম মেঘ দাড়িয়ে আছে। মেঘের চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে।। পিয়াস ভাইয়া মেঘকে দেখে আমাকে ছেড়ে দিলো।। মেঘ আমার কাছে এসে দাড়ালো।।
মেঘ— কে ওনি??
.
আমার দিকে তাকিয়ে আর পিয়াস ভাইয়ার দিকে আঙ্গুল তুলে মুখে একটা হাসি নিয়ে বললো।। আমি মেঘের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর মুখে হাসি কিন্তু চোখগুলো লাল হয়ে আছে।।ওর চোখে আমি রাগ দেখতে পাচ্ছি।
অথৈ— আমার মামাতো ভাই।।
ভয়ে ভয়ে বললাম।
মেঘ— ওহ্,,,
পিয়াসের দিকে তাকালো মেঘ।।
মেঘ— হাই ভাইয়া, আমি মেঘ,, অথৈ এর হাসবেন্ড।
কথাটা বলে আমার দিকে তাকালো।।
মেঘ— অথৈ,, রুমে চলো।।
বলেই আমার হাত ধরে টানতে টানতে রুমে নিয়ে এলো,, দরজা টা খুব জোরে লাগালো। তারপর একটা সিগারেট জ্বালিয়ে টানতে লাগলো। আমি খুব বুঝতে পারছি মেঘ অনেক রেগে গেছে।।
অথৈ— মেঘ….
কথাটা বলতে পারলাম না।। মেঘ আমাকে কথা বলতে দিলো না।।
মেঘ– পিয়াসের সাথে তোমার কি সম্পর্ক??
যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে।
অথৈ— আমার মামাতো ভাই।।
.
মেঘ আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো।।
তারপর আমার দিকে এগোতে থাকলো। আর আমি ভয়ে পিছুতে থাকলাম। দেয়ালের সাথে মিশে গেলাম।। মেঘ দেয়ালে একটা হাত রেখে আরেক হাতে সিগারেটটা মুখে দিলো।।
মেঘ– শুধু ভাই,,, ভাই বুঝি বোনকে এইভাবে ধরে।
পিয়াস যেভাবে ধরেছিলো ঠিক সেই ভাবে ধরে মেঘ বললো।
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।। আমার চোখ থেকে শুধু পানি পড়ছে।।
মেঘ— ভালোবাসো পিয়াসকে??
মেঘের কথাশুনে আমার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
অথৈ— না,, না,, ও আমাকে ভালোবাসে,, বিশ্বাস করো,, আমি ওকে ভালোবাসি না।।
মেঘ — বিশ্বাস করলাম।।
কিন্তু ওই পিয়াস তো আমার বউয়ের শরীরে টাচ করেছে।।
এখানে এখানে টাচ করছিলো না।।
মেঘ আমার শাড়ির আচলটা সরিয়ে আমার পেটের উপর হাত রেখে বললো। মেঘ– বলো,, এইখানেই হাত রেখেছিলো তো ওই পিয়াস।।
আমি কিছু বলতে পারছি না,, শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।।
মেঘ– কি হলো,, বলছিস না কেনো,,
এবার মেঘ জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো।।আমি ভয় পেয়ে গেলাম।। গলা দিয়ে কথা বেরুলো না।। শুধু মাথা নেড়ে হ্যা বললাম।
.
মেঘ আমাকে একটানে বিছানায় ফেলে দিলো।।
তারপর জলন্ত সিগারেট টা আমার পেটের উপর চেপে ধরলো।।
আমি জোরে চিৎকার করতে চাইলে মেঘ আমার মুখ চেপে ধরলো।।
আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে।
মেঘ– চিৎকার করে না, সোনা। মেঘ আরো দুইবার সিগারেট টা চেপে ধরলো।।
অসহ্য যন্ত্রণা করছে।। মেঘ আমার মুখ থেকে হাত সরাতেই আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে দাড়িয়ে গেলাম।।
অথৈ— তুমি কি,,,,
শেষ করতে দিলো না কথা টা তার আগেই মেঘ আমাকে জোরে একটা চড় মারলো।। আমি ফ্লোরে পড়ে গেলাম, আমার চুল গুলোও খুলে গেলো।। এবার আমি একটু জোরেই কেদে দিলাম। মেঘ আমার চুল ধরে আমার মুখটা ওর দিকে ঘুরিয়ে নিলো।।
মেঘ— আমাকে ধাক্কা মারার সাহস কোথায় পেলে। তুমি শুধু আমার,, তোমাকে টাচ করার অধিকার শুধু আমার। অন্য কেউ যদি তোমাকে টাচ করে তাহলে এভাবেই তোমাকে কষ্ট পেতে হবে।।
অথৈ— যে আমাকে টাচ করবে, তাকে কষ্ট দাও, আমাকে কেনো কষ্ট দিচ্ছো।।
মেঘ— তোমাকে কষ্ট দিচ্ছি কারণ হলো,…
মেঘ থেমে গেলো।।
অথৈ— বলো,, কি কারণ??
মেঘ— চুপপ,,কোনো কথা হবে না।।
পরের বার থেকে ওই পিয়াস তোমার থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবে।। ওই ব্যবস্থা আমি করবো।।
এখন বলো ফার্স্ট এইড বক্স কোথায়?? মলম লাগাতে হবে।।
.
চলবে,,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com