গল্পঃ ভিলেন । পর্ব-০৬
খাবার না খেলে আপনি কি করে লড়াই করবেন আপনার প্রতিপক্ষ অর্থাৎ আমার সাথে…?” মিম কথা গুলো শুনেই চমকে ইমানের দিকে তাকিয়ে রইলো,ইমান মিম কে বলল,
– “বাহিরে চলুন! সবাই আপনার এবং আমার জন্য অপেক্ষা করছে আর তাছাড়া আমার কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ আছে। তবে আপনার কাছে আমাকে অপরাধী প্রমাণ করার মতো কোনো তথ্য প্রমাণ নেই মিসস…।
.
আপনাকে আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ খুঁজে আনতে হবে…।” মিম বিস্ময়ে চোখে ইমানের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো,ইমান হঠাৎ ওকে চোখ মেরে মিটিমিটি হেসে বেড়িয়ে গেলো বাথরুম থেকে…পরেরদিন,
সকালে মেয়ে কে এতটা ব্যস্ত হতে দেখে মাসুমা জিজ্ঞেস করলেন,
– “কি করে মা হন্তদন্ত হয়ে কোথায় যাচ্ছিস…? সকালের নাস্তা টা সেরে নে আমাদের সাথে বসে…।” মিম মাসুমা কে জড়িয়ে ধরে স্যান্ডুইচ মুখে পরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতে যেতে বললো,
– “সময় নেই না আমাকে আহসানউল্লাহ মেমোরিয়াল মানুষিক হাসপাতালে যেতে হবে…?” মাসুমা জিজ্ঞেস করলেন,
– “কেন..?” মিম তার প্রশ্নের কোনো উওর না করে খুব দ্রুত’ই রিকশায় চেপে বসে…।” মিম আহসানউল্লাহ মেমোরিয়াল মানুষিক হাসপাতালে এসে দুইশো তিন নম্বর রুমে যাওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করতে লাগলো,
তবে সে দরজার কাছে এসেই হঠাৎ করে ধাক্কা খায় কারো সাথে…। এক হ্রাস বিরক্তি নিয়ে মিম মুখ তুলে সামনে তাকিয়ে দেখে তার সামনে আর কেউ নয় বরং ইমান দাঁড়িয়ে আছে…।” মিম কে দেখে ইমান কিছু বলার আগেই অবন্তী বলে ওঠে,
.
– “তুমি আবার এখানে এসেছ কেন…? তোমাকে দেখলেই মেজাজ টা আমার নড়বড়ে হয়ে যায় নিজের জায়গা থেকে…।” মিম অবন্তী কে উল্টো ঝাড়ি মেরে বলে,
– “গো টু হেল! আমার এতো বাজে করা খরচ করার কোনো সময় নেই ঠিক আছে…?” তখন ডাক্তার খন্দকার এসে ইমান কে বললো,
– “স্যার! এই বাচ্চাটি অনেক এগ্রেসিভ আপনারা প্লিজ যাবেন না ওর কাছে আর তাছাড়া এর আগে ও আমার দুই সহকর্মী কে মেরে জখম করেছে এবং তাই আমি চাইনা আপনাদের কারো জীবন হুমকির মুখে ফেলে দিতে…।” মিম নিজের অবস্থানে স্ট্রিক্ট থেকে ডাক্তার খন্দকার কে বলল,
– “শুনুন! কেউ যাক আর না যাক আমি ঠিকই যাবো ওর কাছে…।” অবন্তী ইমান কে বাঁধা দিয়ে বললো,
– “শুনলে তো…? যেও না প্লিজ,নাহলে ও তোমার কোনো ক্ষতি করে দেবে…।” ইমান ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,
– “আমার পথ ছাড়ো অবন্তী সিনক্রিয়েট করো না ঠিক আছে…?” অবন্তী ইমানের পথ ছেড়ে দাঁড়ালো,ইমান দ্রুত পায়ে রুমে ঢুকে গেলো মিমের সাথে সাথে…।
.
আর তখন বাচ্চা মেয়েটি পুতুল নিয়ে খেলছিল,হঠাৎ ওর হাত থেকে পুতুল টা ছিটকে গিয়ে পরলো অবন্তীর পায়ের কাছে…। অবন্তী পুতুল টা তুলে নিয়ে বাহিরে ছুড়ে ফেলে দিলো সাথে সাথেই ওই বাচ্চা মেয়েটি এগ্রেসিভ হয়ে গিয়ে মারতে শুরু করলো তাকে…।
সবাই মিলে বাচ্চা টি কে শান্ত করার চেষ্টা করলো,ও আরও এগ্রেসিভ হয়ে একটা চাকু ছুড়ে মারলো ইমানের দিকে,
তবে এ যাত্রায় মিম ইমান কে বাঁচিয়ে নিলো,ডাক্তার খন্দকার কে বললো,
– “কাওকে দিয়ে তাড়াতাড়ি ওই পুতুল টা আনিয়ে দিন নিচ থেকে…।” ডাক্তার খন্দকার নিজে গিয়ে পুতুল টা এনে মিমের হাতে দিলেন,মিম পুতুল টা দেখিয়ে বাচ্চাটি কে বলল,
– “শান্ত হও বাবু” দেখ,তোমার পুতুল টা আমার কাছে আছে…?” প্রথম প্রথম বাচ্চাটি জিনিসপএ ছুড়তে থাকলে ও হঠাৎ করে খুব শান্ত হয়ে যায় মিম কে দেখে আর তখন অবন্তী বাচ্চাটি কে মারতে ওর কাছে এগিয়ে যেতেই মিম আচমকা ঠাস ঠাস করে দু’টো চড় মারে ওকে।
.
অবন্তী গালে হাত দিয়ে ইমানের দিকে তাকিয়ে থাকলে ও ইমানের কোনো ভাবান্তর ঘটেনি তাতে…। মিম ধীরে ধীরে পুতুল টা নিয়ে এক পা এক পা বাচ্চাটির কাছে এগিয়ে এসে বললো,
– “নাও বাবু! এই দেখ তোমার পুতুল আমার কাছে আছে।” বাচ্চাটি মুহূর্তে মিমের হাত থেকে পুতুল টা নিয়ে নিলো,ডাক্তার খন্দকার পেছন থেকে মিম কে বলল,
– “ম্যাম! আপনি প্লিজ যাবেন না ওর কাছে…।” মিম তার কথায় পাত্তা দিলো না বাচ্চাটির মাথায় হাত রেখে আস্তে আস্তে হাত বুলিয়ে বরং আদর করতে লাগলো তাকে…।
বাচ্চাটি শান্ত হয়ে মিমের দিকে তাকিয়ে রইলো,তারপর মৃদু হাসলো ওকে দেখে,মিম বাচ্চাটি কে হঠাৎ করে কোলে তুলে নিলো…। বাচ্চাটি শান্ত হয়ে পুতুল নিয়ে খেলতে লাগলো ওর কোলে বসে…। ইমান এবার ডাক্তার খন্দকার কে জিজ্ঞেস করলো,
.
– “আপনারা কিছু খাইয়েছেন ওকে…?” ডাক্তার বললেন,
– “এতোদিন ধরে বিভিন্ন খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু ওর শরীর আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে তাতে।
আসলে আমরা বুঝতে পারছিনা স্যার! ও কি খায়? বা কি খেলে ও তৃপ্তি পাবে…?” ইমান বললো,
– “আপনারা ওকে সব রকমের খাবার খাইয়ে দেখেছেন…?”
– “দেখেছি কিন্তু সে ছুঁয়ে ও দেখেনি সে গুলোকে,ইনফ্যাক্ট ওকে দুধ,ডিম এবং চকলেট দিয়ে দেখেছি তবে ও ফেলে দিয়েছে সে গুলো কে…।” মিম বাচ্চাটি কে আদর করতে করতে ডাক্তার কে জিজ্ঞেস করলো,
– “তাহলে এমন কিছু…? যা দেখে ও খুব এগ্রেসিভ হয়ে উঠেছে…?” ডাক্তার খন্দকার তখন কিছু বলতে পারলো না,তবে ওয়ার্ড বয় রাহুল বললো,
– “ম্যাম! ও না একদিন পানি দেখে খুব অদ্ভুত ব্যবহার করেছে…।” মিম মৃদু হেসে বলল,
– “জান ঝটপট গিয়ে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে আসুন ওকে আগে পানি খাওয়াতে হবে…।”
ইমান সে ব্যবস্থা করে দিলো,মিম একটা গ্লাস বিশুদ্ধ পানি এগিয়ে দিলো বাচ্চা মেয়েটির কাছে পানির গ্লাস দেখেই তৃষ্ণার্ত বাচ্চা মেয়েটি খুশি হয়ে পানি পান করতে লাগলো,মিম খেয়াল করে দেখলো বাচ্চা মেয়েটি’র চোখ হালকা নীল হয়ে গেছে…। ও তা দেখে খুব চমকে গেলো এবং মনেমনে বললো,
– “আচ্ছা! ওর সাথে কি সেই ভয়ংকর নীল চোখের লোকটার কোনো সম্পর্ক আছে…?” তখন মিমের ভাবনায় ছেদ পরলো কারণ বাচ্চাটি আবারও পানি খেতে চাইলো ওর কাছে…।” নার্স জয়া তখন জগ থেকে গ্লাসে জল ঢেলে মিমের কাছে দিলো,মিম মৃদু হেসে বলল,
.
– “এ পানিতে হবে না বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে…।” জয়া বললেন,
– “বিশুদ্ধ পানি কি আবার? আমরা ও এই পানি খাই ম্যাম! এই পানিতে কোনো সমস্যা আছে…?” মিম মৃদু হেসে বলল,
– “নেই তবে ওর শরীর নিতে পারছে না এই পানি টা কে…।” খন্দকার বললেন,
– “হ্যাঁ! ম্যাম আমি আপনার সাথে এক মত কারণ এই পানি খেয়ে ওর শরীর বেশ কয়েক বার খারাপ হয়ে গেছে আর তাই রাইস স্যালাইন দিয়ে রেখেছিলাম যাতে ওর খাদ্য ঘাটতি টা পুরন হয় এবং ওর শরীর যেন ঠিক থাকে…।” এরি মধ্যে ওয়ার্ড বয় রাহুল নিজের কৌতূহল বশত মিম কে জিজ্ঞেস করলো,
– “ম্যাম! আপনি ওকে শান্ত করলেন কি ভাবে…?” মিম মৃদু হেসে বলল,
– “আসলে আমার নানু ভাই একজন জীববিজ্ঞানী ছিলেন আর এসব কিছু’ই শেখা তার কাছ থেকে…। তাকে দেখতাম বিভিন্ন বিপজ্জনক প্রাণী কে সুন্দর পরে হ্যান্ডেল করতে,আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম তার দিকে…।
তবে আজকাল মনে হয় যেন মানুষ হল পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী কারণ তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে,তারা তো পশুর চেয়েও ও অধম,পশুর ও অনেক মায়া-মমতা আছে।” মিমের কথার সারমর্ম বুঝতে পেরে ইমান মনেমনে বললো,
.
– “এভাবে আপনি কি করে কোনো প্রমাণ ছাড়া’ই অপরাধী বানিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিলেন আমাকে…?
না মানে,আমার কি খারাপ লাগে না? আমার সত্যি খুব খারাপ লাগে আমার প্রতি আপনার ভাবনা দেখে…।” পরক্ষণেই ইমান ভাবনার জগৎ থেকে বেড়িয়ে এলো,অবন্তী ইমানের হাত চেপে ধরে বলল,
– “প্লিজ চলো এখান থেকে…।” ইমান অবন্তীর কথা শুনে ও গ্রাহ্য করলো না আর তা দেখে অবন্তী রেগে তেড়ে গেলো বাচ্চা মেয়েটির কাছে,ইমান অবন্তী কে বাঁধা দিয়ে বলল,
– “বেশি বাড়াবাড়ি করো না ‘অত্নি’ তোমার মাথার ঠিক নেই,রেগে আছো তুমি প্লিজ এখন যাও এখান থেকে…।” অবন্তী অবাক চোখে ইমানের দিকে তাকিয়ে রইলো,বাচ্চা মেয়ে টা হঠাৎ কি যেন দেখে ভয় পেয়ে মিম কে জড়িয়ে ধরলো সাথে সাথে…।
ইমান এগিয়ে এসে মেয়েটির গায়ে হাত বুলোতে লাগলো,বাচ্চা মেয়েটি মৃদু হেসে সবাইকে চমকে দিয়ে জড়িয়ে ধরলো তাকে…।
মিম একটুও অবাক হলো না ওর প্রথম থেকেই মনে হচ্ছে ইমানের হয়তো কোনো যোগসাজশ নেই এ সবের সাথে…।
ইমান বাচ্চা মেয়েটি কে জড়িয়ে ধরে আদর করতে লাগলো,চকলেট বের করে দিলো ওর হাতে,ও খেলো না মিম বললো,
.
– “ওকে শুধু বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে কারণ এটাই ওর খাবার ও শুধুই পানি খেয়ে সুস্থ থাকবে..।” ইমান উত্তেজিত হয়ে মিম কে প্রশ্ন করে বসলো,
– “তা কি করে সম্ভব? খাবার না খেয়ে ও শুধু পানি খেয়ে কি করে বাঁচবে…?” মিম শুধু মুচকি হেসে বললো,
– “সেটা আমাকে না জিজ্ঞেস করে যারা ওকে এমন করে বানিয়েছে ওর ছোটো বেলা টা কেড়ে নিয়েছে গিয়ে জিজ্ঞেস করুণ তাদের কে…। কেন তারা এমন করলো? আর নিষ্পাপ বাচ্চাটি কি দোষ করেছে…?” ইমান চুপ করে রইলো,মিম আবারও কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে লাগলো তাকে,
এরপর সে বাসায় ফেরার জন্য প্রস্তুত হলো…। তখন বাচ্চাটি ওর হাত টেনে ধরলো পেছন থেকে…। মিম ওর কপালে চুমু খেয়ে বলল,
– “আমি তোমার কাছে খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো বাবু আর তারপর তোমাকে নিয়ে যাবো নিজের কাছে…।” কি জানি বাচ্চাটি কি বুঝলো? জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো মিমের হাতে…।” মিম একরকম নিজের মন কে শক্ত রেখে বাচ্চাটি কে ছেড়ে চলে এলো,
পুলিশ অফিসার কে অনুরোধ করলো বাচ্চাটির সিকিউরিটি বাড়িয়ে দিতে…। তারপর মিম ওর এক কলিগের মাধ্যমে লাইফ ফাউন্ডেশনের পুরোনো অফিস সম্পর্কে কিছু তথ্য পেলো আর তাই ও দু’দিন পরে একটা জরুরী প্রেস ব্রিফিংয়ের জন্য টিম নিয়ে বেড়িয়ে পরলো ব্রাহ্মণ বাড়িয়ার উদ্দেশ্যে…।
কিন্তু পথে বাঁধলো বিপত্তি হঠাৎ গাড়ি টা মাঝ রাস্তায় এসে খারাপ হয়ে গিয়েছে…এদিকে সন্ধ্যে হয়ে এলো প্রায় সবাই বুঝতে পারলো না কি করবে…?
.
তখন স্বাধীনের বুদ্ধিতে রাস্তায় পাশেই জঙ্গলের মধ্যে ফায়ার ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হলো,হঠাৎ ইমান এসে মিম কে বললো,
– “আপনিও দেখছি আটকে গেছেন এই জঙ্গলে এসে…?” মিম যেন হঠাৎ ইমানের কণ্ঠ শুনে আকাশ থেকে পরলো,পেছনে ফিরে দেখলো সে তার তিন থেকে চার জন বডিগার্ডের সাথে দাঁড়িয়ে আছে…। ও ইমান কে ইগনোর করার চেষ্টা করলো,তবে ইমান এসে থেকেই নাছোড়বান্দা হয়ে ঘুরঘুর করতে লাগলো মিমের আশেপাশে…।
মিম যত সম্ভব এর টিমের সাথেই থাকার চেষ্টা করছিল,বারবার তার মনে হতে লাগলো ইমান ওর ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এসেছে।
তবে তা সত্য নয়,ইমান নিজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য’ই ফাউন্ডেশনের পুরোনো অফিসে এসেছে…।
ইমান হঠাৎ মিম কে জিজ্ঞেস করলো,
– “কফি খাবেন…? গায়ে কিছু দিচ্ছেন না কেন আপনি? খুব শীত পরছে আজকে…।” মিম ইমানের কথার কোনো উওর করলো না একটা চাদর নিয়ে এসে ছিল সেটা ভুল বশত পানি পরে ভিজে গেছে একটু আগে।
স্বাধীন নিজের কোর্ট টা খুলে মিমের গায়ে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলো,তবে মিম তাকে বাঁধা দিয়ে বলল,
– “আপনি গায়ে দিন জনাব আপনার ঠাণ্ডা লাগবে…।” মিমের এই হাবভাব ইমানের একটু ও পছন্দ হলো না সে হঠাৎ উঠে এসে নিজের ওভার কোর্টের মধ্যে টেনে নিলো তাকে…।
মিম খুব লজ্জা পেলো আবার ভালো ও লাগছিল এতক্ষণ পর গরম গরম কোনোকিছুর সংস্পর্শে এসে…।
ইমান জোর করেই মিম কে কফি খেতে বললো,তারপর জিজ্ঞেস করল,
– “এবার ভালো লাগছে…?” মিম বললো,
.
– “হুমম! আসলে ওই আমার চাদর টা পানি পরে ভিজে গেছে…।” তারপর হঠাৎ মিম ছিটকে ইমানের কাছ থেকে দূরে সরে গেলো,ইমান কিছু একটা আন্দাজ করে বললো,
– “আরে এই বিপদে শত্রুতা সাইডে রাখুন,বন্ধু হয়ে থাকুন প্লিজ আমার পাশে…।” তখন হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো,উপায়ান্তর না দেখে ইমান মিম কে টেনে নিয়ে গিয়ে ঢুকে বসলো গাড়িতে…।
মিম হালকা ভিজে গেলো আর ওকে কাঁপতে দেখে ইমান সাথে সাথে ওভার কোট দিয়ে ঢেকে দিলো ওর পুরো শরীর টা কে…। এদিকে বৃষ্টি থামার নাম নেই স্বাধীন,রুবেল আর অনিল মিম কে নিয়ে দুশ্চিন্তা করে যাচ্ছে…। ইমানের শরীরে উত্তাপ পেয়ে মিম এবার কিছু টা সুস্থ,তবে তার খুব লজ্জা করছে,একেই সে ইমানের কোলে বসে তারপর আবার একে অপরের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছে।
মিম চুপচাপ হাত খোঁপা করে অবাধ্য চুল গুলো নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসলো,তবে ইমানের চাহনি মিম কে বড্ড বেশি অস্থির করে তুলছে…। মিম ইমানের কোলর ওপর থেকে সরে আসতে চাইলো,ইমান বলল,
– “লাভ নেই বর্ষার জলে পাশের সিট গুলো ভিজে গেছে…।” অগ্যতা মিম তার কোলেই বসে রইলো,কিছুক্ষণ পর,
ইমান খেয়াল করে দেখলো মিম ওর কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে,
.
তাই ও খুব সন্তর্পণে মিমের চুল গুলো কানের পাশে গুঁজে দিলো,তবে মিম তখনও না ঘুমিয়ে চুপচাপ চোখ বুঝে আছে…। খুব লজ্জা করছে তার,সে বুঝতে পারছে ইমান তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
মিনিট পাঁচেক পর নিজের চোখ দু’টো মিমের ওপর থেকে সরিয়ে নিলো মনেমনে বললো,
– “দশ বছরের সম্পর্কে আমার কখনো এমন দিন দেখতে হয়নি অবন্তীর সাথে…।
বরাবর আমি আমাদের সম্পর্কে লয়াল থেকেছি অবন্তী কে ও বারবার বুঝিয়েছি যা হওয়ার আমাদের বিয়ের পরেই হবে।
যেখানে বিবাহ বহির্ভূত কোনো সম্পর্কে থাকাই পাপ,সেখানে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েই বা কি হবে…?
জীবন পাপা কম করিনি,পাপের বোঝা কমাতে হবে…। কিন্তু একজনের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে থাকার পরে অন্য আরেকজন কে নিজের মনে জায়গা দেওয়া এর মানে কি…?
প্রথমে যেটা ছিল সেটা শুধুই আবেগ? কোনো ভালোবাসা ছিল না তার মাঝে?” এর মধ্যে সে হঠাৎ ভাবনার জগৎ থেকে বেড়িয়ে এলো,ভালো করে তাকিয়ে দেখলো মিম তার ব্লেজারের কলার খামচে ধরে ঘুমিয়ে আছে। মিমের হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো এবং সে তাকিয়ে দেখলো ইমান তার দিকে তাকিয়ে আছে,ও সঙ্গে সঙ্গে চোখ সরিয়ে নিলো,ইমান জিজ্ঞেস করলো,
– “ভয় পাচ্ছেন কেন আপনি? আমার চোখে কি আছে…?” মিম বলল,
– “কিছু না,বৃষ্টি কি থামবে না আজ রাতে…?” আমরা কি এভাবেই থাকবো…? আমি চাই না এভাবে থাকতে আপনার সাথে।” ইমান জিজ্ঞেস করলো,
– “কেন কেন? আপনার কি মনে হয় আমার চরিত্রে সমস্যা আছে…?” মিম বলল,
– “জানি নাঃ!” ইমান বললো,
– “আপনার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে যেন আমি রেপ করার জন্য তুলে এনেছি আপনাকে…।” মিম বলল,
– “করতে ও পারেন,ভরসা নেই আপনাকে…।”
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com