তীব্র ভালোবাসার অনুভূতি । পর্ব - ০১
তার চোখের সামনে শুধুই ভেসে উঠছে তার স্বামীর অন্য নারীর সাথে নগ্নতার আদিম দৃশ্য।তবুও কিভাবে সে যেন মনে সাহস জুগিয়ে তার পরিচিত কাওকে ফোন করে কিছু কাগজ-পত্র তৈরি হয়ে করে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে আসতে বলল,
রাতে বাসায় ফিরে আরিশ মিম’কে চুপচাপ দেখে বললো,
– “কি হয়েছে আজ তোমার? এতো চুপচাপ কেন তুমি হুমম…! মায়ের সাথে আবারো কোনো বিষয় নিয়ে ঝামেলা করেছ?” মিম কোনো ভণিতা করে পরিষ্কার গলায় বলল,
– “তোমার নতুন বেড পার্টনার থুড়ি…! আদ্রিতা কে বিয়ে কবে করছ?” আরিশ কিছুক্ষণের জন্য থমকে গিয়ে মিম’কে শান্ত গলায় বললো,
– “তুমি আমাকে আবারো ভুল বুঝেছ।” মিম হাসতে হাসতে বলল,
– “হোটেলন ব্লু মুন,রুম নম্বর দুইশো বিষে তাহলে তুমি প্রজেক্টের কাজ করতে গিয়েছিলে আরুিশ? তুমি এটাই বলতে চাইছ?”
– “না মানে আমার কথা শোনো মিম…! আমি জানি আমি একটা ভুল করে ফেলেছি,প্লিজ আমাকে আর একটি বার সুযোগ দিয়ে দেখে।” মিম হাসিমুখে বললো,
– “আমি এই কাজ করলে তুমি আমাকে দ্বিতীয় বার সুযোগ দিতে? কি হলো? বলো? এখন কেন মুখে কুলুপ এঁটেছ?
দু’মাস ও হয়নি আমাদের সন্তান পৃথিবীতে আসার আগেই আল্লাহ তাআ’লা তাকে তার কাছে ডেকে নিয়েছে আর তুমি সব জায়গায় এমন ফষ্টিনষ্টি করে বেড়াচ্ছ?
.
লজ্জা নেই না তোমার? তোমার বাবা যে কাজ গুলো তোমা মায়ের সাথে করেছিল তুমিও ঠিক সেগুলো আমার সাথে করছ।তোমার কি মনে হয় আমার আত্মসম্মান নেই? গন্ডারের চামড়া আমার? আমি এভাবেই সারাজীবন সব সহ্য করবো? দেখ আরিশ,আমি আর তোমার সাথে বেশি কথা বলতে চাই না বাবার বাড়িতে চলে যাচ্ছি ডিভোর্স পেপার তৈরি করে পাঠিয়ে দেবো।” তখন আরিশ সিগারেট ধরাতে ধরাতে বলল,
– “ভেবে বলছ? তোমার বাবার বাসায় আদৌও তোমার জায়গা হবে তো…!” মিম বলল,
– “তা ঠিক জানি না…! তবুও এই চোরাবালি থেকে মুক্তি পাবো।” আরিশ হঠাৎ মিমের হাত চেপে ধরে বললো,
– “তুমি বললে আমি শুধরে যাবো,প্লিজ চলে যেও না।”
– “তুমি আসলে কি চাইছ? আমি তোমার মা না আরিশ যে মুখ বুঝে সব সহ্য করবো।” সকাল সকাল মেয়ে কে বাড়িতে দেখে হাবিবুর রহমান সাহেব অবাক হয়ে বললেন,
– “কি হয়েছে মা? সব ঠিক আছে তো…!” মিম নিজের ঘরে ঢুকে তনুজা কে দেখে বললো,
– “আশ্চর্য..! ছোটো ভাবি তুমি আমার ঘরে কি করছ?” পেছন থেকে রহিমা মেয়ে কে বললেন,
– “তোর ছোটো ভাবির এই ঘর টা বেশ পছন্দ মা,জানিস তো? আর তাই….”
– “তাই কি মা? আমাকে কি তোমরা খরচের খাতায় ফেলে দিয়েছ? আমার কি একটু শান্তিতে থাকার অধিকার নেই? তোমরা দেখে শুনেই দেখছি আমাকে একটা চরিত্রহীন লোকের হাতে তুলে দিয়েছ।” মেয়ের কথা শুনে হাবিবুর রহমান সাহেব বললেন,
.
– “মা তুই কি আবারো তোর শাশুড়ী ননদের সাথে ঝামেলা করে এই বাড়িতে এসেছ?” মিম বললো,
– “সব যখন জানোই তখন এসে আবার কেন জিজ্ঞেস করছ?” সাথে সাথে ফাইয়াজ বলল,
– “বোন এবার কিন্তু তুমি বাবার সাথে বেয়াদবি শুরু করেছ?”
– “বেয়াদবির তুমি কি দেখলে বড় ভাইয়া যে এতো বড় বড় কথা বলছ? শুনে রাখো বাবার বোনের ছেলের (আরিশ) অন্য মেয়ের সাথে নোংরা সম্পর্ক,আমি তাকে বিয়ে করতে চাইনি তোমরাই ওই চরিএহীন ছেলে টা কে আমার ঘরে চাপিয়ে দিয়েছ।” হাবিবুর রহমান সাহেব মেয়ের কথা শুনে কিছুক্ষণ অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে সবার উদ্দেশ্যে বললেন,
– “তোমরা সবাই আমার মেয়ে টা কে একা থাকতে দাও,আমি আজি এই ব্যাপারে জাইমার সাথে কথা বলবো।” জাইমা নিজের ভাইয়ের মুখে ছেলের কুকর্মের কথা শুনে লজ্জা পেলো,আরিশ হাবিবুর রহমান সাহেব কে বলল,
– “বাবা! আমি একবার ভুল করে ফেলেছি,তবে আর কখনো করবো না।মিম ফিরে এলেই আমি শুধরে যাবো।
ও আমাকে একবার সুযোগ দিয়ে দেখুক না বাবা…! আমি সত্যি পাল্টে যাবো।” হাবিবুর রহমান সাহেব আরিশের কথা শুনে এসে মেয়ে বলল,
– “মা জানি হয়তো তোমার শুনতে খারাপ লাগবে,কিন্তু মানুষ মাত্রই ভুল হয়,তবে তুমি একবার আরিশ কে সুযোগ দিয়ে দেখো?” মিম বলল,
.
– “না মানে না…! একবার বললে কি তোমরা বুঝতে পারো না বাবা? আর কতবার বলবো?” রহিমা মেয়ের গায়ে হাত বুলতে বুলতে বললেন,
– “ডিভোর্সি মেয়েদের এই সমাজে কত খোটা শুনতে হয় মা জানিস তো?”
– “শুনলে আমি শুনবো মা? তোমরা আমাকে বারেবারে এসে কি বোঝাতে চাইছ? যেখানে আজ আমার লেখাপড়া করে চাকরিবাকরি করার কথা সেখানে তোমরাই আমার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে ফেলেছ।” মেয়ের কথা শুনে হাবিবুর রহমান একটু ভারী গলায় বললেন,
– “তাহলে তোমার আর এই বাড়িতে কোনো জায়গা হবে না বুঝেছ?” মিম হাসিমুখে বলল,
– “দরকার নেই,তোমরাই যখন আমার কেউ না তখন পরের কথা আর কি বলবো? একজনকে পছন্দ করতাম আর সেই দোষেই বিয়ে দিতে গিয়ে একটা চরিত্রহীন লম্পট লোককে তোমরা আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছ।আসলে দোষ এখানে কারো না দোষ আমার কপালের তবুও আমার কোনো কিছু যায় আসে না বুঝেছ? তোমাদের সম্মানের কথা ভেবে এতকাল ধরে চুল ছিলাম আর কতকাল থাকবো? তোমাদের যখন আমার প্রতি কোনো সহানুভূতি নেই তাহলে আমি কেন রাখবো?” হাবিবুর রহমান সাহেব মেয়ের কথা শুনে রেগে গিয়ে বললেন,
– “তাহলে তুমি চলে যেতে পারো আর ভেবো না আর কখনো তোমাকে এই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেবো।” মিম বললো,
.
– “চাই না আমার অনুমতি…! আমি আমার জীবনে আমার মতো করেই স্বাধীন ভাবে বাঁচবো।” ডিভোর্স পেপারে সাক্ষর করার ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগে আরিশ বললো,
– “প্লিজ,মিম আর একবার ভেবে দেখো…!” তবে মিম পেপারে সাক্ষর করে আরিশের মুখের ওপরে ছুড়ে মেরে বললো,
– “তুমি আমার জন্য না আর আমি তোমার জন্য না এটা হওয়ার ছিল এবং কুকুরের লেজ কখনোই সোজ হয় না গত দু’বছর ধরে চাক্ষুষ দেখছি তো…।” তখন হাবিবুর রহমান সাহেব মেয়ে কে বললেন,
– “তাহলে যাও…। এখনো কেনো এই বাড়িতে দাঁড়িয়ে আছো?” মিম হাসতে হাসতে হঠাৎ বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
– “পর যখন এতোই আপন,তাহলে তাদের নিয়েই থাকো।” অতঃপর ছোটো বোন’কে উদ্দেশ্য করে বললো,
– “চলে যাচ্ছি! বাবা-মা কে কখনো কষ্ট দিসনা ছোটো।” আনির কাঁদতে কাঁদতে হাবিবুর রহমান সাহেব কে বললো,
– “বাবা তুমি কেন আপুকে এই লোকটার জন্য বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছ বলোতো? আপুই বা কেন এমন চরিত্রহীন লোকের সাথে থাকতে যাবে? কি হলো মা? তুমি কেন চুপ করে আছো?” রহিমা ছোটো মেয়ে কে বললেন,
– “তোমার আপু আবারও সবটা মানিয়ে গুছিয়ে নিলেই পারতো,জামাই যখন ক্ষমা চাইছে ও আরেকটি সুযোগ দিতেই পারতো।” মিম মিটিমিটি হেসে বললো,
.
– “ক্ষমা করে দিও মা…! কারণ আমি ক্ষমা করতে করতে ক্লান্ত,আমি চলে যাচ্ছি আর কখনো তোমাদের অসম্মানের কারণ হবো না তোমরা সবাই ভালো থেকো।” আনির বড় বোনের যাওয়ার পথ চেয়ে জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে ছিল,যতক্ষণ বোন কে দেখা যায় ততক্ষণ দু’চোখ ভরে তাকে দেখছিল।মিম ট্রলি ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে এসে একটা প্রকাণ্ড বট গাছের নিচে এসে থামলো তখন হঠাৎ একটা মাতাল লোক এসে রীতিমতো ওর সাথে জোরজবরদস্তি করার চেষ্টা করতে লাগলো,তবে সাথে সাথেই একজন ভদ্রলোক এসে লোকটা কে মেরে মিমের গায়ে নিজের কোর্ট জড়িয়ে দিয়ে সাথে সাথেই পুলিশ কে ফোন করলো,পুলিশ এসে লোকটা কে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ভদ্রলোক বললেন,
– “এই কনকনে শীতের রাতে আপনি এক কাপড়ে কোথায় যাচ্ছেন? বলুন তো?” মিম কিছুটা ভয় কাটিয়ে উঠে বলল,
– “আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই জনাব…! ঠিক এই মুহূর্তে আমি বুঝতে পারছিনা কোথায় যাবো।” ভদ্রলোক গলা খাকড়ি দিয়ে বললেন,
– “দেখে ভদ্র বাড়ির মেয়ে বলে মনে হচ্ছে তো?” মিম একটু দম নিয়ে বললাম,
– “ছিলাম…। তবে এখন ডিভোর্সি আর তাই হয়তো…?”
– “কি?”
.
– “না মানে,কাজের লোক হিসেবে রাখবেন না কি?” ভদ্রলোক অবাক হয়ে নিজের গাড়ির দিকে যেতে যেতে বলল,
– “আশ্চর্য…! আপনি পাগল না কি?” মিম হঠাৎ ওই ভদ্রলোকের পা জড়িয়ে ধরে বললো,
– “প্লিজ আমাকে ফেলে যাবেননা..। আমি নিতান্ত বিপদে পরেই আপনাকে কথা গুলো বলছি।” ভদ্রলোক ক্ষণিকের মায়ায় জড়িয়ে বললেন,
– “যদি আমি আপনার কোনো সর্বনাশ করে দেই…!” মিম বিশ্বাস নিয়ে ভদ্রলোক কে বললো,
– “সর্বনাশ করা আপনার উদ্দেশ্য হলে আপনি এসে আমাকে আমাকে বাঁচাতেন না কি?” ভদ্রলোক মিম’কে গাড়িতে বসতে বলে বললো,
– “আমার মায়ের দেখাশোনা করতে পারবেন আপনি?” মিম কিছুক্ষণের জন্য আরিশের কথা মনে করে বললো,
– “কেন নয় জনাব…? গত পাঁচ বছর ধরে এগুলোই করছি।” তখন ভদ্রলোক মৃদু হেসে বললেন,
– “আসলে আমি আমার মা এবং পরিবারের দেখাশোনা করার জন্য বিশ্বাস যোগ্য এবং বিশ্বস্ত একজন লোক খুঁজছি বুঝতে পারছিনা আপনি কি করে সবটা ম্যানেজ করবেন…!
আমার মা কিন্তু খুব রাগী,তবে বাবা তার তুলনায় অনেক শান্ত আর একজন মাটির মানুষ তিনি…। নেহাৎ আপনি বিপদে পরে আমার কাছে সাহায্য চাইছেন তাই এই কাজ টা আমি আপনাকে অফার করেছি।” মিম বললো,
– “আমার কোনো সমস্যা নেই স্যার! একটু দু’বেলে দু’মুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকলে বাঁচি! আসলে এখন আর কোনো জিনিসের প্রতি কোনো মায়া নেই,একটু নিজেকে সময় দিতে পারলেই বাঁচি।” কিছুক্ষণ পর,ভদ্রলোক কিছু ফাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে জিজ্ঞেস করলো,
.
– “আপনার এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশান কি?” পাশ থেকে কোনো উওর এলো না,ভদ্রলোক তাকিয়ে দেখলেন একমনে আর একই ভাবে তারা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে মেয়েটি।সকালে ভদ্রলোক বাড়িতে এসে পৌঁছতে না পৌঁছতেই কেউ একজন চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
– “এই ঔষধ গুলো আমি খাবো না কত বার বলেছি?” ভদ্রলোক রুমে ঢুকে মহিলার গায়ে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন,
– “এতো রাগ করছ কেন তুমি মা? আমি এসে পরেছি?” মহিলা ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “বাবা ঈমান…! সারারাত কোথায় ছিলে তুমি?” বাহিরে দাঁড়িয়ে ভদ্রলোকের নাম টি শুনতে পেয়ে মিম বললো,
– “ঠিক নামটির মতোই,মানুষ টা খুব ভালো আপনি।” ইমান মা কে বলল,
– “অফিসের কাজ ছিল মা তাই আটকে পরেছি আর হ্যাঁ তোমার জন্য কিন্তু একটা মেয়ে ও নিয়ে এসেছি।” ইতি অবাক হয়ে বললেন,
– “মানে?” ইমান বললো,
– “মানে,তোমার পরিচারিকা আর কি…?” ইতি গাল ফুলিয়ে বললেন,
– “পরিচারিকা না নার্স? তোদের দুই’ বাপ বেটার ব্যাপার-স্যাপার কি?” মিম হঠাৎ রুমে ঢুকেই নিচে পরে থাকা জিনিসপএ তুলে গুছিয়ে রাখতে রাখতে ইতি কে বললো,
– “আমি কোনো নার্স নই আন্টি,নেহাৎ আপনার ছেলে অনেক ভালো মানুষ আর তাই রাস্তা থেকে আমাকে তুলে নিয়ে এসেছেন তিনি।” পাশ থেকে জেইদা যেতে যেতে বললো,
– “বেস্ট অফ লাক…! দেখি এই বাড়িতে ক’দিন টেকো তুমি?” তখন ইতি উঠে এসে মিম’কে বললো,
– “তুমি সত্যি নার্স নও? সত্যি বলছ আম্মু তুমি?” মিম হাসতে হাসতে ইতি কে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বললেন,
– “আন্টি মিথ্যে বলে লাভ কি? আপনি আমার মায়ের মতো,আপনার কাছেই বা মিথ্যে কেন বলবো আমি?” ইতি আরচোখে চেয়ে ছেলে কে দেখে বললেন,
– “না মানে ভাবছি এ সব বুঝি আমার ছেলের কারসাজির।” মিম হাসতে হাসতে বললো,
– “কোনো কারসাজি নেই আন্ট,বিশ্বাস করুণ…! আমি একদম সত্যি বলছি।” ইমান দু’জনের মিলমিশ দেখে মনেমনে আনন্দিত হয়ে বললো,
.
– “আচ্ছা মা তোমরা এখন গল্প করো,আমি উঠি? আর হ্যাঁ,সুবাহান কে বলে দিচ্ছি আপনার থাকার ঘর টা ঘুছিয়ে দেবেন তিনি,বাই দ্যা ওয়ে,আপনার নাম টা যেন কি?”
– “মিম”।” ইমান অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো,ইতি ছেলে’কে বললো,
– “ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? দুনিয়ায় শুধু একটাই মিম আছে নাকি?” ইমান ভ্রু কুঁচকে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো,ইতি হাসতে হাসতে মিম’কে বললো,
– “আম্মু! কিছু মনে করো না তুমি।” মিম মনেমনে বললো,
– “আচ্ছা এই “মিম” নিয়ে কেইস টা কি?”
.
চলবে,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com