খালাতো বোন যখন পুলিশ অফিসার । পর্ব -০২
সবাই একটা করে সিগারেট ধরিয়ে টানতে লাগলাম মনের আনন্দে। কিন্তু হঠাৎ দেখি সবাই একসাথে সিগেরেট অর্ধেকও শেষ না হওয়ার আগেই ফেলে দিলো।
একি তোরা সিগারেট ফেলে দিলি কেনো (আমি)
তখনই কেউ আমার পিছনে হাত দিলো । আমি কে আমার পিছনে হাত দিলো তা পিছনে ফিরে দেখতেই অবাক। কারণ শিফা আপু রক্তবর্ণ চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আ আ আপু তুমি (আমি)
ঠাস করে গালের উপর একটা বসিয়ে দিলো।
তোকে আমার সাথে বের হতে বলেছিলাম আর তুই কিনা পালিয়ে পালিয়ে আড্ডা দিয়ে সিগারেট খাচ্ছিস (শিফা)
আমি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি। আমার ভয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। এখন যদি আপু এটা বাসায় বলে তাহলে অবস্থা শেষ আমার।
কিরে কথা বলছিস নাহ কেন (শিফা)
আমিঃ নিশ্চুপ
ওকে চল আমার সাথে বলেই হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে একটা রিকশায় উঠালো। আমিও ভয়ে ভয়ে তার কথা মতো তার সাথে উঠলাম। রিকশা করে নিয়ে একটা পার্কে গিয়ে থামালো
আপু আমাকে এখানে আনলে কেনো (আমি)
চুপচাপ একটা রিকশা থেকে আমার পিছু পিছু আয় বলেই হাটতে লাগলো (শিফা)
আমিও পিছু পিছু গেলাম। আপু গিয়ে একটা বেঞ্চে বসলো। আমি তার কাছে দাড়িয়ে রইলাম
এখানে বস (শিফা)
.
আমি বসে পড়লাম।
তুই সিগারেট খাস কেনো (শিফা)
আসলে আপু আমি বেশি খাইনা (আমি)
খাসনা বেশি বুঝলাম কিন্তু তুই ওটা খাবি কেনো (শিফা)
আপু আমার মাঝে মাঝে ওটা দিয়ে একাকিত্ব কাটানো লাগে (আমি)
আপু উঠেই ঠাস করে আরেকটা থাপ্পড় মারলো। আমি থাপ্পর খেয়ে ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে গেলাম।
কি এমন ওটা যে ঐটা দিয়ে একাকিত্ব কাটাতে হবে তুই কি তোর সাথে আমাকেও শেষ করে দিতে চাস (শিফা)
আপু আমি আবার তোমাকে শেষ করবো কিভাবে (আমি)
এটা শুনে অন্য গালে আরো একটা লাগিয়ে দিলো। আমি গালে হাত দিয়ে বসে রইলাম। এবার একটু বেশি জোরেই পড়েছে। আপুও নিজে অনুতপ্ত এতো জোরে সে মারতে চায়নি।
দেখ লিমন আজকে আমার কি হয়েছে নিজেও জানি না তবে কি তুই কিছুই বুঝিস নাহ (শিফা)
কি বুঝবো আমি কিছুই তো বুঝতেছি না (আমি)
তোকে আবার মারতে ইচ্ছে করতেছে (শিফা)
মারবা তুমি মারো আরো মারো (আমি)
ওকে গাল থেকে হাত নামা (শিফা)
.
এই মাইয়া দেখি আমারে আবার মারবে। মারলে মারুক তবুও যেনো সিগারেটের
কথা বাসায় না জানতে পারে (আমি মনে মনে)
হাতটা নামলাম। আপু আমাকে মারার জন্য হাত উঠাতেই আমি চোখ বন্ধ করে নেই।
তখনই ২ গালে ২ বার ঠোঁটের স্পর্শ পেলাম। আমি তো অবাকের চরম শিখরে।
এটা কি হলো আমার সাথে। আপু দিকে তাকাতেই দেখি লজ্জায় অন্য পাশে ফিরে রইলো।
এটা কি হলো আপু (আমি)
.
কিছু নাহ বেশি কথা না বলে আমি পিছনে পিছনে আয় বলেই হাটতে লাগলো (শিফা)
আমিও আপুর পিছনে পিছনে গেলাম। গিয়ে রিকশায় উঠলো আমার জন্য জায়গা রেখে আমিও রিকশায় উঠে পড়লাম। রিকশায় উঠে আপু আমার দিকে শুধু আড়ে আড়ে তাকিয়েছে কিন্তু সরাসরি তাকায়নি লজ্জায়। আর আমিও কিছু করতে পারছি নাহ। যাই হোক রিকশা এসে শপিং মলের সামনে থামলো। আপু নেমে ভাড়া দিলো। তারপর শপিংমলের ভিতরে যেতে লাগলো। আমিও গেলাম পিছু পিছু। সে একটার পর একটা দোকান ঘুরতে লাগলো। আমিও নিরীহ ছেলের মতো তার পিছু যেতে লাগলাম।
.
দেখতো আমার জন্য একটা শাড়ি ও থ্রি পিস পছন্দ করে দে (শিফা)
আমি কি করে করবো আমার পছন্দ ভালো না (আমি)
তোকে এতো কথা জিজ্ঞেস করেছি তুই পছন্দ কর (শিফা)
আমি তাকিয়ে দেখি একটা আকাশি রঙের শাড়ি আছে যেটাতে আপুকে খুব মানাবে।
আপু ঐ আকাশি রঙের শাড়িটা নাও। ওটা পড়লে তোমার উপর সবাই ক্রাস খাবে (আমি)
যার খাওয়ার সেই খায় না আর অন্য একজন নিয়ে আছে ও (মনে মনে শিফা)
আচ্ছা ঐ শাড়িটা প্যাক করুন (শিফা)
আপু আমি থ্রি পিস পছন্দ করতে পারবো নাহ তবে ঐ কালো রঙের ঐটা নিতে পারো (আমি)
ওকে ওটাও প্যাক করুন (শিফা)
আপু তোমার পছন্দ মতো কিছু তো নিলা না (আমি)
এটা তোর বউয়ের জন্য কিনেছি তোর পছন্দ তার পছন্দ হবেই (শিফা)
আমার আবার বউ আসলো কোথা থেকে (আমি)
তা পরে বুঝবি এখন চুপ থাক (শিফা)
ওকে (আমি)
তারপর আপু ঐগুলো নিয়ে আমার হাতে দিয়ে একটা ঘড়ির দোকানে ঢুকলো।
আপু একটা ব্লাক মোবাইল ওয়াস এনে আমার হাতে পড়িয়ে দিলো।
.
আপু আমাকে ঘড়ি পড়িয়ে দিলে কেনো (আমি)
এটা তোকে তোর আপু না তোর বউ গিফট করেছে (শিফা)
এই মেয়ের মাথা কি তার ছিড়া নাকি। কি আবোল তাবোল কথা বলছে।
আপু কি বলছো তুমি আমার বউ গিফট করলো কি করে এই ঘড়ি (আমি)
আরেকটা প্রশ্ন করলে তোর সিগারেট খাওয়ার কথা বাসায় বলে দিবো (শিফা)
না না আপু আমি আর কিছু বলবো (আমি)
আচ্ছা চল কোনো রেস্টুরেন্টে যাই কিছু খেয়ে নি (শিফা)
আপু থাক তোমার টাকা খরচ হবে (আমি)
আমার টাকার চিন্তা তোর করতে হবে নাহ তুই চল (শিফা)
এরকম রাক্ষসীর মতো কথা বলো কেন একটু ঠিকভাবেও তো কথা বলতে পারো (আমি)
বলে নিজেই নিজের মুখে হাত দিলাম।
কি বললি তুই আজকে তোর খবর আছে (শিফা)
এইরে এখন আমার কি হবে (মনে মনে)
তুই শুধু আজকে বাসায় চল তারপর তোকে দেখবো (শিফা)
আমিতো ভয়ে শেষ।
আপু এবারের মতো আমাকে ছেড়ে দাও আর কখনো এমন হবে নাহ অসহায়ের মতো মুখ করে (আমি)
আপু আমার দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষন পর
আচ্ছা যা কিছু করবো না এবার রেস্তোরাঁয় চল (শিফা)
যাক বাবা বাঁচলাম।
আচ্ছা চলো (আমি)
.
তারপর আমরা রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে বাসায় গেলাম।
পরেরদিন আমরা ট্যুরে গেলাম। আপুর খুব মন খারাপ ছিলো।
কিন্তু আমি গেলাম এটা আমার ইচ্ছে। সেখানে সাতদিন খুব আনন্দ করলাম।
আপু আমাকে ফোন দিলেও ধরিনি। কারণ তাহলে কিনা আমাকে বাসায় যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়।
আনন্দ করে বাসায় ফিরলাম। কিন্তু ফিরতেই দেখি আপু দরজা খুললো।
আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে চলে গেলো।
আমি ভয় পেলাম। বাসায় সবার সাথে কথা বললাম।
কলিজার টুকরো ভাইপোকে কোলে নিয়ে আদর করে রুমে গেলাম।
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসলাম।
তখনই আপু আমার রুমে আসলো হাতে একটা লাঠি নিয়ে।
আমি একবার ভয়ে ঢোক গিললাম।
একি আপু তোমার হাতে লাঠি কেন (আমি)
কেনো এটা দেখে ভয় পেয়েছিস নাকি (শিফা)
নাহ আপু আমি কেনো ভয় পাবো আমি কিছু করেছি নাকি (আমি)
তখনই আপু বাড়ি দিলো পিঠে
তুই আমার ফোন ধরিস নি কেনো বলে শুধু লাঠি দিয়ে মারতে লাগলে (শিফা)
আমি কিছু করতে না পেরে আপুর হাত ধরে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরলাম যেনো
আপু একদম নড়তে না পারে। আমি জড়িয়ে ধরতেই আপুও একদম শান্ত হয়ে গেলো।
তারপর…
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com