তুই আমার অজানা অনুভূতি | পর্ব -০২
ভার্সিটি শেষে ছায়া নিজের ফ্লেটে চলে আসে।
( ও আপনাদের তো বলায় হয়নি ছায়া ও তার চাচাতো বোন নাহার দুইজনে একসাথে একটা ফ্লেটে থাকে। )
নাহার ছায়াকে জিজ্ঞাসা করে,
কিরে ছায়া আজ তোর ভার্সিটিতে প্রথম দিন কেমন কাটলো?
__আরে আর বলিস না যা জোস্ লাগছে না বলতে পারবো নাহ। ওখানে সবাই অনেক মিশুক আর তুই জানিস আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ডও হয়ছে।( ছায়া )
__কি বলিস ভার্সিটির প্রথম দিনই বেস্ট ফ্রেন্ড বানাই ফেললি ( নাহার )
__ হ রে মেয়েটা না খুবই ভালো। আচ্ছা এবার পথ ছাড় বাকি কথা রাতে বলব। এখন অনেক ট্রাইয়াড লাগছে সর সাওয়ার নিবো আমি । ( ছায়া )
__ আচ্ছা আচ্ছা যা রে বইন পারলে ওখানেই ঘুমাই যাইস ।
__ থাপ্পরায়া দাঁত সব ফেলে দিবো তখন আর কেউ তোরে বিয়ে করবে না ভাগ কুত্তি (ছায়া)
__ তাহলে তোর জামাইরে বিয়ে করে নিবো (নাহার)
__ কি বললি ( ছায়া )
[ নাহার কে আর পাই কে সে এক ছুটে ওখান থেকে পালিয়ে গেল। নয়তো ছায়া যা ক্ষেপে আছে আজকেই তারে ধরে চুল সব ছিঁড়ে টাকলা বানিয়ে দিবে )
ছায়া আর কি করবে রেগেমেগে সাওয়ার নিতে চলে গেল। আর মনে মনে নাহারের গুষ্টি উদ্ধার করছে।
___আবার ভাবছে আমরা তো একই গোষ্ঠীর তাহলে তো ওর গোষ্ঠীকেন গালি দিলে সেখানে আমিও পরি । উফ দূর নাহার মাইয়াডার জন্য নিজেকেই গালি দিয়ে দিচ্ছিলাম ।( ছায়া )
এরকম হাজারো বকবক করতে করতে ছায়া সাওয়ার শেষ করে একটা লেডিস টিশার্ট আরেকটা ফ্ল্যাজু পড়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো।
( দেখুনতো আমার কি ভুলো মন আপনাদের আরেকটা কথা বলতেই ভুলে গেছি । নাহার আর ছায়া একটা দশ তালার বিল্ডিং এর আট তালায় থাকে।)
আকাশটা একদম রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে যাকে বলে গোধূলি বেলায় রঙের মেলায় চারদিক সজ্জিত হয়ে আছে।
বেলকোনিতে দাড়িয়ে আনমনে ছায়া তুহিনের কথা ভাবছে। আর সকালের ঘটনা মনে পড়তেই ব্লাস করছে । হঠাৎ ছায়া বলে উঠল,
___কিরে আমি ওই তিতাকরোলার কথা কেন ভাবছি ।
আচ্ছা ও কি আমাকে চিনে ফেলল? নাকি আমার বোরকার জন্য চিনতে পারেনি । দূর ওর কথা ভাববো না বলে বলে বার বার ভাবছি ।
ছায়া এইসব বলছিলো তখনি মাগরিবের আজান দিলো। আজান শুনে ছায়া আজানের জবাব দিলো তারপর ওজু করে নামাজ পড়ে নিলো । তারপর নাস্তা করে পড়তে বসে গেল।
রাতে ছায়া আর নাহার একসাথে ডিনার করে যে যার রুমে চলে গেল।
ছায়া বিছানায় গা এলিয়ে দিবার পর ফোনটা হাতে নিয়ে ডাটা চালু করতেই দেখলো তুহিন তাকে মেসেঞ্জারে নক দিয়েছে । তারপর মুচকি হেসে রিপ্লাই দিলো।
তুহিন :– এই যে…….
ছায়া :– জ্বী বলুন …..
তুহিন :– কি সারাদিনে একবারও আমাকে নক করতে ইচ্ছে করেনা তাই না ……
ছায়া :– না তা নয় আসলে খুব বিজি ছিলাম। তুই তো
জানিস আজ আমার ভার্সিটিতে প্রথম দিন
ছিল ।
( তুহিন আর ছায়ার ফ্রেন্ডশিপটা একদম অন্যরকম। তারা একে অপরের সাথে তুই তুকারি করেই কথা বলে। কিন্তু যখন রাগ অভিমান হয় তখন আপনি করে কথা বলে। আবার মাঝে মাঝে দুষ্টুমির ছলেও আপনি করে কথা বলে । )
তুহিন :– হুম আর বাহানা দিতে হবেনা। আচ্ছা
বললেন না যে কোন ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন?
ছায়া :– সঠিক সময় হলে বলবো । আচ্ছা এখনো রেগে
আছিস ?
তুহিন :– আমি রেগে থাকি বা না থাকি তাতে আপনার
কি আমিতো আপনার কেউ না।
ছায়া :– তুই আবার এভাবে বলছিস
তুহিন :– হ্যাঁ বলছি
ছায়া :– আচ্ছা ডিনার হয়েছে ?
তুহিন :– নাহ
ছায়া :– আবার রাতে না খেয়ে শুয়ে পড়েছিস
তুহিন : ঢং দেখলে বাচি না । আমি খাবো কি খাবো
না সেটা সম্পূর্ণ আমার বিষয় সেটা আপনাকে
ভাবতে হবে না।
ছায়া :– আচ্ছা ভাববো না এখন তো আর এতো রাতে
ডিনার করবিনা । যা চকলেট বা বিস্কিট খেয়ে
নে প্লিজ।
তুহিন :– বললাম না আমাকে নিয়ে ভাবতে হবেনা
আপনি অন্য ছেলেদের নিয়ে ভাবেন।
ছায়া :– তুই এমন কেন করিস বলতো। আমি কি
সারাদিন অন্য ছেলেদের সাথে থাকি নাকি?
তুহিন :– হ্যাঁ থাকিস কারণ তুই একটা লুইচ্চা
ছায়া :– আচ্ছা ঠিক আছে আমি লুইচ্চা এবার খেয়ে আয় প্লিজ ।
তুহিন :– বললাম তো আমাকে নিয়ে ভাবতে হবেনা
বায় ।
ছায়া :– আরেহ শুননা……. সরি বললাম তো রাগ করে
থাকিস না প্লিজ।
তুহিন :–…………………….
ছায়া :– ওইইই
তুহিন :–………………
ছায়া :– আচ্ছা ঠিক আছে আল্লাহ হাফেজ।
তুহিন ওইদিকে মনেমনে বলছে,
আমি খাবো কি না ওটা নিয়ে ঢং দেখাচ্ছে আর সামান্য ভার্সিটির নাম আমাকে বলছে না। আমিও আর কথা বলব না এবারে ওর Attitude দেখানো বের করেই ছাড়বো।
আর ছায়া মনে মনে বলছে,
পাগল একটা এতো বাচ্চামো কেমনে করে আল্লাহ জানে পুরো মেন্টাল একটা ️️। কালকে আবার আমাকে ভার্সিটিতে যেতে হবে ঘুমাই পড়ি রে ।
এভাবেই দুইজনে মনেমনে বকবক করতে করতে ঘুমের দেশে পাড়ি দিল ।
সকালে উঠে ছায়া নামাজ পড়ে নাস্তা করে ভার্সিটির জন্য রওনা দিলো। একটা রিকশা নিয়ে সোজা ভার্সিটিতে চলে আসলো। তারপর ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢুকার সময় রুহি ছায়ার পথ আটকে ধরলো।
রুহিকে দেখে ছায়ার কালকে অপেক্ষা করার কথা মনে পড়লো। ছায়া একটা শুকনো ঢোক গিলে মনে মনে বললো,
ছায়ারে তোর আজ কি হবে রে…..
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com