গল্পঃ শুধু তুই । পর্ব -০১
সুমাইয়া তোর লজ্জা করে না ,
আমার সাথে বিয়ে করার কথা শুনে ঢেং ঢেং করে রাজি হয়ে গেলি।
বিয়েও করে ফেললি, তবে শোন আর যাই করিস স্ত্রীর অধিকার আশা করিস না।
তোকে কোনদিন মেনে নেবনা এটুকু জেনে রাখ।
কাল সকাল থেকে নতুন এক দিন গুনবি তুই।
( সুমাইয়া এরকম প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। এমন কথা শুনতে হবে তাকে।
নেহায়েৎ খালার কথা ফেলতে পারে নি। তাই এই নেকা ফারহান কে বিয়ে করতে)
ও হ্যালো আমি এখানে ঢেং ঢেং করে রাজি হয়নি।
আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আমার তো সন্দেহ হচ্ছে আদৌ আপনি পুরুষ তো।
কি বললি তুই আমাকে তোর সাহস তো কম নয়।
যা থাকব না এখানে, বলে ব্যালকনি তে চলে গেল ।
সিগারেটের ধোঁয়ায় নিজের কষ্টগুলো উড়িয়ে দিতে চলছে।
তবুও কি কষ্ট দুর হবে। এসব মনের ভেতর অস্থিরতা কাজ করছে।
সুমাইয়া একে সিগারেটের ধোঁয়া সহ্য করতে পারে না।
তার উপর ফারহান একের পর এক সিগারেট ধরিয়ে যাচ্ছে।
এবার সুমাইয়া তা সহ্য না করতে পেরে।
সিগারেট গুলো কেড়ে নিল, চোখ রাঙিয়ে বলল এখন থেকে আর সিগারেট খাওয়া চলবে না।
চুপ একটাও কথা হবে না। আমি খাব তাতে তোর কি।
পিচ্চি আছিস পিচ্চির মত থাক।
ও হ্যালো, আমি এবার ইন্টার পরীক্ষা দেব। আর পিচ্চি পিচ্চি করবেন না।
দুদিন পর আপনার পিচ্চির মা হব। বলে জিহ্বা কামড় দিয়ে চলে গেল ভিতরে।
ফারহান অবাক হয়ে গেল, এই মেয়ে বলে কি।
মা যে কেন এই মেয়ের সাথে বিয়ে দিল জীবনটা তেজপাতা করে দেবে।
সুমাইয়া ভাবছে আর লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।
কি থেকে কি বলে ফেলল ও। ফারহান ঘরে ঢুকে দেখল সুমাইয়া লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।
তুই আজ থেকে সোফায় ঘুমাবি, এই বিছানায় তোর জায়গা হবে না বুঝতে পেরেছিস।
সরি ডিয়ার আমি অন্য মেয়েদের মত নয়। বিছানায় তুমিও ঘুমাবে আমিও ঘুমাব।
কোন কথা হবে না। আসো শুয়ে পড় বলে এক টান দিল। ফারহান সোজা সুমাইয়ার উপর পড়ল।
এরকম করায় সুমাইয়া ও ফারহান দু’জনে মিলে হতভম্ব হয়ে গেছে।
ফারহান সুমাইয়া পাশ কাটিয়ে ফিরে অন্যপাশে শুয়ে পড়ল।
সুমাইয়া তব্দা ছুটে নি এখনো। অগ্যতা নিজে অন্যপাশে শুয়ে পড়ল।
আচ্ছা সুমাইয়া বেদনার রং কেমন, সেটা কি জানিস তুই।
পড়েছি কোন এক লেখকের বই থেকে নীল। তবে বাস্তবের সাথে মিলেনা।
সুমাইয়া এই রুমের বাইরে আমরা হ্যাপি কাপল। অন্যরা যেন মোটেও জানতে না পারে।
পরে সময় মত আমি ডিভোর্স দিয়ে দেব তোকে।
সুমাইয়া ঠিক আছে বলে নিশ্চুপ হয়ে গেল।
কি বলবে অন্য কেউ না জানলেও সুমাইয়া তো জানত সব।
কিছুক্ষণ পরে দু’জনে ঘুমিয়ে গেল। ফজরের আযানের সময় ঘুম ভেঙে গেল ফারহানে ।
সে দেখল সুমাইয়া ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে রয়েছে।
ফারহান হালকা নিচু হয়ে সুমাইয়ার কপালে ছুঁয়ে দিল ঠোঁট দুটো।
সুমাইয়া এই সুমাইয়া উঠে পড়। নামাজের সময় হয়ে গেছে।
সুমাইয়া উঠে দেখে ও ফারহান কে জড়িয়ে ধরেছে। সরি বলে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
বিপত্তি ঘটে গেছে শাওয়ার নেওয়ার পর। লজ্জা পেয়ে যখন পোশাক নিয়ে আসেনি।
দরজা খুলে দেখে ফারহান বসে আছে বিছানায়।
এই যে মশাই, একটু কষ্ট করে আমার পোশাক গুলো দিতে পারবেন ।
আমি কাপড় আনিনি।
ফারহান কাপড় গুলো এগিয়ে দিল।সুমাইয়া বেরিয়ে আসছে, চুল থেকে টপটপ করে পানি ঝড়ছে।
ফারহান তা দেখে আর দাঁড়ালো না। সোজা শাওয়ার ছেড়ে দিল।
যাতে ওর কান্নার আওয়াজ বাহিরে না আসে।
সুমাইয়া দেখে ফারহান শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এসেছে।
শরীরে পানি গুলো গড়িয়ে বুক দিয়ে পড়ছে। যা মোহনীয় করছে সুমাইয়াকে।
ফারহান সুমাইয়ার পাশ কাটিয়ে মসজিদে রওনা হল।
সুমাইয়া নামাজ পড়ে অতীতে ডুব দিল।
তুই আমার ফারহান কে বেঁধে রাখিস এটা আমার শেষ ইচ্ছা।
এটা আমার আদেশ মনে করতে পারিস।
সুমাইয়া এই কথাটা ভাবতেই কান্না চলে এসেছে। কিন্তু সে কান্না করবে না।
তাকে যে একজন মানুষকে দেওয়া শেষ কথা রাখতে হবে।
নাহলে বয়সের থেকে বার বছরের অধিক বড় একজন মানুষ কে কেন বিয়ে করবে।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com