গল্প: ভালোবাসব যে তোকে | পর্ব - ১৬
“কি আর হবে। বউ নিজের বাবার বাড়ী যাচ্ছে।সেখান
থেকেই তুই ওকে বিয়ে করে এ বাড়ীতে নিয়ে আসবি। একদম সব রীতি মেনে।
মূল কথা তোদের শুধু যে বিয়ের অনুষ্টান হবে তা না। তোদের আবার নতুন করে বিয়ে হবে।
এতে আরো বেশি মজা হবে।”
অহনার এসব কথা শুনে আরিয়ানের তো রাগ মাথায় উঠে গেলো।
সে বিড়বিড় করে বলছে,
“মজা না সাজা আমার জন্য।”
“কিছু কি বললি ভাইয়া??”
“হুম।এসব উল্টাপাল্টা আইডিয়া টা কার ছিলে??”
“কার আর হবে। আমাদের প্রিয় দাদির।”
এ কথা শুনে আরিয়ান অসহায় দৃষ্টিতে দাদির দিকে তাকালো।
আর দাদি তো আরিয়ানকে দেখে মিটমিট করে হেসে যাচ্ছে। শুধু দাদি না।
বাকি সবাই আরিয়ানের এ অবস্থায় হেসে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর মাহতাব বললো,
“মৌ চল তাড়াতাড়ি। আম্মু আমাকে অলরেডি দুবার ফোন দিয়েছে,
এ জানার জন্য যে আমরা কি বের হয়েছি নাকি।”
.
মৌ আরিয়ানের থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে বললো,
“চলো ভাইয়া।”
সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যারা রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প পরেন বা
গল্প পড়তে ভালবাসেন এমন কেউ যদি থেকে থাকেন তাহলে রিকুয়েস্ট দিন।
আমি তাদের কে আমার ফ্রেন্ড লিস্টে রাখতে চাই
এরপর মাহতাব মৌ এর ব্যাগ নিয়ে হাঁটা ধরলো।পিছে পিছে মৌ আসছে।
তারও বেশ খারাপ লাগছে আরিয়ানকে ছেড়ে যেতে। কিন্তু সবার জোর জবরদস্তিতে তাকে যেতেই হলো।
সবাই দরজার কাছে এসে মৌ কে বিদায় দিচ্ছে।
আরিয়ানের তো মনে হচ্ছে কেউ তার কলিজাকে তার থেকে আলাদা করে দিচ্ছে।
আরিয়ানের অবস্থা দেখে অহনা দাদির উদ্দেশ্যে জোরে জোরে বললো,
“দাদি গো দাদি, তুমি কিভাবে পারলে দুইটা কিউট সুইট লাভ বার্ডসকে আলাদা করতে??
এদের দুজনকে দেখে তো আমার একটা গানই মনে আসছে,
“Pardesi pardesi jana nehi jana nehi
mujhe chorke, mujhe chorke”
গানটা বলে অহনা সহ বাকি সবাই হেসে উঠে। শুধু আরিয়ান বাদে।
সে রাগি দৃষ্টিতে অহনার দিকে তাকায়।
আরিয়ান আর কিছু না বলে নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলো।
খুব রাগ লাগছে তার। খুব মানে খুব।
এখন মনে হচ্ছে সব কিছু ভাঙতে পারলে তার ভালো লাগতো।
“মৌ তুই তো আমাকে একবার বলতি।তুই ও বললি না!!
তোকে ছাড়া থাকতে যে আমার কতোটা খারাপ লাগে তা বুঝাবো কি করে তোকে??
আমার মনে হচ্ছে এখন তোকে ছাড়া নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।”
আরিয়ান আর কিছু বা ভেবে সোজা ওয়াশরুমে গেলো শাওয়ার নিতে।
কিছুক্ষণ পানির নিচে থাকলে যে তার রাগ কিছুটা কমবে এটা জানে সে।
প্রায় ১০ মিনিট পর সে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে খাটে বসে।
একা একা তার একটুও ভালো লাগছে না।
কিছুক্ষণ পর তার দরজায় নক পরে। সে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেখে
যে দাদি আর আম্মু দাঁড়ীয়ে আছে।
উনাদের দেখে আরিয়ান কিছু না বলে আবার খাটের উপর বসে।
দাদি গিয়ে আরিয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
.
“আমার উপর অনেক রাগ করেছিস তাইনা??”
এ কথা শুনে আরিয়ান বলে কিছু বললো না। দাদি আবারো বললো,
“জানিস আমার না খুব ইচ্ছা আমার নাতির প্রেম করা দেখবো আমি।”
দাদির এ কথা শুনে আরিয়ান বেশ অবাক হয়ে যায়।
সে বুঝতে পারছে না যে দাদি হুট করে এমন সব আজগুবি কথা কেনো বলবে।
সে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে দাদির দিকে তাকায়।দাদি আরিয়ানের দিকে চেয়ে আবার বললেন,
“দেখ তোদের বিয়ের এখনো ২ সপ্তাহ এর কিছু কমদিন বাকি।
তুই কিন্তু চাইলেই এ কয়দিনটা একদম নিজের মনের মতো কাটাতে পারিস।”
“দাদি এসব কি বলছো তুমি??আমার মৌ কে ছাড়া একদম
ভালো লাগছে না আর তুমি আমাকে মনমতো সময় কাটাতে বলছো!!”
.
এর মধ্য আবার অহনা এসে যোগ দিলো। সে আরিয়ানকে বললো,
“আরে ভাইয়া দাদি সেটা বলেনি। দাদি বলেছে। তুই চাইলেই কিন্তু এ
কয়দিন মৌ এর সাথে প্রেম করতে পারিস।যাকে বলে বিয়ের আগে প্রেম।
”বলেই অহনা,দাদি আর আম্মু মিলে হাসতে থাকে।
আরিয়ান তো এসব শুনে অবাক হয়ে যায়।সে বলে,
“মানে তোমরা বলছো আমি মৌ এর সাথে প্রেম করবো!!!”
আম্মু বললো,
.
“তা নয়তো কি। তোর ইচ্ছামতো প্রেম করবি। কেউ কিছু বলবে না।
আর দেখ তুই কতো ভাগ্যবান। তোর ফ্যামিলি তোকে ঠেলছে প্রেম করার জন্য।
এমন ফ্যামিলি কয়জনের হয় বলতো??”
“হুম ভাইয়া আম্মু একদম ঠিক বলেছে।জানিস মৌ একদিন বলেছিলো,
ওর খুব ইচ্ছা বর এর সাথে প্রেম করবে। একদম ফিল্মের মতো প্রেম করবে।
আর মৌ এর ইচ্ছা পূরন করার এটা খুব সুন্দর একটা ওয়ে। তুই একদম ফিল্মের
হিরোদের মতো মৌ এর সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করবি।সারারাত ফোনে কথা বলবি।
চিন্তা করছিস একবারো এসব হুম??”
আরিয়ান কি বলবে বুঝতে পারছে না। এরা যে এমন কথা বলবে
এমন সব প্ল্যানিং করবে তা ধারনাও করতে পারেনি সে।
আম্মু বললো,
“দেখ আরিয়ান তুই এখন যে প্রেম করবি তাতে কিন্তু কোনো অপবিত্রতা
থাকবে না। আর অবৈধও কিছু হবে না। কারন তোরা আগে থেকেই স্বামী স্ত্রী।
অনেকের ইচ্ছা থাকে যে বিয়ের আগে প্রেম করবে।মৌ এর অবশ্য
ইচ্ছা বিয়ের পর প্রেম করবে।
এভাবে কিন্তু মৌ এর ইচ্ছাও পূরণ হচ্ছে।একবার ভেবে দেখিস সব।”
আরিয়ান খুশি মনে বললো,
“এতে ভাবার কি আছে। আমার ফ্যামিলি এর মহিলাদল যে এতো ভালো তা
কি আমি জানতাম নাকি।আর মৌ এর এ ইচ্ছা অবশ্যই পূরণ করবো।
এন্ড থ্যাংকস টু মাই সুইট দাদি।আমাকে নিয়ে যে তুমি এতো ভাবো তা কি জানতাম আমি!!”
দাদি বেশ ভাব নিয়ে বললো,
“হয়েছে হয়েছে আর এতো পাম দিতে হবে না।আমার নাতি না তুই,
এতটুকু তো খেয়াল রাখতেই হয়।”
“যা ভাইয়া জি লে আপনি জিন্দেগি।”বলে অহনা খিলখিল করে হেসে দেয়।
কিন্তু তার মনটা একটু খারাপও বটে। তারও বেশ ইচ্ছা হচ্ছে আরিয়ান আর মৌ
এর মতো এভাবে প্রেম করতে। কিন্তু তা হওয়া পসিবল না। হওয়া উচিতও না।
ফাহাদ এ পর্যন্ত তাকে ফোন দেয়নি।নাম্বারই কালেক্ট করেছে নাকি কে জানে।
আরিয়ানের সাথে সবাই কিছুক্ষণ কথা বলেই চলে যায়। আর আরিয়ান শুয়ে রেস্ট নেয়।
তার মনটা এখন অনেক খুশি। ঘন্টাখানেক আগেও যে সে এতো রাগ করেছিলো,
এখন একটুও রাগ নেই তার।
আর এদিকে মৌ বাসায় এসে তার আব্বু,আম্মু, ভাইয়ার সাথে বেশ কিছুক্ষণ ধরে
গল্প করে। তারপর রাতের খাবার খেয়ে রুমে আসে সে।কিন্তু রুমে আসার
পর তার মনটা খারাপ হয়ে যায় আবার।আরিয়ানের কথা তার খুব মনে পরছে।
ইচ্ছা করছে তাকে দেখতে।কিন্তু সে তো আর জানে না আরিয়ান,
আর বাকি সবার প্ল্যানিং।
আরিয়ানের সাথে কাটানো কিছু মূহুর্তের কথা চিন্তা করতে করতে যে কখন চোখ ঘুমে
জরিয়ে যায় সে টের ই পায়নি। ঘুম ভাঙে ফোনের আওয়াজে।
এ মূহুর্তে তার ইচ্ছা করছে ফোনটা বারি দিয়ে ভেঙে ফেলতে।
মৌ ঘুম ঘুম চোখে সামনে থাকে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে
রাত সাড়ে ১১টা বাজে।সে বিরক্তি নিয়ে বললো,
“উফ কে রে এই অসময়ে ফোন দিয়েছে??ঘুমটাই নষ্ট করে দিলো।”
এরপর মৌ ফোন হাতে নিয়ে দেখে আরিয়ান ফোন দিয়েছে।
মূহুর্তে তার ঘুম উধাও হয়ে যায়।সে তাড়াতাড়ি ফোন রিসিভ করে।
কিন্তু কোনো কথা বলছে না।
ফোনের ওপাশ থেকে কোনো আওয়াজ না পেয়ে আরিয়ানই কথা শুরু করলো।
“আমাকে এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি??”
আবার ও বলছি যারা রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প পরেন বা গল্প
পড়তে ভালবাসেন এমন কেউ যদি থেকে থাকেন তাহলে রিকুয়েস্ট দিন।
আমি তাদের কে আমার ফ্রেন্ড লিস্টে রাখতে চাই
আরিয়ানের এ কথা শুনে মৌ কিছু বলেনা।শুধু চুপচাপ শুনে।
“কি হলে কথা বলছিস না কেনো??”
মৌ একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলে,
.
“তুমি আমার কাছে ভুলার মতো কেউ না।
আমার মনের মধ্য সসবসময়ই তুমি আছো আর থাকবে।”
“তো আমাকে একবারও ফোন দিস নি কেনো??”
“আমার বাসায় আসার পর থেকেই ভালো লাগছিলো না। কেনো যেনো খুব কান্না পাচ্ছিলো।
তোমার সাথে কথা বলার সময় যদি আমার কান্না চলে আসে,তাই আমি ফোন দেয়নি।”
“আচ্ছা শোন না।তোকে না খুব দেখতে ইচ্ছা করছে। কয়েকঘন্টা হলো গিয়েছিস।
কিন্তু মনে হচ্ছে কতোটা বছর দেখা করেনি আমরা।”
“আমি তাহলে ভিডিও কল দেই।”
“ভিডিও কল কেনো??আমার তোকে সরাসরি দেখতে ইচ্ছা করছে।”
“এখন এতো রাতে সরাসরি কিভাবে দেখা সম্ভব??”
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com