শুদ্ধ ভালোবাসা । পর্ব -০২
মিনু বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো আমি মিনু।
বাবা মা ছোট ভাইয়ের সাথে গ্রামে থাকতাম।
বাবা আমাদের গ্রামের চেয়ারম্যান ছিল।
আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালোই ছিল।
একটা মাত্র মেয়ে হওয়া অনেক আদরের ছিলাম।।
আমার বয়স ১৫ আমি এবার এস এস সি পরীক্ষা দিতাম।
কিন্তু তার আর দেয়া হলো না।
কথা গুলা একটানা বলে নিশ্বাস নিল মিনু।
জামিল : সব তো ঠিক ছিল তাহলে তুমি এখানে আসলে কি ভাবে?
মিনু আবার বলতে লাগলো ভালোবাসতাম আমাদের এলাকার একটা ছেলেকে।
মিনু সে দিন গুলাতে ফিরে গেল।
.
একদিন স্কুল ছুটির পর বের হওয়ার সময় মিনু আর মিনুর বান্ধবী মালা এক সাথে বাড়ি ফিরছিল। হঠাৎ ওরা খেয়াল করলো ওদের পিছনে পিছনে একটা ছেলে আসছিল।
কার পিছনে আসছিল বুঝা গেল না।
মালা: দেখ একটা ছেলে আমাদের পিছে আসতেছে।
মিনু: তাই তো দেখতেছি কিন্তু কার পেছনে?
মালা: তুই থাকতে কি আর আমার পেছনে আসবে?
মিনু: হইছে ঢং বাদ দাও তুমি মনে হয় কম সুন্দরী?
তোমার পিছে যে সাজিদ ঘুরে তা আমি জানি।
মালা: হুম কম তো সুন্দরী না কিন্তু তোর কাছে কিছু না।
আর তোরে কে বললো সাজিদ আমার পিছে ঘুরে?
মিনু: চুপ থাক আর মিথ্যা বলতে হবে না আমি সব জানি।
আর একটু পর বোঝা যাবে কার পিছে আসছে ছেলেটা ।
২ জনের মধ্যে অনেক উত্তেজনা কাজ করতেছে কারন
ছেলেটা কার পিছু আসতেছে সেটা বুঝা যাইতেছে না।
২ জন কথা বলতে বলতে অনেকটা রাস্তা আসার পর
মালা: আচ্ছা আমি যাই তাইলে।
মাঝ পথে ২ জনের আলাদা হতে হয়
কারন ২ জনের বাড়ি ২ দিকে।
.
মিনু: আচ্ছা কালকে আবার আমাকে রেখে চলে যাস না। আমার জন্য এখনে অপেক্ষা করিস।
মালা চলে যাবার পর ছেলেটা মিনুর পিছে যেতে লাগলো। মিনু হাটার গতি বাড়িয়ে দিল।
মিনুর খুব ভয় হতে লাগলো।
কারন মিনুর বাবা চেয়ারম্যান।
যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে ঝামেলা হবে।
পরের দিন স্কুলে যাবার সময় মালা মিনুকে চিমটি কেটে, বলেছিলাম না ছেলেটা তোর পিছে ঘুরছে।
মিনু: চুপ করতো।
এই কথা যদি বাবার কানে যায় তবে কি হবে বুঝতে পারতেছিস??
মালা: হুম এইটা তো ভেবে দেখি নাই। চাচা জানলে এই ছেলের খবর আছে
২জনে অনেক কথা বলতে বলতে স্কুলের সামনে চলে আসলো। স্কুলের সামনে আসতেই দেখে ছেলেটা দাড়িয়ে আছে। ওরা ২ জনেই ভয় পেয়ে যায়।
মালা ও মিনু সে দিকে না তাকিয়ে স্কুলের ভেতর চলে গেল।
ভেতর ঢুকেই মিনু ছেলেটাকে কিছু বলতেই হবে যদি কেউ দেখে বা বুঝে ফেলে ছেলেটা আমার পিছনে ঘুরতেছে তাহলে আমার খবর আছে।
মালা: হুম ছেলেটা আসলে কি চায় আজকে জানাতেই হবে।
স্কুল ছুটির পর ওরা বের হয়ে দেখে ছেলেটা এখনো দাড়িয়ে আছে।
মালা ও মিনু হাটা শুরু করলো ওরা একটা নিরিবিলি জায়গা দেখে দাঁড়ালো আর ছেলেটাকে মালা জিজ্ঞেস করলো কি চাই কাল থেকে দেখছি আপনি আমাদের পিছু নিতেছেন।
ছেলেটা: কই আমি তো আপনার পিছু নেই নাই আমি তো মিনুর পিছে আসছি।
ছেলেটা মিনুর সামনে এগিয়ে যেয়ে পকেট থেকে একটা গোলাপ বের করে বাংলা ছবির মতো করে বলে উঠলো মিনু সে দিন মেলায়(কিছু দিন আগে গ্রামে বৈশাখী মেলায় হয়) তোমাকে প্রথম দেখায় আমার তোমাকে ভালো লাগে। এর পর তোমায় নাগরদোলা ওঠার সময় ভয় পেতে দেখে তোমাকে ফুচকা খেতে আমি তোমার প্রেমে পরে যাই। সে দিন থেকে তোমাকে আমি ভালোবাসে ফেলিছি।
তোমাকে ছাড়া আমি বাঁঁচবো না।
.
তুমি যদি আমাকে ফিরিয়ে দাও তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো।
মিনু ছেলেটার মুখ থেকে এই সব কথা শুনে দৌড়ে বাড়ি চলে এসেছিল।
বাসায় আসার পর থেকে ও ছেলেটার কথা ভাবতে থাকে বার বার নিজেকে আয়নায় দেখতে থাকে।
কি জেনো ভেবে বার বার নিজের ২ হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢাকে।
সে নিজেকে নাহিদের ভালোবাসা থেকে এড়াতে পারে নাই।
নাহিদের পাগলামী আর ভালোবাসার কাছে মিনুকে হার মানতে হয়েছে, যে দিন নাহিদ হাত কেটে রক্ত দিয়ে মিনুকে চিঠি দিয়েছিল। কিশোরী মিনু আর মালার মনে হয়েছিল নাহিদ ছেলেটা মিনুকে সত্যি অনেক ভালোবাসে।
মিনুকে এর থেকে আর কেউ বেশী ভালোবাসতে পারবেনা।
বাবার ভয়কে ভুলে গিয়ে সেই দিন থেকে মিনু নাহিদকে ভালোবেসে ফেলেছিল।
সেই ভালোবাসায় যে মিনুর জন্য ভয়ংকর হবে তা যদি মিনু
বুঝাতে তাহলে সে হয় তো এমন কাজ জীবনে ও করতো না।
কিশোর বয়সের সে ভুল মিনুকে আজ নিয়ে এসেছে পতিতালয়ে।
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com