Breaking News

স্বামী | পর্ব -০৫

রিদয় কে ঘুম পাড়িয়ে তিথি সারা রুম এর ভিতর পায়চারি করছে, তার ঘুম যেনো কেও নিয়ে পালিয়েছে, তার মনে হাজারও চিন্তা, কেন এমন করে উনি মাঝে মাঝে তো উনার হাপ ভাব একদম ঠিকই থাকে তাহলে??
আমার উনাকে চিনতে ভুল হয় নিতো??
নাকি ভুল ভাবছি কোনটা, তিথি দুটানায় ভুগছে,
এরই মধ্যে আজান এর সুর ভেসে এলো কানে, তিথি ফ্রেস হয়ে নামাজ পরে রিদয় এর পাশে বসলো ওর মাথায় হাত বুলাচ্ছে তিথি আর ভাবছে আমি যা ভাবছি তাই যদি হয় তাহলে কি হবে!!!!!!
খাটে আধশোয়া ভাবে সুয়ে আছে তিথি আর রিদয় এর মাথায় হাত বুলাচ্ছে।
হাত বুলাতে বুলাতে কখন তিথির চোখ লেগে গেলো তার খেয়ালই নেই,
কাল সারা দিন কি টেনশন এ ভুগেছে তার উপর সারা রাত ধরে রুমে পায়চারিতে তিথি বেশ ক্লান্ত হয়ে উঠেছে।
সকাল ৮ টার পর তিথির ঘুম ভাঙ্গে। হুরমুরিয়ে উঠে পরে সে।
.
কখন ঘুমিয়ে ছিলাম মনে নেই। চেয়ে দেখলো রিদয় পাশে নেই।
তাই দৌড় দিয়ে ওয়াস রুম চেক করলো নাহ এখানেও নেই!!
ছাদে! হ্যা ছাদে হতে পারে, খুব স্পিড এ দৌড়াচ্ছে তিথি ছাদে গিয়েও দেখলো রিদয় নেই।
প্রতিটা কোণা ছাদের দেখা হয়েছে।
তিথি এবার টেনশন এ পরে গেলো কোথায় গেলো মানুষ টা হায় আল্লাহ আমার স্বামী কে রক্ষা করো।
তিথি আবার দৌড়ে ছাদ থেকে নামতে গিয়ে সিড়িতে পা দিতে গিয়েই স্লিপ খায়।
তবে পড়ে যায়নি কেউ যেনো শক্ত করে জরিয়ে রেখেছে।
তিথি তার চোখ মুখ বন্ধ করে রেখেছে।এবার কারো শরির এর উপর নিজেকে অনুভব করে।
ধিরে ধিরে চোখ খুললো তিথি। তিথির চোখ বেরিয়ে এলো!!!
উনি আমাকে ধরে ফেলেছে। রিদয় এর ঠোটে মিষ্টি হাসি দেখে বুঝা যাচ্ছে না। উনি এখন কোন রুপে আছে।
তিথি এবার রিদয় কে ছেড়ে দিয়ে নিজে দারাতে চেষ্টা করলো।
তারপর ওমাহহহ–
করেই তিথি কান্না করে দিলো।কারন পরে না গেলেও পা মচকে গেছে তা বুঝার আর বাকি রইলো না।
রিয়দ এবার তিথির হাতে টান দিয়ে নিজের বুকে ফেলে দিলো।
তার কোলে নিয়ে শিড়ি দিয়ে নামতে থাকলো।
তিথি যেনো পায়ের ব্যাথাটা ভুলেই গেলো এক মূহুর্তের জন্য।
এটা কি হচ্ছে?? সপ্ন নয় তো তাই নিজেই নিজের হাতে চিমকি কেটে দেখলো নাহ সপ্ন না বাস্তবই আমি উনার কোলে। আর উনার আচরন পুরো স্বাভাবিক!!!!
কোথায় ছিলো উনি এতক্ষন?
ভাবতে ভাবতেই তিথি চেয়ে দেখলো রুম চলে এসেছে। রিদয় তিথি কে খাটে শুইয়ে দিয়ে পায়ের কাছে গিয়ে পায়ে হাত দিতেই তিথি পা টা টান দিয়ে সরিয়ে নেয় আর ব্যথায় কুকরে উঠে।
রিদয় এবার একটু গভির গলায় বললো যা পারো না তা কেন করতে চাও শুনি??
তিথি চুপ..
তিথি শুধু রিদয় ও তার হাপভাব দেখছে।
রিদয় এবার ব্যাথা কমানোর জন্য ওষুধ এনে তিথির পা টা নিজের কাছে এনে পায়ে ওষুধ লাগিয়ে দিচ্ছে।
রিদয় এর হাতের ছোয়ায় তিথি তার চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। কি মারাক্তক শিহরন রে বাবা খুবই ভয়ানক।
তিথি এবার অনূভব করলো পায়ে আর উনার ছোয়া নেই।
তাই ধিরে চোখটা খুলে দেখলো।
রিদয় তার দিকে চেয়ে আছে চাপা হাসি দিয়ে।।
.
তিথি এবার ভ্যাবাচেকা খেয়ে বললো এখানে হাসির কি হল??
(তিথি)
ওমা হাসলাম কই আমিতো তোমায় দেখছি ভালো বৌ ( রিদয় সে দিন এর মত নেশা ভরা চোখে এ)
তিথি চোখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে যে কোনও নাড়ি মরে জেতে রাজি এই চোখের নেশায়।
তিথির গলা দিয়ে যেনো সুর বের হচ্ছে না।
কন্ঠনালিতেই মনে হয় তার আওয়াজ আটকে আছে।
তিথি ও কম নয় দুধে আলতা গায়ের রং মুখটা গোলগাল। হাসি দিলেই গালে টোল পরে।
হাসিটা খুবই সাংঘাতিক। এই হাসি দেখে যে কোন কবি কবিতা লিখতে বসে যাবে।
তিথি এবার নিজেকে সামলে বলে উঠলো এত ক্ষন কোথায় ছিলেন আপনি???
রিদয় এবার জিব্বায় কামর দিয়ে বললো যাহ বাবা ভুলেই গেলাম? (রিদায়)
কি ভুলে গেলেন??
রিদয় কিছু না বলে পেন্ট এর পকেট থেকে কাচেঁর চুড়ি বের করলো।
আর তিথির হাত টা কাছে নিয়ে পরাতে লাগলো। তিথি বোকার মত চেয়ে রয়েছে।
রিদয় এবার নিজে থেকেই বললো, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে দেখি একটা চুড়ি ওয়ালা সাইকেল দিয়ে যাচ্ছে।
তাই তোমার জন্য চুড়ি আনতে গিয়েছিলাম।
তিথি মন দিয়ে তার স্বামীর কথা শুনছে। পাগল হলেও বৌ এর খেয়াল টা রাখছে দেখছি। ভেবেই তিথি এক প্রশান্তির হাসি দিলো।
রিদয় আবার বলতে লাগলো। জানো ভালো বৌ ঐ চুড়ি ওয়ালা না অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলো। তাই তাকে ধরতে দৌড় দিলাম। তারপর আমি ধপাস করে রাস্তায় পরে গিয়েছিলাম। তার পরও লোকটাকে দৌড়ে ধরে তোমার জন্য এই লাল চুড়ি এনেছি। (হাসি দিয়ে)
দেখো না ভালো বৌ পড়ে গিয়ে আমার কুনুইটা কত ছিলে গেছে খুব জ্বালা করছে গো।( ঠোট বাকিয়ে রিদয়)
তিথি দেখলো সত্যিতো অনেকটাই মনে হয় ছিলেছে। শার্ট এর উপরেও রক্ত লেগে আছে।তিথি নিজের পায়ের ব্যাথা প্রায় ভুলে গিয়ে উঠে রিয়দ এর পাশে এসে শার্ট এর হাতা টা গুটিয়ে দেখে অনেক টুকু কেটেছে। রক্ত প্রায় জমাট বেধে গেছে।
.
তিথি এবার রাগি স্বরে বললো এত কেয়ারলেস কেন আপনি।
আমি কি বলেছিলাম আমার চুড়ি লাগবে। তাও ব্যাথা পেয়েছেন বলেন নি কেন।
ইস কতটুক কেটে গেছে। (এক মনে তিথি হাতটা দেখছে আর বকবক করছে)
রিদয় এবার কান্না স্বরে বললো তুমি পচা দেখছো ব্যাথা পেলাম তাও বকছো।(রিদয়)
তিথি এবার হাসি দিয়ে বললো বকলাম কোথায়।
আমি কি আপনাকে কখনও বকা দিতে পারি।বলেই তিথি উঠতে চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না।
.
রিদয় এবার তিথি কে বসিয়ে দিয়ে বললো।
কি লাগবে বলো আমি এনে দেই।(রিদয়)
ওই আলমারির ড্রয়ার থেকে মেডিসিন এর বক্সটা আনুন, রিদয় লক্ষী ছেলের মত বক্স এনে তিথির হাতে ধরিয়ে দেয়।
তিথি এক মনে রিদয় এর কোনোইটা পরিস্কার করে দিয়ে মলম লাগিয়ে ছোট্ট একটা বেন্ডেজ করে দেয়।
আর বলে কাল হাত কাটলেন আর এখন কুনুই। আরো কোন জায়গা বাকি থাকলে ওটা কেটে আসুন।( রেগে)
তুমি আমায় টিস করছো??( রিদয়)
.
ওমা আবার টিস ও বুঝেন দেখি( তিথি হালকা হেসে)
রিদয় এবার একটু ভাবসাপ দিয়ে বললো বুঝবোনা কেন তোমার স্বামী সব বুঝে। কারন আমি জেন্টালমেন।
তিথি মুখটা মলিন করে বললো কচু বোঝেন। যদি বুঝতেন তাহলে কি আমার থেকে দূরে থাকতেন।( বির বির করে)
কিছু বললে ভালো বৌ? ( রিদয়)
.
না না কিছু না বলে তিথি রিয়দ এর কপাল এ গভির করে একটা চুমু দেয় আর
রিদয় এর দিকে পলক হীন হয়ে চেয়ে আছে। তিথি মনে মনে বলছে কি কপাল
আমার শেষ মেষ স্বামীর আদর সোহাগ টুকু থেকেও বঞ্চিত হলাম।
আসলে তিথির যা বয়স তাতে তার শরিরের তো একটা চাহিদা বলে কথা আছে।
কোন মেয়ে স্বামীর আদর সোগায় চায় না? তাহলে কি তিথি একটু বেশি চেয়ে ফেলেছে,????
রিদয় এবার তিথির কাছে গিয়ে ওর কপালেও একটা চুমু দিয়ে দিলো। তিথি একটু হেসে বললো এটা কি হল!!!
তুমি আমায় আদর করলে তাই আমিও আদর করে দিলাম।(রিদয়)
ওহ তাই,তাহলে আপনাকে তো বলেছিলাম বৌ কে এভাবে আদর করে না!! ( তিথি)
মাথা চুলকাতে চুলকাতে রিদয় একটা হাসি দিয়ে চুপ করে বসে আছে। রিদয় আর সে দিন এর মত প্রশ্ন করলো না কিভাবে আদর করে।
.
তিথি এতে অবাক। আজ জানতে চাইলো না কেন?
দেখেতো মনে হচ্ছে লজ্জা পেয়েছে।
এর মধ্যে দরজায় টুকা দিয়ে রিদয় এর মা হাসি দিয়ে রুমে ঢুকে দেখে রিদয় আর
তিথি দুজনই রুগি হয়ে বসে আছে।
রিদয় এর মা হাসবে নাকি কাদঁবে বুঝতে পারছে না। এটা কেমন দুজনই ব্যাথা পেয়ে বসে আছে!!!!
রিদয় এর কথা আর জানতে চাইলো না। কারন যা পাগল ছেলে এমন সে রোজই করে।
তবে তিথি তুমি কি করে ব্যাথা পেলে।
তিথি বেশি কিছু না বলে। বললো আসলে পা টা মচকে গেছে।,
রিদয় এর মা বললো তাহলে ডাক্তার ডাকি তুমি শুয়ে থাকো।
না না মা লাগবে না। এমনি সেরে যাবে। আর বেশি কিছু না হালকা মচকে গেছে ওষুধ দিয়েছি তো।
রিদয় এর মা আর কথা না বারিয়ে বললো। আচ্ছা নাস্তা রুমে বসেই করে নাও।
আমি রহিম কে দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি বলেই চলে গেলো।
একটু পর রহিম খাবার নিয়ে এলো। খাবার রাখতেই তিথি বললো।
রহিম চাচা উনার খাবার পর কোন ঔষধ খাওয়াতে হবে? আর বাকি সব ঔষধ নিয়ে আসুন।
রহিম কিছু বলার জন্য মুখটা খুলতে যাবে। তার আগেই তিথি বলে উঠলো ১ মিনিট এর ভিতরে নিয়ে আসুন।
আমরা এখন নাস্তা করবো।
রহিম কিছু না বলে রেগে ফায়ার হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
তিথব রিদয় কে খাওয়াচ্ছে আর একই প্লেট থেকে নিজেও খাচ্ছে।
.
খাওয়া শেষ করে তিথি ভাবছে।
ধুর আজকে উনার ডাক্তার এর কাছে গিয়ে আলাপ করা হল না ধ্যাত।
নিজেই নিজের ঠোট কামরাচ্ছে।
রিদয় এবার গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলো।
তিথি বললো আপনি না দরজা বন্ধ করলে ভয় পান??
না ভয় হয় না তুমি আছো না (মুচকি হেসে রিদয়)
এবার রিদয় তিথির কাছে এসে বললো আমি জানি বৌ কি কিভাবে আদর করতে হয়।
তিথি বড় বড় রসোগোল্লার মত চোখ করে রিদয় এর দিকে চেয়ে আছে।
আর বুঝার চেষ্টা করছে কি বললো এখন উনি।
তিথি কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রিদয় তিথির মুখটা ধরে কাছে এনে তিথির ঠোট টা নিজের দখলে নিয়ে নিলো (খুব গভির ভাবে)
তিথির শরির এর রক্ত গরম হয়ে আসছে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে।
তিথি আর নিজেকে সামলাতে পারলো না।
রিদয় এর পিঠে খামচে ধরে নিজেও রিদয় এর ঠোট এর স্বাদ অনুভব করতে লাগলো।
কি করে ঠিকই থাকবে তিথি। মেয়েদের কত স্বাদআল্লাদ থাকে। কিন্তু রিদয় তো তা দিতে সক্ষম না।
আর তিথির যা কাচাঁ বয়স তাতে তো এটাই তার কাম্য।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com